'পাকিস্তান কনফেডারেশনের ষড়যন্ত্রে ছিলেন জিয়া'
সুমন মাহবুব, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 2016-02-18 22:29:12.0 BdST Updated: 2016-02-18 22:47:56.0 BdST
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষমতায় আরোহনকারী জেনারেল জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের সঙ্গে আবার একীভূত হয়ে 'কনফেডারেশন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন' বলে দাবি করেছেন সরকারদলীয় একজন সাংসদ।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের মেয়ে মেহজাবিন খালেদ জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধকালীন ও পরবর্তী কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, পাকিস্তানের গোয়েন্দা বাহিনী আইএসআই-এর 'চর' হিসেবে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে অনুপ্রবেশ করেছিলেন।
একাত্তরে রণাঙ্গনে পরাজয়ের পর 'পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধারের জন্য' পাকিস্তানিরা বাংলাদেশে চর নিয়োগ করে মন্তব্য করে তিনি বলেন, "সেনাবাহিনীর মধ্যে মেজর জিয়া ছিলেন পাকিস্তানিদের একনিষ্ঠ বিশ্বস্ত অনুচর।"
এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টোর বক্তব্য উদ্ধৃত করেন মেহজাবিন।
তিনি সংসদে বলেন, "ভুট্টো বলেছিলেন, তিনি (জিয়াউর রহমান) সেনাবাহিনীতে গোপনে গোপনে পাকিস্তান ফেরত সৈনিকদের নিয়ে বৈঠক করে সরকারবিরোধী তৎপরতা চালান।"
বাঙালির সঙ্গে যুদ্ধে হারের পর জেনারেল ইয়াহিয়া খান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়লে তার স্থলে আসেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা ভুট্টো।
বাংলাদেশে ক্ষমতা দখলের পর জিয়াউর রহমান দেশকে 'পাকিস্তানে ফেরাতে চেয়েছিলেন' অভিযোগ করে মেহজাবিন বলেন, "১৯৭৭ সালে পাকিস্তান সফরে গিয়ে জিয়া পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন করার ষড়যন্ত্র করেছিলেন।"
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের শেষদিকে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার পর প্রবাসী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খন্দকার মোশতাকের তৎপরতায় যুদ্ধবিরতি এবং পরবর্তীতে পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে একটি কনফেডারেশন গঠনের চেষ্টা ছিল বলে যুদ্ধকালীন ইতিহাসের নানা সূত্র থেকে জানা যায়।সংসদে মেহজাবিন খালেদ (ফাইল ছবি)।
স্বাধীনতার পর দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আযমের নেতৃত্বে 'পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি' নামে একটি কমিটির কথা জানা যায়।
জিয়াউর রহমানের আমলে পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে ফেরেন গোলাম আযম।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর মোশতাককে সামনে রেখে দেশের ক্ষমতার নিয়ন্ত্রক হয় সেনাবাহিনী। সেনাপ্রধানের দায়িত্বে আসেন জিয়াউর রহমান।
এর আড়াই মাস পর জিয়াকে গৃহবন্দি করে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব নেন খালেদ মোশাররফ। ৭ নভেম্বর জাসদ নেতা কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে পাল্টা অভ্যুত্থানে আবারও ক্ষমতা কেন্দ্রে আসেন জিয়া।
মুক্তিযুদ্ধের ২ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার খালেদ মোশাররফের মেয়ে মেহজাবিন সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর বক্তব্যে জিয়াউর রহমানকে 'দেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্রের হোতা' আখ্যায়িত করেন।
"যদিও তিনি (জিয়াউর রহমান) মুক্তিযোদ্ধা নামে পরিচিত ছিলেন, কিন্তু তার মনে-প্রাণে মুক্তিযুদ্ধের সামান্যতম চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণা ও আদর্শের চিহ্ন ছিল না।
"জিয়া প্রকৃতপক্ষে একজন পাকিস্তানি আইএসআই-এর চর হিসাবে মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রবেশকারী। তার যুদ্ধকালীন এবং পরবর্তীকালের কর্মকাণ্ড এই কথাই প্রমাণ করে।"
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ চট্টগ্রাম সেনানিবাসে সহস্রাধিক বাঙালি সৈনিক হত্যাকাণ্ডের জন্য জিয়াকে দায়ী করে তিনি বলেন, "জিয়ার নির্দেশে ২৫ মার্চ রাতে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১৮০০ সৈনিক অস্ত্র জমা দেন। এর কিছুক্ষণ পরই পাকবাহিনী নিরস্ত্র বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিকদের ওপর আক্রমণ চালায়। এতে প্রায় ১২০০ বাঙালি সৈনিক নিহত হয়।
"এই হত্যাকাণ্ডের দায় থেকে কোনোভাবেই জিয়া রেহাই পেতে পারে না।"
ওই সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চট্টগ্রামে অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ছিলেন মেজর জিয়াউর রহমান।
এর আগে পাকিস্তান সামরিক গোয়েন্দা বিভাগে জিয়াউর রহমানের কাজ করার কথা তুলে ধরে মেহজাবিন খালেদ বলেন, "১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারির পর বাঙালি রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও ছাত্রদের গোপন রিপোর্ট প্রদানের দায়িত্বে জিয়াকে আইয়ুব খান বেছে নিতে ভুল করেননি।
"তাই জিয়া আইয়ুবের পক্ষে কাজ করার দায়িত্ব নিয়ে সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর কর্মকর্তা হয়ে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে পোস্টিং পান।"
http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article1107178.bdnews
Related:বাংলাদেশে ষড়যন্ত্রের রাজনীতিআগস্ট ষড়যন্ত্রের মূল কোথায়? – খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ
পনেরো এবং একুশে আগস্ট হত্যাকাণ্ডে মদদদাতা একই পরিবার
শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান জনগনের অনুরোধে সাময়িক ভাবে ক্ষমতা দখল করেন !!!!
- .........মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে বর্নচোরা এবং সুবিধাবাদী সেনানায়ক কাম রাজনীতিক হিসাবে পরিচিত। আলুপোড়া খাওয়ার মতো সব সময় সুযোগের সন্ধান করেছেন বলে মনে হলেও সব সময় নিজেকে সুবিধাজনক অবস্থানে রাখতে পেরেছেন।
১৯৭৫ সালে ১৫ ই আগস্ট - বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর অভূতপূর্ব এক পদ - উপ প্রধানের পদে বসে দেশের প্রেসিডেন্টকে সেনাবাহিনীর লোকজনের হত্যার ষড়যন্ত্রের কথা জেনেও ঘাপটি মেরে বসেছিলেন। শেখ মুজিব নিহত হবার পর পরই সুযোগ মতো দাও মারেন - সেনাপ্রধানের পদ দখল করেন। .............
__._,_.___