ঋণ খেলাপীদের আশ্রয়দাতারাও শোষক! প্রতিবাদী হওয়ার বিকল্প নেই।
।
দেশের ১৪টি শিল্প গ্রুপ বিশেষ ছাড় নিয়ে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ পুনর্গঠনের সুবিধা নিয়েছে। এর মধ্যে ৫০০ কোটি টাকা থেকে এক হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপীরা পর্যন্ত মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণ নবায়ন করেছে। আর এক হাজার কোটি টাকার উপরের খেলাপী ঋণের মাত্র ১ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণ নবায়ন করা হয়েছে। এ নীতিমালার আওতায় ৫০০ কোটি টাকা থেকে এক হাজার কোটি টাকার নিচের খেলাপী ঋণ মাত্র ২ শতাংশ এবং এক হাজার কোটি টাকার উপরে মাত্র ১ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণ নবায়নের সুযোগ দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, তারা আবার ব্যাংক থেকে যথারীতি নতুন করে ঋণ সুবিধাও পাচ্ছে।
ব্যাংকব্যবস্থায় ৫০০ কোটি টাকা বা এর অধিক ঋণ রয়েছে, এমন মেয়াদি গ্রাহক সর্বোচ্চ ১২ বছরের জন্য এবং নিয়মিত গ্রাহককে সর্বোচ্চ ছয় বছরের জন্য ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য থেকে জানা গেছে, সেপ্টেম্বর শেষে সোনালী ব্যাংকের খেলাপী ঋণ দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা। এছাড়া জনতা ব্যাংকের ৩ হাজার ৭৬২ কোটি, অগ্রণী ব্যাংকের ৪ হাজার ৭২১ কোটি এবং রূপালী ব্যাংকের খেলাপী ঋণ ১ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপী থেকে চার ব্যাংককে ৯৭৫ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ৯ মাসে ব্যাংকগুলো আদায় করেছে মাত্র ১১৭ কোটি টাকা বা ১২ শতাংশ।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের অবস্থা দিন দিন ভয়াবহ খারাপের দিকে যাচ্ছে। চার ব্যাংকে সেপ্টেম্বর-২০১৫ পর্যন্ত লোকসানি শাখা দাঁড়ায় ৩০৩টি, ২০১৪ সালে যা ছিল ১২১টি। ব্যাংকগুলো বড় ঋণখেলাপীদের কাছ থেকে তেমন টাকা আদায় করতে পারছে না। এদের মূলধন ঘাটতি কমার পরিবর্তে উল্টো বাড়ছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, জনগণের আমানতের হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে 'অপাত্রে' দেয়ার কারণেই ব্যাংকগুলোতে মূলধনের ঘাটতি হচ্ছে।
এদিকে এবার ছোট অঙ্কের ঋণখেলাপীরাও বিশেষ ছাড়ের দাবি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে। তাদের যুক্তি, বড়রা যদি মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে বিশেষ ছাড় পেয়ে ঋণ নবায়নের সুযোগ পায়, তাহলে তাদের জন্য নয় কেন? এটাকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল বলে মনে করছে ছোট অঙ্কের ঋণখেলাপীরা। মানবাধিকার ফিরে পেতে এ বিষয়ে ৪২ জন গ্রাহক উচ্চ আদালতে রিট আবেদন দাখিল করেছে। ওইসব রিটের পরিপ্রেক্ষিতে কেন এদেরকে ছাড় দেয়া হবে না- তার কারণ জানাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছে উচ্চ আদালত।
ক্ষতি বিবেচনায় নিয়ে ৫০০ কোটি টাকা বা তার চেয়ে বেশি অঙ্কের গ্রাহকেরা পুনর্গঠন সুবিধা পেয়ে তাদের খেলাপী ঋণ নিয়মিত করে নিয়েছে। এ সুবিধা নেয়ার অধিকার সব মানুষের আছে। আছে সব ধরনের আইনি সুবিধা পাওয়ার অধিকার। সুতরাং কাউকে আইনি সুবিধা দেয়া আর কাউকে না দেয়া সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করছে। এটি মানবাধিকারের লঙ্ঘন। তাই আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রয়োগে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দিতে আবেদন করেছে ওই গ্রাহকেরা।
অর্থাৎ বড় বড় ঋণখেলাপীর সাথে সাথে তুলনামূলক ছোটদেরও ঋণ মওকুফ করার দাবি উঠেছে। দেশে স্বীকৃত কোটিপতির সংখ্যা ১ লাখ ১৪ হাজার। এরা মোট জনগোষ্ঠীর দুই হাজার ভাগের এক ভাগও নয়। অপরদিকে ৫০০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে মালিকের সংখ্যা ৫০০ জনও নয়। আবার হাজার কোটি টাকার ঊর্ধ্বে মালিকের সংখ্যা ২৫ জনও নয়। কিন্তু এরাই রাষ্ট্রের অর্থভান্ডার লুটেপুটে এবং শুঁষে শুঁষে খাচ্ছে। আর তার মাশুল দিচ্ছে গোটা দেশের জনসাধারণ। ঋণখেলাপীদের কারণে ব্যাংকের ঘাটতি পূরণ হচ্ছে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকা তথা জনগণের টাকা থেকে।
বিগত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৫টি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংককে ৫ হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে মূলধন পুনর্গঠনের নামে। চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরেও ১ হাজার ২শ' কোটি টাকা দেয়া হয়েছে বেসিক ব্যাংককে।
সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর বেশির ভাগ ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনাকে প্রাধান্য দেয়া হয়। বিগত দিনের মতো বর্তমানেও তা চলমান রয়েছে।
কেবল রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, রূপালী, অগ্রণী ও বিশেষায়িত বেসিক ব্যাংক থেকে বিগত কয়েক বছরে ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি লোপাট করা হয়েছে। কিন্তু তা উদ্ধারের কোনো প্রচেষ্টা নেই। বরং অর্থমন্ত্রী সংসদেই বলেছে- সরকারদলীয় প্রভাবশালীদের চাপের কারণে ব্যাংক জালিয়াতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।
মূলত, ঋণের নামে এখন রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা যা করছে, তা গোলাগুলি খরচ করে লোক-লস্কর এনে খুন-খারাবি করে লুট নয়; বরং ডিজিটাল ডাকাতি। বলার অপেক্ষা রাখে না, সরকারের ছত্রছায়ায়ই এসব হচ্ছে। যেজন্য সরকারের কর্তা ব্যক্তি বলে বেড়ায় '৪ হাজার কোটি টাকা জালিয়াতি এমন বড় কিছু নয়।' অথচ এদেশে ২ কোটি লোক এমন রয়েছে, যারা দিনে একবেলা খাবার পায় না। ৪ হাজার কোটি টাকা সুষম ও স্বচ্ছ ব্যয়ে তাদের দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব। কিন্তু দেশ আজ দু'শ্রেণীতে বিভক্ত। শোষক আর শোষিত। এর থেকে রেহাই পেতে শোষক শ্রেণীদেরই আত্মসচেতন ও প্রতিবাদী হতে হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, "তোমরা যালিমও হয়ো না মজলুমও হয়ো না।"
।
দেশের ১৪টি শিল্প গ্রুপ বিশেষ ছাড় নিয়ে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ পুনর্গঠনের সুবিধা নিয়েছে। এর মধ্যে ৫০০ কোটি টাকা থেকে এক হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপীরা পর্যন্ত মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণ নবায়ন করেছে। আর এক হাজার কোটি টাকার উপরের খেলাপী ঋণের মাত্র ১ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণ নবায়ন করা হয়েছে। এ নীতিমালার আওতায় ৫০০ কোটি টাকা থেকে এক হাজার কোটি টাকার নিচের খেলাপী ঋণ মাত্র ২ শতাংশ এবং এক হাজার কোটি টাকার উপরে মাত্র ১ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণ নবায়নের সুযোগ দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, তারা আবার ব্যাংক থেকে যথারীতি নতুন করে ঋণ সুবিধাও পাচ্ছে।
ব্যাংকব্যবস্থায় ৫০০ কোটি টাকা বা এর অধিক ঋণ রয়েছে, এমন মেয়াদি গ্রাহক সর্বোচ্চ ১২ বছরের জন্য এবং নিয়মিত গ্রাহককে সর্বোচ্চ ছয় বছরের জন্য ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য থেকে জানা গেছে, সেপ্টেম্বর শেষে সোনালী ব্যাংকের খেলাপী ঋণ দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা। এছাড়া জনতা ব্যাংকের ৩ হাজার ৭৬২ কোটি, অগ্রণী ব্যাংকের ৪ হাজার ৭২১ কোটি এবং রূপালী ব্যাংকের খেলাপী ঋণ ১ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপী থেকে চার ব্যাংককে ৯৭৫ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ৯ মাসে ব্যাংকগুলো আদায় করেছে মাত্র ১১৭ কোটি টাকা বা ১২ শতাংশ।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের অবস্থা দিন দিন ভয়াবহ খারাপের দিকে যাচ্ছে। চার ব্যাংকে সেপ্টেম্বর-২০১৫ পর্যন্ত লোকসানি শাখা দাঁড়ায় ৩০৩টি, ২০১৪ সালে যা ছিল ১২১টি। ব্যাংকগুলো বড় ঋণখেলাপীদের কাছ থেকে তেমন টাকা আদায় করতে পারছে না। এদের মূলধন ঘাটতি কমার পরিবর্তে উল্টো বাড়ছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, জনগণের আমানতের হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে 'অপাত্রে' দেয়ার কারণেই ব্যাংকগুলোতে মূলধনের ঘাটতি হচ্ছে।
এদিকে এবার ছোট অঙ্কের ঋণখেলাপীরাও বিশেষ ছাড়ের দাবি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে। তাদের যুক্তি, বড়রা যদি মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে বিশেষ ছাড় পেয়ে ঋণ নবায়নের সুযোগ পায়, তাহলে তাদের জন্য নয় কেন? এটাকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল বলে মনে করছে ছোট অঙ্কের ঋণখেলাপীরা। মানবাধিকার ফিরে পেতে এ বিষয়ে ৪২ জন গ্রাহক উচ্চ আদালতে রিট আবেদন দাখিল করেছে। ওইসব রিটের পরিপ্রেক্ষিতে কেন এদেরকে ছাড় দেয়া হবে না- তার কারণ জানাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছে উচ্চ আদালত।
ক্ষতি বিবেচনায় নিয়ে ৫০০ কোটি টাকা বা তার চেয়ে বেশি অঙ্কের গ্রাহকেরা পুনর্গঠন সুবিধা পেয়ে তাদের খেলাপী ঋণ নিয়মিত করে নিয়েছে। এ সুবিধা নেয়ার অধিকার সব মানুষের আছে। আছে সব ধরনের আইনি সুবিধা পাওয়ার অধিকার। সুতরাং কাউকে আইনি সুবিধা দেয়া আর কাউকে না দেয়া সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করছে। এটি মানবাধিকারের লঙ্ঘন। তাই আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রয়োগে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দিতে আবেদন করেছে ওই গ্রাহকেরা।
অর্থাৎ বড় বড় ঋণখেলাপীর সাথে সাথে তুলনামূলক ছোটদেরও ঋণ মওকুফ করার দাবি উঠেছে। দেশে স্বীকৃত কোটিপতির সংখ্যা ১ লাখ ১৪ হাজার। এরা মোট জনগোষ্ঠীর দুই হাজার ভাগের এক ভাগও নয়। অপরদিকে ৫০০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে মালিকের সংখ্যা ৫০০ জনও নয়। আবার হাজার কোটি টাকার ঊর্ধ্বে মালিকের সংখ্যা ২৫ জনও নয়। কিন্তু এরাই রাষ্ট্রের অর্থভান্ডার লুটেপুটে এবং শুঁষে শুঁষে খাচ্ছে। আর তার মাশুল দিচ্ছে গোটা দেশের জনসাধারণ। ঋণখেলাপীদের কারণে ব্যাংকের ঘাটতি পূরণ হচ্ছে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকা তথা জনগণের টাকা থেকে।
বিগত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৫টি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংককে ৫ হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে মূলধন পুনর্গঠনের নামে। চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরেও ১ হাজার ২শ' কোটি টাকা দেয়া হয়েছে বেসিক ব্যাংককে।
সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর বেশির ভাগ ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনাকে প্রাধান্য দেয়া হয়। বিগত দিনের মতো বর্তমানেও তা চলমান রয়েছে।
কেবল রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, রূপালী, অগ্রণী ও বিশেষায়িত বেসিক ব্যাংক থেকে বিগত কয়েক বছরে ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি লোপাট করা হয়েছে। কিন্তু তা উদ্ধারের কোনো প্রচেষ্টা নেই। বরং অর্থমন্ত্রী সংসদেই বলেছে- সরকারদলীয় প্রভাবশালীদের চাপের কারণে ব্যাংক জালিয়াতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।
মূলত, ঋণের নামে এখন রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা যা করছে, তা গোলাগুলি খরচ করে লোক-লস্কর এনে খুন-খারাবি করে লুট নয়; বরং ডিজিটাল ডাকাতি। বলার অপেক্ষা রাখে না, সরকারের ছত্রছায়ায়ই এসব হচ্ছে। যেজন্য সরকারের কর্তা ব্যক্তি বলে বেড়ায় '৪ হাজার কোটি টাকা জালিয়াতি এমন বড় কিছু নয়।' অথচ এদেশে ২ কোটি লোক এমন রয়েছে, যারা দিনে একবেলা খাবার পায় না। ৪ হাজার কোটি টাকা সুষম ও স্বচ্ছ ব্যয়ে তাদের দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব। কিন্তু দেশ আজ দু'শ্রেণীতে বিভক্ত। শোষক আর শোষিত। এর থেকে রেহাই পেতে শোষক শ্রেণীদেরই আত্মসচেতন ও প্রতিবাদী হতে হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, "তোমরা যালিমও হয়ো না মজলুমও হয়ো না।"
__._,_.___