Banner Advertiser

Sunday, March 18, 2012

[mukto-mona] Fw: বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যারিস্টার মওদুদের অভিযোগ


----- Forwarded Message -----
From: SyedAslam <syed.aslam3@gmail.com>
To: Khobor <khabor@yahoogroups.com>
Sent: Sunday, March 18, 2012 7:56 PM
Subject: বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যারিস্টার মওদুদের অভিযোগ



বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যারিস্টার মওদুদের অভিযোগ
মুনতাসীর মামুন
সক্রিয় রাজনীতিবিদ মানেই ফন্দিবাজ, ধুরন্ধর, দ্বৈত চরিত্রের এ ধরনের একটা ইমেজ পাবলিকের মধ্যে গড়ে উঠেছে বিশেষ করে ১৯৭৫ সালের পর। ১৯৭৫ সালের পর যাঁরা রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছিলেন এবং এখনও সক্রিয় তাঁদের দেখুন। বিএনপি-আওয়ামী লীগে এ ক্ষেত্রে সামান্য তারতম্য থাকতে পারে কিন্তু ইমেজটা ঐ রকমই। তবে হ্যাঁ, বিএনপিতে এর সংখ্যা বেশি, জাতীয় পার্টিতেও। জামায়াতের কথা আর বললাম না। তারা কি সে সম্পর্কেও মোটামুটি সবার একটা ধারণা আছে। ১৯৭৫ সালের পর রাজনীতিবিদদের দেখুন জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, কাজী জাফর, মওদুদ আহমদ, এমকে আনোয়ার একেকটা নাম। এসব নাম শুনলে মনে কি ধারণাটা জন্মে। খুনী, চোর, চিনিঅলা, প্রতারক, ভ-। তাদের সৌভাগ্য আর আমাদের দুর্ভাগ্য যে, এদেরও অনুসারী আছে এবং উল্লিখিতরা এখনও রাজনীতিতে সক্রিয়। বাঙালীর খাছলত খারাপ এ কথাটা অনেকবার শুনেছি, কিন্তু এখন কেউ বুক ফুলিয়ে বলে, আমি মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযোদ্ধার ছেলে, তারপর সেøাগান দেয় খালেদা জিয়া জিন্দাবাদ। এখন বুঝি এসব প্রচলন একেবারে মিথ্যা নয়। 
যে ক'জন বাংলাদেশের সবচেয়ে ক্ষতি করেছেন তার মধ্যে মওদুদ একজন। রাজনীতিবিদ হিসেবে আমি তাঁকে বর্জ্য মনে করি। অবশ্য তাতে তার কিছু আসে যায় না। কিন্তু তিনি যখন লেখেন তখন বাংলাদেশের যে কোন ভাল একামেডিশিয়ানের চেয়ে থেকে খারাপ লেখেন না, সঙ্গে সঙ্গে ভাবি, তাঁর যদি উচ্চাশা কম থাকত তাহলে তিনি আজ সামাজিক স্বীকৃতি পেতেন উঁচুমানের গবেষক হিসেবে। কারণ, আমাদের রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা যা লিখেছেন তার অনেক কিছু মওদুদের ধারেকাছেও আসে না। ডা. জেকিল এ্যান্ড মিস্টার হাইড বলতে যা বোঝায় মওদুদ আহমেদ ঠিক তাই। 
এ বছর তাঁর একটি বই বেরিয়েছে, নাম 'বাংলাদেশ এ স্টাডি অব দি ডেমোক্র্যাটিক রেজিমস।' ইউপিএল বইটি বের করেছে। বইটির শিরোনামই বলে দেয় বিষয়। এখানে একটি অধ্যায় আছে তার স্মৃতিচারণমূলক। এই স্মৃতিচারণার অনেক কিছু আমাদের জানা। কিন্তু কাগজে- কলমে কোন প্রমাণ নেই। মওদুদের লেখা সেই ঘাটতি পূরণ করল। মওদুদের স্মৃতিচারণার বিষয় গোলাম আযম।
আজ বেগম জিয়ার জানি দোস্ত গোলাম আযম, যে গোলাম আযমকে তিনি গ্রেফতার করেছিলেন প্রথম প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে সম্পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আওয়ামী লীগ বা বিএনপি পায়নি। বিএনপি পেয়েছিল ১৪০টি আসন, আওয়ামী লীগ ৮৮টি, জাতীয় পার্টি ৩৫টি এবং জামায়াত ১৮টি। খুচরো দল ও ব্যক্তি পেয়েছিল বাকি আসন। মওদুদ এখানে একটি অসত্য মন্তব্য করেছেন [তাঁর আগের বইগুলোতে এ ধরনের অসত্য তথ্য এতটা থাকত না]। তিনি লিখেছেন, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের সঙ্গে তখন আওয়ামী লীগ চেষ্টা করছিল আঁতাত করে ক্ষমতায় যাওয়ার কিন্তু এরশাদের তখন মাত্র পতন হয়েছে এবং জামায়াত ইসলামের ব্যাপারে আদর্শের প্রশ্নটি ছিল। 
বক্তব্যটি যে অসত্য তা এখন প্রমাণিত। কিন্তু, তারপর যে তথ্যটি জানিয়েছেন তা অনেকের অজানা। তিনি লিখেছেন, এ সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে সেনাপ্রধান নুরুদ্দীন খান এগিয়ে এলেন। তিনি গোলাম আযমকে বললেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলতে। এ পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াতে ইসলামের অঘোষিত আমির হিসেবে প্রেসিডেন্টকে গোলাম আযম চিঠি দিলেন বেগম জিয়াকে সমর্থন জানিয়ে। প্রেসিডেন্ট খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানালেন সরকার গঠন করতে। ১৯৯১ সালের ২০ মার্চ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া প্রথম শপথ গ্রহণ করলেন। 
মওদুদ লিখেছেন, জামায়াতের সঙ্গে এ ধরনের সমঝোতা ও সমর্থনের পরও ১৯৯২ সালের ২৪ মার্চ, ১৯৬৪ সালের 'ফরেনার্স এ্যাক্টের' ৩নং সেকশন অনুযায়ী গোলাম আযমকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়। ১৯৭৩ সালের ১৮ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু সরকার তাঁর নাগরিকত্ব বাতিল করেছিল। গোলাম আযম এর বিরুদ্ধে রিট করেন। 
বাংলাদেশে গণহত্যায় প্রণোদনা যুগিয়ে, বাঙালী নারীদের ধর্ষণে পাকিস্তানী বা রাজাকারদের উৎসাহিত করে, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধে পরামর্শ দিয়ে গোলাম আযম ১৯৭১ সালের ২২ নবেম্বর পাকিস্তানে চলে যান। ১৯৭২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সেখানে ছিলেন। তারপর পাকিস্তানী পাসপোর্ট নিয়ে আসেন সৌদি আরব। সেখানে খবর পান তিনি নাগরিকত্ব হারিয়েছেন। তখন আর পাকিস্তান না ফিরে এপ্রিল ১৯৭৩ সালে ইংল্যান্ড চলে যান। ১৯৭১ সালের খুনীদের ত্রাণকর্তা লিটল লে. জেনারেল জিয়াউর তাঁকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেন ১১ জানুয়ারি ১৯৭৮ সালে। এর আগে ১৯৭১ সালের খুনী ও ধর্ষকদের রক্ষক জিয়া ১৯৭৬ সালের ১৭ জানুয়ারি যাদের নাগরিকত্ব খারিজ হয়েছিল তাদের ফের আবেদনের আহ্বান জানান। ১৯৭৬ সালের ২০ জানুয়ারি গোলাম আযম আবেদন করেন কিন্তু কোন উত্তর পাননি। 
এবার, অর্থাৎ ১৯৭৮ সালের ৮ নবেম্বর তিনি পাকিস্তানের পাসপোর্ট সারেন্ডার করে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে রেজিস্ট্রেশনের আবেদন জানান। ১৯৮৩ ও ১৯৯০ সালের যে দুটি ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয় তাতে গোলাম আযমের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। এ কাজটি করেছিল চরিত্রের বিশেষ দু'টি গুণের জন্য খ্যাত আরেক লে. জেনারেল যার নাম শিল্পী কামরুল হাসান মৃত্যুর আগে রেখেছিলেন 'বিশ্ববেহায়া।' জামায়াতের আমির নির্বাচিত হন গোলাম আযম ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে। 
এবার মওদুদের নষ্টামি দেখেন। তিনি লিখছেন, অনুমিত যে, গোলাম আযম বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিলেন এবং এ কারণে তিনি এবং তাঁর দল বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিতর্কিত। ১৯৭১ সালে মওদুদ কেন ঢাকা ছেড়ে গিয়েছিলেন? গোলাম আযমের ও তাদের প্রভুদের ভয়ে যিনি চলে গিয়েছিলেন তিনি এখন লেখেন 'অনুমিত।' পাকিস্তানী গোলামদের আছিলা ব্যাম্বুর কারণেই তো তখন পালিয়েছিলেন। এখন বলেন 'অনুমিত।' এসব লোক প্রয়োজনে বাবা-মায়ের নাম শুধু বদল নয়, স্ত্রী-কন্যাকেও বিক্রি করে দিতে পারে। 
যাক, যে বিষয়টি মওদুদ বিকৃত করতে পারেননি তা হলো বিএনপি সরকার তখন গোলাম আযম সম্পর্কে আদালতে যে এফিডেভিট দাখিল করেছিল সেটি। এটির বিষয়ে তিনি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। বিএনপি সরকার বলেছিলÑ
১. গোলাম আযম দেশে- বিদেশে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা করেছেন
২. ১৯৭১ সালের পর থেকে পাকিস্তানের নাগরিক ছিলেন
৩. বাংলাদেশের প্রতি কখনও আনুগত্য ঘোষণা করেননি
৪. পাকিস্তান বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য জামায়াতের সশস্ত্র ক্যাডাররা রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়েছিল
৫. বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনী রাজাকার, আল বদর এবং আল শামস সৃষ্টি করেছিল এবং গোলাম আযম তাদের সহায়তা করেছিলেন 
৬. বাঙালীদের দমনের জন্য যে টিক্কা খানকে পাঠানো হয়েছিল সেই টিক্কার সঙ্গে তিনি ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে আলোচনায় বসেছেন 
৭. গোলাম আযম লিবিয়াতে অনুষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্রসমূহের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বৈঠকে যেয়ে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দেয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন 
৮. ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের কার্যকলাপ ও গোলাম আযমের বাংলাদেশবিরোধী কর্মকা-ের জন্য বাংলাদেশ সরকার গোলাম আযমসহ ৩৮ জনের নাগরিকত্ব বাতিল করেছিল। 

১৯৯৩ সালের ২২ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতিরা জিয়াউর রহমানের মনোভাব হয়ত মাথায় রেখে গোলাম আযমের নাগরিকত্ব ফেরত দিয়েছিলেন। বাংলাদেশে বাংলাদেশবিরোধী হাইকোর্টের রায় মানুষ চিরদিন মনে রাখবে। আশ্চর্য বিএনপি কিন্তু তখন আপীল বিভাগে এই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করেছিল। আপীল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বলবত রেখেছিল। মাঝে মাঝে ভাবি বাংলদেশ হওয়ার পরও পাকিস্তানী বিচারপতিরা কিভাবে রয়ে গেলেন? মওদুদও লিখেছেন, ১৯৭১ সালের পর থেকে গোলাম আযম বাংলাদেশের প্রতি কোন আনুগত্য স্বীকার না করে পাকিস্তানী হিসেবেই ছিলেন। 
মওদুদ লিখছেন, তার কাছে বা তাদের কাছে [অর্থাৎ খুনী ও ধর্ষকদের সমর্থকদের কাছে] গোলাম আযম কোলাবরেটর ছিলেন কি না বা আদালতের রায় সঠিক না বেঠিক সে প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। প্রশ্নটা ছিল যে, জামায়াত বা গোলাম আযম বিএনপিকে সমর্থন দিল সেই জামায়াতের আমিরকে জেলে নেয়া হলো কিভাবে? মওদুদ বহুদিন পর নৈতিকতার প্রশ্ন তুলেছেন এবং তা যথার্থÑ এটি শুধু দুই নেতার মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছিল তার বিরোধীই নয়, রাজনৈতিক বিশ্বাসের প্রতিও বিশ্বাসঘাতকতা বটে। 
[ ওঃ ধিং হড়ঃ ড়হষু ধ ারড়ষধঃরড়হ ড়ভ ঁহফবৎংঃধহফরহম নবঃবিবহ ঃযব ঃড়ি খবধফবৎং নঁঃ ধ মৎড়ংং নবঃৎধুধষ ড়ভ ঢ়ড়ষরঃরপধষ ঃৎঁংঃ ধহফ ভধরঃয.] 
এবং যে প্রশ্নটা আমরা তুলি মওদুদও সেই প্রশ্নটি তুলেছেন-জামায়াত এবং গোলাম আযম যদি পাকিস্তানী বাহিনীর কোলাবরেটর হয়, তাহলে বেগম জিয়া বামপন্থী ১১ জন সদস্যের সমর্থন নিলেন না কেন? 
এই প্রশ্নের উত্তরটা এখন দেয়া যেতে পারে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর এসেছে খালেদা জিয়া ও বিএনপি ৫০ কোটি টাকা পেয়েছিল উত্তর-পূর্ব ভারতে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য। আরেকটি খবরে জানা যায়, নির্বাচনের জন্য ৫ কোটি টাকা খালেদাকে দেয়া হয়েছিল ওই সময়। এই ৫৫ কোটি টাকা কে দিয়েছিল? পৃথিবীর একমাত্র আইনী কুখ্যাত সন্ত্রাসী সংস্থা পাকিস্তানের আইএসআই বা সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা। দশ ট্রাক অস্ত্রের যে মামলা চলছে তাতে পাকিস্তানের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশের ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, এই অস্ত্রের চোরাচালানের কথা তিনি জানতেন। এখন দেখেন সব মিলে যাচ্ছে কিনা। ১৯৭১ সালে জেনারেল জিয়া বার বার খালেদাকে নেয়ার জন্য গেরিলা যোদ্ধাদের পাঠিয়েছেন, খালেদা যেতে রাজি হননি, যে কারণে জিয়া এত ক্ষুব্ধ ছিলেন যে, তিনি যুদ্ধের পর একা থাকতে চেয়েছেন। খালেদার আবেদনে সাড়া দিয়ে বঙ্গবন্ধু জিয়াকে বাধ্য করেন তাঁদের একত্রে থাকতে। বঙ্গবন্ধু এই যে উপকার করেছিলেন তা মনে রেখেছিলেন খালেদা জিয়া যে কারণে তাঁর শাহাদত দিবসে তিনি জন্মদিন পালন করেন। পাকিস্তানের জন্য তাঁর আলাদা মমতার কথা পাকিস্তানী শাসকরা জানে। সুতরাং ১৯৯০ সালে তাঁকে টাকা দিতেই পারে। 
বন্ধুকে বন্ধু না দেখিলে কে দেখিবে? তবে, ৫ কোটি আগে দেয়া হয়েছে নির্বাচনের জন্য। মনে হয় নির্বাচিত হওয়ার পর ৫০ কোটি দেয়া হয়েছে। এই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয় ২০০১ সালে জামায়াতকে ক্ষমতায় নিয়ে আসার পর। 
আইএসআই যে গোলাবারুদ পাঠাচ্ছে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জন্য তা আগে থেকেই তিনি ও নিজামী জানতেন। সাক্ষীদের ভাষ্য থেকে তাই বোঝা যায়। পাকিস্তানীরা যে সাহায্য অব্যাহত রেখেছিল তা বোঝা যায় শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলায়। একটি সূত্র জানায়Ñ "বাংলাদেশে পাওয়া তথ্য : সম্প্রতি বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন জেএমবির কিছু আস্তানা থেকে উদ্ধার করা কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এতে দেখা গেছে, জামায়াতে ইসলামীর এক সদস্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে আইএসআইয়ের লিয়াজোঁ কর্মকর্তা হিসেবে আর্থিক লেনদেনের কাজ করেছেন। তিনি ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রাম শাখার ক্যাশিয়ার ছিলেন। 
এ ব্যাপারে র‌্যাবের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উদ্ধার করা হার্ডডিস্ক থেকে আইএসআই সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।" 
কালের কণ্ঠ [১৭-৩-১২]
তাহলে দেখা যাচ্ছে, দু'টি ফ্রন্টে আইএসআই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। মওদুদরা এ খবর হয়ত জানতেন না, কারণ টাকার ভাগ তাদের দেয়া হয়নি। পুরো টাকাটাই হয়ত গাপ করে দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানে নিরপেক্ষ তদন্ত চালালে দেখা যাবে, ২০০১ সালেও টাকা এসেছিল। এ সংক্রান্ত খবরও বেরিয়েছিল, যা এখন সবাই ভুলে গেছেন। ঐ সময় টাকা আরও বেশি এসেছিল। এখনও বোঝা যাচ্ছে টাকা আসা অব্যাহত। 
আমাকে একজন চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, বিএনপির সম্পাদকের পিতার নাম নাকি চোখা মিয়া, যাকে ১৯৭২ সালে দালাল আইনে গ্রেফতার করা হয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই জিয়ার মানে, এখনকার খালেদার দলে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। পরে এরশাদের দলে। এটি উল্লেখের কারণ, খালেদা কাদের প্রভাবশালী পদে নিযুক্ত করেন তা বোঝাবার জন্য। সুতরাং কেউ যদি বলে, আইএসআইয়ের এজেন্টকে ক্ষমতায় আনার পায়তাঁরা করছে পাকিস্তান তা কি ভুল হবে? ঐ সময় গোলাম আযমের বিরুদ্ধে খালেদারা যা বলেছিলেন এখন শেখ হাসিনাও তাই বলছেন। আর খালেদা বলছেন, এগুলো রাজনীতি। কেন খালেদা এখন গোলাম আযমের পক্ষে বলছেন আশা করি তা স্পষ্ট হয়েছে। শুধু আদর্শ নয়, টাকার কঠিন বাঁধনেও বিএনপি-জামায়াত আবদ্ধ। আদর্শগতভাবে তো বটেই। ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো। অনেকে বলছেন, লন্ডনের ইকোনমিস্ট বলছে, নির্বাচনে ভারত আওয়ামী লীগকে বস্তাভর্তি টাকা দিয়েছে। দুটি খবরে তফাত হলো, ইকোনমিস্ট নির্দিষ্ট সূত্র জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপি সংক্রান্ত খবরগুলোতে নির্দিষ্ট সূত্র উল্লেখ করা হয়েছে। খালেদা টাকা নিয়ে না থাকলে পাকিস্তানের আদালতে এফিডেভিট করে বলুন, তিনি আইএসআইয়ের এজেন্ট নন, তিনি টাকা নেননি। 
পাকিস্তানীদের সম্পর্কে আমাদের সতর্ক থাকতেই হবে। মিডিয়ায় যারা খালেদাকে সমর্থন করেন তাঁদের সম্পর্কেও সতর্ক থাকা বাঞ্ছনীয়। পরাজিতরা বেশি সংঘবদ্ধ হয় এটি মনে রাখা ভাল। নতুন প্রজন্মের জানা ভাল, পরাজিত শক্তিকে সমর্থন করলে আবারও ১৯৭১ সাল হতে পারে।
মওদুদ বিএনপি সম্পর্কে আরেকটি অভিযোগ করেছেন, গোলাম আযমের প্রতি বিএনপি যা করেছিল এরশাদ, প্রাক্তন মন্ত্রী, জাতীয় পার্টির প্রতিও প্রতিহিংসা ['পেটি ভেনজেন্স'] চরিতার্থ করেছিল। তার মতে, বলা হয়ে থাকে, দুটি ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের প্ররোচনার কারণে বিএনপি এরকম করেছিল এবং তা তুলে ধরে সরকারের কোন কিছু করতে না পারার ক্ষমতা। শুধু তাই নয় বিএনপি যে রাজনীতির প্রধান ধারা থেকে নিজেকে নিঃসঙ্গ করে ফেলছে তাও প্রতিভাত হচ্ছিল। তার মতে, আওয়ামী লীগ, জামায়াত ও জাতীয় পার্টি এরপর বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করলে বিএনপির পতন হয়। কূটবুদ্ধিঅলা মওদুদ ইংরেজীতে লিখেছেন 'জয়েনড হ্যান্ডস' অর্থাৎ এ দু'টি দল যোগ দিয়েছিল আওয়ামী লীগের সঙ্গে যৌথভাবে। মসৃণভাবে অসত্য বলার যে 'সুনাম' মওদুদ কুড়িয়েছেন তা এখানে তিনি অক্ষুণœœ রেখেছেন। বাস্তব হলো, আওয়ামী লীগ একাই বিএনপির কুশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিল। অন্য দলগুলো নিজ নিজ মতো পরে আন্দোলন করছিল সমান্তরালে।
মওদুদের সাতকাহন গাওয়ার একটা কারণ হচ্ছে, তিনি দেখাতে চান, জামায়াত অন্যান্য দলের মতো একটি দল, ১৯৭১ সালে কর্মকা-ের জন্য তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে [অর্থাৎ তা সত্য না মিথ্যা তিনি জানেন না]। বিএনপিকে দোষারোপ করা হয় জামায়াত প্রেমের জন্য কিন্তু আওয়ামী লীগও তো জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।
স্মৃতিচারণে কিছু সত্য কিছু মিথ্যার মিশেল দেয়া নতুন কিছু নয়। উদ্দেশ্য সাধনে এটি করা হয়। মওদুদ অনেক কিছু জানেন, সব বলেন না। যেমন, ১৯৯০ সালের কথা। একটি সূত্র থেকে জেনেছি, জামায়াত প্রথমে শেখ হাসিনার কাছে দূত পাঠিয়েছিল আঁতাতের জন্য। শেখ হাসিনা তা প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ তিনি তো আর আইএসআইয়ের পয়সা খাননি। আর পাকিস্তানের চাকর-বাকর হতে যাবেন কেন তিনি। কিন্তু পয়সা খাওয়ার কারণে যা হয়ত নুরুদ্দিনও জানতেন, জামায়াত বিএনপিকে সমর্থন করে। কারণ, জামায়াতের পয়সার উৎসও এক। আওয়ামী লীগ সবসময় যে ভুলটি করে কিন্তু কখনও স্বীকার করে না, তা হচ্ছে পাকিস্তানী বা বিরোধী এ ধরনের অনেক এজেন্টকে পরে ক্ষমতায় গেলে উচ্চপদে দেয় এবং পস্তায়। ১৯৯৬ সালে তা করেছিল। এখনও করেনি এমন বলা দুরূহ। বর্তমান সাক্ষ্য-দলিল প্রমাণ করছে বিএনপি পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করছে। আওয়ামী লীগের উচিত ছিল বড় বড় কথা না বলে সেই এফিডেভিটের সার্টিফায়েড কপি যোগাড় করা ও আদালতে আবেদন রাখা যে, একজন জাতীয় নেতা অন্য দেশের এজেন্ট হিসেবে রাজনীতি করতে পারেন কিনা বা উচ্চপদে যেতে পারেন কিনা? আইএসআইয়ের সহোদর হিসেবে খ্যাত ডিজিএফআই নিরীহ বাঙালীর বিরুদ্ধে যা খুশি তা করতে পারে আর 'ভাইয়ের' থেকে এই কাগজটি আনতে পারে না? পাকিস্তান হাইকোর্ট আরেকটু সক্রিয় হলে জানা যেত ২০০১ এবং এখন কী পরিমাণ টাকা সাপ্লাই করা হয়েছে বা হচ্ছে। মওদুদদের কপাল মন্দ, এই টাকার কোন কিছু তারা পাননি। 
মওদুদের আত্মস্মৃতি কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করছে। বিএনপিকে বিশ্বাস করা দুরূহ। দুই, তারা প্রতিহিংসাপরায়ণ এবং তিন. টাকার লোভ তাদের প্রচ-। এর উদাহরণ বছরে একবার কিছুক্ষণের জন্য সংসদে গমন ও ওয়াকআউট। অর্থাৎ সমাবেশ মহাসমাবেশ করে তারা যা বলছে তার একটি কথাও বিশ্বাস করার কোন কারণ নেই। পুরনো অভিজ্ঞতা তাই বলে। আর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এখন যেটি সেটি হলো পরাজিত শক্তি পাকিস্তানের আইএসআইয়ের টাকাখোরদের হাতে রাষ্ট্র কতোটা নিরাপদ। 
সবশেষে প্রশ্ন যেটি থেকে যায়, বিএনপি এমন হলে মওদুদ কেন বিএনপি করেন? উত্তর বোধহয় একটাই। খাছলত একইরকম। শুধু তাই নয়, বিএনপি যারা করেন তাদের অধিকাংশই এরকম। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ব্যতিক্রম হবেন কী ভাবে?

http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2012-03-19&ni=90341

সোমবার, ১৯ মার্চ ২০১২, ৫ চৈত্র ১৪১