Banner Advertiser

Sunday, July 1, 2012

[mukto-mona] Fw: [notun_bangladesh] যুদ্ধাপরাধী বিচার: গো. আযমের সহযোগিতা না থাকলে ধ্বংসযজ্ঞ কম হতো


----- Forwarded Message -----
From: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>
To: notun Bangladesh <notun_bangladesh@yahoogroups.com>
Sent: Sunday, July 1, 2012 4:41 PM
Subject: [notun_bangladesh] যুদ্ধাপরাধী বিচার: গো. আযমের সহযোগিতা না থাকলে ধ্বংসযজ্ঞ কম হতো
 

গো. আযমের সহযোগিতা না থাকলে ধ্বংসযজ্ঞ কম হতো
যুদ্ধাপরাধী বিচার
স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে জবানবন্দী ও জেরা প্রদান করেছেন ইতিহাসবিদ গবেষক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। তিনি দীর্ঘ জবানবন্দীতে বলেছেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগসহ অন্য কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা জেনারেল টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করেন। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে তাঁরা এ কাজটি করছিলেন, যখন পাকিস্তানী সেনাসদস্যরা প্রতিদিনই বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশে ধ্বংসযজ্ঞ, হত্যাযজ্ঞ, লুট, ধর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এসব রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে ছিলেন নুরুল আমিন ও গোলাম আযম। গোলাম আযমের পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর আলশামসের মতো বাহিনী গঠিত না হলে ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা অনেক কম হতো; বাংলাদেশ আরও আগেই বিজয়ী হতে পারত। মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইতিহাসবিদ গবেষক মুনতাসীর মামুন এ কথা বলেছেন। গোলাম আযমের বিরুদ্ধে তিনিই প্রথম সাক্ষী। রবিবার সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ নিজামুল হক নাসিমের নেতৃত্বে দুই সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ উপস্থিত হয়ে তিনি সাক্ষ্য দেয়া শুরু করেছেন। বিকেল ৪টার জবানবন্দী শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী প্রথম দিনের মতো তাঁকে জেরা করেন। তিনি বলেন, 'যারা হত্যাযজ্ঞে অংশগ্রহণ করেছিল তাদের এক ধরনের লাইসেন্স দিয়েছিলেন জামায়াতের নেতা গোলাম আযম।' সকালে গোলাম আযমকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজনসেল থেকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় হাজির করা হয়। পরে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলে দুপুর ১২টার দিকে তার শারীরিক অবস্থা খারাপ বলে তাকে আবার এজলাস থেকে নামিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তার আইনজীবী বলেন, 'হঠাৎ তার শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাকে ট্রাইব্যুনালের এজলাস থেকে নামিয়ে নেয়া হচ্ছে।' ১২টার দিকে ট্রাইব্যুনালের অনুমতি নিয়ে তাকে আবার হাসপাতালের প্রিজনসেলে পাঠানো হয়।  তিনি বলেন, 'সে সময়ে জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ ও পিডিপির নেতৃত্বে শান্তি কমিটি, রাজাকার বাহিনী ও আলবদর বাহিনী গঠন করেছিল। এর মধ্যে জামায়াতের কর্মীদেরই আধিক্য ছিল।' মুনতাসির মামুন বলেন, 'তৎকালীন জামায়াত ছিল সবচেয়ে প্রভাবশালী ও বড় রাজনৈতিক দল। তাই তাদের দলের প্রভাব ছিল সব সময় বেশি। তৎকালীন জামায়াতের আমির গোলাম আযম বিভিন্নভাবে বক্তৃতা দিয়ে তার দলের নেতাকর্মীদের উৎসাহিত করতেন তারা যেন শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীতে যোগদান করে। তিনি বলেন, '১৯৭১ সালের হত্যা, ধর্ষণ গুম, অগ্নিসংযোগ লুটের কথা স্মরণে এলে এখনও গা শিউরে ওঠে। তিনি বলেন, '১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর থেকে দলগুলো পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারকে এবং তাদের প্রতিনিধি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সামরিকজান্তাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছিল।  পাকিস্তানীদের সহযোগিতায় যারা অন্যতম ভূমিকা পালন করেছে তাদের মধ্যে বাংলদেশের জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা ছিল অন্যতম।'মুনতাসীর মামুনের জবানবন্দীর শুরুতেই বলেন, তাঁর নাম মুনতাসীর উদ্দিন খান মামুন। সংক্ষেপে মুনতাসীর মামুন। এই সংক্ষিপ্ত নামেই আমাকে সবাই চেনে। আমার বয়স ৬১ বছর। আমার বাবার নাম মরহুম মেজবাহ উদ্দিন খান। বর্তমানে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক। ছাত্রজীবনে আমার লেখাপড়া শুরু হয় চট্টগ্রামে। সেখানে থেকেই আমি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাস করি। ১৯৬৬ সালে এসএসসি। ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করি। এরপর একই বছর অর্থাৎ ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে স্নাতক (সম্মানে) ভর্তি হই। সেখান থেকে আমি স্নাতক (সম্মান), স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করি। আমাদের উচ্চশিক্ষার শিক্ষাবর্ষ শেষ হতো ১৯৭১ সালে কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের কারণে তা এক বছর ব্যাহত হয়। ১৯৭২ সালে আমরা পাস করে বের হই। ১৯৭৪ সালে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে যোগদান করি। ১৯৮৩ সালে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করি। আমি প্রথমে সাহিত্য নিয়ে লেখালিখি শুরু করি। বাংলা সাহিত্যের সকল শাখায় আমি বিচরণ করি। পরবর্তীকালে আমি ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করি। এরপর থেকে ইতিহাস নিয়ে লিখতে শুরু করি। বাংলার আদি ইতিহাস, ২০ শতকের পূর্ববঙ্গ মানে বর্তমান বাংলাদেশের ইতিহাস, সমাজ, সংস্কৃতি, রাজনীতি এবং মুক্তিযুদ্ধ। প্রায় সোয় দুই শ' বই তিনি লিখেছেন। যার মধ্যে আছে 'রাজাকারের মন', 'পাকিস্তানী জেনারেলদের মন', 'মুক্তিযুদ্ধ কোষ' পাঁচ খ-ে প্রকাশিত ইত্যাদি। আপনি কি কি পুরস্কার পেয়েছেন? রাষ্ট্রপক্ষে এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক মামুন বলেন, পুরস্কার নিয়ে কথা বলাটা আমার জন্য বিব্রতকর। তারপর বলি, আমি ১৯৬৩ সালে প্রথম পুরস্কার পাই। তখন আমি ছোট ছিলাম। ১৯৯৩ সালে আমি সাহিত্যে বাংলা একাডেমী পুরস্কার পাই, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখালেখির কারণে একুশে পদক ও মার্কেনটাইল ব্যাংক পুরস্কার পাই। আরও অনেক পুরস্কার পাই কিন্তু এই মুহূর্তে তা মনে পড়ছে না। ১৯৭১ সালের বছরটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ পুরো দেশ পার করছিল একটি সঙ্কটময় ও ক্রান্তিকাল।বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ ছাত্র কোন না কোনভাবে আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে তথা মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। বাঙালীর জাতির আশা আকাক্সক্ষা পরিপূরণে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা হয়। পরবর্তীতে কি হয়েছে তা কমবেশি সবাই জানে তা আমি বিস্তারিত বলতে চাই না। ১৯৭০ সালে নির্বাচনের পর আমরা ভেবেছিলাম আমাদের ন্যায্য দাবিগুলো পূরণ করা হবে। ১ মার্চের পর আমরা অনুধাবন করালে আমাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। এইটুকু বলতে পারি প্রায়শই পশ্চিম পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের আচরণে আমরা ক্ষুব্ধ ছিলাম। মুনতাসির মামুন আরও বলেন, ১৯৭১ সালে মে মাসে আমি ঢাকার মিরপুরের পল্লবীতে ছিলাম। ওই সময় যা যা ঘটেছিল তা স্মরণ করলে আমার বয়সী কার পক্ষে ওই সময়ের বর্বর উপাখ্যান তুলে ধরা কষ্টকর। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত আমি পল্লবী এক বাসায় ছিলাম। ২৫ মার্চ কালরাত্রির গোলাগুলি আমাদের আতঙ্কিত করে। আমরা বাড়ির ছাদে উঠে কিছু দেখার চেষ্টা করি। দেখি আগুনের লেলিহান শিখা আকাশে উড়ছে। মিরপুর এলাকাটা তখনকার সময়ে ছিল অবাঙালী অধ্যুষিত। গোলাগুলির পর আমরা দেখি কয়েকজন পাকিস্তান সেনাসদস্য রাস্তায় টহল দিচ্ছে। এরপর টেলিফোনে আহমদ ছফা আমাদের জানান, পাকিস্তান সেনাবাহিনী গোলাগুলি শুরু করেছে। তারা ঢাকার রাস্তাঘাটে নেমে পড়েছে। রেডিওতে শুনি পূর্ব পাকিস্তানে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। এই গানটি তখন বার বার শোনাচ্ছিল। কয়েকজন অবাঙালী ব্যক্তির সহায়তায় আমরা মিরপুর থেকে ঢাকায় আসি। তারপর আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পুরনো ঢাকায় পরিচিত ব্যক্তিরাকে কীভাবে আছে তা জানার চেষ্টা করি। পাকিস্তান সেনাবাহিনী গোটাশহরে নির্মম হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে ছিল। মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামের দিকে পালাচ্ছিল। ১৯৭১ সালে যে কয়টি সংবাদপত্র নিয়মিত প্রচারিত হতো তার মধ্যে ছিল দৈনিক অবজারভার, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক সংগ্রাম ও পূর্বদেশ। আরও কয়েকটি পত্রিকা ছিল কিন্তু এ মুহূর্তে নাম মনে পড়ছে না। তবে এসব পত্রিকা সরকারের অনুমোদন হীন সংবাদ প্রচার সাধারণত করত না। এসব পত্রিকার আমরা পড়তাম। সরকারের সঙ্গে কারা কারা আছে। কারা কি বলছে। রাজনীতিবিদরা কাকে কি বলছে? কারা দুষ্কৃতকারী? এসব জানার জন্য আমরা তখনকার সংবাদপত্রগুলো পড়তাম। এখানে উল্লেখ্য, তখন দুষ্কৃতকারী হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাদের বোঝানো হতো। তাছাড়া আমার রেডিওতে বিবিসি, রেডিও অস্ট্রেলিয়ারও আকাশবাণী খবর সংবাদ শুনতাম। খবরের সত্যতা জানার জন্য এসব করতাম। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তখন যেসব দল পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল তার মধ্যে জামায়েত ইসলামী, পিডিপি, মুসলিম লীগের কিছু অংশ ছিল। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা ছিল বেশি। তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত শান্তি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে গঠন করা হয়েছিল রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী। এসব বাহিনীতে জামায়াতের লোকদেরই প্রাধান্য ছিল। সে সময় সংবাদপত্রগুলো দেখলে আমরা গোলাম আযমের বক্তব্য দেখতে পাব। রাজাকার বাহিনীর সূত্রপাত হয়েছিল গোলাম আযমের মাধ্যমে। পরে পাকিস্তান সরকার এর একটি আইনী কাঠামো তৈরি করেছিল। আলবদরের নেতৃত্বে ছিলেন জামায়াতের বর্তমান আমির মতিউর রহমান নিজামী। গবেষক মুনতাসীর মামুন জবানবন্দীতে তার কয়েকটি বইয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমার বইগুলোয় মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তির ওপরই বেশি আলোচনা করেছি। পাকিস্তানীদের যারা সহায়তা করেছিল তাদের মনোযোগ কেমন সেটা নিয়েই ছিল আমার প্রধান কৌতূহল কৌতূহল। তারা এমন ধ্বংসযজ্ঞ কীভাবে চালাতে পারল? তিনি আরও বলেন, তাঁর লেখা বইগুলোর মধ্যে 'রাজাকারের মন', (প্রথম ও দ্বিতীয় খ-), 'পাকিস্তানের জেনারেলদের মত সেই সব পাকিস্তানী', 'শান্তিকমিটি', এ ছাড়া আমার সম্পাদনায় 'মুক্তিযোদ্ধা কোষ' ৫ম খ-। মুক্তিযুদ্ধের ছিন্ন দলিলপত্র (সম্পাদনা), ১৩ নন্বর সেক্টর প্রভৃতি। তিনি বলেন, আমার সম্পাদনায় সোয়া দু'শ'র মতো বই আছে। 'মূলত পাকস্তানী সহযোগীদের লক্ষ্য ছিল তৎকালীন ক্ষমতার সঙ্গে সংযুক্ত থাকা, সম্পদ লুটের মাধ্যমে আহরণ করা, হত্যা ও ধর্ষণকে জনগণকে দমিত করার জন্য মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা। 'তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত শান্তি কমিটি পাক হানাদার বাহিনীকে পথ দেখিয়েছে, বাঙালী নারীদের তাদের হাতে তুলে দিয়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সদস্য ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নারী-পুরুষদের হত্যা-ধর্ষণ করেছিল তারা। তারা পাকিস্তানী সেনাসদস্যদের প্ররোচনা ও প্রণোদনা দিয়েছিল। আর এসবের নেতৃত্বে ছিলেন গোলাম আযম। এর প্রমাণ আমরা পত্রপত্রিকায় পাই।' অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন তাঁর জবানবন্দীতে বলেন, আজকে ৪০ বছর পরেও যখন শান্তি কমিটির সদস্য রাজাকারদের এবং আলবদরদের হত্যাযঞ্জ লুটপাট, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগÑ এগুলোর কথা স্মরণ করি, তখন গা শিউরে ওঠে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রন্থ লিখেছি। আমি প্রধানত মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তির ওপর বেশি পড়াশোনা করেছি। কেননা আমার সব সময় একটি কৌতূহল ছিল পশ্চিম পাকিস্তানী ছাড়াও বাঙালী যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, তাদের মনোজগত কেমন ছিল। কেননা এ ধরনের নিষ্ঠুর কর্মকা- একই জাতির মানুষের একই ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে কাজ করে। সেটা মীমাংসা আমরা করতে পারিনি।  জবানবন্দীতে তিনি আরও বলেন, আমরা যারা তখন দেশে ছিলাম, তারা দেখেছি, শুনেছি এ সব বাহিনী (রাজাকার, আলবদর, শান্তিকমিটি) নৃশংস কর্মকা-। পরবর্তীকালে যখন গবেষণা করতে গেছি, তখন এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জেনেছি। আমরা অনেকে এ সব কমিটি বা বাহিনীর কর্মকা-ের মধ্যে সূক্ষ্ম তফাৎ করার চেষ্টা করি। মূলত এদের সবার লক্ষ্য ছিল একই। সেটা হচ্ছে তৎকালীন ক্ষমতার সঙ্গে সংযুক্ত থাকা। সম্পদ লুটের মাধ্যমে আহরণ, জনসাধারণকে দলিত করার জন্য মধ্যম হিসেবে ধর্ষণ ও হত্যা করা। যদি শান্তি কমিটির কথাই ধরি, দেখব শান্তিকমিটি কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। শান্তিকমিটির লোকেরা পাকিস্তান হানাদার বাহিনীদের বিভিন্ন জায়গায় পথ দেখিয়ে নিয়ে গেছে। হত্যা করেছে এবং সম্পত্তি লুট করেছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ কর্মী ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের। তাদের এই সব কাজে প্ররোচনা ও প্রনোদনা দিয়েছে গোলাম আযম।  তিনি জবানবন্দীতে বলেন, এর উদাহরণ হিসেবে আমরা পাই তৎকালীন পত্রপত্রিকায়। আমরা যদি তুলনামূলকভাবে আলোচনা করি তা হলে দেখব গোলাম আযমের বক্তৃতাই বেশি প্রকাশিত হয়েছে। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ্য, আমার যতটুকু মনে পড়ে তার বক্তৃতারমূল ধরন ছিল কয়েকটি ১. দুষ্কুতকারী অর্থাৎ মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযুদ্ধের সমর্থকদের প্রতিহত করা ২. তাদের ভাষায় দেশপ্রেমিক পাকিস্তানী এবং পািকস্তানী সহকারীদের সমর্থন করার আহ্বান। ৩. এই সব দেশপ্রেমিককে প্রয়োজনে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিতকরণ।  গবেষক মুনতাসীর মামুন জবানবন্দীতে বলেন, যদি রাজাকার বাহিনীর কথায় আসি, দেখা যাবে রাজাকার বাহিনী প্রথম জামায়াতের কর্মীদের নিয়ে শুরু হলেও পরবর্তীতে পাকিস্তানী সরকার তাদের এক ধরনের আইনী কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসে। তারাও একইভাবে পাকিস্তানী সেনাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে গেছে। সহায়তা করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করেছে। এবং করতে সহায়তা করেছে। একইভাবে হত্যা, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগে অংশগ্রহণ করেছে। ঐ সময় নথিপত্র থেকে আমরা দেখি বিশেষ করে যারা ধর্ষিত হয়েছে। তা দেখলে অবাক হতে হয়, মানুষ কিভাবে এ কাজ করতে পারে। নারী পুনর্বাসন কেন্দ্রে যে সব ধর্ষিতাদের আনা হয়েছে। এদের নিয়ে সম্প্রতি কিছু বইও বের হয়েছে। যা বর্ণনা করা কঠিন।  আলবদর বাহিনীর ভূমিকা ছিল সুনির্দিষ্ট। শান্তি কমিটি বা রাজাকাররা নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে। ধর্ষণ করেছে। কিন্তু আলবদর প্রধানত পেশাজীবীদের (বুদ্দিজীবীসহ) হত্যা করেছে। এর কারণ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসীদের মধ্যে যাতে একটা প্রবল শূন্যতা সৃষ্টি হয়। আলবদর বাহিনী প্রধানত জামায়াতের কর্মী দ্বারাই গঠিত হয়েছিল। যার প্রধান ছিলেন জামায়াতের বর্তমান আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী। সুতরাং একটা বিষয় পরিষ্কার যারা পাকিস্তানী সেনাবাহিনী দোসর হিসেবে কাজ করেছে, এর মধ্যে ব্যক্তি দল অন্তর্ভুক্ত।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুনতাসির মামুন জবানবন্দীতে বলেন, আমি যখন আলবদরদের কথা বলেছিলাম, তখন তারা নির্দিষ্ট পেশাজীবী বা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করতে চেয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেহেতু ছিল আন্দোলনের সূতিকাগ্রহ। যে জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের ছাত্র শিক্ষকদের প্রতি পাকসেনা এবং তাদের সহযোগী রাজনৈতিক দলগুলোর আক্রোশ ছিল বেশি। জেনারেল রাও ফরমান আলীর সাক্ষাতকারে নিজেও আমাকে এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, আমার শিক্ষকদের মধ্যে অনেকেই পাকিস্তানী বাহিনী হত্যা করেছে। ২৫ মার্চের রাত থেকে পরবর্তীকালে আলবদর বাহিনীর সদস্যরা আমাদের বা আমার শিক্ষকদের হত্যা করেছে। এরমধ্যে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িত ছিল। বিশেষ করে আমার শিক্ষক অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিনের কথা এ মুহূর্তে আমার মনে পড়ছে। আলবদরের অধিকাংশই ছিল ছাত্র শিবিরের কর্মী। সেহেতু বলছি ছাত্ররা শিক্ষকদের হত্যা করতে পারে এটা আমি ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে অন্য কোথাও দেখিনি। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতায় বলে আমার প্রায় ৪ দশক শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত। আমার ছাত্ররা বিভিন্ন মতাদর্শে বিশ্বাসী। কিন্তু কখনও তারা শিক্ষক হিসেবে আমাকে অসম্মান করেনি। রাজনৈতিক মতাদর্শের হোক না কেন যখন ছাত্র হিসেবে আমার কাছে এসেছে, আমি তাদের প্রতি সমভাবে আচরণ করেছি। সে কারণেই বললাম কতটা মনুষ্যত্ব বিসর্জিত হলে শিক্ষককে মিথ্যা কথা বলে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে হত্যা করতে পারে। ইতিহাসে উদাহরণ পাওয়া কঠিন। এ সময় মুনতাসির মামুনের চোখে পানি এসে যায়। তিনি ভারাক্রান্ত হয়ে চেয়ারে বসে পড়েন। ক্ষণিকের জন্য হলেও এজলাসে নীরবতা নেমে আসে।  প্রথম সাক্ষী হিসেবে গবেষক মুনতাসির মামুন বলেন, এই মুহূর্তে একটি বই ও দলিলের কথা মনে পড়ছে। লেখক রাজশাহী বিশ্বদ্যিালয়ের সাবেক গণসংযোগ কর্মকর্তা ও রেজিস্ট্রার সম্ভবত নিজাম উদ্দিন। বইয়ের নাম 'যখন ক্রীতদাস'। প্রসঙ্গত উল্লেখ করছি একটি কারণে এই যে, শিরোনামের মাধ্যমে অবরুদ্ধ বাংলাদেশের মুক্তিকামী বাঙালীদের অবস্থা কি ছিল তা স্পষ্ট করে লেখা আছে। অর্থাৎ মুক্তিকামী মানুষ ক্রীতদাস ছিল। তাদের ক্রীতদাস হতে বাধ্য করা হয়েছিল। হত্যার কথা বলেছি, আগেও বলেছি ক্রীতদাস কিভাবে ছিলাম। এটি একটি মাধ্যম ছিল তার সঙ্গে পাশবিক নির্যাতন, ধমান্তরিত করান, দেশান্তরিত করা, যার কিছুই এই অধ্যায়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। ক্রীতদাসের কোন ইচ্ছা থাকে না। এই অবস্থা সৃষ্টির মাধ্যমে বাঙালীদের কোন ইচ্ছা, ইচ্ছামাফিক কাজ করতে পারত না। ইতিহাসবিদ মুনতাসির মামুন আরও বলেন, আরেকটি দিক উল্লেখ করতে চাই। জেনারেল নিয়াজীর যেটি আমার বই মুক্তিযুদ্ধের ছিন্ন পত্রে উল্লেখ করেছি নিজামীর দলিলে উল্লেখ করেছিলাম, যে পাকিস্তানীদের উচিত হবে বাঙালীদের সংখ্যালঘুতে পরিণত করা। এখন আমার যদি সেসব রাজনীতিবিদ যাদের কথা উল্লেখ করেছি সেই সব কমিটি ও বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা এই ২টি লক্ষ্য পূরণে পাকিস্তানী জান্তাকে সহায়তা করে গেছে। সংখ্যালঘুদের কথা উল্লেখ করলাম, অর্থাৎ বাঙালীদের মাইনরিটি করা এর মধ্যে একটি ছিল মুসলমান ছাড়া অন্যান্য ধর্মাবলম্বী বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়কে নিচিহ্ন করার। তিনি জবানবন্দীতে বলেন, এ ক্ষেত্রে তারা সিসটিমেট্রিক কাজ করে গেছে। তার প্রমাণ প্রায় এক কোটি লোকের দেশ ত্যাগ। যারা ছিলেন, তাদের পাকিস্তানী বাহিনী এবং সহযোগীরা নির্বিচারে হত্যা করেছে। দেশজুড়ে অসংখ্য বধ্যভূমি-এর প্রমাণ এবং হত্যার আগে এবং হত্যা না করলেও যে পরিমাণে নির্যাতন করেছে তা অকল্পনীয়। এই নির্যাতনের ওপরে অসংখ্য বই প্রকাশিত হয়েছে। বলা হয় ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আমার গবেষণায় আমার ধারণা হচ্ছে এই সংখ্যা আরও বেশি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় নদীর পাশে যেখানে ব্রিজ আছে, সেখানে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে। যাতে বধ্যভূমিতে স্থান না পায়। এক্ষেত্রে একটি উদাহরণ দিচ্ছি। একবার বারিশালে উজিরপুরের এক প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়েছিলাম। প্রধানত সেখানে পানচাষীরা বসবাস করে। তারা আমাকে জানিয়েছে রাজাকাররা পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর পথ দেখিয়ে ঐ গ্রামে গণহত্যা সংঘটিত হয়। গণহত্যার বিস্তৃতটা তৃণমূল পর্যায়ে কিভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। ঐ গণহত্যা হলেও কোন বধ্যভূমিতে দেখা যায়নি। এভাবে প্রতিটি গ্রামে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। যাদের লাশ নদীতে ফেলে দেয়া হয়, তাদের লাশ গণকবরে স্থান পায়নি।  গোলাম আযমের বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দীতে মুনতাসির মামুন বলেন, শরণার্থীদের দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিল। তার একমাত্র কারণ তাদের সম্পত্তি দখল করা। এই দলিলপত্রে দেখা যায় যারা শরণার্থী হয়ে গেছে বা যাদের হত্যা করা হয়েছে তাদের বাড়ির আবেদনকারী বা শান্তি কমিটি সদস্যদের দিয়ে দেয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। ফলে অবরুদ্ধ দেশে এই যে চিত্র আমরা দেখি তার কারণ একমাত্র পাকিস্তানী বাহিনী নয়। এর সহয়োগী শক্তিরাও অর্থাৎ রাজনৈতিক দলের জন্য দায়ী। কেন না তাদের পরিকল্পনায় পরামর্শে শান্তি কমিটি রাজাকার বাহিনী আলবদর ইত্যাদি গঠিত হয়েছিল। এই সব রাজনৈতিক দলের কথা আগেও উল্লেখ করেছি। জামায়াতে ইসলামী ছিল প্রধান এবং এর দায়দায়িত্ব জামায়াতের নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে তৎকালীন আমির গোলাম আযম ওপর বর্তায়। গণহত্যা ছাড়াও ধর্মান্তরিত করা নারী নির্যাতনের বিষয়টি উল্লেখ করতে চাই। আমার কাছে যেসব কাগজপত্র প্রমাণ আছে বা যে সব বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ১৩ থেকে ২০ বছরের বালিকা এবং তরুণীদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গ্রামে গ্রামের যখন ইচ্ছা হয়েছে বাড়ি ঘেরাও করে তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। ক্যাম্পে নিয়ে গেছে। অনেক বিবরণে দেখি রাজাকার বাহিনীর তাদের সহযোগী হয়ে বাড়ি ঘর চিহ্নিত করেছে এবং ধর্ষণ করেছে। ক্যাম্পে নিয়ে যেতে সহায়তা করেছে। ১৩/১৫ বছরে বালিকাও জানিয়েছে প্রতিদিন ক্যাম্পে ৪/৫ বার তাদের ধর্ষণ করা হতো। আমি আর বিস্তারিত বলতে চাই না। বললে ঘুমাতে পারবেন না।  তিনি বলেন, আমি বুঝতে অক্ষম ভাবতে পারি না। যে বাঙালী রাজনীতিবিদরা যারা পাকিস্তানী বাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিলেন তারা কিভাবে এই কাজে পরামর্শ দিলেন। সহায়তা দিলেন। তাদের তো স্ত্রী কন্যা ছিল। নারী ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতনকে ব্যবহার করা হয়েছে বাঙালী মুক্তিকামী মানুষকে ক্রীতদাস করে রাখার জন্য। আমরা শরণার্থী শিবিরের কথা বলি, শরণার্থী শিবিরে কত মানুষ একত্রে করা গেছে তা উল্লেখ করি না। সামগ্রিকভাবে এ সমস্ত কর্মকা- গুরুতর অপরাধের পর্যায়ে পড়ে এবং তারা এ সব কর্মকা-ে এত বদ্ধপরিকর ছিল যে, বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরও গোলাম আযম পূর্ব পকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি গঠন করেন। অবরুদ্ধ বাংলাদেশে একাত্তর সালে যা ঘটেছে তা আমি যদি দিনের পর দিন বর্ণনা করি তাও শেষ হবে না। আমার জীবনকালেও এত অশ্রু এত রক্ত এত বেদনা সম্মুখীন আর কখনও হয়নি। হতে চাইও না। আল্লাহর কাছে আমার এই প্রার্থনা। সাক্ষী পরে আসামি গোলাম আযম উপস্থিত আছেন বলে উল্লেখ করেন। জেরা।জবানবন্দী শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম প্রথম সাক্ষী মুনতাসির মামুনকে জেরা করেন। জেরার অংশ নিম্নে দেয়া হলো : প্রশ্ন : একাত্তর সালে আপনি অনার্সের কোন্ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। উত্তর : তৃতীয় বর্ষের।  প্রশ্ন : আপনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। উত্তর : না। বুঝেই থাকেন যদি অস্ত্র হাতে যুদ্ধ তা করিনি অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছি। সংশ্লিষ্ট কাজে যুক্ত ছিলাম। প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধের আগে বা পরে গোলাম আযমের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ হয়েছে।  উত্তর : না।প্রশ্ন : আপনি গোলাম আযমের সে সভায় বক্তৃতার কথা বলেছেন , এ ধরনের সভায় উপস্থিত ছিলেন। উত্তর : না। প্রশ্ন : জামায়াতের কোন্ সভায় উপস্থিত ছিলেন। উত্তর : না। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে যোগদান নিরাপদ নয়।  প্রশ্ন : বিশ্বদ্যিালয়ের ছাত্র থাকাকালে কোন্ ছাত্র সংগঠনে সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। উত্তর : ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে। প্রশ্ন : ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্য ছিলেন। উত্তর : না। প্রশ্ন : স্বাধীনতার পূর্বে সর্বশেষ কবে ডাকসু নির্বাচন হয়।  উত্তর : স্মরণে নেই। প্রশ্ন : আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর কোন্ সালে নির্বাচন হয়েছিল। উত্তর : স্মরণে নেই। প্রশ্ন : স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে কবে আদমশুমরি হয়েছিল। উত্তর : বলতে পারব না ।প্রশ্ন : একাত্তর সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জনসংখ্যা সাড়ে সাত কোটি ছিল।  উত্তর : তাই বলেছি।প্রশ্ন : কোন্ সালে গবেষণা করেন। উত্তর : বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর পরই। ১৯৭৪ সাল। প্রশ্ন : আপনি ১৯৭৪ সালের আগ থেকে দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রায় লিখতেন। উত্তর : জি। প্রশ্ন : গোলাম আযম পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি গঠন করে এটা সর্বপ্রথম কবে জানেন।  উত্তর : যখন উনি কাজটি করলেন তখনই জেনেছি। প্রশ্নœ: কখন গঠন করেছিলেন। উত্তর : ১৯৭৩ সালে। প্রশ্ন : এই সংবাদ সংবাদপত্রের মাধ্যমে না রেডিও টিভির মাধ্যমে বা কোন টেলিফোনের মাধ্যমে পেয়েছিলেন। উত্তর : স্মরণে নেই।  প্রশ্ন : গোলাম আযম পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি গঠন করেছিল এর কোন দৃশ্যমান কাগজ আছে। উত্তর : নেই।প্রশ্ন : কতজনের কমিটি হয়েছিল বলতে পারেন। উত্তর : না ।প্রশ্ন : কমিটির সম্পাদক কে ছিলেন। উত্তর : বলতে পারব না। কারণ আমাদের কাছে গোলাম আযম মুখ্য ছিল।  প্রশ্ন : গোলাম আযম পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি গঠন করেছিল এই মর্মে বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালের পূর্বে রির্পোট সংগ্রহে আছে। উত্তর : আমার সংগ্রহে নেই। খুঁজলে পাব। প্রশ্ন : পল্লবীতে কতদিন ছিলেন। উত্তর : '৬৯ সালের শেষের দিকে থেকে একাত্তরের ২৯ মার্চ পর্যন্ত।  প্রশ্ন : এটা ভাড়া বড়ি ছিল। উত্তর : চাচার বাড়িতে থাকতাম। বাড়িটি চাচার নিজস্ব। প্রশ্ন : বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর গণপরিষদ গঠন হয়েছিল। '৬৯ সালে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের অন্তর্ভুক্ত করা হয। তবে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল তাদের বাদ দেয়া হয়।  উত্তর : জি। প্রশ্ন : জেনারেল নিয়াজীর দলিল পেয়েছিলেন। এটা কি তার হাতের লেখা।উত্তর : টাইপ করা । প্রশ্ন : এতে কোন স্বাক্ষর ছিল। উত্তর : না। প্রশ্ন : এই দলিলটা কার কাছ থেকে পেয়েছিলেন। উত্তর : রাজশাহী হেরিটেজ নামে আর্কাইভ থেকে।  প্রশ্ন : হেরিটেজ কোথায়। উত্তর : রাজশাহীর কাজলায়। এটা অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানের। এ মামলায় সাবেক সেনাপ্রধান কে এম শফিউল্লাহ, ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক ডা. এম এ হাসান এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামালেরও এই মামলায় সাক্ষ্য দেয়ার কথা রয়েছে। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের পরিকল্পনা, ষড়যন্ত্র, উস্কানি, পাকিস্তানী সেনাদের সাহায্য করা এবং হত্যা-নির্যাতনে বাধা না দেয়ার ৫ ধরনের অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল ১৩ মে গোলাম আযমের বিচার শুরুর আদেশ দেয়। গোলাম আযমের আইনজীবীরা মামলাটি অন্য ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করলেও ১৮ জুন তা খারিজ করে দেয় আদালত। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আমলে নিয়ে ১১ জানুয়ারি গোলাম আযমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। ওই দিনই তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়; তারপর থেকে তিনি সেখানেই আছেন।
সোমবার, ২ জুলাই ২০১২, ১৮ আষাঢ় ১৪১৯



Related:
রাজাকার-আলবদর বাহিনী গড়ার হোতা গোলাম আযম:

১৯৭২ সালে গোলাম আযম লন্ডনে 'পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি' গঠন করেন এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্র উচ্ছেদ করে আবার এই ভূখন্ডকে পাকিস্তানের অংশে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করেন।

থেমে থাকেনি গোলাম আযম:
http://www.news-bangla.com/index.php?option=com_content&task=view&id=8983&Itemid=53
দেশ স্বাধীনের পরও পূর্ব-পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি গঠন করে স্বাধীনতা বিপন্নের ষড়যন্ত্র করেছিল ঘাতক গুরু গো'আযম :
http://www.al-ihsan.net/FullText.aspx?subid=4&textid=2812

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা ও গণহত্যার প্রতীক':


আলবদর বাহিনী প্রধানত জামায়াতের কর্মী দ্বারাই গঠিত হয়েছিল
 ইসলামী ছাত্র সংঘ' নাম পাল্টিয়ে 'বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির' নামে যাত্রা শুরু করে:

শিবিরের আমলনামা ১

'ছাত্র সংঘ' থেকে 'ছাত্র শিবির'


শিবিরের আমলনামা ২

খুনের আগে তবারকের মুখে প্রস্রাব করে শিবিরকর্মীরা

শিবিরের আমলনামা ৩

ইতিহাসের ভয়ংকর হত্যাকাণ্ড