Enter your message here.
'ভারত-কম্বোডিয়া-শ্রীলংকাক পরাস্থ করে বাংলাদেশ এখন লড়ছে চীনের বিরুদ্ধে: নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর
নিউইয়র্ক, ২ জুলাই ২০১২ (এনা):- বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আতিউর রহমান নিউইয়র্কে এনআরবি বিজনেস নেটওয়ার্কের সমাবেশে বলেছেন, 'গত দেড় থেকে দুই দশকের মধ্যে যে সব দেশ উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে, সে ক্ষেত্রে ঐসব দেশের প্রবাসীদের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। ভারতে এনআরআই (নন রেসিডেন্ট ইন্ডিয়ান) দিবস পালন করা হয়। প্রবাসী উদ্যোক্তাদের সাথে প্রায়ই ভারতের রাষ্ট্রপতি নৈশভোজে মিলিত হন।' 'এর ফলে ভারতের বর্তমান রিজার্ভ হচ্ছে ৩০০ বিলিয়ন ডলার'-উল্লেখ করেন ড. আতিউর। তিনি বলেন, 'আমরাও একই পথে হাঁটছি। সরকার বহুমুখী প্রয়াস নিয়েছে প্রবাসীদের উন্নয়ন কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে। ইউএস বন্ড ছাড়া হয়েছে-যার সুদের হার ৬.৫% এবং এটি পরিশোধ করা হচ্ছে ইউএস ডলারে। তাই কারো কোন দুশ্চিন্তার কারণ নেই বিনিয়োজিত এ অর্থ নিয়ে।' গভর্ণর বলেন, 'এনআরবি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রতিটি ব্যাংকের প্রাথমিক মূলধন হবে ৪ শ' কোটি টাকা করে।'
আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের দ্রুত প্রসার প্রসঙ্গে গভর্ণর বলেন, 'বাংলাদেশ এখন লড়ছে চীনের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই ভারত শ্রীলংকা এবং কম্বোডিয়াকে আমরা পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছি। চীন থেকে গত বছর বেশ কয়েকটি শিল্প কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হয়েছে। চামড়াজাত এসব শিল্পকারখানা বার্ষিক দুই বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানী করতে সক্ষম। টেক্সটাইল সেক্টরের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও চীন থেকে শীঘ্রই বাংলাদেশে আসছে।' গভর্ণর বলেন, 'এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে, চীনের চেয়ে বাংলাদেশে উৎপাদন খরচ ৩৩% কম এবং এ বিষয়টি এখন বিশ্ববাসীর অজানা নেই।' ড. আতিউর বলেন, 'ব্যবসা-বানিজ্যের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক পর্যায়েও বাংলাদেশ বিশেষ একটি পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। ইতিমধ্যেই উত্তর-পূর্ব ভারতে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা একটি কারখানা স্থাপনে সক্ষম হয়েছেন।' গভর্ণর বলেন, 'সিলেটে ২টিসহ বাংলাদেশের কয়েকটি স্থানে আরো ৭টি স্পেশাল ইকনোমিক জোন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এগুলো থেকে যে কোন সহায়তা প্রবাসীরাও পাবেন।'
বাংলাদেশের স্টান্ডার্ড ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান 'স্টান্ডার্ড এক্সপ্রেস'র সহায়তায় এনআরবি বিজনেস নেটওয়ার্কের এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় ৩০ জুন দুপুরে নিউইয়র্ক সিটির উডসাইডে গুলশান টেরেস মিলনায়তনে। স্বাগত বক্তব্য দেন এনআরবি বিজনেস নেটওয়ার্কের পরিচালক হাসানুজ্জামান হাসান। অনুষ্ঠানে রুপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহমেদ আল কবীর বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ড উপস্থাপন করে বলেন, 'গায়ে কাপড় নেই-এমন কোন মানুষ এখন বাংলাদেশে দেখা যায় না। খাদ্যেও বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশে কোন কাজেই ঐক্য হয় না। তবে একটি বিষয়ে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেটি হচ্ছে শিক্ষা নীতি। জাতির উন্নয়নের মূল ভিত্তি আজ সর্বজনীনতা পেয়েছে।' ড. কবীর বলের, 'বাংলাদেশের ৪০ বছরের মধ্যে ১৯ বছর সামরিক শাসন ছিল। সে সময়ে জাতীয় প্রবৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ৩.২% । অপরদিকে গণতান্ত্রিক শাসন ছিল ২১ বছর। সে সময়ের প্রবৃদ্ধির হার ৪.৬%।' তিনি বলেন, 'সামাজিক সূচকের পাশাপাশি অর্থনৈতি সূচকেও বাংলাদেশের অগ্রগতি সারাবিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে।' মোশারফ হোসেনের উপস্থাপনায় এ অনুষ্ঠানে সোনালী এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী মো. আতাউর রহমান এবং স্ট্যান্ডার্ড এক্সপ্রেসের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মালেকও উপস্থিত ছিলেন।