রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক প্রস্তুতি, ভোগ্যপণ্য সঙ্কটের কোন আশঙ্কা নেই
রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে ভোগ্যপণ্যের যে মজুদ রয়েছে, তাতে রমজানে সঙ্কটের কোন আশঙ্কা নেই। মজুদকৃত পণ্যগুলো যথাসময়ে বাজারে ছাড়া হলে মূল্য হ্রাস পাবে। সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে চলে আসবে সব পণ্যের দাম। ইতোমধ্যে দাম হ্রাস পেয়েছে ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা এবং ডালের মতো প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্যের।
এদিকে রমজান সামনে রেখে সরকার নিয়ন্ত্রিত সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবি খোলা বাজার পণ্য বিক্রি শুরু করেছে। সারাদেশে খোলা ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি হচ্ছে। স্বল্প ও নিম্নবিত্তের মানুষ লাইন ধরে কিনছেন টিসিবির পণ্য। বেসরকারী পর্যায়ে মজুদ রয়েছে পর্যাপ্ত ভোগ্যপণ্য। বিশেষ করে ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল, ছোলা পেঁয়াজ এবং মসলাজাতীয় পণ্যের রেকর্ড পরিমাণ মজুদ বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া আমদানিকৃত ভোগ্যপণ্য প্রতিদিনই দেশে ঢুকছে। রমজানের শুরু ও মাঝামাঝি পর্যায়ে আরও বিপুল পরিমাণ ভোগ্যপণ্য সামগ্রী দেশে আসবে।
তবে এখনও সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না চিনি ও ভোজ্যতেল।
নির্ধারিত সাড়ে ৪৫ টাকার চিনি ২ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ৪৭-৪৮ টাকা।
সয়াবিন তেল প্রতিলিটারের দাম ১০৮ টাকা নির্ধারণ করা হলেও ২ টাকা বেশি দামে ১১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের আশ্বাস কার্যকর হয়নি। ফলে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে এ দুটি পণ্য কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। আর এ সবই হচ্ছে দুর্বল আইনী কাঠামোর জন্য দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ার কারণে। এ ছাড়া প্রতিযোগিতা আইন করার উদ্যোগ নেয়া হলেও সেটি সরকার এখন চূড়ান্ত করতে পারেনি। ফলে ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হচ্ছে না। বিভিন্ন ফাঁক ফোকরের সুযোগ নিয়ে বাজার অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চলছেই।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদ বলেন, রমজান সামনে রেখে চাহিদার তুলনায় বেশি পণ্য সংগ্রহ ও মজুদ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে চিনি, ভোজ্যতেল ও ডালের দাম কমে গেছে। আর পেঁয়াজের দাম কমবে দু'একদিনের মধ্যে। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি। দেশে ভোগ্যপণ্যের মজুদকে বন্যা আখ্যায়িত করে বাণিজ্য সচিব বলেন, যারা রমজানে বিক্রি না করে ধরে রাখবে আলটিমেটলি তারা লোকসানের সম্মুখীন হবে। সরকারের হাতে পণ্য মজুদ ও আমদানির যে তথ্য রয়েছে তাতে সঙ্কট হওয়ার কোন কারণ নেই।
তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত দামে রাজধানীর অধিকাংশ বাজারে ভোজ্যতেল ও চিনি বিক্রি হচ্ছে। কোন কোন বাজারে দু'এক টাকা বেশি নেয়া হলেও রোজা শুরু হলে সে সুযোগ কেউ পাবে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দ্রব্যমূল্য মনিটরিং টিমের কঠোর নজরদারীর মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া সরকারের অন্যান্য ইন্টেলিজেন্স বিভাগও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।
সূত্র মতে,
রমজানে ২ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা বিপরীতে আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৮৭ হাজার টন, ৮ হাজার টন টিসিবির হাতে রয়েছে। এ ছাড়া সঠিক পরিসংখ্যান না পাওয়া গেলেও রমজানের শুরু ও মাঝামাঝি পর্যায়ে বিপুল পরিমাণ পরিশোধিত ও অপরিশোধিত তেল দেশে ঢুকবে। ইতোমধ্যে আমাদানিকৃত ভোজ্যতেল জাহাজীকরণ করা হয়েছে।
রমজান মাসে চিনির চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার টন, বিপরীতে আমদানি হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টন। টিসিবির হাতে আরও মজুদ রয়েছে ১৭ হাজার টন চিনি।
এ মাসে ডালের চাহিদা ১ লাখ ৪০ হাজার টন, বিপরীতে মজুদ আছে ১ লাখ ৯৫ হাজার টন।
বাংলাদেশ ব্যাংক এবং কৃষি বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়Ñ সারা বছরে ছোলার চাহিদা ১ লাখ টন। এর মধ্যে দেশীয় উৎপাদন ১০ হাজার টন। বাকিটা আমদানি করে পূরণ করা হয়। বর্তমান মজুদ আছে ৪৫ হাজার টন। রোজায় প্রয়োজন হবে ৪০ হাজার টন। অর্থাৎ বর্তমানে যে পরিমাণ ছোলা মজুত আছে তাতে দাম বাড়ার কোন কারণ নেই। ইতোমধ্যে ছোলা আমদানির জন্য এলসি করেছেন ব্যবসায়ীরা। আগামী জুলাই মাসের মধ্যে ১৩ হাজার টন আমদানিকৃত ছোলা দেশে আসবে। অথচ রোজা না আসতেই ৫৫-৬০ টাকার ছোলা ৭০-৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আগামী সপ্তাহ নাগাদ মিয়ানমার ও অস্ট্রেলিয়া থেকে ছোলার একটি বড় চালান দেশে পৌঁছবে। যদিও বাজারে বর্তমান ছোলার কোন সঙ্কট নেই। গত এক সপ্তাহ আগে প্রতিকেজি ছোলা ৭০-৭৫ টাকায় বিক্রি হলেও সরবরাহ বাড়ায় অস্ট্রেলিয়ার ছোট দানার ছোলা এখন ৬০ টাকায় নেমে এসেছে। মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত ছোলা ঢোকা শুরু হলে দাম আরও কমবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
যদিও বর্তমান বাজারে ছোলার দাম কমে এসেছে।
ট্যারিফ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য মতে, এ সব পণ্যের সঙ্কট দেশে নেই। রমজান সামনে রেখে পণ্যের মজুদও ভাল। কিন্তু তারপরও শুধু চাহিদা বাড়ায় দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন আমদানিকারক, পাইকারী এবং খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা।
তবে পণ্যের দাম বাড়িয়ে যাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফা করতে না পারে সে লক্ষ্যে সরকারও কঠোর অবস্থানে রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ইতোপূর্বে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যাতে কোনভাবেই পণ্যের দাম বাড়িয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা ফায়দা লুটতে না পারে। ঢাকা মহানগারীতে ১৪টি মনিটরিং টিম নিয়মিতভাবে বাজার পরিদর্শন করছে। এছাড়া মজুদকারীদের ধরতে গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে রয়েছে। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।
জানা গেছে, ইফতার তৈরিতে যেসব পণ্যের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় তা নিয়েই ব্যবসায়ীরা কারসাজি করার সুযোগ খুঁজছে।
এ সব পণ্যের মধ্যে রয়েছে ছোলা, খেজুর, ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল, বুট ও মসলাজাতীয় পণ্য পেঁয়াজ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর),
এ ছাড়া সারা বছর পেঁয়াজের চাহিদা সর্বোচ্চ ২১ লাখ টন। চলতি বছর দেশে উৎপাদন হয়েছে ১৯ লাখ ১৪ হাজার টন। সারা বছরে আমদানি করা হয় ৭ লাখ ৮৯ হাজার টন। রমজানে প্রয়োজন হবে ২ লাখ ২০ হাজার টন। কিন্তু পেঁয়াজের উৎপাদন, মজুদ ও সরবরাহ ভাল থাকার পরও প্রতিসপ্তায় এ পণ্যটির দাম বেড়ে যাচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও পেঁয়াজের বাজার সবচেয়ে বেশি চড়া। প্রতিকেজি ভালমানের দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা। ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ভারত থেকে আমদানিকৃত বড় সাইজের পেঁয়াজ। ব্যবসায়ীরা দাম কমানোর আশ্বাস দিলেও কার্যকর হচ্ছে না। ভোক্তাদের আশঙ্কা, শেষ পর্যন্ত ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ নিয়ে সিন্ডিকেট করতে পারে। কারণ ভারতের হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখ-ের বৃষ্টিপাতকে সঙ্কট হিসেবে চিহ্নিত করে আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।
এদিকে, মসুর, ছোলা, মুগ ও এ্যাঙ্কর নামে চার ধরনের ডাল দেশে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে। এর মধ্যে মসুর ডাল সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। সব মিলিয়ে সারা বছরে ডালের চাহিদা ১১ লাখ টন। দেশীয় উৎপাদন ক্ষমতা ৬ লাখ টন। বাকি ৬ লাখ ২৬ হাজার টন বছরের বিভিন্ন সময়ে আমদানি করে চাহিদা মিটানো হয়।
রমজানে ডালের চাহিদা ১ লাখ ৪০ হাজার টন, বিপরীতে মজুদ আছে ১ লাখ ৯৫ হাজার টন। এ অবস্থায় ডালের দাম বাড়ার কোন কারণ নেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বতর্মান বাজারে প্রতিকেজি দেশী মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০৫-১১৫ এবং ক্যাঙ্গার ভাল মানের ১২০-১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে প্রতিকেজি ডালে অতিমুনাফা করা হচ্ছে ২১-৪২ টাকা পর্যন্ত।
অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় বেশি পরিমাণ ভোগ্যপণ্যের মজুদ রয়েছে।
শাক-সবজি রফতানি বন্ধ ঘোষণা করায় এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে কাঁচাবাজারে।
কিন্তু তারপরও রমজান মাস সামনে রেখে ভোগ্যপণ্যের বাজারে এক ধরনের অস্থিরতা রয়েছে।
সেহরি, ইফতার ও পিক আওয়ারে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত, নিশ্চয়তা বিদ্যুত উপদেষ্টার
http://www.dailyjanakantha.com/news_view_all.php?nc=15&dd=2013-07-05
ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের সকল বিদ্যুত গ্রাহক আসন্ন রমজানে সেহরি, ইফতারসহ পিক আওয়ারে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত পাবেন। সরকারের তরফ থেকে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এখন অনেক মসজিদেও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ব্যবহার করে। নামাজের পর পরই এসি বন্ধ করার আহ্বানের পাশাপাশি।
পিকআওয়ারে পানির পাম্প, আয়রন না চালানো এবং এসির লোড সীমিত রেখে অন্যদের বিদ্যুত পেতে সহায়তা করার আহ্বান জানানো হয়েছে। একজন একটু সাশ্রয় করলেই আরেকজন বিদ্যুত পাবেন। তিনি বলেন, একেবারেই এসি চালাতে হলে যদি ২৪ ডিগ্রীর ওপরে রাখা হয় তাতেও বিদ্যুতের সাশ্রয় হয়।
উপদেষ্টা বলেন, কোন কারণে রমজানে বিদ্যুত চলে গেলে মনে করতে হবে এটা কারিগরি ত্রুটি। লোডশেডিং নয়।
তিনি বলেন, সরকার দায়িত্ব নেয়ার সময় দেশের বিদ্যুত উৎপাদন হতো ৩ (তিন) হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। এখন তা ৬ (ছয়) হাজার হাজার ৫০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে।
--
দেশে বিদেশে বাঙ্গালীরা এবং বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ গুনুমুগ্ধ ভক্ত গন
সুখে থাকুন, ভালো থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন
জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু
শুভেচ্ছান্তে
Engr. Shafiqur Rahman Anu
__._,_.___