লাবলু আনসারজেএফকে বিমানবন্দর থেকে
নিউ ইয়র্ক, সেপ্টেম্বর ২৩ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- বিমানবন্দরে ব্যাপক হট্টগোলের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্র সফর শুরু হয়েছে।
নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি (জেএফকে) বিমানবন্দরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভের মধ্যে রোববার স্থানীয় সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে পৌঁছান শেখ হাসিনা।
ওই সময় প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে জড়ো হওয়া আওয়ামী লীগ সমর্থকরা মুহুর্মূহু স্লোগান দিচ্ছিল। অন্যদিকে কালো পতাকা নিয়ে জড়ো হয় বিএনপি সমর্থকরা।
বিমানবন্দরে দুই পক্ষের অবস্থানের কারণে বিপুল সংখ্যক দাঙ্গা পুলিশ মাঝখানে অবস্থান নেয়। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে বিমানবন্দর থেকে গাড়িতে চড়ে হোটেলে যান শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্ক গেছেন প্রধানমন্ত্রী। আট দিনের সফরে ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘের বার্ষিক সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেবেন।
শেখ হাসিনার এই সফরকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে কদিন ধরে প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছিল। দুই বছর আগে একই ধরনের সফরে সংঘর্ষ ঘটায় তৎপর ছিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও।
ফলে নিরাপত্তার কড়াকড়ির কারণে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যেমন শেখ হাসিনার দেখা পাননি। তেমনি কালো পতাকা নিয়ে ভেতরে ঢুকতে পারেননি বিএনপি, তারেক পরিষদ ও যুবদলের নেতা-কর্মীরাও।
শেখ হাসিনা বিমানবন্দরে নামার পরপরই বাইরে পাল্টাপাল্টি স্লোগানে তুমুল হট্টগোল শুরু হয়। দুই পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা থেকে হাতাহাতির উপক্রম হলে নিরাপত্তা রক্ষীরা দুই পক্ষকে থামায়।
কয়েকশ পুলিশ দুই পক্ষকেই ঘিরে রাখে। শুধু তাই নয়, শেখ হাসিনাকে বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিমানবন্দরে অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে এরাইভাল টার্মিনালের সব ফটক বন্ধ করে দেয়া হয়। খোলা রাখা হয় একটিমাত্র ফটক, তাতেও ছিল কড়া পাহারা, সাংবাদিকদেরও ছাড় দেয়া হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরাইভাল টার্মিনালের বিশেষ ফটক দিয়ে হোটেলে রওনা হওয়ার অন্তত ১০ মিনিট পর সবাই তা জানতে পারেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এ কে এ মোমেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার ব্যাপারটি তদারকি করছে জাতিসংঘ। তারা যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই ঘটছে সবকিছু।"
বিমানবন্দরে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপুমনি, এ কে এ মোমেন ও যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের।
দু'বছর আগে জেএফকে বিমানবন্দরে শেখ হাসিনাকে নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে রক্ষক্ষয়ী সংঘাত হয়েছিল। সে কারণেই এবার নিরাপত্তার কড়াকড়ি ছিল বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক নিজাম চৌধুরী।
বিমানবন্দরে শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানাতে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সহসভাপতি আকতার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, নিউ ইয়র্ক আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরনবী কমান্ডার, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।
এই কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্দিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। তাই তাকে সাদর সম্ভাষণ জানানোর দায়িত্ব হচ্ছে প্রতিটি বাংলাদেশির।
গত সাড়ে ৩ বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের জন্য শেখ হাসিনাকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ২৬ সেপ্টেম্বর 'নাগরিক সংবর্ধনা' দেয়ার প্রস্তুতিও নিয়েছে।
অন্যদিকে শেখ হাসিনাকে কালো পতাকা দেখাতে বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন আব্দুল লতিফ স¤্রাট, গিয়াস আহমেদ, জিল্লুর রহমান জিল্লু, মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, আকতার হোসেন বাদল, গোলাম ফারুক শাহীন, এম এ বাতিন, আবু সাঈদ আহমেদ, বেলাল মাহমুদ, জসীমউদ্দিন, এম এ খালেক প্রমুখ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/এইচএএইচ/এমআই/২১৫৫ ঘ.