তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, কর্নেল তাহেরের হত্যাকাণ্ড একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। জিয়া আর কর্নেল তাহেরের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ ছিল। জিয়া তাঁর পাকিস্তানপন্থী রাজনীতি পরিষ্কার করতেই তাহেরকে হত্যা করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, তাহেরের হত্যাকাণ্ড জেনারেল জিয়ার ঠান্ডা মাথার একটি হত্যাকাণ্ড ছিল। তাহেরের বিচারটা প্রহসনের বিচার ছিল। সেই বিচারটি আইন অনুযায়ী হয়নি। সুতরাং কর্নেল তাহের দেশপ্রেমিক আর জিয়াউর রহমান খুনি।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। আজ কর্নেল তাহেরের ফাঁসির ৪১ তম বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশের নেতা-কর্মীরা এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল তাহেরকে ১৯৭৬ সালের ২১ জুলাই এক সামরিক ট্রাইব্যুনালের রায়ে ফাঁসি দেওয়া হয়। নানা কর্মসূচির মাধ্যমে জাসদের দুটি অংশ দিবসটি পালন করে। জাসদ একাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু আলোচনায় বলেন, জিয়া বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ধারায় ঠেলে দিতে চেয়েছিলেন। আর তাহের বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় পরিচালিত করার জন্য ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি জনতার অভ্যুত্থান করেছিলেন।
জিয়া ও তাহেরের যে বিরোধ ছিল, সে বিরোধ এখনো অবসান হয়নি মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'খালেদা জিয়া ও বিএনপি জিয়ার পাকিস্তানপন্থী রাজনীতি বহন করছে। আর আমরা জাসদ, ১৪ দল তাহেরের মুক্তিযুদ্ধের রাজনীতি বহন করছি। পাকিস্তানপন্থী রাজনীতির চির অবসান করতে হবে। রাজনীতির মাঠ থেকে রাজাকারদের বিদায় করতে হবে। রাজাকারেরা বাংলাদেশে আর কোনো দিনই ক্ষমতায় আসতে পারবে না। সরকারেও মুক্তিযোদ্ধা থাকবে, বিরোধী দলেও মুক্তিযোদ্ধা থাকবে। আসুন ঐক্যবদ্ধ হয়ে, বিভ্রান্ত না হয়ে পাকিস্তানপন্থীদের চিরতরে কবর দিই।'
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, 'কর্নেল তাহেরকে হত্যা করা হয়েছে ৭ ই নভেম্বরে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। আর সেই অভ্যুত্থান জেনারেল জিয়াকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল।'
সভায় সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, জাসদের কার্যকরী সভাপতি রবিউল আলম, জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/1260211/জিয়া-তাঁর-পাকিস্তানপন্থী-রাজনীতি-পরিষ্কার-করতেই
স্মরণ
প্রহসনের ফাঁসি ও কর্নেল তাহের
২১ জুলাই ১৯৭৬ সাল। ভোর চারটা। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। শ্রাবণের আর্দ্র রাত বিদায় নিচ্ছে। এই দেশ, এই জাতি, এই সময় আর সমাজের ইতিহাসে এক কলঙ্কময় ঘটনা ঘটে গেল কারাভ্যন্তরে। মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখসমরে পা হারানো একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিসংগ্রামের অন্যতম বীর সেনানায়ক কর্নেল আবু তাহের, বীর উত্তমকে তাঁরই মুক্ত করা স্বদেশভূমিতে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হলো। ক্ষুদিরাম বসু, সূর্যসেনের সঙ্গে, গত শতাব্দীর শেষ প্রান্তে আরেকটি নাম যুক্ত হলো—কর্নেল আবু তাহের।
__._,_.___