http://www.dailynayadiganta.com/details/39853
শেষের পাতা
মহানবী সা:-কে নিয়ে কটূক্তি
স্বাচিপ নেতা ডা: লাইজুর ফাঁসির দাবিতে রংপুরে মুসলিস্নদের বিৰোভ
রংপুর অফিস
রংপুর মেডিক্যাল কলেজের চর্ম ও যৌন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সাধারণ সম্পাদক ডা: এ কে এম নুরম্নন্নবী লাইজুকে বহিষ্কার, গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিৰোভে ফেটে পড়েন ধর্মপ্রাণ মুসলিস্নরা। একই দাবিতে বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও নগরীতে বিৰোভ করে। দাবি মানা না হলে হরতালসহ কঠোর আন্দোলননের হুমকি দিয়েছেন তারা। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এ ঘটনার কঠোর নিন্দা জ্ঞাপন করে অবিলম্বে সরকারকে এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। গত বুধবার রংপুর মেডিক্যাল কলেজে সকাল ১০টায় ৩৮ নম্বর ব্যাচের ওয়ার্ড সি গ্রম্নপের কাসে পড়ানোর সময় চর্ম ও যৌন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা: এ কে এম নুরম্নন্নবী লাইজু ছাত্রদের উদ্দেশে বলেন 'তোমরা ওপরের (সিনিয়র) মেয়েদের দিকে নজর দেবে না, কারণ তাদের আগেই বিয়ে হয়ে যায়। সব সময় তোমরা নিচের মেয়েদের দিকে নজর দেবে। তা হলে কাজ হয়ে যাবে।' এ সময় হাসান নামে এক ছাত্র দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করেন 'স্যার আমাদের নবী হজরত মোহাম্মদ সা: তো হজরত খাদিজা রা:-কে বিয়ে করেছিলেন। তিনি তো সিনিয়র ছিলেন।' এর উত্তরে ওই চিকিৎসক তখন অত্যনৱ স্পর্ধা দেখিয়ে বলেন, 'আরে নবী তো খাদিজাকে বিয়ে করেছে অর্থের লোভে। শুধু তাই নয়, তিনি তার পালক পুত্র জায়েদের স্ত্রী জয়নবকেও বিয়ে করেছে। এ জন্য আলস্নাহর কাছে জোর করে ওহি নাজিল করে বৈধ করে নিয়েছে।' এ ছাড়াও তিনি এক ছাত্রকে উদ্দেশ করে বলেন, 'এই বল, আলস্নাহ কী আছে রে! তা হলে দুনিয়াতে এত ইসলামি দল কেন? এত হানাহানি কেন?' এর আগের দিন সোমবার একই সময় ৩৯ নম্বর ব্যাচের কাসেও ওই শিৰক শিৰার্থীদের উদ্দেশে বলেন 'এই আলস্নাহ কি আছে? তার কী প্রমাণ আছে।'
এ ঘটনার প্রতিবাদে তিন দিন ধরে ডা: লাইজুকে চাকরিচ্যুত, গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে বিৰোভ সমাবেশ করে আসছেন তৌহিদি জনতা। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের খুতবার আগে নগরীর টার্মিনাল মসজিদে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তার বক্তৃতায় এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে বিষয়টি তদনৱ করে দোষী ডাক্তারের বিরম্নদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নইলে তৌহিদি জনতা ঘরে বসে থাকবে না। তিনি সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, এই সরকারের সময়ে ইসলামকে অবমাননানা করে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রানিৱমূলক কথাবার্তা বেশি বলা হচ্ছে। বিষয়গুলো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের দাবি জানান তিনি সরকারের কাছে। অন্য দিকে জুমার নামাজ শেষে টার্মিনাল মসজিদের খতিব মাওলানা আবদুর রশিদের নেতৃত্বে একটি বিৰোভ মিছিল নিয়ে মুসলিস্নরা টার্মিনাল এলাকা পরিদর্শন করেন। পরে এক সমাবেশে মাওলানা আবদুর রশিদ বলেন, আলস্নাহ ও নবী সা:-কে কটাৰকারী ডাক্তারকে অপসারণ, গ্রেফতার ও শাসিৱর ব্যবস্থা করা না হলে তৌহিদি জনতা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে। এ দিকে একই সময়ে কারামতিয়া, ধাপ মেডিক্যাল, চেকপোস্ট, খলিফাপাড়া, কেরানীপাড়াসহ নগরীর প্রত্যেকটি মসজিদে খতিবরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ওই ডাক্তারকে গ্রেফতার করে শাসিৱর দাবি জানান। এরপর বিভিন্ন মসজিদের মুসলিস্নরা বিৰোভ মিছিল করেন। অন্য দিকে একই দাবিতে গতকাল বিকেলে নগরীর পৌর বাজার থেকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বিৰোভ মিছিল করে। পরে এক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা সভাপতি আবদুর রহমান কাসেমী, সেক্রেটারি আবদুর রহমান ফারম্নকী, মাহমুদুর রহমান রিপন, মহানগর সভাপতি মাওলানা খাইরম্নল ইসলাম প্রমুখ। তারা ডা: লাইজুকে গ্রেফতার না করা হলে হরতালসহ কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার শিৰার্থীরা কলেজের অধ্যৰের কাছে স্মারকলিপি দেন। এ ছাড়া জিয়া হোস্টেলের মসজিদে এ নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন শিৰার্থীরা। তারা তদনৱ করে অভিযুক্ত শিৰককে কলেজ থেকে বহিষ্কার ও শাসিৱর দাবি জানিয়েছেন। এ দিকে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেলে অভিযুক্ত শিৰক ও ছাত্রলীগ নেতারা বিষয়টি চেপে যাওয়ার জন্য শিৰার্থীদের চাপ দিচ্ছেন। এ নিয়ে কোনো আন্দোলন করলে তারা পরীৰায় ফেল করে দেয়া এমনকি জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন।
অভিযুক্ত ডা: এ কে এম নুরম্নন্নবী লাইজু নয়া দিগনৱকে জানান, এ রকম কথা আমি বলিনি। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কমিটি গঠন নিয়ে আমাদের মধ্যে অভ্যনৱরীণ দ্বন্দ্ব আছে। প্রতিপৰই আমাকে হেয় ও হয়রানি করতে বিষয়টি রটাচ্ছে।
এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যৰ ডা: আবদুর রউফ নয়া দিগনৱকে জানান, বিষয়টি আমাকে শিৰার্থীরা লিখিতভাবে জানিয়েছে। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিবিরের নিন্দা : এ দিকে ডা: লাইজুকে গ্রেফতার, বহিষ্কার ও ফাঁসির দাবি জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির রংপুর মহানগর কমিটি। কমিটির সভাপতি মোসৱাক আহমদ, সেক্রেটারি আল আমিন হাসান এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
__._,_.___