Banner Advertiser

Wednesday, February 1, 2012

[ALOCHONA] Fw: [KHABOR] Daily Amardesh --Fascism in Bangladesh politics--a historical analysis-- column of Sirajur Rahman--please read


----- Forwarded Message -----
From: Muhammad Ali <manik195709@yahoo.com>
To: "khabor@yahoogroups.com" <khabor@yahoogroups.com>; 'dahuk' <dahuk@yahoogroups.com>; "mukto-mona@yahoogroups.com" <mukto-mona@yahoogroups.com>; 'sahannan' <sahannan@yahoogroups.com>; "lutfulb2000@yahoo.com" <lutfulb2000@yahoo.com>; 'aftab biit' <aftabbiit@gmail.com>
Sent: Wednesday, February 1, 2012 12:45 AM
Subject: Re: [KHABOR] Daily Amardesh --Fascism in Bangladesh politics--a historical analysis-- column of Sirajur Rahman--please read

Fraudulent report by a person suffering from "Identity Crisis" !
BTW , the name of Amardesh Newspaper should be changed into "DeshPakistan" !!

From: S A Hannan <sahannan@sonarbangladesh.com>
To: 'dahuk' <dahuk@yahoogroups.com>; khabor@yahoogroups.com; mukto-mona@yahoogroups.com; 'sahannan' <sahannan@yahoogroups.com>; lutfulb2000@yahoo.com; 'aftab biit' <aftabbiit@gmail.com>
Sent: Tuesday, January 31, 2012 9:24 PM
Subject: [KHABOR] Daily Amardesh --Fascism in Bangladesh politics--a historical analysis-- column of Sirajur Rahman--please read

 
 

ওদের রাজনীতির একমাত্র হাতিয়ার ফ্যাসিবাদ

সি রা জু মা
এটা ওদের চারিত্রিক দোষ দুর্বলতা। গণতান্ত্রিক প্রতিযোগিতাকে ওরা ভয় করে। মাঠ ফাঁকা না পেলে ওরা গোল করতে পারে না, মঞ্চ থেকে প্রতিযোগিতা সরিয়ে দিতে না পারলে ওরা রাজনীতি করতে পারে না। তখন 'ভারতের বস্তা বস্তা টাকা পরামর্শ' দিয়ে তাদের মাস্টারপ্ল্যান চালু করতে হয়। নইলে নির্বাচনে তাদের পরাজয় অপরিহার্য। ১৯৭০ সালের সর্বনাশা সাইক্লোনের পর পাকিস্তানিরা যথাসময়ে ত্রাণ সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসেনি, বরং গোড়ায় তারা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ চাপা দিতেই চেয়েছিল। পাঁচ লাখ লোক মারা গিয়েছিল সে প্রলয়ে। স্বভাবতই সে বছরের ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচন ছিল পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ভোট এবং পূর্ব পাকিস্তানে খুব সম্ভবত দু'জন ছাড়া সব আওয়ামী লীগ প্রার্থীই জয়ী হয়েছিলেন।
অর্থাত্ স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রথম সংসদে আওয়ামী লীগের বিরোধিতা ছিল না বললেই চলে। অবশ্য অল্প কয়েকজন আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য শেখ মুজিবের কোনো কোনো নীতি কর্মের মৃদু সমালোচনা করেছিলেন। দেশজোড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবের মর্যাদা প্রতিপত্তি ছিল আকাশচুম্বী। বিরোধী দল বলতে তখন ছিল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ আর মওলানা ভাসানীর প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ। ন্যাপের ভেতর তখন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্মিলিত হওয়া নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা শুরু হয়েছিল।
আওয়ামী লীগ তখনও রাজনৈতিক বিরোধী সমালোচকদের নির্মূল করার জন্য রক্ষীবাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছিল। তারা সরকারের ৪০ হাজার বিরোধী সমালোচককে হত্যা করেছে। সংসদে সব বিরোধিতা নির্মূল করার লক্ষ্যে বিরোধী দলগুলোকে 'রং-ফুট' করে আকস্মিক মেয়াদমধ্য সাধারণ নির্বাচন তলব করা হয়। তা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কিছু প্রতিযোগিতা হয়েছিল। অন্তত চারটি আসনে আওয়ামী লীগ বলপ্রয়োগ অসদুপায় অবলম্বন করে জয়ী হয়েছিল। ধামরাই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড়িয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, যুক্তফ্রন্টের অন্যতম নেতা এবং কিছুকালের জন্য (যখন শেখ মুজিবুর রহমান মন্ত্রী ছিলেন) যুক্তফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খান। কিন্তু সেটাও আওয়ামী লীগ কর্মীদের সহ্য হয়নি। তারা আতাউর রহমান খানকে ছিনতাই করে গুম করে ফেলে। তার পরিবারের অনেক তদবিরের পরই মাত্র শেখ মুজিব আতাউর রহমান খানকে মুক্তির নির্দেশ দেন।
উনিশশ' একানব্বই সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন দেখতে আমি সর্বমোট আটটি নির্বাচন কেন্দ্রে গিয়েছিলাম। লোকে লোকারণ্য সবখানে। সাভারের ট্রান্সমিটারের কাছের এক কেন্দ্রে দেখি, মহিলা ভোটারদের সারি পুরুষদের সারির চেয়েও বেশি দীর্ঘ। দূর-দূরান্ত থেকে দলে দলে মহিলা ভোট দিতে এসেছেন পায়ে হেঁটে অথবা গরুর গাড়িতে। উভয় সারিতেই লোকে বলছিলেন তারা দল চেনেন না, খালেদা জিয়াকে ভোট দিতে এসেছেন। খালেদা জিয়াকে কেন? অন্য কাউকে নয় কেন? প্রায় সবারই এক জবাব। খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের কথা বলেন, গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেন।
গণতন্ত্রের ঘাতক তার সহায়ক
নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশীদের জন্য একটা পাদটীকা। দেশি-বিদেশি একটা ষড়যন্ত্রে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হন ১৯৮০ সালের ৩০ মে। তিনি শেখ মুজিব কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত (আওয়ামী লীগসহ) রাজনৈতিক দলগুলোকে বৈধ ঘোষণা করেন, পত্র-পত্রিকার প্রকাশ সম্পাদনার ওপর সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন এবং (মৃত্যুর মাত্র ১৩ দিন আগে) আওয়ামী লীগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট . কামাল হোসেন সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাককে দিল্লি পাঠিয়ে শেখ হাসিনা শেখ রেহানাকে দেশে ফিরিয়ে আনেন।
জিয়া হত্যার ১৮০ দিনের ভেতর সাংবিধানিক চাহিদা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগের প্রার্থী . কামাল হোসেনকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে বিচারপতি আবদুস সাত্তার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু প্রায় তাত্ক্ষণিকভাবেই সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ লে. জে. হোসেন মুহম্মদ এরশাদ দাবি তোলেন, একটা জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠন করতে হবে, সে কাউন্সিলে সশস্ত্র বাহিনীগুলোর গরিষ্ঠতা এবং মন্ত্রিসভা প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তে ভেটো প্রয়োগের ক্ষমতা থাকতে হবে।
বিবিসিতে আমার সহকর্মী রিচার্ড অপেনহাইমার আর আমি ১৯৮২ সালের ১৫ জানুয়ারি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তারকে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠন করা যেতে পারে, কিন্তু সে কাউন্সিলের গরিষ্ঠতা অথবা মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের ওপর তাদের ভেটো ক্ষমতা থাকার প্রশ্নই ওঠে না, কেননা সেটা সংবিধানের পরিপন্থী। সেদিনই বিকালে এরশাদের ভগ্নিপতি হাবিবুর রহমান আমার সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বলেন, তিনি চিফ অব স্টাফের প্রবক্তা হিসেবে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। জেনারেল এরশাদ আমার মাধ্যমে প্রচার করাতে চান যে তার দাবি মেনে নেয়া না হলে তিনি রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে বাধ্য হবেন।
তার পরের ঘটনাগুলো ইতিহাসযদিও বাংলাদেশের একটা দল 'যখন যেমন তখন তেমন'ভাবে ইতিহাসের রদবদল করে, ইতিহাসের মালিকানা নিয়ে রাজনীতি করতে চায়। এরশাদ রিভলবার দেখিয়ে রাষ্ট্রপতি সাত্তারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন এবং নিজে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। আওয়ামী লীগের পত্রিকা বাংলার বাণী সেদিন এরশাদের সামরিক সরকারের সাফল্যের জন্য মোনাজাত করে সম্পাদকীয় লিখেছিল। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া গোড়ার দিন থেকে এরশাদের স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু করেন। কিন্তু অধিকাংশ সময় শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ প্রকাশ্যে এবং গৌণভাবে সমর্থন দিয়েছেন এরশাদকে। সে জন্যই এরশাদের সামরিক স্বৈরতন্ত্র নয় বছর স্থায়ী হতে পেরেছিল।
পারস্পরিক গৃহপালিত বিরোধী দল
বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখ বন্ধ করা এবং তার সরকারের জন্য কিছুটাও বৈধতা অর্জনের আশায় এরশাদ ১৯৮৬ সালের মে সংসদ নির্বাচন ডাকেন। তার আগে ১৯ এপ্রিল আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাসদ ন্যাপ যৌথ বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়, তারা সবাই এরশাদের নির্বাচন বর্জন করবেন। কিন্তু ২১ এপ্রিল আওয়ামী লীগ আকস্মিক ঘোষণা দেয়, তারা এরশাদের নির্বাচনে অংশ নেবে। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ শোচনীয় রকম স্বল্পসংখ্যক আসন পায়। হাসিনা তখন ঘোষণা দেন, নির্বাচন করলেও তার দল সংসদে যোগ দেবে না। কিন্তু এরশাদের সঙ্গে তিন ঘণ্টাব্যাপী মোটর বিহারের পর আবার তিনি মত পরিবর্তন করেন; আওয়ামী লীগ এরশাদের সংসদে গৃহপালিত বিরোধী দলের ভূমিকায় অভিনয় করেছিল।
সন্দেহ না করে উপায় নেই যে শেখ হাসিনা আর এরশাদের মধ্যে এমন কিছু গোপন অংশীদারিত্ব (রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যা সম্পর্কে কি?) আছে যে তাদের কেউই নিজেদের ঘনিষ্ঠতা ত্যাগ করা নিরাপদ বিবেচনা করেন না। এরশাদ তথাকথিত মহাজোটে থেকে সব ব্যাপারে হাসিনার বর্তমান সরকারকে সমর্থন দিচ্ছেন। শেখ হাসিনা গোপন করার চেষ্টা করেননি যে আগামী নির্বাচনের পর এরশাদের জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের গৃহপালিত বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে (যেমন এরশাদের সামরিক স্বৈরতন্ত্রের সময় আওয়ামী লীগ গৃহপালিত বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করেছিল) হাবেভাবে মনে হয়, এরশাদ সে ভূমিকা পালনের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এই হচ্ছে পটভূমি। ১৯৯১ সালের নির্বাচন দেখতে ভারত থেকে বিশাল একটি পর্যবেক্ষক দল এসেছিল। আরও কয়েকটি দেশ থেকেও পর্যবেক্ষক এসেছিলেন। লর্ড পিটার শোরের (হাসিনা এক সময় যাকে চাচা ডাকতেন) নেতৃত্বে একটি কমনওয়েলথ পর্যবেক্ষক দলও এসেছিল। সবাই একবাক্যে সে নির্বাচনকে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ঘোষণা করলেও শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন, অসাধু উপায়ে তার বিজয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। শেরাটন হোটেলের ফয়্যারে আমাকে দেখতে পেয়ে পিটার শোর এগিয়ে এলেন, জিজ্ঞেস করলেন, 'মহিলা (হাসিনা) কী বলতে চান তুমি কিছু মাথামুণ্ডু বুঝতে পারছ)?' সেখান থেকে হোটেলের বলরুমে সংবাদ সম্মেলনে গিয়ে তিনি ঘোষণা করেন, এমন নিখুঁত নির্বাচন তিনি ব্রিটেনেও দেখেননি। মিরপুর কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী . কামাল হোসেন বিপুল ভোটে পরাজিত হন। তিনি তার বিজয়ী প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থীকে অভিনন্দন জানালে আওয়ামী লীগ কর্মীরা তার ওপর চড়াও হয়, তার গাড়ি ভাংচুর করে। রাজনীতি, গণতন্ত্র, নির্বাচন ইত্যাদি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের মনোভাবের এই হচ্ছে নির্যাস।
পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে (১৯৯৬) আওয়ামী লীগ জয়ী হয়েছিল। শেখ হাসিনার তখনকার সরকারের প্রথম কাজ ছিল স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমানের মাজারে যাওয়ার সেতুটি রাতের আঁধারে সরিয়ে নেয়া। শহীদ জিয়ার মাজারে অবিরাম জনস্রোত খুব সম্ভবত আওয়ামী লীগ নেত্রীর পাঁজরে কণ্টকাঘাতের মতো বিঁধছিল। সে সরকারের দ্বিতীয় কাজ ছিল একটা সশস্ত্র রাজনৈতিক ক্যাডার গঠন। তৃতীয়ত, হাসিনা তার সরকার সিদ্ধান্ত নেন যে বিএনপির অস্তিত্ব বিলোপ করার লক্ষ্যে দলকে কোথাও জনসভা কিংবা সমাবেশের স্থান দেয়া হবে না, সড়ক থেকেও তাদের নির্বাসিত করতে হবে, কোনো রকম মিছিল ইত্যাদি করতে দেয়া হবে না বিএনপিকে।
খুবই ব্যয়বহুল গাত্রদাহ
বিএনপি কোথাও জনসভা করার অনুমতি চাইলে পুলিশ কর্তৃপক্ষ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নানা অজুহাতে অনুমতি দিতে অস্বীকার করত। কোথাও কোথাও অনুমতি দেয়া হলেও আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ অথবা অন্য কোনো লীগ শেষ মুহূর্তে হলেও একই স্থানে সভা ডেকে বসত এবং কালবিলম্ব না করেই কর্তৃপক্ষ 'শান্তি রক্ষার' কিংবা 'অশান্তি এড়ানোর' অজুহাতে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করে বিএনপির সভা বানচাল করে দিত। এমন ঘটনা ওই পাঁচ বছরে দেশের এমাথা থেকে ওমাথা পর্যন্ত কয়েকশ' বার হয়েছে।
আওয়ামী লীগের নবগঠিত সশস্ত্র ক্যাডারগুলো তাদের গডফাদারদের পরিচালনায় বিএনপির বহু মিছিলে হামলা করে সেসব মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৯৬ সালে রাজধানী মহানগরে। তখনকার আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য . এইচবিএম ইকবালের পরিচালনায় ক্যাডারদের একটা দল বিএনপির মিছিলে গুলি চালায়। বিএনপির চার কর্মী ঘটনায় মারা যায়। গুলি চালানোর, উঁঁচানো রিভলবারধারীদের . ইকবালকে ঘিরে থাকার বহু আলোকচিত্র পত্র-পত্রিকায় এবং টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে।
বর্তমান দফায়ও গদিতে বসে শেখ হাসিনা আক্রোশ ঝেড়েছেন শহীদ রাষ্ট্রপতি স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে। কুর্মিটোলার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাথা থেকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলার নির্দেশ দেন তিনি। একজন বিশেষজ্ঞ সম্প্রতি আমাকে বলেছেন, জিয়ার নাম ভেঙে ফেলা, বিশ্বব্যাপী বহু এয়ারলাইন বিমানবন্দরের কোড ইত্যাদি পরিবর্তনে বাংলাদেশের যে অর্থ ব্যয় হয়েছে তাতে প্রস্তাবিত পদ্মা সেতু নির্মাণের ব্যয়ের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ নির্বাহ হতে পারত।
দ্বিতীয় হাসিনা সরকারের দ্বিতীয় কাজটি ছিল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মিগ-২৯ ঠুঁটো ফ্রিগেট ক্রয় এবং বঙ্গবন্ধু ট্রাস্ট ইত্যাদি বাবত বহু কোটি টাকার ১৫টি দুর্নীতির মামলাসহ সাত হাজারেরও বেশি দুর্নীতির মামলা তুলে নেয়া। গডফাদার . ইকবালের নেতৃত্বে ক্যাডাররা গুলি করে বিএনপির যে চার কর্মীকে হত্যা করেছিল, সে মামলাও তুলে নিয়েছে সরকার।
তারপরই সরকারি দলের পুরনো বদ অভ্যেসগুলো ফিরে আসে। বিএনপি অথবা অন্য কোনো বিরোধী দলকে তারা সভা-সমিতি করতে দেবে না, শাসক দলের সন্ত্রাসীরা বিরোধী দলগুলোর পূর্বনির্ধারিত সভাস্থলে সভা ডেকে বসবে এবং কর্তৃপক্ষ ব্রিটিশ আমলের কুখ্যাত ১৪৪ ধারা জারি করে সরকারবিরোধীদের সভা-সমাবেশ অসম্ভব করে তুলবে। আমার স্কুলজীবনে কলকাতায় প্রায়ই ব্রিটিশবিরোধী মিছিল-সমাবেশ ইত্যাদি হতো। কথায় কথায় উপলক্ষ তৈরি হতো। প্রকৃত কারণ অবশ্যই ছিল যে ভারতবাসী আর ইংরেজ শাসন সহ্য করতে রাজি ছিল না, ইংরেজদের তারা তাড়িয়ে দেবেই। ইংরেজ শাসকরাও কথায় কথায় ১৪৪ ধারা জারি করত, পুলিশ দিয়ে জনতাকে লাঠিপেঠা করত, গুলি চালিয়ে বহু তরুণকে হত্যা করেছে তারা। লোকে বলাবলি করত, এই হচ্ছে ইংরেজের মরণকামড়।
পূর্ব পাকিস্তানে নূরুল আমিন সরকারের যখন নাভিশ্বাস উঠছিল তখনও ঘন ঘন ১৪৪ ধারা জারি করা হতো। সবচেয়ে কুখ্যাত ১৪৪ ধারাটি জারি করা হয়েছিল ১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি বিকালে, পরদিনের ভাষা আন্দোলনের দাবিতে মিছিল প্রাদেশিক আইন সভার সামনে দিয়ে যাওয়া বন্ধ করতে। তার পরিণতি কী হয়েছিল সবাই জানে। নূরুল আমিনের পতন হয়েছিল, মুসলিম লীগ সরকারের পিঠের চামড়া দিয়ে ডুগডুগি তৈরি হয়েছে এবং সবশেষে পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ হয়েছে। আজও মানুষ নূরুল আমিনের নামের আগে 'কুখ্যাত' বিশেষণটা জুড়ে দেয়। ইংরেজ ভারতবর্ষ ছেড়ে গেছে ৬৫ বছর আগে; কিন্তু তাদের শেষের বছরগুলোর নির্যাতনের কাহিনী উপমহাদেশের মাটিতে এখনও সম্পৃক্ত আছে।
কুিসত, কাপুরুষোচিত
কিন্তু গত দু'তিনদিন বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ যে কুিসত্ খেলা দেখিয়েছে 'ডিজিটাল' বিশ্বের সর্বত্র তার খবর এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এবং সারা বিশ্বের মানুষ ছিঃ ঃিছ করছে। খালেদা জিয়া জানুয়ারি চট্টগ্রামের জনসমুদ্রে ঘোষণা দিলেন, ২৯ জানুয়ারি রাজধানীসহ সারা দেশে তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার দাবিতে সভা সমাবেশ করবে বিএনপি এবং গণতন্ত্রকামী সমমনা দল গোষ্ঠীগুলো। ২৬ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ হঠাত্ করে উপলব্ধি করল যে ২৯ তারিখে তাদেরও ঢাকায় সভা-সমাবেশ ইত্যাদি করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং আওয়ামী লীগের পুরনো ফর্মুলা অনুযায়ী পুলিশ (অবশ্যই সরকারি নির্দেশে) ২৯ তারিখ ঢাকায় সব সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে দেয়।
বিএনপি এবং দলের নেত্রী খালেদা জিয়া উপলক্ষে খুবই সদিচ্ছা বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। ইচ্ছা করলে তারা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ২৯ তারিখে সমাবেশ মিছিল বহাল রাখতে পারতেন। তাতে পুলিশের সংরক্ষণে আওয়ামী লীগের গুণ্ডারা অবশ্যই রক্ত ঝরাতে চাইত। কিন্তু একটা কথা আওয়ামী লীগ এখনও বোধ হয় বুঝে উঠতে পারেনি। দেশের মানুষ এখন সরকার শাসক দলের ওপর অত্যন্ত ক্রুদ্ধ। বিশেষ করে রাজধানীর মানুষ। সরকার যেভাবে তাদের গণতান্ত্রিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্য মহানগরীকে দু'টুকরো করে ফেলেছে, তাতে মানুষ ভয়ানক ক্রুদ্ধ। আওয়ামী লীগের গুণ্ডারা বিএনপির মিছিলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে নাগরিকরা লাঠি-ঝাঁটা যা পায় হাতে নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়বে এবং আওয়ামী গুণ্ডাদের ধোলাই দেবে।
শনিবার ২৮ জানুয়ারি রাতের বৈঠকে বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা আইন অমান্য করবে না, বরং ঢাকার সমাবেশ মিছিল ২৯ তারিখের পরিবর্তে ৩০ তারিখ সোমবার অনুষ্ঠিত করবে। কিন্তু ২৯ তারিখে আওয়ামী লীগ আবারও ঘোষণা করে যে সোমবার (৩০ জানুয়ারি) তাদেরও ঢাকায় সভা-সমাবেশ-মানববন্ধন ইত্যাদি করা জরুরি। ছোটবেলায় দুষ্টু শিশুদের কাণ্ডকারখানার কথা নিশ্চয়ই আপনাদের কারও কারও মনে আছে। একটি শিশু এক চেয়ারে বসল। দুষ্টুটা বলল সে ওই চেয়ারে বসতে চায়। প্রথম শিশুটি বলল, বেশ, তুই এখানে বস, আমি অন্য চেয়ারটায় গিয়ে বসি। দুষ্টুটা তখন বলল, না ওখানে নয়, আমি তোর চেয়ার বসব। অর্থাত্ খুনসুটি করে পাঁজি শিশুটা মারামারি, নিদেনপক্ষে ঝগড়া বাধাতে চায়। ঢাকায় সভা-সমাবেশ করা নিয়ে আওয়ামী লীগের আচরণ ঠিক সে রকমেরই নয় কি?
তারা কি ভেবেছে তাদের এই কাপুরুষোচিত আচরণ দেশের মানুষের ভালো লেগেছে? এমনকি আওয়ামী লীগের যে দু'চারজন সমর্থক এখনও অবশিষ্ট ছিল তাদেরও? আমার তো মনে হয়, সব শুভবুদ্ধির মানুষ শাসক দলের এই আচরণকে ইতরজনোচিত বিবেচনা করবে। কূটনীতিক-সাংবাদিক-ব্যবসায়ীসহ যেসব বিদেশি বাংলাদেশে আছেন তারাও। একদিনেই আওয়ামী লীগ প্রমাণ করল, নিজেদের শক্তি-সমর্থনের ওপর তাদের আর বিশ্বাস নেই, তারা আত্মবিশ্বাস সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলেছে। তারা বুঝে গেছে, গণতান্ত্রিক পন্থায় তাদের আর ক্ষমতা পাওয়ার আশা নেই। মাত্র একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের কদর্য, অসহায় চেহারা বিশ্ববাসীর কাছে উন্মুক্ত হয়ে গেল।
আওয়ামী লীগ ভুলে গেলেও দেশের সব মানুষের মনে রাখা প্রয়োজন যে সভা-সমাবেশ মিছিল করা সুসভ্য সমাজে গণতান্ত্রিক অধিকার বলে বিবেচিত।
লন্ডন, ৩০.০১.১২
serajurrahman@btinternet
.com