Banner Advertiser

Friday, July 26, 2013

[mukto-mona] আওয়ামী লীগের মুতাজিলা ও খারিজিরা



আওয়ামী লীগের মুতাজিলা ও খারিজিরা

সোহরাব হাসান | আপডেট: ০৩:০২, জুলাই ২৭, ২০১৩ | প্রিন্ট সংস্করণ
Untitled-1আরবি মুতাজিলা শব্দের অর্থ দলত্যাগী। আর খারিজি হলো বহিষ্কৃত। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই শব্দদ্বয়ের তেমন ব্যবহার না থাকলেও ২০০৭-০৮-এর পরিপ্রেক্ষিতে দুই প্রধান দলে বেশ চালু হয়ে গিয়েছিল। ঘরোয়া আলোচনায় অনেকেই প্রশ্ন করতেন—ভাই, আপনি মুতাজিলা, না খারিজি? অর্থাৎ দল আপনাকে ছেড়ে দিয়েছে, না আপনি দলকে ছেড়ে দিয়েছেন?
আওয়ামী লীগের 'স্ট্যালিনগ্রাদ' নামে পরিচিত গাজীপুরে পরাজয়ের পর দলের শীর্ষ নেতৃত্ব চিন্তিত। মুখে নেতারা যতই স্থানীয় নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচন এক নয় বলে আওয়াজ তুলুন না কেন, গলায় জোর নেই। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব পেশাজীবী ও শক্তিকে একত্র করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। ১৪ দলের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাজোটের পরিধি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন পেশাজীবী ও শ্রমজীবী সংগঠন এবং সাবেক ১৫ দলের শরিক কোনো কোনো দলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনাও শুরু করেছেন। উদ্দেশ্য, ১৮ দলের বাইরের সব সামাজিক ও রাজনৈতিক শক্তিকে নিয়ে নির্বাচনী লড়াই চালিয়ে যাওয়া।
কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব যখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে একত্র করার উদ্যোগ নিয়েছেন, তখন নিজ দলের অবস্থাটা কী? দলটি এখনো বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচল থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না। ২০০৯ সালের দলীয় কাউন্সিলে দলের বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ নেতার গায়ে সংস্কারবাদের কালি লাগিয়ে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সে সময় দলের সভানেত্রী যেই নবীন নেতৃত্বের হাতে পতাকা তুলে দিয়েছিলেন, হয় তাঁদের সেই পতাকা বহনের ক্ষমতা নেই অথবা আগ্রহ নেই। দলের বর্তমান সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা ও স্থবিরতাই তার প্রমাণ।
এক-এগারোর সুনামি দেশের প্রধান দুই দলকে চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিলেও আওয়ামী লীগের বিপদ তুলনামূলক কম ছিল। আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় চার নেতা আমির হোসেন আমু, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ব্যক্তিগতভাবে যে সংস্কারের প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, তাতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করা হয়নি। তাঁরা চেয়েছিলেন, দলের ভেতরে ন্যূনতম গণতন্ত্র চর্চা হোক। অন্যদিকে বিএনপির সংস্কারপন্থীরা কেবল খালেদা জিয়ার নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জই করেননি, তাঁরা তাঁকে বাদ দিয়ে নতুন কমিটিও গঠন করেছিলেন।
শেখ হাসিনা যে তরুণ নেতৃত্বের হাতে দেশ পরিচালনার পতাকা তুলে দিয়েছিলেন, তাঁদের একজন গোলাম মাওলা রনি সম্প্রতি সাংবাদিক পেটানোর দায়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ রকম হঠাৎ দলে আসা আরও অনেক সাংসদ ও মন্ত্রী আছেন। গোলাম মাওলা রনি কীভাবে দলের মনোনয়ন পেলেন? স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, ২০০৮ সালের আগে দলের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক ছিল না। নির্বাচনী আইনে স্থানীয় সংগঠন থেকে প্রার্থীর নামের তালিকা কেন্দ্রে পাঠানোর কথা। গলাচিপা দশমিনার কমিটি তাঁর নাম পাঠিয়েছিল কি? সংস্কারবাদী হিসেবে নাম থাকায় এই আসনে তিনবার নির্বাচিত সাংসদ ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী খ ম জাহাঙ্গীর মনোনয়ন পাননি। পঁচাত্তর-পরবর্তী ছাত্রলীগকে যাঁরা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের একজন তিনি। আর গোলাম মাওলা রনি দলের কেউ না হয়েও মনোনয়ন পেলেন।
সংস্কারপন্থী চার জ্যেষ্ঠ নেতার ক্ষেত্রেও একযাত্রায় দুই ফল হয়েছে। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছাড়া কারও ভাগ্যে মন্ত্রিত্বের শিকা ছিঁড়েনি। শেখ হাসিনা বলেছিলেন, আমি ফরগিভ করলেও ফরগেট করব না। বছর খানেক আগে তোফায়েল আহমেদকে মন্ত্রী করার প্রস্তাব দেওয়া হলে তিনি রাজি হননি। ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রাশেদ খান মেননও মন্ত্রিত্ব নেননি।
সংস্কারপন্থী হিসেবে অভিযুক্ত জুনিয়র নেতাদের অবস্থা আরও করুণ। সরকার বা দলের কোথাও তাঁদের ঠাঁই হয়নি। দু-একজন দলের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলেও দলীয় পদ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অথচ তাঁদের কেউ কেউ আগের আওয়ামী লীগ আমলে ভালো অবস্থানে ছিলেন। কিসের ভিত্তিতে খারিজি ও মুতাজিলার তালিকা করা হয়েছে, দলের নেতা-কর্মীরা তা জানেন না। যেকোনো গণতান্ত্রিক দলে কারও বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাবিরোধী তৎপরতার অভিযোগ এলে সাধারণত তদন্ত হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয় এবং তারপর অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তি দেওয়া হয়। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হলে দলীয় নেতৃত্বই তাঁর কাছে অনুতপ্ত হন।
কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সেটি আশা করা যায় না। ২০০৯-পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগের কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন যথাক্রমে সাবের হোসেন চৌধুরী, মাহমুদুর রহমান মান্না, আখতারুজ্জামান, আবদুল মান্নান, আবদুর রহমান, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও বীর বাহাদুর। তাঁদের মধ্যে বর্তমান কমিটিতে বীর বাহাদুর ও আবদুর রহমান ছাড়া কেউই নেই। বীর বাহাদুর আদিবাসী কোটায় প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। 'বাঙালি' কোটায় সাংসদ হয়েছেন সাবের হোসেন চৌধুরী, আবদুর রহমান ও আবদুল মান্নান। একটি দলের সব সাংগঠনিক সম্পাদক যদি অচল, অথর্ব বা ষড়যন্ত্রকারী হয়, তাহলে সেই দল কীভাবে চলে? সেই দলের সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদক সেই দায় এড়ান কীভাবে?
আর বর্তমান কমিটিতে যাঁদের সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে, তাঁদের নেতৃত্বের গুণ কতটা আছে জানি না, তবে নেত্রীর প্রতি অপরিসীম আনুগত্য আছে। আর এটাই হয়তো পদ পাওয়ার একমাত্র যোগ্যতা। কোথাও তাঁদের তৎপরতা লক্ষ করা যায় না।
গত সাড়ে চার বছরে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তি বেড়েছে, তার প্রমাণ নেই। বরং আওয়ামী লীগের ব্যর্থতার সুযোগে ২০০৮ সালে বিধ্বস্ত বিএনপি এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
২০০৮ সালের ডিসেম্বরের গণজোয়ারের সময় আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব সংস্কারপস্থী বা মুতাজিলাদের অপ্রয়োজনীয় ভাবলেও এখন যে অবশ্যই প্রয়োজনীয়, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। নেতা তো আকাশ থেকে টুপ করে পড়েন না বা মাটিতেও গজান না, সেই সত্যটি নিশ্চয়ই আওয়ামী লীগ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। ২০০৯ সালে দলের সভানেত্রী যাঁদের পেছনে ঠেলে দিয়েছিলেন, নানা ব্যর্থতা-দুর্বলতা সত্ত্বেও তাঁরা রাজনীতিতে টিকে আছেন। থাকবেন। কিন্তু সেই সময়ে যাঁদের তিনি মই দিয়ে উপরে তুলেছিলেন, তাঁদের সবাই না হলেও কেউ কেউ যে সরকার ও দলকে ডুবিয়েছেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আওয়ামী লীগ যখন বিএনপি-জামায়াত-হেফাজতকে ঠেকাতে বৃহত্তর ঐক্যের ডাক দিয়েছে, তখন দক্ষ ও পরীক্ষিত নেতাদের উপেক্ষা করে চলাটা খুবই বিস্ময়কর। অনেকে বলেন, সাবের হোসেন চৌধুরীকে মনোনয়ন দিতে হবে বলেই সরকার ২০০৯-১০ সালে ঢাকা সিটির নির্বাচনটি ঠেকিয়ে দিয়েছিল। এ রকম নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার আরও বহু নজির আছে। আসাদুজ্জামান নূর দুইবারের সাংসদ, বিএনপি-জামায়াত আমলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দলের দায়িত্ব পালন করেছেন, অভিনেতা হিসেবে দেশজোড়া তাঁর পরিচিতি আছে। কিন্তু তাঁকে মন্ত্রী করা হয়নি। মন্ত্রী করা হয়েছে মি. পদ্মা সেতুকে।
২০০৮ সালের নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা ভেবেছিলেন, তাঁর হাতে জাদুর কাঠি আছে, তিনি যেখানে ছোঁয়াবেন সেখানেই আলো ছড়াবে। এখন প্রমাণিত হলো, তাঁর কাঠিগুলো মোটেই কাজের নয়। আওয়ামী লীগের ৯০ ভাগ নেতা-কর্মী মনে করেন, প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করতে হলে এ মুহূর্তে অতীত ভুলে সবাইকে নিয়ে এগোতে হবে। সবাইকে কাজে লাগাতে হবে। কিন্তু তাঁরা মনে করলেই হবে না। শেখ হাসিনা কী মনে করেন, সেটাই আসল। অন্যান্য দলের মতো আওয়ামী লীগেও ভিন্নমত ও ভিন্ন চিন্তার সুযোগ কম। এমনকি রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি ও লক্ষ্য কী হবে, তা কখনোই দলীয় ফোরামে আলোচিত হয় না। হঠাৎ কেউ আলোচনার উদ্যোগ নিলে তাঁকে মুতাজিলা (দলত্যাগী) বলে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়। তবে দলে সেই ধারাই বেগবান থাকে, যে ধারা সব সময় নেতৃত্বের তোয়াজ-স্তুতি করে।
যে দলে একক সিদ্ধান্তে কারও উত্থান বা পতন এবং পদ-পদবি বণ্টিত হয়, সেই দল গণতন্ত্র দিতে পারে না। সেই অর্থে বাংলাদেশে কোনো দলেই গণতন্ত্র চর্চা হয় না। বিএনপি বা জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র এমনভাবে করা, সেখানে ঈশ্বরের পরই দলীয় প্রধানকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। দলে কেউ নির্বাচিত হন না। দলীয় প্রধান সবাইকে নিয়োগ দেন। নিয়োগদান ও হুকুমদানের গণতন্ত্র চলছে দেশে। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে গণতন্ত্র থাকলেও চর্চা নেই।
আওয়ামী লীগ যে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক এবং সামনে এগিয়ে নেওয়ার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কথা বলে, ধর্মান্ধ ও সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলে, তার প্রতি মুতাজিলা ও খারিজি—সবারই সমর্থন আছে। কথা হলো, আওয়ামী লীগের বাইরে যেসব দল বা গোষ্ঠী একই চেতনা ও আদর্শ ধারণ করে, দলটি কখনোই কি আন্তরিকভাবে তাদের একত্র করার চেষ্টা করেছে? নেতৃত্বের বিরোধিতার কারণেই একসময় অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী, অলি আহমদরা বিএনপি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন; কিন্তু আবার দলে একীভূত না হলেও তাঁরা নীতিগতভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ তার আদর্শের সহযাত্রীদের কাছে না টেনে ক্রমাগত দূরে ঠেলে দিচ্ছে।
এর খেসারত দল হিসেবে কেবল আওয়ামী লীগকে নয়, গোটা বাংলাদেশকেই দিতে হবে।
 সোহরাব হাসান: কবি, সাংবাদিক।


__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___