রবিবার, ১৬ জুন ২০১৩, ২ আষাঢ় ১৪২০
জামায়াত, জিয়াউর রহমান ও নাস্তিকতা
মমতাজ লতিফ
মওদুদীবাদীরা কি নিজেরাই নাস্তিক, অ-ইসলামিক এবং দুর্দান্তভাবে ইহলৌকিতাবাদে বিশ্বাসী নয়? তারা নিজেরা নিজেদের কাজকর্মের মধ্য দিয়ে তাদের জোরালো অবস্থান অবিকল জিয়াউর রহমানের মতোই উপস্থাপন করে চলেছে; আর প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীদের অবিরাম একতরফাভাবে নাস্তিক, মুরতাদ, কাফের ঘোষণা করে চলেছে! এভাবেই কিন্তু জামায়াতের মিত্র যে তাদের যুদ্ধাপরাধের বিচার থেকে বাঁচাতে '৭১-এর বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধু সরকার কর্তৃক গর্বিত ৭৮টি ট্রাইব্যুনালে শেষ পর্যন্ত যে এগারো হাজার যুদ্ধাপরাধীর বিচার পরিচালনা করছিল, '৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু, জাতীয় ৪ নেতা হত্যার পর ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েই '৭২-এর দালাল আইন', ৭৮টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে জেল থেকে সব যুদ্ধাপরাধীকে মুক্তি দিয়ে তাদের ক্ষমতার অংশীদার করে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ এবং মেধাসম্পন্ন তরুণ ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ গণতান্ত্রিক রাজনীতির বিরুদ্ধে 'একদলীয়' শাসনকে (বাকশাল) গালমন্দ দিতে দিতে নিজেই এক স্বৈরশাসক হয়ে বসেছিল! আবারও স্মরণ করতে হয় '৭১-এ জামায়াতের হত্যার শিকার, জাতির মেধাবী শিক্ষক, কবি, সাংবাদিক, চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলীদের মতোই জিয়াও মেধাবী তরুণদের মেধা ধ্বংসের পরিকল্পনাই গ্রহণ করেছিল তাদের বাছাই করে অর্থ, অস্ত্র ও মোটরসাইকেল দিয়ে 'ক্যাডার' তৈরি করে নির্বাচনভিত্তিক গণতন্ত্রের রাজনীতি ধ্বংসে মাঠে নামিয়ে দিয়ে! অর্থাৎ জাতিকে '৭১-এ জামায়াতের গণহত্যায় যেমন মেধাবী বুদ্ধিজীবীদের বলি হতে হয়েছিল, ঠিক অনুরূপভাবে '৭৬ থেকে জিয়ার হাতে বলি হয়েছে এ দেশের আরেক প্রজন্মের মেধাবী সন্তানরা। অর্থাৎ জামায়াত ও জিয়াউর রহমান উভয়েই মেধাবী বাঙালীদের অপছন্দ করেছিল। জামায়াত '৭১-এ তাদের হত্যা করেছিল। জিয়া '৭৬-৮১তে তাদের রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত বানিয়ে তাদের ভবিষ্যত ও জাতির ভবিষ্যত ধ্বংস করেছিল। বঙ্গবন্ধু দেশী-বিদেশী শক্তির সরকারবিরোধী চক্রান্তের বিরুদ্ধে জাতিকে রক্ষা করতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব দল, ব্যক্তির সমন্বয়ে 'বাকশাল' গঠন করে একক সব দলকে বিলুপ্ত করেছিলেন। এটি সব দলের সমন্বয়ে গঠিত হওয়ায় এবং পাশাপাশি সব জেলায় প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে জেলা গবর্নর নিয়োগ দেয়ার মধ্য দিয়ে সরকারের লক্ষ্য ছিল জাতিকে '৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সময়ের মতো ঐক্যবদ্ধ করা এবং ঐক্যবদ্ধভাবে শত্রুদের মোকাবেলা করা। ইতোমধ্যে, কিউবার কাছে পাট বিক্রির দোষে আমেরিকা চুক্তি করা চালের জাহাজ খাদ্যাভাবে আক্রান্ত বাংলাদেশে পাঠাল না। ফলে এক ধরনের দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়; যদিও লঙ্গরখানা, রেশনিং, কসকর, টিসিবি লাখ লাখ গরিব ও মধ্যবিত্তকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল! কিন্তু, বঙ্গবন্ধুর গৃহীত কৃষিতে সবুজ বিপ্লবের পাকা বাম্পার ফসলের ওপর বসে জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বাকশালকে ক্রমাগত একদলীয় শাসন হিসেবে প্রচারণার মাধ্যমে 'গালি'তে পরিণত করে এবং নিজের স্বৈরশাসনকে গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবন কাল বলে জনমানুষের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে, যা প্রায় 'সত্যে' পরিণত হয়েছিল! অথচ আওয়ামী লীগ ছিল নিষিদ্ধ। নেতাকর্মীরা জেলে অন্তরীণ। মাগুরা ভোটের মতো 'ইয়েস-নো' ভোট, বৈঠকখানাভিত্তিক' গণতন্ত্রচর্চা, অর্থ দিয়ে রাজনীতিক কেনাবেচা শুরু, সৎ দেশপ্রেমিক ব্যবসায়ীর জায়গায় দুর্বৃত্ত, ঠক, জোচ্চোর উঠে এলো; প্রশ্রয়-পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করল ব্যাংকের ঋণখেলাপীর দল। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজগুলোর পড়াশোনা প্রায় বন্ধ হয়ে গেল নব্য ক্যাডারদের দৈনন্দিন গোলাগুলি-মারপিট-বোমা হামলার কারণে। উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে দেশের উন্নতির জন্য প্রস্তুত হওয়া উচ্চশিক্ষিত বুদ্ধিজীবীর দরকারকে এভাবে সরকার বাধাগ্রস্ত করে। সংবাদপত্র সেনাসদরের সম্মতি ছাড়া কোন খবর ছাপতে পারত না। এদিকে গোপনে স্ফীত হচ্ছিল যুদ্ধাপরাধীদের উদর ও সম্পদ। সেদিন এক শিশু প্রশ্ন করল- সব যুদ্ধাপরাধী এত মোটা কেন? সত্যিই জিয়া, খালেদা, এরশাদ এদের মোটাতাজাকরণের ব্যবস্থা করে দিয়েছে, শুধু প্রাণেই রক্ষা করেনি!
এবার মূল প্রশ্নে আসা যাক-
আসলেই মওদুদীবাদী, জামায়াত বা হিযবুত তাহ্রীর- ইসলামের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি এবং পরলোকের পুরস্কার বা শাস্তির বিধান স্বর্গ-নরকের অবস্থান, মৃত্যুর পর শেষ বিচার- এসবে বিশ্বাস করে কি?
তাদের কৃতকর্ম দিয়ে যদি তাদের 'বিশ্বাস'কে ব্যাখ্যা করা হয়, তাহলে দেখা যাবে-
১. তারা কোনরকম শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করে না। তারা '৭১-এ স্বদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে স্বজাতির মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, হিন্দু এবং উচ্চ শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবীদের নিরপরাধ জেনেও পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। স্বজাতির, স্বধর্মীয় নারীদের ধর্ষণ করেছে আবার পাকিস্তানীদের হাতে ধর্ষণের জন্য তুলে দিয়েছে!
যারা এই ঘৃণ্য অপরাধগুলো করেছে, তারা কি আদৌ ইসলামের পারলৌকিক শাস্তিতে বিশ্বাস করে? এরাই কি আদতে নাস্তিক নয় যারা ইহলৌকিক দ-েও পুরস্কারেই শুধু বিশ্বাস করে?
২. এরা কেন, কি উদ্দেশ্যে দরিদ্রের সন্তানদের জঙ্গীবাদ শিক্ষা দিয়ে জঙ্গীর অনিশ্চিত জীবনে ঠেলে দেয় আর নিজেরা ইংরেজী পাশ্চাত্যের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে প্রকৌশলী, চিকিৎসক, আইনজীবী, শিক্ষক, আইটি বিশেষজ্ঞ হয়ে নিজেদের ও নিজেদের সন্তানদের নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করছে? এটা কোন ধরনের ধার্মিকের রূপ হতে পারে কি?
৩. এরা কঠোরভাবে মানে দৈনিক পাঁচবার নামাজ, রমজানের রোজা যা আনুষ্ঠানিক ও প্রদর্শনযোগ্য। নারীদের মধ্যে এরা বিনামূল্যে বিতরণ করে বোরকা-হিজাব! বর্তমানে বাঙালী, নারী, বালিকাদের বোরকা-হিজাবে বন্দী করে মধ্যপ্রাচ্যীয় নারীতে পরিণত করার একটি কর্মসূচী পরিচালনা এরা করছে। এর ফলে, এরা বালিকা বয়স থেকে শাড়ি-ব্লাউজকে অ-ইসলামী পোশাকে ভাবতে শিখছে এবং এই নারীদেরও ক্রমশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ থেকে দূরে সরিয়ে জঙ্গী ধারার অনুসারী করে তুলছে। পুরুষ কর্তৃত্বের পরিবারে নারীদের পক্ষে নিজস্ব স্বাধীন মত গঠন প্রায় অসম্ভব। মধ্যপ্রাচ্যের ওহাবীরা কি বাংলাদেশের উষ্ণ আর্দ্র আবহাওয়ার উপযোগী শাড়ি-ব্লাউজ পরার কথা চিন্তা করবে? এরা কি জানে, হযরত মোহাম্মদ (সা) আরবে জন্মগ্রহণ করাতে কোরান-হাদিস আরবীতে লিপিবদ্ধ হয়েছিল। যুক্তিকে এরা বুঝে শুনে দূরে সরিয়ে রাখে- বাস্তব লাভের লক্ষ্যে।
৪. শুধু স্বদেশের স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন-লড়াই করেছে বলে এরা 'শত্রু' গণ্য করে আওয়ামী লীগকে এবং এর নেতা-কর্মীদের এবং স্বাধীনতাকামী হিন্দু ও বুদ্ধিজীবীদের 'কাফের' 'মুরতাদ' 'অ-ধার্মিক' 'নাস্তিক' ঘোষণা করছে! এ শুধু জনমনে ভীতি সঞ্চার করে জনমানুষকে তাদের পক্ষে চাপে রাখার কৌশল। নতুবা ইহলৌকিক লাভের জন্য যারা কোন অপরাধ করেনি, কিন্তু স্বাধীনচেতা, তাদের হত্যা করা এদের লক্ষ্য হবে কেন? পরকালে নিরপরাধকে হত্যা করার জন্য আল্লাহর দ-ের ভয় এদের আছে কি? এই ভয়ে ও বিশ্বাস থাকলে তারা আর যাই হোক, মওদুদীবাদী, জঙ্গী ইসলামে বিশ্বাসী হয়ে বার বার বোমা-গ্রেনেড হামলা, বোমা বানানো, খুন-সন্ত্রাস-অশান্তির অপরাজনীতির চর্চা করত না, একথা বলাবাহুল্য। সুতরাং প্রকৃতপক্ষে মওদুদীবাদী জামায়াত, হরকাতুল জেহাদ, জেএমবি, হিযবুত তাহ্রীর ইত্যাদি জঙ্গী দলের অনুসারীরাই 'নাস্তিক' বা ধর্মহীন। পরলোকের শাস্তিতে বিশ্বাস করলে তাদের পক্ষে খুন, গণহত্যা, ধর্ষণ করা ও এসব অপরাধের অপরাধীদের সমর্থন-প্রশ্রয় প্রদান অসম্ভব হতো।
আমাদের প্রজন্মের নারী-পুরুষরা কখনও কোন নারী শিক্ষক, প্রকৌশলী, ডাক্তার, আমলাদের বোরকা-হিজাব পরা অবস্থায় দেখেনি। তারা আজ বার বার বিস্ময় প্রকাশ করে এই দেখে যে, আত্মনির্ভরশীল মহিলারাও মধ্যপ্রাচ্যীয় পোশাকের ঘেরাটোপে বন্দী হচ্ছেন কেন! তাই নয়, বুয়েটে তো জঙ্গী উৎপাদনে রত শিক্ষকদের মধ্যে নারী শিক্ষকও আছেন। মানবিক বিষয় ছাড়া শুধু বিজ্ঞান পাঠ কোন্ কোন্ মানুষকে 'দানব' করে তুলতে পারে- এটি কোন এক বিজ্ঞানের জার্নালে পড়েছিলাম। এখন দেখছি, ওই বিজ্ঞানী কত বড় সত্য বাণী উচ্চারণ করেছিলেন।
এবার মূল প্রশ্নে আসা যাক-
আসলেই মওদুদীবাদী, জামায়াত বা হিযবুত তাহ্রীর- ইসলামের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি এবং পরলোকের পুরস্কার বা শাস্তির বিধান স্বর্গ-নরকের অবস্থান, মৃত্যুর পর শেষ বিচার- এসবে বিশ্বাস করে কি?
তাদের কৃতকর্ম দিয়ে যদি তাদের 'বিশ্বাস'কে ব্যাখ্যা করা হয়, তাহলে দেখা যাবে-
১. তারা কোনরকম শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করে না। তারা '৭১-এ স্বদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে স্বজাতির মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, হিন্দু এবং উচ্চ শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবীদের নিরপরাধ জেনেও পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। স্বজাতির, স্বধর্মীয় নারীদের ধর্ষণ করেছে আবার পাকিস্তানীদের হাতে ধর্ষণের জন্য তুলে দিয়েছে!
যারা এই ঘৃণ্য অপরাধগুলো করেছে, তারা কি আদৌ ইসলামের পারলৌকিক শাস্তিতে বিশ্বাস করে? এরাই কি আদতে নাস্তিক নয় যারা ইহলৌকিক দ-েও পুরস্কারেই শুধু বিশ্বাস করে?
২. এরা কেন, কি উদ্দেশ্যে দরিদ্রের সন্তানদের জঙ্গীবাদ শিক্ষা দিয়ে জঙ্গীর অনিশ্চিত জীবনে ঠেলে দেয় আর নিজেরা ইংরেজী পাশ্চাত্যের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে প্রকৌশলী, চিকিৎসক, আইনজীবী, শিক্ষক, আইটি বিশেষজ্ঞ হয়ে নিজেদের ও নিজেদের সন্তানদের নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করছে? এটা কোন ধরনের ধার্মিকের রূপ হতে পারে কি?
৩. এরা কঠোরভাবে মানে দৈনিক পাঁচবার নামাজ, রমজানের রোজা যা আনুষ্ঠানিক ও প্রদর্শনযোগ্য। নারীদের মধ্যে এরা বিনামূল্যে বিতরণ করে বোরকা-হিজাব! বর্তমানে বাঙালী, নারী, বালিকাদের বোরকা-হিজাবে বন্দী করে মধ্যপ্রাচ্যীয় নারীতে পরিণত করার একটি কর্মসূচী পরিচালনা এরা করছে। এর ফলে, এরা বালিকা বয়স থেকে শাড়ি-ব্লাউজকে অ-ইসলামী পোশাকে ভাবতে শিখছে এবং এই নারীদেরও ক্রমশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ থেকে দূরে সরিয়ে জঙ্গী ধারার অনুসারী করে তুলছে। পুরুষ কর্তৃত্বের পরিবারে নারীদের পক্ষে নিজস্ব স্বাধীন মত গঠন প্রায় অসম্ভব। মধ্যপ্রাচ্যের ওহাবীরা কি বাংলাদেশের উষ্ণ আর্দ্র আবহাওয়ার উপযোগী শাড়ি-ব্লাউজ পরার কথা চিন্তা করবে? এরা কি জানে, হযরত মোহাম্মদ (সা) আরবে জন্মগ্রহণ করাতে কোরান-হাদিস আরবীতে লিপিবদ্ধ হয়েছিল। যুক্তিকে এরা বুঝে শুনে দূরে সরিয়ে রাখে- বাস্তব লাভের লক্ষ্যে।
৪. শুধু স্বদেশের স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন-লড়াই করেছে বলে এরা 'শত্রু' গণ্য করে আওয়ামী লীগকে এবং এর নেতা-কর্মীদের এবং স্বাধীনতাকামী হিন্দু ও বুদ্ধিজীবীদের 'কাফের' 'মুরতাদ' 'অ-ধার্মিক' 'নাস্তিক' ঘোষণা করছে! এ শুধু জনমনে ভীতি সঞ্চার করে জনমানুষকে তাদের পক্ষে চাপে রাখার কৌশল। নতুবা ইহলৌকিক লাভের জন্য যারা কোন অপরাধ করেনি, কিন্তু স্বাধীনচেতা, তাদের হত্যা করা এদের লক্ষ্য হবে কেন? পরকালে নিরপরাধকে হত্যা করার জন্য আল্লাহর দ-ের ভয় এদের আছে কি? এই ভয়ে ও বিশ্বাস থাকলে তারা আর যাই হোক, মওদুদীবাদী, জঙ্গী ইসলামে বিশ্বাসী হয়ে বার বার বোমা-গ্রেনেড হামলা, বোমা বানানো, খুন-সন্ত্রাস-অশান্তির অপরাজনীতির চর্চা করত না, একথা বলাবাহুল্য। সুতরাং প্রকৃতপক্ষে মওদুদীবাদী জামায়াত, হরকাতুল জেহাদ, জেএমবি, হিযবুত তাহ্রীর ইত্যাদি জঙ্গী দলের অনুসারীরাই 'নাস্তিক' বা ধর্মহীন। পরলোকের শাস্তিতে বিশ্বাস করলে তাদের পক্ষে খুন, গণহত্যা, ধর্ষণ করা ও এসব অপরাধের অপরাধীদের সমর্থন-প্রশ্রয় প্রদান অসম্ভব হতো।
আমাদের প্রজন্মের নারী-পুরুষরা কখনও কোন নারী শিক্ষক, প্রকৌশলী, ডাক্তার, আমলাদের বোরকা-হিজাব পরা অবস্থায় দেখেনি। তারা আজ বার বার বিস্ময় প্রকাশ করে এই দেখে যে, আত্মনির্ভরশীল মহিলারাও মধ্যপ্রাচ্যীয় পোশাকের ঘেরাটোপে বন্দী হচ্ছেন কেন! তাই নয়, বুয়েটে তো জঙ্গী উৎপাদনে রত শিক্ষকদের মধ্যে নারী শিক্ষকও আছেন। মানবিক বিষয় ছাড়া শুধু বিজ্ঞান পাঠ কোন্ কোন্ মানুষকে 'দানব' করে তুলতে পারে- এটি কোন এক বিজ্ঞানের জার্নালে পড়েছিলাম। এখন দেখছি, ওই বিজ্ঞানী কত বড় সত্য বাণী উচ্চারণ করেছিলেন।
রবিবার, ১৬ জুন ২০১৩, ২ আষাঢ় ১৪২০
__._,_.___