ডালিম হোটেলের নির্যাতিতরা যা বললেন
চট্টগ্রাম ব্যুরো
একাত্তরে মীর কাসেম আলীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে চট্টগ্রামের ডালিম হোটেলে নির্যাতন করা হতো। সেই নির্যাতনে অনেকে মারা গেছেন। যারা বেচে আছেন তারাও নির্যাতনের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন। নিহত একজন কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন। এ জমিস উদ্দিনকে হত্যার জন্যই মীর কাসেমকে ফাঁসির রশিতে ঝুলতে হচ্ছে।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মামলার সাক্ষী জসিমের মামতো বোন হাসিনা খাতুন বলেছেন, '৪৬ বছর ধরে বুকে পাথর বেধে রেখেছি। মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর হলে এ পাথর নেমে যাবে। আমি খুবই আনন্দিত। রায়ের বাস্তবায়ন দেখে মরতে চাই। মুক্তিযোদ্ধা জসিমের আত্মা শান্তি পাচ্ছে'।
এ মামলায় মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন জসিম উদ্দিনের এই বোন।
জয় বাংলা বাহিনীর উপ-প্রধান মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর চৌধুরীকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল মীর কাসেমের আলবদর বাহিনী। মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসে আলবদর বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন তিনি। এরপর ২৩ দিন ধরে আটকে রেখে তার ওপর চালানো হয়েছিল নির্যাতন। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা গিয়ে ডালিম হোটেলের দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে।
ডালিম হোটেলের বিভীষিকাময় সেই মুহূর্তের কথা এখনো স্মরণে আছে মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর চৌধুরীর। তিনি বলেন, রোজার ঈদের দুইদিন পর গিয়েছিলাম মায়ের সঙ্গে দেখা করতে। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় ওরা আমাকে ধরে নিয়ে যায়। ২৩ দিন ধরে আটকে রেখে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছিল আমার উপর। মীর কাসেমের আলবদর বাহিনীর হাতে নির্যাতিত মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর চৌধুরীও ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। তাকে নির্যাতনের জন্য ট্রাইব্যুনাল সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল যা পরবর্তীতে আপিল বিভাগেও বহাল থাকে।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, 'আজ আমার ঈদের দিন আবার দুঃখেরও দিন। আমার মা-ভাই আজ বেঁচে নেই। তারা মীর কাসেমের সাজা দেখে যেতে পারলো না। যদি দেখে যেতে পারতো তবে মনে শান্তি পেতাম।'
তিনি আরও বলেন, মীর কাসেমে বিচার বন্ধ করতে সে কোটি কোটি টাকা খরচ করেছে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
একাত্তরের ৩০ নভেম্বর নগরীর চান্দগাঁও এলাকা থেকে সৈয়দ মো. এমরানসহ ৬ ভাইকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল মীর কাসেমের আলবদর বাহিনী। ডালিম হোটেলে আটকে রেখে তাদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছিল আলবদর সদস্যরা। পরে ১৬ ডিসেম্বর সেই বন্দিশালা থেকে মুক্তি পান তারা।
জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে ট্রাইব্যুনালে গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন সৈয়দ এমরান এবং তার চাচাতো ভাই জামাল উদ্দিন ও সরোয়ার উদ্দিন। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সৈয়দ এমরান বলেন, 'এ রায়ে আমি অত্যন্ত খুশি। রায় যত দ্রুত কার্যকর হবে, ততই বাংলার মানুষ খুশি হবে ও শহীদের আত্মা শান্তি পাবে।'
একাত্তরে হিন্দু সম্প্রদায়কে টার্গেট করে হিন্দু জনবসতিপূর্ণ হাজারি লেইনে ডালিম হোটেল গড়ে তুলেছিলেন মীর কাসেম। হাজারি লেইনের বাসিন্দা টুনটু সেন ও রঞ্জিত দাশকে অপহরণের পর নির্যাতন করে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন তিনি নিজে। তা প্রত্যক্ষ করেছিলেন মৃদুল দে। ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন তিনি। ট্রাইব্যুনাল ওই অভিযোগে মীর কাসেমকে ফাঁসি দিলেও পরবর্তীতে আপিলে খালাস দেয়া হয়।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মৃদুল দে, বলেছেন, মীর কাসেমের একবার নয়, ১৪ বার ফাঁসি হওয়া উচিত। দেরিতে হলেও জাতি তার বীর শহীদ সন্তানদের হত্যা ও নির্যাতনের বিচার পেয়েছে। দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানান এ নির্যাতিত মুক্তিযোদ্ধা।
মানবকণ্ঠ/ওয়াইএইচ/জেডএইচ
- See more at: http://www.manobkantha.com/201রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মামলার সাক্ষী জসিমের মামতো বোন হাসিনা খাতুন বলেছেন, '৪৬ বছর ধরে বুকে পাথর বেধে রেখেছি। মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর হলে এ পাথর নেমে যাবে। আমি খুবই আনন্দিত। রায়ের বাস্তবায়ন দেখে মরতে চাই। মুক্তিযোদ্ধা জসিমের আত্মা শান্তি পাচ্ছে'।
এ মামলায় মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন জসিম উদ্দিনের এই বোন।
জয় বাংলা বাহিনীর উপ-প্রধান মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর চৌধুরীকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল মীর কাসেমের আলবদর বাহিনী। মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসে আলবদর বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন তিনি। এরপর ২৩ দিন ধরে আটকে রেখে তার ওপর চালানো হয়েছিল নির্যাতন। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা গিয়ে ডালিম হোটেলের দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে।
ডালিম হোটেলের বিভীষিকাময় সেই মুহূর্তের কথা এখনো স্মরণে আছে মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর চৌধুরীর। তিনি বলেন, রোজার ঈদের দুইদিন পর গিয়েছিলাম মায়ের সঙ্গে দেখা করতে। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় ওরা আমাকে ধরে নিয়ে যায়। ২৩ দিন ধরে আটকে রেখে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছিল আমার উপর। মীর কাসেমের আলবদর বাহিনীর হাতে নির্যাতিত মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর চৌধুরীও ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। তাকে নির্যাতনের জন্য ট্রাইব্যুনাল সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল যা পরবর্তীতে আপিল বিভাগেও বহাল থাকে।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, 'আজ আমার ঈদের দিন আবার দুঃখেরও দিন। আমার মা-ভাই আজ বেঁচে নেই। তারা মীর কাসেমের সাজা দেখে যেতে পারলো না। যদি দেখে যেতে পারতো তবে মনে শান্তি পেতাম।'
তিনি আরও বলেন, মীর কাসেমে বিচার বন্ধ করতে সে কোটি কোটি টাকা খরচ করেছে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
একাত্তরের ৩০ নভেম্বর নগরীর চান্দগাঁও এলাকা থেকে সৈয়দ মো. এমরানসহ ৬ ভাইকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল মীর কাসেমের আলবদর বাহিনী। ডালিম হোটেলে আটকে রেখে তাদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছিল আলবদর সদস্যরা। পরে ১৬ ডিসেম্বর সেই বন্দিশালা থেকে মুক্তি পান তারা।
জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে ট্রাইব্যুনালে গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন সৈয়দ এমরান এবং তার চাচাতো ভাই জামাল উদ্দিন ও সরোয়ার উদ্দিন। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সৈয়দ এমরান বলেন, 'এ রায়ে আমি অত্যন্ত খুশি। রায় যত দ্রুত কার্যকর হবে, ততই বাংলার মানুষ খুশি হবে ও শহীদের আত্মা শান্তি পাবে।'
একাত্তরে হিন্দু সম্প্রদায়কে টার্গেট করে হিন্দু জনবসতিপূর্ণ হাজারি লেইনে ডালিম হোটেল গড়ে তুলেছিলেন মীর কাসেম। হাজারি লেইনের বাসিন্দা টুনটু সেন ও রঞ্জিত দাশকে অপহরণের পর নির্যাতন করে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন তিনি নিজে। তা প্রত্যক্ষ করেছিলেন মৃদুল দে। ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন তিনি। ট্রাইব্যুনাল ওই অভিযোগে মীর কাসেমকে ফাঁসি দিলেও পরবর্তীতে আপিলে খালাস দেয়া হয়।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মৃদুল দে, বলেছেন, মীর কাসেমের একবার নয়, ১৪ বার ফাঁসি হওয়া উচিত। দেরিতে হলেও জাতি তার বীর শহীদ সন্তানদের হত্যা ও নির্যাতনের বিচার পেয়েছে। দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানান এ নির্যাতিত মুক্তিযোদ্ধা।
মানবকণ্ঠ/ওয়াইএইচ/জেডএইচ
যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলী
আলবদর কমান্ডার মীর কাসেম আলী চট্টগ্রামে গণহত্যার নায়ক থেকে যুদ্ধাপরাধী
চট্টগ্রামের কয়েক মুক্তিযোদ্ধা এবং একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায় বইসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, প্রথমদিকে মীর কাসেম আলী চট্টগ্রামে আলবদর বাহিনীর প্রধান কমান্ডার ছিল। পরে তার ... তখন আলবদর বাহিনীর কেন্দ্রীয় প্রধান নেতা ছিলেন বর্তমানে জামায়াতে ইসলামীর আমির কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামী। চট্টগ্রাম শহরের ...
যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেমের ফাঁসি আপিলেও বহাল - bdnews24.com
Mar 8, 2016 - জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের পর মীর কাসেম ছিলেন আলবদর বাহিনীর তৃতীয় প্রধান ব্যক্তি। তার যোগানো অর্থেই স্বাধীন বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী শক্ত ভিত্তি পায়। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার রায়ের ...
__._,_.___