Banner Advertiser

Friday, June 7, 2013

[mukto-mona] ভারতের মুলা বাংলাদেশের সেবা



http://www.bonikbarta.com/sub-editorial/2013/05/30/2118




সাম্প্রতিক
ভারতের মুলা বাংলাদেশের সেবা
আনু মুহাম্মদ
গত কয়েক বছর ধরেই আমরা শুনছি, ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসছে। লোডশেডিংয়ের মধ্যে এ খবরটা প্রচারিত হয় বেশি। এমনি এমনি আসা নয়। ভারতের এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন নির্ধারিত দামে, নগদ অর্থে সব রকম শর্ত পালন শেষেই এ বিদ্যুৎ পাওয়ার কথা। তার পরও এ লোডশেডিংয়ের মাঝে এ রকম খবর শোনার জন্যও মানুষ উন্মুখ হয়ে থাকে। এ খবর আরো জোর পায়, যখন ভারত সরকারের কোনো বিশিষ্ট ব্যক্তি এ দেশ সফর করেন তখন। পত্রপত্রিকা-টিভি সর্বত্রই এ খবর মানুষ মুগ্ধতার সঙ্গে দেখে, শোনে। সর্বশেষ খবর হলো, অবকাঠামো নির্মাণসহ আরো প্রস্তুতি কাজ বাকি আছে। সেজন্য শিগগিরই বিদ্যুৎ আসছে না। (samakal.net/2013/05/21/3716) কিন্তু এ বিদ্যুৎ বিক্রি ভারতের বদান্যতা হিসেবেই উপস্থাপিত হয়েছে বরাবর। এবং ভারতের চাহিদা মেটানোর কাজে নানা তত্পরতা অগ্রসর হয়েছে ঠিকই, সেখানে এ রকম কোনো বিলম্ব দেখা যায়নি।
এ রকম বহু বছর গেছে চাল আমদানি বিষয়ে। বাজারদরেই ভারত থেকে ৫ লাখ টন চাল আমদানি করার চুক্তি ছিল। ২০০৮ সালে যখন খাদ্যসংকট তীব্র হচ্ছে, তখন ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার ছিলেন পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তী। 'ভারতের চাল কেন আসছে না' সাংবাদিকদের এ রকম প্রশ্নের উত্তরে টিভি ক্যামেরার সামনে তিনি বললেন, 'আমরা তো দেশের মানুষকে না খাইয়ে আপনাদের চাল দিতে পারি না।' প্রকৃতপক্ষে যে দামে চাল দেয়ার চুক্তি হয়েছিল, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম সে সময় উঠে গিয়েছিল তার চেয়ে অনেক বেশি। ভারতের পিছিয়ে আসার কারণ সেটাই।
বাংলাদেশে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে ভারতের বৃহৎ পুঁজির তত্পরতা বাড়ছে। এর মধ্যে হাজির হয়েছে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ প্রতিষ্ঠান, ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার কোম্পানি বা এনটিপিসি। যে ভারতীয় এনটিপিসি বাংলাদেশের সুন্দরবন ধবংস করে এ বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণ করতে চাইছে, সেই 'ভারতেরই ওয়াইল্ড লাইফ প্রটেকশন অ্যাক্ট ১৯৭২ অনুযায়ী, বিদ্যুেকন্দ্রের ১৫ কিমি ব্যসার্ধের মধ্যে কোনো বাঘ/হাতি সংরক্ষণ অঞ্চল, জীববৈচিত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বনাঞ্চল, জাতীয় উদ্যান, বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য কিংবা অন্য কোনো ধরনের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থাকা চলবে না।' এ কারণে ভারতে তাদের একটি প্রকল্প সরকার বাতিল করেছে। রামপালে, সুন্দরবনের ওপর, সেই ভারতীয় কোম্পানির কর্তৃত্বেই বিদ্যুৎ প্লান্ট হচ্ছে। ইআইএ বা পরিবেশ সমীক্ষা না করে এ রকম কোনো প্রকল্প ভারতেও গ্রহণ করা হয় না। আর বাংলাদেশে ইআইএ না করেই প্রকল্প কাজ অগ্রসর করা হয়েছে, চুক্তি হয়েছে। পরে ইআইএ নিয়ে লোক দেখানো বিশেষজ্ঞ সংলাপ করা হয়েছে। লোক দেখানো বলছি এই কারণে যে, বিশেষজ্ঞরা সেই ইআইএ প্রত্যাখ্যান করার পরের সপ্তাহেই ভারতের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ।
এ চুক্তি অনুযায়ী, ভারতীয় কোম্পানির মুনাফা হবে অনেক উঁচু হারে, সেই মুনাফার ওপর বাংলাদেশ করও নেবে না বলে জানিয়েছে। অন্যদিকে বিদ্যুতের দাম, ব্যয় নির্বাহ ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশের অনেক আর্থিক ক্ষতি হবে। কিন্তু তার চেয়েও বড় সর্বনাশ হবে বাংলাদেশের, যার কোনো ক্ষতিপূরণ সম্ভব নয়। আমাদের একমাত্র সুন্দরবন বাংলাদেশের সর্বশেষ বন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে সফল প্রাকৃতিক রক্ষাবর্ম, জীববৈচিত্রের অসাধারণ আধার এবং বিশ্ব-ঐতিহ্য। এ প্রকল্পের কারণে সেই সুন্দরবন ধ্বংস হবে! নিজেদের এ অতুলনীয় এবং অনবায়নযোগ্য সম্পদ ধ্বংস করে, মানুষের জীবন বিপন্ন করে, দেশী কিছু লুটেরার স্বার্থ রক্ষা আর ভারতীয় কোম্পানির মুনাফার ব্যবস্থা করতে বাংলাদেশ সরকার উদগ্রীব।
বাংলাদেশের সরকার ভরসা পাচ্ছেন কোথায়? ভরসা হলো, 'গায়েবি' আশ্বাস! ভারতের সরকারের লোকজন বলেছেন, রামপাল বিদ্যুৎ প্লান্টে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না। খুলনা ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটো বিশেষজ্ঞদলসহ বহু বিশেষজ্ঞ হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, কিন্তু তাতে কোনো কর্ণপাত নেই। টিপাইমুখ নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হবে না। বাংলাদেশের ক'জন সরকারি প্রতিনিধি হেলিকপ্টারে করে ওপর থেকে বর্তমান টিপাইমুখ স্থল দেখে নিশ্চিত হয়েছেন, কোনো ক্ষতি হবে না! বাংলাদেশ ও ভারতের বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন, এতে বাংলাদেশের নদীপ্রবাহে ভয়াবহ সংকট তৈরি হবে। তাদের কথা শোনার কেউ নেই।
তিস্তাসহ সব অভিন্ন নদীর ওপর বাংলাদেশের অধিকার ভারত যে স্বীকার করে, তার প্রমাণ কখনো পাওয়া যায়নি। এসব বিষয় ফয়সালা না করে ভারত বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আন্তঃনদী সংযোগ পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। তিস্তা নদী নিয়ে চুক্তিও আরেকটি মুলা। রাষ্ট্রপতিসহ কতজন এলেন, প্রতিশ্রুতি দিলেন, কিন্তু কিছু হলো না। আর চুক্তি হলেই তো হলো না, চুক্তির বিষয়বস্তু আর তার বাস্তবায়ন ধরনই শেষ পর্যন্ত নির্ধারক। ফারাক্কা নিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা তিক্ত। এর ক্ষতির পরিমাপ করা কঠিন।
সীমান্ত হত্যাকাণ্ড নিয়ে গত কয়েক বছরে আমরা বহুবার কথাবার্তা, বৈঠকের কথা শুনলাম; সবাই নিশ্চিন্ত হওয়ার প্রস্তুতি নিতে নিতেই আবার হত্যাকাণ্ড। কখনই এ হত্যা থামেনি। কাঁটাতার দিয়ে বাংলাদেশকে ঘিরে ফেলার কাজ থামেনি কখনো। এজন্য ভারত খরচ করছে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার। এখন মানবিক কারণে বাংলাদেশ ভারতকে খাদ্যশস্য পরিবহনে আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করে ট্রানজিট সুবিধা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে খবরে প্রকাশ। 'এ সুবিধার আওতায় আগামী মাস থেকেই ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোয় খাদ্য সরবরাহ করবে। এর মধ্যে পণ্য পরিবহনের জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে এফসিআই।' (bonikbarta.com/first-page/2013/05/26/1614)
ভারত এর এককণা 'মানবিকতা' বাংলাদেশকে দেখালে সীমান্তে ক'দিন পর পর হত্যাকাণ্ড দেখা যেত না। একের পর এক নদীর তথা অসংখ্য প্রাণবিপর্যয়ের ঘটনা কমত। আসলে দুই রাষ্ট্রের সম্পর্ক বা সিদ্ধান্ত মানবতা দিয়ে হয় না। ভারতকে ট্রানজিট দেয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বহু দিক থেকে কাজ চলছে। এটি তারই অংশ। ট্রানজিট নিয়ে সবকিছুই অস্বচ্ছ। যদিও যে দেশের সন্ত্রাসীদের ভয়ে ভারত বিপুল অর্থ ব্যয়ে কাঁটাতার দিয়ে ঘেরাও করছে, সেই দেশের ভেতরে এক মাথা থেকে আরেক মাথা পার হতে নিরাপত্তা কে দেবে— সে প্রশ্নের উত্তর এখনো জানা যায়নি।
কয়েক বছর আগ থেকেই আমরা শুনে আসছি, ভারতকে ট্রানজিট দিলে বাংলাদেশ লাভবান হবে। কিন্তু কীভাবে লাভবান হবে তার কোনো ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ— এমনকি সরল বিবৃতিও সরকার থেকে এখনো পাওয়া যায়নি। কিন্তু রেলপথ, সড়কসহ নানা কাজ হয়ে যাচ্ছে। ভারত থেকে কঠিন শর্তে ১০০ কোটি ডলার ঋণ নেয়া হয়েছে প্রধানত ট্রানজিটের অবকাঠামো তৈরির জন্য। আর সে কাজ করার জন্য আবার ভারত থেকেই পরিবহন ও যন্ত্রপাতি কেনা হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় শতকরা ৫০ থেকে ৬০ ভাগ বেশি দামে।
সম্ভবত এরই অংশ হিসেবে 'সরকারের অগোচরে নারায়ণগঞ্জে অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত সরকার। শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের ৪৪ একর জমি নির্ধারণ করা হয়েছে এর স্থাপনস্থল। এরই মধ্যে দেশটির বিদেশ মন্ত্রণালয় কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে কারিগরি ও বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য দরপত্রও আহ্বান করেছে। ...তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর (ডিজি শিপিং) ও বিনিয়োগ বোর্ডের অনুমোদন নেয়নি ভারত সরকার। ... জানা গেছে, কয়েক বছর আগে নারায়ণগঞ্জে কনটেইনার টার্মিনাল তৈরির পরিকল্পনা করে কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট। ... চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের পাশাপাশি ভারতীয় আমদানি-রফতানিকৃত পণ্য লোড-আনলোডে নারায়ণগঞ্জ কনটেইনার টার্মিনাল স্থাপনই এর প্রধান উদ্দেশ্য।...' (bonikbarta.com/first-page/2013/05/20/707)
২৮ মে ২০১৩-তে বাসস পরিবেশিত সংবাদে বলা হয়েছে, নারায়ণগঞ্জে এ রকম কোনো টার্মিনালের জন্য বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় সরকার বা কোনো ব্যক্তি বা কোনো সংগঠনকে অনুমতি দেয়নি (নিউএজ, ২৮ মে, ২০১৩)। কীভাবে সরকারের সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে না জানিয়ে, যথাযথ অনুমতি না নিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দরপত্র আহ্বান করছে (যার সচিত্র প্রতিবেদন ২০ মে বণিক বার্তা প্রকাশ করেছে), সেটা ব্যাখ্যার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু এতটুকু বোঝা যাচ্ছে যে, কোনো না কোনোভাবে নিশ্চিত না হয়ে তারা এত দূর এগোয়নি।
সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কোনো ঘাটতি আসলে কখনই দেখা যায়নি। তিতাস নদীর প্রবাহ বন্ধ করে আড়াআড়ি রাস্তা বানিয়ে ভারতের ভারী মালপত্র পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর তুলনীয় দৃষ্টান্ত পৃথিবীর কোথাও আছে কিনা আমার জানা নেই। তখনো বিদ্যুতের কথা বলা হয়েছিল।
গাধা ও চতুর ব্যবসায়ীর গল্প আমরা জানি। চতুর ব্যবসায়ী সেবাদানে পরিশ্রমী গাধার পিঠে চড়ে তাকে ইচ্ছামতো চালানোর জন্য একটা বাঁশের আগায়, গাধার খাদ্য, মুলা ঝুলিয়ে রেখেছিল। মুলা যেদিকে যায়, গাধাও সেদিকে যায়। এভাবে চতুর লোক তার যেদিকে দরকার সেদিকে নিয়ে যাচ্ছে গাধাকে। পরিশ্রম করে সেবা দিয়ে মরে যাচ্ছে গাধা, কিন্তু মুলা আর জুটছে না। কেউ যদি গাধার ভূমিকায় নিজেকে স্থাপন করে, তার পক্ষে হয়তো এটা বোঝাই কঠিন যে, মুলার সঙ্গে তার দূরত্ব কখনো কমবে না।
২৮ মে ২০১৩
 
লেখক: অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
anujuniv@gmail.com


__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___