Banner Advertiser

Monday, May 13, 2013

[mukto-mona] রাজাকার, রাজাকারপন্থী, রাজাকারের বাচ্চাদের কর্তৃত্ব এ দেশে আর হবে না ॥ ষষ্ঠ কিস্তি ॥




মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০১৩, ৩১ বৈশাখ ১৪২০
রাজাকার, রাজাকারপন্থী, রাজাকারের বাচ্চাদের কর্তৃত্ব এ দেশে আর হবে না
মুনতাসীর মামুন
॥ ষষ্ঠ কিস্তি ॥
যা সবাই মনে করেছিল অসম্ভব, তাই হলো সম্ভব। বাংলাদেশে তাই বলি দুইয়ে দুইয়ে কখনও চার হয় না। একটা অনিশ্চয়তা থেকে যায়। ভোরে ঢাকাবাসী স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে।
নিরাপত্তা বাহিনী যখন শাপলা চত্বর মুক্ত করতে যায় তখন সব টেলিভিশন কর্মী, সংবাদকর্মীরা সঙ্গে ছিলেন। চারটি লাশ পাওয়া যায়, যা হেজাবিরা স্টেজের কাছে রেখেছিলেন পরে জনমনে উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য। একজন পুলিশ মারা যায়। মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনকারী হিসেবে খ্যাত অধুনা হেজাবিদের মুখপত্র নয়াদিগন্তের খবর অনুসারে পুলিশ-র‌্যাব হেজাবিদের পালানোর জন্য পথ করে দিয়েছিলেন বা কিভাবে পালাতে হবে সে পথ নির্দেশ করে দিচ্ছিলেন। তাদের খবর অনুযায়ী সারাদিনে শহরে মৃত্যুর সংখ্যা ১৬। 
পরে সিদ্ধিরগঞ্জ-কাঁচপুরে মাইক দিয়ে মিথ্যা প্রচার করলে আবার সংঘর্ষ বাঁধে এবং তাতে কিছু মৃত্যু হয়। আমার এক সহকর্মী, যার বাড়ি রাউজানে, জানালেন, তাদের গ্রামের মসজিদের ইমাম তাঁকে ফোন করেছিলেন। ইমামকে টাকা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল। বিভিন্ন জায়গায় হেজাবিরা এভাবে টাকা দিয়ে লোক পাঠায়। অনেক মাদ্রাসা ও এতিমখানা থেকে অভিভাবকদের না জানিয়ে কিশোর ছাত্রদের ঢাকায় নিয়ে আসে। সেই ইমাম কাউকে না জানিয়ে ঢাকায় আসেন এবং শহীদ বা গাজী না হয়ে পাজি হিসেবে এক দৌড়ে যাত্রাবাড়ী আসেন। সকালে গ্রামে ফোন করে জানেন, না জানিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করায় তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ইমাম এখন তদবির করছেন চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য। 
হেফাজতীরা পিছু হটলেন কেন? কারণ হেফাজতীদের নেতারা প্রচুর টাকা খেয়েছিলেন। তাঁদের কর্মীদের মাঝে সে টাকা ভাগ করে দেননি। কোন কোন ক্ষেত্রে যাওয়া-আসার খরচ দিয়েছেন। টাকা খেয়ে একটা পর্যায় পর্যন্ত আন্দোলন করা যায়। টাকা খেয়ে ইসলাম নিয়ে তারা আন্দোলন শুরু করেছিলেন। কিন্তু, কোরান পোড়ানো, লুটপাট আর আগুন লাগিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ করার পর টাকা খেয়েও আর আন্দোলন করতে পারবেন না। ইতোমধ্যে বাবুনগরীদের বিরুদ্ধে টাকা খেয়েও টাকা আত্মসাতের মামলা হয়েছে। 
ইসলামের হেফাজত করার বিধান নেই। সৃষ্টিকর্তাই বলেছেন, তিনি এর হেফাজত করবেন। কিন্তু রসুল (স.) ও চার খলিফার পর ইসলামের স্বঘোষিত হেফাজতকারীরা মাঠে নেমে পড়েন এবং ইসলাম শান্তির ধর্ম থেকে অশান্তির ধর্মে পরিণত হয়। নানাজনের উদ্দেশ্যমূলক ব্যাখ্যায় নবীর (স.) শান্তির ইসলাম তিরোহিত হয়। এ অবস্থা চলে নবম শতক পর্যন্ত। আব্বাসীয় যুগে খলিফা মামুন তাঁর রাজত্বের শেষ দিকে এ ভুল বুঝতে পারেন। আমীর আলী লিখেছিলেন, 'মানুষের মনকে অপরিবর্তনীয় মতবাদের বন্ধনে আবদ্ধ করার ফলে মামুন আগেই বুঝতে পেরেছিলেন। রাজত্বের শেষ চার বছর রাষ্ট্রকে ধর্ম-প্রভাব থেকে মুক্ত করতে এবং প-িতবর্গ ও শাস্ত্রজ্ঞগণ মানুষের বুদ্ধিকে যে শৃঙ্খলে আবদ্ধ করেছিলেন তা ছিন্ন করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিলেন।' এ মুতাজিলাদের বা যুক্তিবাদীদের ধারণা ছিল এরকম। মামুন মুতাজিলা মতবাদ গ্রহণ করেন যার মূল কথা হলোÑ'মানুষ ভাল ও মন্দের বিচারে স্বাধীনতার অধিকারী...আল্লাহর গুণাবলী তাহার সত্তা থেকে পৃথক নয় এবং কোরান সৃষ্ট বস্তু। মানুষের কার্যাবলী সম্পর্কে কোন চিরস্থায়ী বিধি নেই, যে স্বর্গীয় অনুশাসনসমূহ মানবের আচরণকে নিয়ন্ত্রিত করে তা উন্নতি ও পরিবর্ধনেরই ফল এবং বিশ্বনিয়ন্তা সমগ্র বিশ্বকে যে পরবর্তনের অধীন করেছেন তাও ঐ পরিবর্তনের অধীন।'
এর ফলে বিজ্ঞান, শিক্ষা, সাহিত্যে অভাবনীয় উন্নতি হয়। এই সময়টুকুকে ইসলামের ইতিহাসে স্বর্ণযুগ বলা হয়। মুসলমানরা যে সব বিজ্ঞানী, দার্শনিক, সাহিত্য সম্পর্কে গর্ববোধ করেন তাঁরা ঐ সময়ই বিকশিত হয়েছিলেন। মুতাজিলাদের প্রভাব বেশিদিন ছিল না। ইমাম আহমদ ইবন হাম্বলের উত্থানের ফলে মুতাজিলারা হটে যান। হাম্বলী অনুসারীদের কারণে পরবর্তীকালে অসহিষ্ণুতা, অবিরত বিশৃঙ্খলা, দাঙ্গা ও রক্তপাত শুরু হয়, যা আজও বহমান। 
পাকিস্তান আমলেও শাসকগণ ইজতেহাদের পথ বন্ধ করে দেয়। গুরুত্ব দেয় তকলিদের ওপর। ইজতেহাদ প্রতিষ্ঠা করতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যায় বাঙালী। বঙ্গবন্ধুর আমলটুকুকে ইজতেহাদের সময় বলা যায়। ১৯৭৫ সালের পর থেকে ইজতেহাদ লুপ্ত হয় এবং তকলিদের প্রভাব বাড়তে থাকে। নানা ব্যক্তি, গোষ্ঠী ইসলামের স্বঘোষিত ঠিকাদার হয়ে দাঁড়ায়, হেফাজত যার নবতম সংস্করণ। আজ ইজতিহাদের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হেজাবিরা। বর্তমান সরকারকে ইজতিহাদের পথই বেছে নিহত হবে এবং এ কারণে প্রয়োজনে যতটা কঠোর হওয়া প্রয়োজন ততটা কঠোর হতে হবে। 

বিএনপি করতে হলে প্রধান যে বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে তা'হলো অবিরত মিথ্যাচার করার ক্ষমতা ও মানুষের প্রধান গুণ লাজলজ্জা বিসর্জন দেয়া। যে যত মিথ্যাচার করতে পারবে সে তত বড় নেতা হতে পারবে। হেফাজতী ঘটনা থেকে কয়েকটি উদাহরণÑ
বিএনপির এক নেতা সাদেক হোসেন খোকাকে দেখলাম ৬ তারিখ সংবাদ সম্মেলনে বলছেন, হাজার হাজার লোক মারা গেছে। সিএনএন, আল জাজিরা বলেছে, আড়াই হাজার লোক মারা গেছে। এর আগে হেজাবিদের তরফ থেকে রটানো হয়েছিল, আট হাজার মারা গেছে। অবাক হলাম, সারারাত টিভি দেখলাম, সংবাদ দেখলাম, কোথাও তো এই সংখ্যা শুনলাম না। তাড়াতাড়ি আল জাজিরা ধরলাম। বাংলাদেশ সম্পর্কিত খবরে বলা হলো মৃতের সংখ্যা ১৪। 
৫ তারিখ মোহনা টেলিভিশনের এক অনুষ্ঠানে ১৯৭১ সালে সুন্দরবন সাব-সেক্টরের অধিনায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে ছিলাম। তিনি শ্রোতাদের এক প্রশ্নের জবাবে জানালেন, সাদেক হোসেন খোকা ও শাহজাহান ওমর (বিএনপি নেতা) টেলিভিশনে বলেছেন, সাঈদীকে তিনি চেনেন, তার সঙ্গে সাঈদীর যোগাযোগ ছিল। জিয়াউদ্দিন জানান, খোকা আরেকটি অনুষ্ঠানে জানান, টেলিফোনে তার সঙ্গে জিয়াউদ্দিনের কথা হয়েছে। জিয়াউদ্দিন জানিয়েছেন, সাঈদীর ব্যাপারে খোকা যা বলছেন [অর্থাৎ সাঈদী যুদ্ধাপরাধী নন] তা সত্য নয়। জিয়াউদ্দিন বললেন, 'এরা দু'জনই ডাহা মিথ্যা বলছেন। তাদের সঙ্গে গত ১০ বছর আমার কোন দেখা- সাক্ষাত নেই। মুক্তিযোদ্ধারা এ রকম মিথ্যাচার কী ভাবে করেন?' ৯ তারিখ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর সঙ্গে দেখা। বাচ্চুকে ঠাট্টা করে জিজ্ঞেস করলাম, 'বাচ্চু তোর জিগরি দোস্ত খোকা এত ডাহা মিথ্যা বলেন কীভাবে? টেলিভিশনে, সংবাদ সম্মেলনে চোখ খোলা রেখে নির্ভয়ে মিথ্যা বলছেন।'
বাচ্চু বললেন, 'খোকা হিসেবে সাদেক হোসেন রাজনীতিতে জয়েন করেছিল। এখন তো তার পরিচিতি হয়ে গেছে সাদেক হোসেন ধোঁকা।'
অর্থাৎ, বিএনপি করলে মিথ্যাচার করতে হয়, ধোঁকাবাজ হতে হয়। 
৬ তারিখ রাতে ২৪টা টেলিভিশনে ২৪টি টক শো হয়েছিল। প্রত্যেকটিতে বিএনপির পাতি নেতা বা সহানুভূতিশীল নেতাদের আনা হয়েছিল। প্রত্যেকে বলতে লাগলেন যে, কমপক্ষে আড়াই হাজার ব্যক্তি মারা গেছেন। অনেক লাশ গুম করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে সঞ্চালক ফুটেজ দেখালেন। ভবি ভুলবার নয়। এক টিভিতে ব্যারিস্টার খোকন এই অভিযোগ তোলার পর তথ্যমন্ত্রী ইনু বললেন, নাম ঠিকানা দেন। খোকন জানালেন, তার প্রত্যেক এলাকার উপজেলায় মানুষ মারা গেছে। ইনু বললেন, নাম ঠিকানা দেন। এক পর্যায়ে খোকন দুটি ছবি দেখালেন। একজন দর্শক পরে জানালেন, ছবিটি নাকি ছিল হাইতির কলেরায় মৃতদের লাশের ছবি। যুক্তিতে না পেরে খোকনের মতো চিৎকার করে ব্যারিস্টার বলতে লাগলেন, গুলি হলো কেন? গুলি হলো কেন?
অর্থাৎ বিএনপি করলে যুক্তি মানা চলবে না, গায়ের জোর দেখাতে হবে। 
এমকে আনোয়ারকে তাঁর সহকর্মীরা জানতেন মাথা খালি আনোয়ার হিসেবে। ইদানীং প্রথম সারির নেতা হওয়ার বাসনায় তিনি বেশি কথা বলছেন। সংবাদ সম্মেলনে এমকে বললেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা দেবাশীষের নেতৃত্বে কোরান পোড়ানো হয়েছে। চিন্তা করুন, বাংলাদেশে হিন্দুরা এখন শুধু নাগরিক হিসেবে থাকতে চায়, ভোটাধিকার চায় না, সেখানে এক হিন্দু নাগরিক সবার সম্মুখে কোরান পোড়াবে, একথা কোন পাগলও বিশ্বাস করবে না। এই নির্জলা মিথ্যাচারের উদ্দেশ্য ছিল ৬ মে থেকে যাতে দাঙ্গা লাগানো যায় এবং হেজাবিরা যে কোরান পুড়িয়েছে সে নিয়ে যাতে আলোচনা অন্যখাতে যায়। 
অর্থাৎ, বিএনপি করলে মনেপ্রাণে সাম্প্রদায়িক হতে হবে অথবা দাঙ্গা লাগাতে হবে। 

অনেক বিএনপি নেতা বারবার বলছেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চেও নাকি এমনটি হয়নি, যা হয়েছে ৫ মে রাতে। এরকম বর্বর গণহত্যার কথা চিন্তা করা যায় না। গণহত্যা শব্দটি বার বার তারা ব্যবহার করছে। এর একটি উদ্দেশ্য, ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে খাটো করে দেখানো এবং জনমানসে এ ধারণার সৃষ্টি করা যে, ১৯৭১ সালে তেমন কিছু হয়নি। ফলে, যুদ্ধাপরাধ মামলা জিঘাংসামূলক। প্রকৃত গণহত্যা এখন হচ্ছে এবং এর জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচার করা হবে। ২৫ মার্চ ঢাকা শহরেই প্রায় দু'লাখ শহীদ হয়েছেন। 
অর্থাৎ বিএনপি করলে সংবিধান বিরোধী হতে হবে। সংবিধানে উল্লেখিত মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত যাবতীয় শব্দাবলি উপেক্ষা করতে হবে। 
৬ মে বিকেলে আমরা অনেকেই একটি এসএমএস পেয়েছি। তাতে লেখা ছিল, ভারতীয় এজেন্টরা মতিঝিলে হত্যাকা- চালিয়েছে এবং এখনও চালাচ্ছে। এর অর্থ এই সরকার ভারতের দালাল। অবশ্য সংবাদ সম্মেলনে এই উক্তি করা হয়নি। 
বিএনপি বা হেজাবি হলে পাকিস্তানমনা হতে হবে। 
টেলিভিশনের টক শোতে বিএনপি/হেজাবি সমর্থকদের সাংবাদিকদের অনেকে বলেছেন, তাঁরা ঘটনাস্থলে ছিলেন। টেলিভিশনে ধারণকৃত চিত্র তাঁরা দেখালেন। কিন্তু বিএনপি সমর্থক বা নেতারা বার বার জানালেন, ঘটনা সত্য নয়। তাঁরা তখন নয়া দিগন্ত, ইসলামী টিভি কেন বন্ধ করা হয়েছে এ প্রশ্ন তুলতে লাগলেন। এ দু'টি টিভি যে হেজাবিদের মুখপত্র হিসেবে অনবরত মিথ্যা এবং ৫ ও ৬ মে এমনভাবে সংবাদ পরিবেশন করছিল যে, সারাদেশে দাঙ্গা লেগে যেত। টিভিতে দেখান হলো হেজাবিরা মৃতের ভান করে পড়ে আছে। লাঠির খোঁচা খেয়েই চটপট উঠে দাঁড়িয়ে দৌড়াচ্ছে। সেটিও মানতে তাঁরা রাজি নন। সত্য কোনভাবে গ্রাহ্য করা যাবে না। 
অর্থাৎ বিএনপি করলে নির্লজ্জ বা বেহায়া হতে হবে। আমার এক বন্ধু অনেক আগে বলেছিলেন, ভদ্রলোক হলে বিএনপি করা যাবে না। 
হেফাজতী/হেজাবি সমাবেশ ও পরবর্তী ঘটনা নিয়ে বিএনপি নেতারা যা বলছেন এসব তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। 
বিএনপি যে আড়াই হাজার মৃত্যুর কথা বলছে তার কোন প্রমাণ তারা দেখাতে পারেনি। আড়াই হাজার মানুষ হত্যা করতে হলে কত বুলেটের প্রয়োজন এ হিসাবও তাদের নেই। রবার বুলেট আর বুলেট এক হলে এক ধরনের বুলেটের নাম রবার বুলেট হতো না। কাঁদানেগাস দিয়ে মানুষও হত্যা করা যায় না। আড়াই হাজার মৃতদেহ সরাতে গেলে কত ট্রাক লাগে। টিভিতে কিন্তু কোন ট্রাকই দেখায়নি। ২৫০০ মানুষ মারা গেলে পুরো ঢাকা শহরের একাংশ স্বজনহারাদের আহাজারিতে ভরে যেত। স্বজন হারাদের প্রায় দেখাই যায়নি। আড়াই হাজার কেন এক শ' লাশও ঘণ্টাখানেকের মধ্যে গুম করা সম্ভব নয়। ডিএমপি কমিশনারের ব্রিফিং বিশ্বাস না করলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দেখুন। ২৫০০ মারা গেলে সারা পৃথিবীর সাংবাদিকরা ঢাকায় চলে আসতেন। হেজাবিরা ভেবেছিলেন, তাঁদের অনেক মিথ্যাচারের মতো বা ক্রমাগত মিথ্যাচার করলে মানুষ তা বিশ্বাস করবে। কিন্তু সরকার একটি কৌশলী পদক্ষেপ নিয়েছিল। এই অভিযানের সময় দেশী-বিদেশী সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদেরও সঙ্গে নেয়া হয়েছিল। ফলে, এ বারের মিথ্যাচার সফল হয়নি। 
আমার মনে হয়েছে, টক শো বা খবরের কাগজে বিএনপির নেতাদের মন্তব্যের বিপরীতে একটি বিষয় উল্লেখ করা হয়নি; বিষয়টি উল্লেখ জরুরী ছিল। সংঘর্ষে যাঁরা মারা গেছেন তার জবাবদিহিতা সবাই চাইছেন। কিন্তু পটভূমিটা সবাই এড়িয়ে গেছেন। একজন নাগরিকের মৃত্যুও কারও কাম্য নয়। কিন্তু সে যদি নিজে আত্মহত্যা করতে চায়?
সৈয়দ আশরাফ সন্ধের আগে শাপলা চত্বর খালি করে দিতে বলেছিলেন। হেজাবি নেতারা তো তা করেনইনি বরং আশরাফকে নিয়ে ঠাট্টা করেছেন। সারাদিন তারা যে তা-ব চালিয়েছে সেটি কি আন্দোলনের মধ্যে পড়ে? আগুন লাগানো, ভাংচুর, লুট কী অপরাধ নয়? অপরাধ হলে তো ব্যবস্থা নিতে হবে। লক্ষ্য করবেন, হেজাবিরা যখন ঢাকা শহর অগ্নিকু-ে পরিণত করছে, পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ও বোমা ছুঁড়ছে তখনও কিন্তু পুলিশ প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি। করলেও তা অপরাধ হতো কিনা সন্দেহ। গভীর রাতে পুলিশ গিয়ে প্রথমে অনুরোধ করে তাদের চলে যেতে। হেজাবি নেতারা রাজি হয়নি। কারণ তারা তো সরকার গঠন করতে এসেছে, চলে যেত নয়। এর পর পুলিশ এ্যাকশনে যায়। অতর্কিতে যদি পুলিশ হামলা করত তা'হলেও না হয় দোষ দেয়া যেত। আর এ কেমন কথা, কিছু গু-াপা-া সারা শহরে অরাজকতা চালাবে কিন্তু সরকার কিছু বলতে পারবে না!
অনেকে বলেছেন, বিদেশে এরকম সমাবেশ ভাঙতে গিয়ে সমাবেশকারীদের বেশ মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু, এত বড় সমাবেশ প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করে এত কম সময়ে কোথাও মানুষ সরান যায়নি। এই প্রথম অনেকে পুলিশের প্রশংসা করে বলছেন, হেজাবিদের হাত থেকে ঢাকা শহর বাঁচানো যাবে কেউ আশা করেননি। অনেকে এও বলছেন, স্বারাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রচুর নিন্দামন্দ করা যেতে পারে, কিন্তু আল্লাহকে ধন্যবাদ, আগের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন না। ১৯৭৫ সালের পর আর কেউ ধর্ম ব্যবসায়ীদের এমনভাবে কোণঠাসা করার সাহস করেননি। তবে এটিও মনে রাখার দরকার, প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন না পেলে এ কাজ করা যেত না। এখন তিনি আর দোদুল্যমানবতায় ভুগছেন না। ভুল হোক ঠিক হোক তিনি একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এবং এখনও সেই সিদ্ধান্তে অটল আছেন। পাঠক, আপনারা বলতে পারেন, আমি ১৪ দলের সমর্থক। তাই অযথা তাদের প্রশংসা করছি। তাহলে বাংলাদেশের এখন সবচেয়ে সিনিয়র সাংবাদিক এবিএম মূসার কথা ধরা যাক। গত চার বছরে কোন লেখায় তিনি বর্তমান সরকারের কোন প্রশংসা করেননি। এখন তিনি অসুস্থ। তারপরও লিখেছেন, 'গতকাল (৭ মে) আমি এই সরকারের প্রশংসা করেছি হেফাজত ও ধর্মাশ্রয়ী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে শক্ত হাতে দমন করার জন্য। মহাজোট সরকারের অনেক কিছুই সমর্থন করি না সত্য; তার মানে এই নয়, দেশে তালেবান সরকার চাই। হেফাজতী নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সরকারের অভিযানে দুঃখজনক প্রাণহানি ঘটলেও উপযুক্ত সময়ে সরকারের এই অভিযানকে আমি স্মরণ করি। কারণ তারা অবরোধ ও সমাবেশের নামে হত্যাসহ নৈরাজ্যকর অবস্থা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালিয়েছিল, তাতে আরও বেশি প্রাণনাশের আশঙ্কা ছিল। বাংলাদেশকে ধ্বংস করার ফন্দি এঁটেছিল হেফাজত।' [আমাদের সময়, ৮-৫-১৩]
বাংলাদেশ ব্যাংক লুটের পরিকল্পনা, অন্যান্য ব্যাংকের ক্ষতি সাধন, লুট, পুলিশ হত্যা, নারকীয় সব কর্মকা-, দেশের কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি, সর্বোপরি কোরান পোড়ানোর পরও শেখ হাসিনা হেফাজতী নেতাদের প্রধান আহমাদ শফী ও তার অনুচরদের সৌজন্যের সঙ্গে হাটহাজারী পাঠিয়ে দিয়েছেন। এ কথাটি যেন হেফাজতী নেতারা মনে রাখেন। তাদের সবাইকে আদালতে চালান দিলেও হেফাজতীরা ছাড়া কেউ সমর্থন করত বলে মনে হয় না।
কওমি মাদ্রাসাগুলো চলে যাকাত, কোরবাণীর চামড়া ও অনুদানের ওপর। প্রশ্ন উঠছে, তারা যদি ১-২ লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটিয়ে থাকে তা'হলে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করেছে। এ টাকা এলো কোত্থেকে? এবিএম মূসা সাহসী মানুষ। তিনি লিখেছেন, 'আমি নাম ধরে বলতে পারি ইসলামী ব্যাংক, ইবনে সিনা ট্রাস্ট, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক নাশকতার অর্থ জুগিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ধ্বংসাত্মক কাজে ব্যবহার করছে।' [ঐ] সরকারের উচিত এ বিষয়ে আলাদা একটি তদন্ত করা। আরেকটি বিষয়ও উল্লেখ্য, আমরা নিয়মিত ট্যাক্স দিই। এসব ধর্ম ব্যবসায়ীরা বা তথাকথিত ইসলামী দলগুলোর নেতারা কি ট্যাক্স দেয়? আমরা ট্যাক্স দিই কিনা তা সব সময় কর্তৃপক্ষ নজর রাখে, এসব নেতার ক্ষেত্রে? যদি এরা ট্যাক্স না দেয় তা'হলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া উচিত। না হলে, আমাদের বলতে হবে, সরকার পক্ষপাতিত্ব করছে, যা অসংবিধানিক। 
[চলবে]
মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০১৩, ৩১ বৈশাখ ১৪২

Also Read:
বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০১৩, ২৬ বৈশাখ ১৪২০
রাজাকার, রাজাকারপন্থী, রাজাকারের বাচ্চাদের কর্তৃত্ব এ দেশে আর হবে না - ॥ প্রথম কিস্তি ॥
মুনতাসীর মামুন
শুক্রবার, ১০ মে ২০১৩, ২৭ বৈশাখ ১৪২০

রাজাকার, রাজাকারপন্থী, রাজাকারের বাচ্চাদের কর্তৃত্ব এ দেশে আর হবে না - ॥ দ্বিতীয় কিস্তি ॥
মুনতাসীর মামুন
শনিবার, ১১ মে ২০১৩, ২৮ বৈশাখ ১৪২০
রাজাকার, রাজাকারপন্থী, রাজাকারের বাচ্চাদের কর্তৃত্ব এ দেশে আর হবে না ॥ তৃতীয় কিস্তি ॥
মুনতাসীর মামুন
শনিবার, ১১ মে ২০১৩, ২৮ বৈশাখ ১৪২০
রবিবার, ১২ মে ২০১৩, ২৯ বৈশাখ ১৪২০
রাজাকার, রাজাকারপন্থী, রাজাকারের বাচ্চাদের কর্তৃত্ব এ দেশে আর হবে না ॥ চতুর্থ কিস্তি ॥
মুনতাসীর মামুন
সোমবার, ১৩ মে ২০১৩, ৩০ বৈশাখ ১৪২
রাজাকার, রাজাকারপন্থী, রাজাকারের বাচ্চাদের কর্তৃত্ব এ দেশে আর হবে না ॥ পঞ্চম কিস্তি ॥
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2013-05-13&ni=135164

 
ويقترح رجل الله يتصرف [ Man proposes, Allah the Almighty disposes]

†f‡¯Í †Mj †eMg wRqvi Ôeøy wcÖ›UÕ


http://www.amadershomoy2.com/content/2013/05/07/news0036.htm

হেফাজতের পাশে থাকার আহবান খালেদার


স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম








__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___