চাঁদপুর: হাজীগঞ্জের একটি গ্রামে রাতের আঁধারে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের বাড়ি বাড়ি হত্যার হুমকি দিয়ে লিফলেট ছড়ানো হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকার হিন্দুসম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
কম্পিউটার কম্পোজ করা লিফলেটটি কে বা কারা ছড়িয়েছে, তা উল্লেখ নেই লিফলেটে। তবে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো তাদের পূর্বপরিচিত একটি পরিবারের প্রতি সন্দেহ প্রকাশ করছে।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার ৯ নম্বর গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়নের সর্বতারা গ্রামে।
লিফলেটে সতর্ক করে দেয়া হয়, লিফলেটের পাওয়ার বিষয়টি কাউকে জানালে এর পরিণতি হবে মৃত্যু।
লিফলেটের লেখাটি হুবহু এ রকম: ''দুলাল তালুকদার, কিলটন, বাবুল চক্রবর্তী, সহদেব, দিপক ও নয়ন, নিমাই পন্ডিত, নিবাস তোমাদেরকে অনুরোধ করিতেছি যে তোমরা দয়া করে আমাদের বউমাকে ফেরত দেও এবং আমাদের নামে মামলাগুলো উঠিয়ে নেও ভাল হবে। তা না হলে তোমাদের সকলের লাশ পাওয়া যাবে, মাথা থাকবে এক জায়গায়, হাত থাকবে এক জায়গায়, বডি থাকবে আরেক জাগায়। এবং এই কথা যদি কাউকে জানাও ভাল হবে না বলে দিলাম, মৃত্যু অবধারিত।"
স্থানীয় হিন্দু পরিবারগুলোর সূত্রে জানা যায়, রবিবার ভোরে ঘুম থেকে উঠে তারা দেখেন কারো বাড়ির উঠানে, কারোর বসতঘরের সামনে কিংবা কারোর একেবারে ঘরের ভেতর দরজার সামনে ছোট লিফলেট পড়ে আছে। লিফলেটে বীভৎসভাবে হত্যার হুমকি দেখে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন তারা।
লিফলেটের ঘটনাটি জানাজানির পর দেখা যায়, একই এলাকার দুলাল তালুকদার বাড়ি, দীপক হাওলাদার বাড়ি, ঠাকুরবাড়ি, ডাক্তারবাড়ি, সহদেব ওরফে সিদ্ধার বাড়ি, নিমাই পণ্ডিত বাড়ি, নয়ন বিশ্বাসের দোকানের বিভিন্ন স্থানে একই ধরনের লিফলেট পাওয়া যায়।
স্থানীয় স্কুলশিক্ষক ও লিফলেট পাওয়া দুলাল তালুকদার ওরফে দ্বিজেন্দ্র তালুকদার এই প্রতিনিধিকে বলেন, "আমার অনার্স পড়ুয়া মেয়েকে জোর করে ঢাকা নিয়ে আটকে রেখে বিয়ে করেছে বলে জানায় আমাদের এলাকার আলীর ছেলে আমজাদ হোসেন। এ ঘটনায় আমরা আইনের আশ্রয় নিলে আমজাদসহ অন্য আসামিরা জেলে যায়। এরই সূত্র ধরে লিফলেট ছড়ানো হয়েছে বলে আমাদের সন্দেহ।"
দ্বিজেন্দ্র তালুকদার আরো বলেন, "শনিবার দিনের বেলা আলীর আরেক ছেলে ইমান হোসেন রামগঞ্জ থেকে এলাকায় এসে অনেকের সঙ্গে বিভিন্ন বাজে কথা বলেছে বলে আমরা শুনেছি এবং গভীর রাত পর্যন্ত তাকে অনেকে রাস্তায় দেখেছে।"
লিফলেটের বিষয়ে একই রকম কথা বললেন বিধান চক্রবর্তী, নয়ন বিশ্বাস, সুমন বিশ্বাস, আরতী রানীসহ অন্যরা। তারা বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠেই লিফলেটটি পান তারা। এরপর লিফলেটের বক্তব্য পড়ে সবাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সত্যব্রত ভদ্র মিঠুন বলেন, "এই লিফলেটে শুধু সর্বতারা গ্রামের হিন্দুরা নয়, আমরা পুরো উপজেলার হিন্দুরা আতঙ্কিত। এই লিফলেটের গডফাদারদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।"
লিফলেটের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে হাজীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আ. রাজ্জাক জানান, তিনি ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, "তারা (ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য) সন্ধ্যার দিকে থানায় আসবে বলে জানিয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে আইনের সহায়তা চাওয়া হলে আমরা পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা করব।" - See more at: http://www.dhakatimes24.com/2016/04/10/108857#sthash.6PWd6Wf5.N8mATxsq.dpuf
Sent from my iPhoneS.C.Nath
Sent from Yahoo Mail. Get the app
__._,_.___