সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের নেপথ্য কারিগর কারা? আরিফ জেবতিক
এই লেখাটি যখন লিখছি তখন কক্সবাজার জেলার রামুতে ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের হাত থেকে সংখ্যালঘুদের রক্ষা করতে সেখানে চলছে ১৪৪ ধারা। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে, রাতভর তাণ্ডবের পর প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে এগিয়ে এসেছে সকালে। খবরে জানা যাচ্ছে, ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার তথাকথিত অভিযোগে কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধবসতিতে রাতভর হামলা ও তাণ্ডব চালিয়েছে উগ্রপন্থীরা।
শনিবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত চলা এ হামলায় রামু উপজেলার সাতটি বৌদ্ধ মন্দির, প্রায় ৩০টি বাড়ি ও দোকান পুড়ে দেওয়া হয়েছে। হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে আরো শতাধিক বাড়ি ও দোকানে।
ঘটনার বিবরণ থেকে স্পষ্ট, ফেসবুকে কে বা কারা ধর্ম অবমাননামূলক একটি ছবি পোস্ট করলে রামুর একদল ধর্মীয় উগ্রপন্থী এর জন্য সেখানকার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এক যুবকের নাম প্রচার করে এবং তার প্রতিক্রিয়ায় বৌদ্ধদের উপাসনালয় এবং বসতিতে আক্রমণ করে।
কোনো এক অদ্ভুত কারণে আমরা বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনকে এড়িয়ে যাচ্ছি, যে পরিমাণ মনোযোগ এই ইস্যুতে দেওয়া দরকার মিডিয়া, সুশীল সমাজ কিংবা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সে পরিমাণ মনোযোগ এখানে দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু আমরা যতই অন্ধ হয়ে থাকি না কেন, প্রলয় রোধ করা যাবে না। দেশে আমরা এসবকে যতই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করি, আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় এ ধরনের খবরগুলো অনেক বেশি ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে প্রকাশ করা হয়। এতে করে মুসলিম প্রধান উদার ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের পরিচিত বহির্বিশ্বে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উল্লেখ করা প্রয়োজন, এমন একসময় রামুতে এই হামলা হয়েছে যখন দেশের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে বিশ্বশান্তির জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন।
গত কয়েক মাসে উপর্যুপরি কয়েকটি ঘটনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, এসব হামলার কিছু নির্দিষ্ট প্যাটার্ন আছে। যেসব স্থানে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে, সেসব এলাকায় জামায়াত-শিবির, হিযবুত তাহ্রীরসহ বর্তমানে চাপে থাকা ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর রাজনৈতিক যোগাযোগ ও শক্তি তুলনামূলক বেশি। আশ্চর্যজনকভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রশাসন এগিয়ে এসেছে ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর। কিন্তু সরকার বিষয়টি কখনোই খতিয়ে দেখেনি যে মাঠপর্যায়ের যেসব কর্মকর্তা ধর্মীয় অসহিষ্ণু ঘটনাগুলো নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছেন, তাঁদের নিয়োগ এবং পূর্বতন সময়ে কোনো রাজনৈতিক যোগাযোগ ছিল কি না। আমার বিশ্বাস, যদি খতিয়ে দেখা যায়, তাহলে এসব কর্মকর্তার অনেকের রাজনৈতিক যোগাযোগ দেখে হতভম্ব হতে হবে।
এর আগে গত আগস্ট মাসে দিনাজপুরের হিলিতেও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বসতিতে নগ্ন আক্রমণ হয়েছে। ৪ আগস্ট বলাই বাজারে মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে রাজাপুর ও মাজাপাড়া গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা এবং লুটপাট ও বাড়িঘরে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। হিলির এ ঘটনার সঙ্গে চিরিরবন্দর উপজেলা প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তার ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা। জানা গেছে, প্রশাসন সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করার জন্য মাইকে যা প্রচার করে তা ছিল উসকানিমূলক, উদ্দেশ্যমূলক এবং আদতে হামলা সংগঠনের পক্ষে এক বড় সহায়তা।
প্রশাসনের একশ্রেণীর কর্তাব্যক্তিরা যে এসব কাজে ইন্ধন দিচ্ছেন এর আরেকটি উদাহরণ হতে পারে ঠিক আগের মাসের বাগেরহাটের ঘটনাটি। ৩১ জুলাইয়ে বাগেরহাটের ফকিরহাটে হিন্দু অধ্যুষিত একটি গ্রামে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ছয়জন আহত হয়েছে। নলধা মৌভোগ ইউনিয়নের নলধা ব্রহ্মডাঙ্গা গ্রামে এ হামলার পর ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবপ্রসাদ পাল পুলিশ মোতায়েনের সুপারিশ করলেও ফকিরহাট থানার ওসি লিয়াকত হোসেন সাংবাদিকদের জানান যে সেখানে পুলিশ মোতায়েনের পরিস্থিতি হয়নি!
একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে যে দীর্ঘদিন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বড় কোনো ঘটনা না ঘটলেও ইদানীং হরহামেশা এমনটি ঘটছে। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা যায় মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে একশ্রেণীর লোক হঠাৎ করে সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং উপাসনালয়গুলোয় হামলা করছে। এসব ক্ষেত্রে প্রশাসনের ভূমিকা 'ডাক্তার আসিবার পূর্বে রোগীটি মারা গেল' ধরনের। এসব হামলার সঙ্গে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংসের চক্রান্ত এবং বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধের কোনো সংযোগ আছে কি না তা সরকারকে বিশেষ যত্ন সহকারে খতিয়ে দেখতে হবে। সাম্প্রদায়িক হামলার এসব ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ভাবলে পার পাওয়া যাবে না। শুধু ২০০১ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার কথা বলে সরকারি দল আওয়ামী লীগ হয়তো মাঠ গরম করতে পারবে, কিন্তু যদি বর্তমানের এসব হামলার সুষ্ঠু বিচার না হয় এবং এ প্রবণতা বন্ধ করা না যায়, তাহলে দেশের যে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে সেটি ওই হাওয়াই বক্তৃতা দিয়ে পূরণ করা যাবে না।
http://www.kalerkantho.com/index.php?view=details&archiev=yes&arch_date=02-10-2012&type=gold&data=College&pub_no=1020&cat_id=3&menu_id=151&news_type_id=1&index=5#.UG0LsZjA_LY
Related:রামুর ঘটনায় বিপুল টাকার লেনদেন!
হামলাকারীদের মায়াকান্না!http://www.dailykalerkantho.com/?view=details&type=gold&data=Income&pub_no=1021&cat_id=1&menu_id=13&news_type_id=1&index=2
Also Read:
ফাঁস হচ্ছে নেপথ্য তথ্য
০ যুবদল ও এমপির জড়িত থাকার সেলফোন কললিস্ট মিলছে
০ ৪৮ ঘণ্টায় প্রণীত নীলনক্সা
Wednesday, October 3, 2012
[mukto-mona] সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের নেপথ্য কারিগর কারা?
বৌদ্ধ জনপদে হামলাবৌদ্ধদের কাছে গিয়ে এখন
০ সর্বমোট ২৭ বৌদ্ধ বিহার ও মন্দির ভস্মীভূত
****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration:
Call For Articles:
http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68
http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585
****************************************************
VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/
****************************************************
"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
-Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190
Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe
__,_._,___