Banner Advertiser

Wednesday, May 2, 2012

[mukto-mona] Fw: War crime trial & BNP -Jamaat politics : Shaheed Janani Jahanara Imam’s 83rd birthday ...


----- Forwarded Message -----
From: SyedAslam <syed.aslam3@gmail.com>
To: Khobor <khabor@yahoogroups.com>; notun Bangladesh <notun_bangladesh@yahoogroups.com>; chottala@yahoogroups.com
Sent: Wednesday, May 2, 2012 3:03 PM
Subject: War crime trial & BNP -Jamaat politics : Shaheed Janani Jahanara Imam's 83rd birthday ...


বৃহস্পতিবার, ৩ মে ২০১২, ২০ বৈশাখ ১৪১৯
শহীদজননী জাহানারা ইমামের ৮৩তম জন্মবার্ষিকী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি
শাহরিয়ার কবির
স্বাধীন বাংলাদেশে '৭১-এর গণহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ আরম্ভ হয়েছিল ১৯৭২-এর জানুয়ারি থেকে। বঙ্গবন্ধুর সরকার এদের বিচারের জন্য প্রথমে প্রণয়ন করেছিলেন 'বাংলাদেশ কোলাবরেটর্স (স্পেশাল ট্রাইব্যুনালস) অর্ডার ১৯৭২' এবং এর এক বছর পর প্রণয়ন করেছেন 'ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইবুনালস) এ্যাক্ট, ১৯৭৩।' প্রথমটি পরিচিত 'দালাল আইন' নামে, যার আওতায় আনুষ্ঠানিকভাবে '৭১-এর ঘাতক দালালদের বিচার আরম্ভ হয়েছিল। 
১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে দালাল আইন বাতিল করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেন। সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন প্রায় ১১ হাজার গণহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীকে মুক্তি প্রদান করে সংবিধান সংশোধনীর দ্বারা তাদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেন। এর পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদের বিচার থেকে অব্যাহতি প্রদানের জন্য ইনডেমনিটি আইনও প্রণয়ন করেছিলেন জেনারেল জিয়া। প্রধানত, '৭১-এর ঘাতক দালালদের নিয়েই মুক্তিযোদ্ধা জিয়া গঠন করেছিলেন 'বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল' বা বিএনপি। স্বাধীন বাংলাদেশে অপরাধ থেকে দায়মুক্তির অপসংস্কৃতি প্রচলন করেছে বিএনপি। রাজনীতিকদের জন্য রাজনীতিকে কঠিন করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে জেনারেল জিয়া খুনী, লুটেরা-ব্যবসায়ী, সামরিক-অসামরিক আমলা ও সন্ত্রাসীদের তার দলে ও রাজনীতিতে স্বাগত জানিয়েছেন। 
বাংলাদেশের রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন এবং গুম-খুনের রাজনীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে জেনারেল জিয়ার আমল থেকে, যার জের এখনও চলছে। জিয়ার আমলে অভ্যুত্থান দমনের অজুহাতে সশস্ত্র বাহিনীর প্রায় দুই হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে, যার কোন তদন্ত ও বিচার হয়নি। জিয়ার সুযোগ্য সহধর্মিণী খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে জিয়া হত্যারও বিচার করেননি। জিয়া হত্যার পর রাষ্ট্রপতি জেনারেল এরশাদ যে ১৩ জন সামরিক কর্মকর্তাকে বিচারের প্রহসন করে হত্যা করেছেন তাঁরা সবাই ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের। জিয়া হত্যার অভিযোগে তাদের বিচার হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলা ভঙ্গের। খালেদা জিয়া দু'বার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, কেন তিনি তাঁর স্বামী রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যাকারীদের বিচার করেননি এ প্রশ্নের জবাব তাকেই দিতে হবে। 
জিয়া '৭১-এর খুনীদের বিচার থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন, খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের খুনীদের বিচার করেননি, 'অপারেশন ক্লিনহার্ট'-এর নামে যে সব খুন ও গুমের ঘটনা ঘটেছে তার নায়কদের বিচার থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। তার শেষ জমানায় সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায় ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ যে নজিরবিহীন খুন, গুম ও সন্ত্রাসের শিকার হয়েছিল তারও বিচার হয়নি, বলা হয়েছে এ রকম ঘটনা নাকি বাংলাদেশে ঘটেনি, শাহরিয়ার কবির ও মুনতাসীর মামুনরা সংখ্যালঘু নির্যাতনের মিথ্যা তথ্য দিয়ে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে, ওদেরই গ্রেফতার করে বিচার করতে হবে এবং তা তিনি করেছেনও। 
খালেদা জিয়া তাঁর দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলীর গুম হওয়ার ঘটনায় যেভাবে মাতম করছেন মনে হচ্ছে বাংলাদেশে এর আগে গুম ও খুনের ঘটনা ঘটেনি। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। 
প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়ার খবর এবং এর প্রতিক্রিয়া গত ১৫ দিন যাবত বাংলাদেশের প্রতিদিনের সংবাদপত্রে প্রধান শিরোনাম হচ্ছে। বিএনপির একজন বিতর্কিত অথচ গুরুত্বপূর্ণ নেতার এহেন অন্তর্ধান সরকারের জন্য যেমন এক বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, তেমনি বিএনপি-জামায়াতের সরকারবিরোধী আন্দোলনে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছে। প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারী দলের শীর্ষ নেতারা বলছেন, ইলিয়াস আলীর অন্তর্ধান একটি সাজানো নাটক। বিএনপির নেতারা বলছেন, তাদের নেতাকে সরকারই গুম করেছে। আওয়ামী লীগ দুষছে বিএনপিকে আর বিএনপি দুষছে আওয়ামী লীগকে; মাঝখানে জামায়াত বসে 'নারদ নারদ' বলে বগল বাজাচ্ছে।
ইলিয়াস আলীর অন্তর্ধান যে কোন শান্তিপ্রিয় নাগরিকের জন্য উদ্বেগনজক ঘটনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং পুলিশ ও গোয়েন্দাদের উপর্যুপরি আশ্বাসবাণী আমজনতাকে এতটুকু স্বস্তি দিতে পারছে না। ইলিয়াস আলীকে যেই গুম করুকÑ সরকার এর দায় এড়াতে পারে না। কেউ তাকে হত্যা করলেও লাশ খুঁজে বের করে অপরাধীদের শনাক্ত করা সরকারের গোয়েন্দাদের দায়িত্বের অন্তর্গত।
আমরা জানি গোয়েন্দা বাহিনী ইলিয়াস আলীকে খুঁজছে। বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের অথর্ব মনে করার কোন কারণ নেই। কোন রাজনৈতিক চাপ বা আর্থিক লেনদেনের বিষয় না থাকলে ইলিয়াস আলীর মতো বহুল পরিচিত অন্তর্হিত ব্যক্তিকে খুঁজে বের করা এমন কোন কঠিন কাজ নয়। আমরা জানি না আমাদের গোয়েন্দাদের সন্দেহের তালিকায় জামায়াত বা তাদের পোষ্য জঙ্গীরা কিংবা তাদের আন্তর্জাতিক মুরব্বি কোন গোয়েন্দা সংস্থা আছে কি না। রাজনৈতিক নেতাকর্মী খুন ও গুম হওয়া পাকিস্তানে এখন এক মারাত্মক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। সেখানে হত্যা ও গুমের তালিকায় গবর্নর, মন্ত্রী, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, দেশী-বিদেশী সাংবাদিক, পর্যটক, পেশাজীবী কেউ বাদ নেই। পাকিস্তানের তালেবান, আল কায়দা, সমগোত্রীয় জঙ্গী মৌলবাদী এবং তাদের স্রষ্টা সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা 'আইএসআই' এই হত্যা ও অপহরণযজ্ঞে যারপরনাই পারদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে।
পাকিস্তানের এই কর্কট ব্যাধি বাংলাদেশে সংক্রমিত করতে পারে জঙ্গী মৌলবাদীদের গডফাদার জামায়াতে ইসলামী, যাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংগঠনিক ও সন্ত্রাসী কর্মকা- দুই দেশে সমানভাবে বিস্তৃত। মওদুদী-গো আযমদের জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে ও পাকিস্তানে আনুষ্ঠানিকভাবে দু'টি পৃথক দল হলেও আদর্শগতভাবে দুই দলই সৌদি ওহাবিবাদের অনুসারী। দুই দলেরই কার্যক্রম পরিচালিত হয় এক কেন্দ্র থেকে। বাংলাদেশে জামায়াতের ছয় জন শীর্ষ নেতাকে '৭১-এর গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর পর থেকে পাকিস্তানের জামায়াত নেতাদেরও ঘুম হারাম হয়ে গেছে। প্রতিপক্ষকে খুন ও গুম করার কলাকৌশল যে কোন সন্ত্রাসীকে নতুন করে শিখতে হবে পাকিস্তানের জামায়াত ও জঙ্গীদের কাছ থেকে।
আমেরিকার তথাকথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের প্রধান লক্ষ্য আফগান আল কায়েদার জন্মদাতা ওসামা বিন লাদেনকে পাকিস্তান যেভাবে লুকিয়ে রেখেছিল, তার মাসুল দিতে গিয়ে কয়েক যুগব্যাপী পাক-মার্কিন মধুচন্দ্রিমা তিক্ত বিচ্ছেদে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে। এ নিয়ে সরকারের চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন সেখানকার জামায়াত-আল কায়দা-তালেবান-জইশরা। পারমাণবিক অস্ত্রে সমৃদ্ধ হলেও ইরাক বা আফগানিস্তানের মতো আমেরিকার আগ্রাসী হামলা পাকিস্তানের জঙ্গী মৌলবাদীদের জন্য সমূহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। পাকিস্তানের বর্তমান পিপিপি সরকারের সঙ্গে জামায়াত ও জঙ্গীদের সম্পর্ক তিক্ততায় পর্যবসিত হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো ও পাঞ্জাবের গবর্নর সালমান তাসিরের হত্যার কারণে। বেনজির ও সালমানকে হত্যা করেছে জঙ্গী মৌলবাদীরা। গত বছর নিহত সালমান নাসিরের পুত্রকে জঙ্গীরা গুম করেছে, এখনও তাকে উদ্ধার করা যায়নি। পাকিস্তানের জামায়াত চাইছে সাময়িকভাবে হলেও তাদের কেন্দ্র বাংলাদেশে স্থানান্তরিত করতে। পাকিস্তানে জামায়াত কখনও সরকারের অংশীদার হতে পারেনি, বাংলাদেশে হয়েছে। তাদের পরিকল্পনা হচ্ছে শেখ হাসিনার সরকারকে হটিয়ে বিএনপির কাঁধে সওয়ার হয়ে জামায়াতকে বাংলাদেশে ক্ষমতায় বসানো, যাতে অদূর ভবিষ্যতে সম্ভাব্য মার্কিন হামলার সময় তারা যেন একটি নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল পেতে পারে। এক ইলিয়াস আলীকে গুম বা খুন করে তারা ক্ষান্ত হবে না। প্রয়োজন হলে ইলিয়াস আলীর মতো বিএনপির আরও নেতা তারা গুম বা খুন করতে পারে। আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য দলের নেতারাও রেহাই পাবেন বলে মনে হয় না। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাংসদ রাশেদ খান মেনন ইতোমধ্যেই এমত আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
সরকারবিরোধী আন্দোলন মোকাবিলা করার সময় আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা সব সময় মহাসমুদ্রে ভাসমান হিমশৈলের উপরের অংশ দেখেন। পশ্চিমে এ বছর টাইটানিক জাহাজডুবির শতবর্ষ পালিত হচ্ছে। এই বিশাল জাহাজ ডুবেছিল আটলান্টিকে ভাসমান হিমশৈলের সঙ্গে সংঘর্ষে। জাহাজের কাপ্তান ও নাবিকরা হিমশৈলের বিশালত্ব আঁচ করতে পারেননি। তাদের ধারণা ছিল টাইটানিক কখনও ডুবতে পারে না।
২০ বছর আগে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে শহীদজননী জাহানারা ইমাম সূচনা করেছিলেন এক অভূতপূর্ব নাগরিক আন্দোলন। ২০০৯-এ ক্ষমতা গ্রহণ করে মহাজোট সরকার এই দীর্ঘকাক্সিক্ষত বিচার আরম্ভ করেছে। তবে সাড়ম্বরে আরম্ভ হলেও সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে নিতান্ত দায়সারাভাবে। দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলেও প্রথমটির 'ঠুঁটো জগন্নাথ' অপবাদ এখনও ঘোচেনি। গত দু'বছর ধরে ট্রাইব্যুনালের যে অপূর্ণতার কথা আমরা বলছি দু'মাস আগে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে তারই পুনরুক্তি করা হয়েছে, কিন্তু কোন ফল হয়নি। লোকবল, অর্থ ও অন্যান্য রসদ স্বল্পতা নিয়ে ট্রাইব্যুনাল বেতো ঘোড়ার মতো খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। বেতো ঘোড়া দিয়ে রেস জেতা যায় না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের বহুমাত্রিক তৎপরতা সম্পর্কে সরকারের সম্যক ধারণা আছে বলে মনে হয় না। সরকারের নীতিনির্ধারকরা কি বোঝেন না যুদ্ধাপরাধীদের কাক্সিক্ষত বিচার এবং শাস্তি ২০১৩ সালের ভেতর নিশ্চিত না হলে আগামী নির্বাচনে মহাজোটের জন্য কী বিপর্যয় অপেক্ষা করছে?
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিঘিœত করার জন্য জামায়াত-বিএনপি মরিয়া হয়ে একের পর এক অঘটন ঘটাচ্ছে। মামলার সাক্ষীদের তারা গুম-খুনের হুমকি দিচ্ছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাবে সাক্ষীরা মামলায় সাক্ষ্য দিতে ভয় পাচ্ছেন। নির্দিষ্ট তারিখে তারা ট্রাইব্যুনালে আসছেন না, কেউ কেউ প্রাণভয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। জামায়াতের যে নৃশংসতা তারা '৭১-এর প্রত্যক্ষ করেছেন, গত ৪১ বছর ধরে তা করছেন। সাক্ষীদের নিরাপত্তা প্রদানে সরকারের অনাগ্রহের শানেনযুল আমজনতা বুঝতে অক্ষম। কেন ট্রাইব্যুনালে আরও দক্ষ, সৎ ও সর্বক্ষণিক আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হবে না, কেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, আইনজীবী, তদন্ত কর্মকর্তা ও অন্যদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেয়া হবে না, কেন ট্রাইব্যুনালে গবেষণা সেল বা গবেষণাকর্মী বাহিনী থাকবে না, কেন প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্দের জন্য ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তাদের মন্ত্রণালয়ের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে এসব জটিল তত্ত্ব '৭১-এর ভুক্তভোগী ও সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছেন না বলে এই বিচারকে কেন্দ্র করে হতাশা ও ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে, যা সুষ্ঠু বিচারের ক্ষেত্র সঙ্কুচিত করছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের অগ্রগতি সম্পর্কে সরকারের নীতি নির্ধারকদের গালভরা তোতা পাখির বুলি শুনতে শুনতে আমরা এখন শুধু ক্লান্ত নই, বিরক্তও বোধ করছি। 
নাগরিক সমাজকে উপেক্ষা করে বা নিষ্ক্রিয় রেখে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পথে বর্ণিত বাধা-বিঘœ অপসারণ করা মহাজোট সরকারের পক্ষে একা সম্ভব নয়। একইভাবে ২০১৪ সালের নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের বিজয় নিশ্চিত করতে হলে যুদ্ধাপরাধীদের কাক্সিক্ষত বিচার যেমন দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে মৌলবাদের আগুন নিয়ে খেলাও বন্ধ করতে হবে। '৭১-এর গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের জন্য আমরা জামায়াত-বিএনপির কয়েকজন নেতার শুধু বিচার করব দল ও বাহিনী হিসেবে জামায়াত-রাজাকার-আলবদর-আলশামস-এর বিচার করব না সরকারের এই অবস্থান গোটা বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। আমেরিকা, সৌদি আবর বা পাকিস্তানের অভিপ্রায় অনুযায়ী জামায়াতকে '৭১-এর গণহত্যার দায় থেকে অব্যাহতি দেয়া হলে, গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ী জামায়াতে ইসলামীকে দল হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা না করা হলে ভবিষ্যতে এসব অপরাধ আরও বড় মাত্রায় সংঘটিত হবে। বঙ্গবন্ধু '৭২-এর সংবিধানে ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন ধর্মের পবিত্রতা রক্ষার জন্য, ধর্মের নামে হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও লুণ্ঠনসহ যাবতীয় দুষ্কর্ম নিরুৎসাহিত করার জন্য। বঙ্গবন্ধুর সংবিধানে 'রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম' যুক্ত করার অর্থ ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উপহাস করা, যেমনটি করেছিলেন পাকিমনা দুই জেনারেল জিয়া ও এরশাদ।
ধর্ম নিয়ে রাজনীতির হলাহল পান করে পাকিস্তান আজ মৃত্যুপথযাত্রী। আমরা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করব তার পরিণতি ভাবব না, ফল যা হওয়ার তাই হবে। আজ খালেদা জিয়া যখন ইলিয়াস আলীকে গুম করার জন্য র‌্যাবকে দায়ী করেন তিনি ভুলে যান 'র‌্যাব' তিনিই সৃষ্টি করেছেন, তারই জমানায় অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে র‌্যাব আর আর্মির যারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে গুম ও খুন করেছে তাদের তিনি বিচার থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন। ভবিষ্যতে যদি প্রমাণও হয় 'র‌্যাব' ইলিয়াস আলীকে গুম বা খুন করেছে তারা খালেদা জিয়ার নীতি অনুযায়ী ইমডেমনিটি দাবি করতেই পারে। আগামী নির্বাচনে খালেদা জিয়া জয়ী হয়ে যদি আবারও প্রধানমন্ত্রী হন আর ইলিয়াস অপহরণকারী যদি র‌্যাব হয় তাদের বিচার তিনি করবেন না বা করতে পারবেন না। ইলিয়াস যদি র‌্যাব-এর হাতে খুনও হয় খালেদা জিয়া তার বিচার করতে পারবেন না। পারলে সবার আগে তিনি জিয়া হত্যার বিচার করতেন। তিনি নগদ প্রাপ্তির বিনিময়ে জিয়া হত্যাকারীদের সম্পর্কে উচ্চবাচ্য করেননি। জানি না ইলিয়াসকে নিয়ে তিনি কোন সমঝোতার কথা ভাবছেন!
মহাজোটের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ইস্যু তৈরি করতে গিয়ে খালেদা জিয়া বার বার শুধু আকাশের দিকে থুতু নিক্ষেপ করছেন। একের পর এক হরতাল দিয়ে গরিব মানুষের পেটে লাথি মেরে, দেশের অর্থনীতির সর্বনাশ করে, গণতন্ত্রের মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়ে সিন্দাবাদের দৈত্যের মতো জামায়াতকে কাঁধে নিয়ে খালেদা জিয়া বাংলাদেশকে মিনি পাকিস্তান বানাবার স্বপ্ন দেখছেন। বাংলাদেশের মানুষ এসব বোঝে না এমনটি ভাববার কোনও কারণ নেই। এভাবে একের পর এক হরতাল বিএনপিকে আরও জনবিচ্ছিন্ন করবে।
আমাদের কাজ হচ্ছে সরকার ও বিরোধী দলের বিচ্যুতিগুলো চিহ্নিত করা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ার নাগরিক আন্দোলন শক্তিশালী করা। সরকার বা বিরোধী দল আমাদের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারে, উপেক্ষা করতে পারে, কিন্তু দেশ আমরা কারও কাছে ইজারা দিইনি। দেশ, সমাজ ও মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতাই জাহানারা ইমামের ২০ বছর বয়সী আন্দোলনের চালিকাশক্তি।


লেখক : ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি

বৃহস্পতিবার, ৩ মে ২০১২, ২০ বৈশাখ ১৪১৯

http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2012-05-03&ni=94983

Related:



Jahanara Imam's last message to the nation written from her deathbed:
My Appeal and Directives to the people of Bangladesh (From Shahid Janani Jahanara Imam)
" My fellow warriors,
You have been fighting the evil forces of Golam Azam and his war criminals of 1971, along with the detractors of a free Bangladesh for the last three years. As a nation of Bangalees, your unity and courage has been unparallel. I was with you at the start of our struggle. Our resolve was to remain in battle until we had achieved our objective. Stricken with the fatal disease of cancer, I am now facing my final days. I have kept my resolve. I did not leave the battle. But I cannot stop the inevitable March of death. Therefore, I once again remind you of our resolve to fight until our goal is attained. You must fulfill your commitment. You must stand united and fight to the very end. Even though I will not be among you. I will know that you--- my millions of Bangalee children---- will live in a free Golden Bengal with your sons and daughters.
We still have a long and arduous road ahead. People from all walks of life has joined this battle. People from different political and cultural groups, freedom fighters, women, and students, and youths have all committed themselves to the battle. And I know that there is no one more committed than the people. People are power. So I commit the responsibility of the fight to bring Golam Azam and the war criminals of 1971 to justice and to continue to champion the Spirit of the Liberation War to you--- the people of Bangladesh. For certain, victory will be ours.
  1. Jahanara Imam - International Coalition of Sites of Conscience

    Jahanara ImamJahanara Imam lost her son and husband to the war. She has been an icon to many freedom-loving people because of her book, "Of Blood and ...
  2. Virtual Bangladesh : History: Jahanara Imam

    A Nation Awakened - The Legacy of Jahanara Imam. An article on Jahanara Imam on Bangladesh Independence by Jamal Hasan.
  3. Jahanara Imam - BanglaGallery

    Jahanara Imam was born in a conservative Muslim family of Murshidabad (India) in 1929, received a liberal education. She held a Master's degree in Bengali .

    Jahanara Imam - Wikipedia, the free encyclopedia

    Jahanara Imam (Bengali: জাহানারা ইমাম) (May 3, 1929—June 26, 1994) was a Bangladeshi writer and political activist. She is most widely remembered for her ...