এমপি শাওনের অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ সিআইডি'র |
শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী ২০১২ কাজী সোহাগ: সরকারদলীয় এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। যথাযথভাবে হেফাজত করতে না পারায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এ সুপারিশ করে। একইসঙ্গে অস্ত্রটি যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে সিআইডি। ইব্রাহিম হত্যা মামলা সম্পর্কে সিআইডির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। সমপ্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ওই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। এতে ইব্রাহিম হত্যা মামলা প্রথমে হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ না করে অপমৃত্যু মামলা হিসেবে রুজু করায় পুলিশ কর্মকর্তা রিয়াজ হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তার এ ধরনের পদক্ষেপে পুলিশ সম্পর্কে বিরূপ ধারণা তৈরি হয়। সংসদীয় কমিটি জানিয়েছে, চাঞ্চল্যকর অপরাধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত মামলাটি সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ উপস্থাপন করার জন্য সিআইডি প্রধানকে নির্দেশ দেয়া হয়। এর পরই তারা প্রতিবেদনটি জমা দিয়েছে। কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের আগস্টে সংঘটিত এ হত্যা মামলার প্রধান আসামী শাওনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলায় জড়িত থাকার কোন সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে গত ১১ই জানুয়ারি দেয়া চাজশির্টের তথ্য নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সংসদ সদস্যের সঙ্গে মিজান, জীবন, রিটন ও আলম এ চারজনকেও হত্যার দায় থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। হত্যা মামলায় ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়। সিআইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মামলাটি তদন্ত ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও গুপ্তচরদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য এবং নিহত ইব্রাহিমের সুরতহাল রিপোর্ট, পিএম রিপোর্ট ও জব্দকৃত আলামত সংক্রান্ত সিআইডি বিশেষজ্ঞদের মতামত পর্যালোচনা করে ৬ জন আসামির বিরুদ্ধে পেনাল কোড ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তারা হলেন- কামাল হোসেন কালা, গোলাম মোস্তফা শিমুল, মাজাহারুল ইসলাম মিঠু, দেলোয়ার হোসেন, সোহেল আহমেদ এবং নূর হোসেন মুন্না। উল্লেখ্য, কামাল হোসেন কালা নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের গাড়ি চালক, সোহেল তার ব্যক্তিগত সহকারী, গোলাম মোস্তফা শিমুল যুবলীগ কর্মী, যে মাইক্রোবাসে ইব্রাহিমের লাশ হাসপাতালে নেয়া হয় সে গাড়ির মালিক হচ্ছে মাজাহারুল ইসলাম মিঠু, দেলোয়ার হোসেন সংসদ সদস্যের দেহরক্ষী। অভিযুক্ত সবাই এখন জামিনে মুক্ত। প্রতিবেদনে জানানো হয়, এ মামলার তদন্ত অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য গত ২০শে ডিসেম্বর আইজিপির সভাপতিত্বে অতিরিক্ত আইজি (এএন্ডও). ডিআইজি (অপরাধ), এআইজি (অপরাধ-১), বাংলাদেশ পুলিশ, পুলিশ হেডকোয়াটার্স ঢাকার উপস্থিতিতে এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মামলাটির সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করে দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়। ২০১০ সালের ১৩ই আগস্ট সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে নিহত হন এমপি শাওনের রাজনৈতিক সহযোগী যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম আহমেদ। ওই ঘটনায় ড্রাইভার কালা ওইদিন শেরেবাংলা নগর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে। মামলার বিবরণে বলা হয়, শাওনের গাড়িতে বসে ইব্রাহিম পিস্তলটি নাড়াচাড়া করার সময় অসাবধানতাবশত গুলিবিদ্ধ হন। সে সময় নিহতের স্ত্রী রীনা ইসলাম শেরেবাংলা নগর থানায় একাধিকবার ওইটিকে হত্যা মামলা হিসাবে দায়ের করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ঘটনার ৬ দিন পর ইব্রাহিমের ভাই মাসুম সিএমএম কোর্টে নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনকে প্রধান আসামি করে ৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। |
Desh-Bondhu,
'Desher Kotha Bolay'
'Desher Kotha Bolay'
__._,_.___