Banner Advertiser

Friday, August 23, 2013

[mukto-mona] গ্রেনেড হামলার ৯ বছর আল্লাহর কাছে শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করি মুহম্মদ শফিকুর রহমান



গ্রেনেড হামলার ৯ বছর আল্লাহর কাছে শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করি
মুহম্মদ শফিকুর রহমান
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেল ৫টা। বঙ্গবন্ধু এভিনিউ। সেদিনের বিরোধীদলীয় নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশব্যাপী জঙ্গীবাদী তৎপরতার প্রতিবাদে আয়োজিত শান্তিপূর্ণ সমাবেশে নেতৃত্ব দেবার জন্য উপস্থিত হয়েছেন। কোন মঞ্চ নয়, ট্রাকের ওপর দাঁড়িয়ে তিনি বক্তৃতা করছেন, তার সাথে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। বক্তৃতাও প্রায় শেষ। এমন সময় ভয়ঙ্কর বিকট শব্দ করে গ্রেনেডের বিস্ফোরণ হতে লাগল:১টা, ২টা, ৩টা, ডজনেরও বেশি গ্রেনেডের পর পর বিস্ফোরণে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ চত্বরে ঢলে পড়লেন শত শত নেতাকর্মী- সমর্থক, সাধারণ মানুষ। ঘটনাস্থলেই নিহত হলেন ২২ জন। মারাত্মক আহতাবস্থায় হাসপাতালে নেবার পর ইন্তেকাল করলেন কেন্দ্রীয় নেত্রী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি মুহম্মদ জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী বেগম আইভী রহমান। গ্রেনেড হামলা শুরু হলে সাবেক মেয়র ও ঢাকা সিটি আওয়ামী লীগ সভাপতি মুহম্মদ হানিফসহ (মরহুম)সহ নেতৃবৃন্দ শেখ হাসিনার চারদিকে মানববেষ্টনী রচনা করে রাখেন। আল্লাহপাক শেখ হাসিনাকে রক্ষা করলেন। তারপরও তাঁর বাঁ-কানের শ্রবণেন্দ্রীয় আহত হয়, শ্রবণশক্তি লোপ পায়। দীর্ঘ ৯টি বছর চলে গেল, আজও ওই জঘন্য হত্যাযজ্ঞের বিচার হয়নি এবং মুহম্মদ হানিফ, আবদুর রাজ্জাক এরই মধ্যে পরলোকে চলে গেছেন; অন্যান্য আহত শত শত নেতাকর্মী অনেকেই দুঃসহ যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছেন।
সেই স্মৃতি আজও যন্ত্রণা দেয়। ব্যক্তিগতভাবে শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী সাংবাদিক হিসেবে এখানে কিছু স্মৃতি তুলে ধরতে চাই-কি ভয়ঙ্কর, কি মানবতাবিরোধী, কি ধর্মীয় চেতনাবিরোধী সেই সব স্মৃতি, নতুন প্রজন্মের জানা দরকার এজন্য যে, রাজনীতির নামে একটি গোষ্ঠী কতটা অনৈসলামিক,অগণতান্ত্রিক, অসভ্য, বর্বর নিষ্ঠুর হতে পারে তা নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে; নইলে বিভ্রান্ত হবার শঙ্কা-সম্ভাবনা থেকেই যাবে। কারণ ওরা নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করে তাদের হাতে অর্থ, অস্ত্র ও ড্রাগ তুলে দেয়। 

স্মৃতি-১
হোটেল শেরাটনে (বর্তমান রূপসী বাংলা হোটেল) চলছে সাউথ এশিয়ান ফ্রি মিডিয়া এ্যাসোসিয়েশনের (ঝঅঋগঅ) সম্মেলন। ৪টার মধ্যে শেষ হয়ে যাবে সম্মেলন। ভাবলাম সম্মেলন শেষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে যাব এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জঙ্গীবাদবিরোধী সমাবেশ ও শান্তি মিছিলে যোগ দেব। সম্মেলন শেষ হতে সাড়ে ৪টা বেজে গেল। ওই দিন নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলাম। শেরাটনের বেজমেন্টের পার্কিং থেকে গাড়ি বের করে সাংবাদিক নেতা আলতাফ মাহমুদকে পাশে বসিয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর উদ্দেশে চলছি। শিশু পার্কের পাশে সড়কে আসার পর এক ছোট ভাই আওয়ামী লীগ কর্মী সেল ফোনে জানাল নেত্রীর সমাবেশে 'বোমা হামলা' হয়েছে। অনেক হতাহত হবার সম্ভাবনা। সেল ফোন রেখে দ্রুত গাড়ি চালিয়ে প্রেস ক্লাবে গাড়ি রেখে দৌড়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর পথে জিরো পয়েন্টে গিয়ে আর এগোতে পারলাম না। টিয়ার গ্যাস শেলের বিস্ফোরণে গোটা এলাকা ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে আছে। এর মধ্যেও কিছু তরুণকে দেখলাম রিকশা, রিকশাভ্যানে করে হতাহতদের নিয়ে ধোঁয়া থেকে বেরিয়ে হাসপাতালের দিকে যাচ্ছে। একজনকে জিজ্ঞেস করলাম, নেত্রীর খবর কি? বলল- কি হয়েছে জানি না, তবে কয়েকজন লোক নেত্রীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গেছেন। পরে জেনেছিলাম, গাড়িতে ওঠার পর গাড়ি লক্ষ করে বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল। গাড়িটি প্রবাসী বাঙালীদের বিদেশ থেকে উপহার দেয়া বুলেটপ্রুফ জীপ ছিল। তারপরও গাড়ির গায়ে বুলেটের দাগ দেখেছি। বডিতে অসংখ্য বুলেটের গর্ত। 
এক পর্যায়ে টিয়ার শেল নিক্ষেপ বন্ধ হয়। আচ্ছন্নতা কমে গেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনের চত্বরে যে ভয়ঙ্কর ধ্বংসযজ্ঞ দেখেছি, এখানে ওখানে মৃতদেহ পড়ে আছে, পড়ে আছে তাজা প্রাণ মানুষের বিচ্ছিন্ন খ--বিখ- অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, হাত পা-রক্তাক্ত, রক্তের বন্যায় ভাসছে, তাকাতে পারছিলাম না। প্রেসক্লাবে ফিরে নির্বাক বসে থেকেছিলাম। কারা এমন বর্বর কাজ করতে পারে, কেনইবা গ্রেনেড হামলা বন্ধ হবার সঙ্গে সঙ্গে এমনভাবে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করা হয়েছিল, পুলিশ উদ্ধার কাজে যোগ না দিয়ে কেন টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুরো এলাকা গ্যাসের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন করে দিয়েছিল? কোন হিসাব মেলাতে পারছিলাম না। 
অবশ্য ৩-৪ দিনের মধ্যেই সব পরিষ্কার হতে শুরু করল। খালেদা জিয়া (তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী) বললেন, 'আওয়ামী লীগ নিজেরাই গ্রেনেড হামলা করেছে (?)। নইলে শেখ হাসিনা বেঁচে যায় কিভাবে(?)' খালেদা জিয়ার সমগামীরা এমন উদ্ভট কথাও বললেন: 'শেখ হাসিনা ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছিলেন (?)' 
প্রিয় পাঠক বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের আমার পুত্র-কন্যাসম পাঠকদের বেগম খালেদা জিয়ার তৎকালীন মন্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, খালেদা জিয়া অযোগ্য অশিক্ষিত প্রধানমন্ত্রী জানি; কিন্তু এতটা হিংস্র বিকৃত রুচির নারী তা তখনই ভাল করে পরিষ্কার হয়ে গেল। জাতি দেখতে পেল খুনীদের আড়াল করার জন্য নোয়াখালীর চর থেকে জজ মিয়া নামে এক আধা পাগল যুবককে ধরে এনে বলানো হলো সে গ্রেনেড ছুড়েছে। পরে বেরিয়ে আসে তার পরিবারকে ২০০০ টাকা করে দেয়া হয়েছিল বেশ কিছুদিন; যেমন করে তাৎক্ষণিকভাবে খুনীদের গ্রেনেড নিক্ষেপের পর টিয়ার-গ্যাস ছুড়ে নিরাপদ প্রত্যাগমনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। 'হাওয়া ভবনে' বসে তারেক জিয়ার নেতৃত্বে বৈঠকে এই গ্রেনেড হামলা পরিকল্পনা হয় এবং সেই পরিকল্পনা অনুযায়ীই টিয়ার গ্যাস ছুড়ে নিরাপদ প্রত্যাগমনের ব্যবস্থা করা হয় এবং তা পরিচালনা করে খালেদা জিয়ার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, যিনি ছিলেন তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠজন। গ্রেনেড হামলায় নেতৃত্ব দানকারী মুফতি হান্নানকে গ্রেফতার করার পর সে এসব তথ্য দিয়েছে বলে জানা যায়। হাওয়া ভবনের ওই বৈঠকে আরও ছিলেন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সহগামী জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ, তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী এবং কথিত গ্রেনেড হামলাকারী মওলানা তাজুল ইসলামের (বর্তমানে পাকিস্তানে পলাতক বলে ধারণা করা হয়) ভাই আবদুস সালাম পিন্টু, ছিলেন ফ্রিডম পার্টিরও কেউ। 
অবশ্য খালেদা জিয়া বা তার বিএনপির যে চরিত্র তাতে করে এসব নাশকতামূলক কাজই তাদের কাছে রাজনীতি। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরও আমরা দেখলাম জিয়া খুনীদের পুরস্কার স্বরূপ বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে উচ্চপদে চাকরি দিলেন। ইনডেমনিটি আইন করে খুনীদের বিচার করার পথ রুদ্ধ করে দিলেন। সেদিন বঙ্গবন্ধু হত্যায় মোশতাকের সঙ্গে জিয়ার যেমন সম্পৃক্ততা সর্বজনবিদিত, তেমনি ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায়ও জিয়া- খালেদাপুত্র তারেক এবং তার হাওয়া ভবন জড়িত। মোশতাক-জিয়া এবং তাদের প্রভু পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই সেদিন যেমন আগস্ট মাস বেছে নিয়েছিল তেমনি তারেক ও তার হাওয়া ভবনও বেছে নিয়েছিল একই আগস্ট মাস। কেননা, এই আগস্টের ১৪ তারিখ যে পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল বঙ্গবন্ধু সেই পাকিস্তানকে টুকরা করে দিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ বানিয়েছিলেন। সেই জন্য খুনীরা ১৫ আগস্ট বেছে নিল, পাকিস্তানকে খুশি করার জন্য। তারেক-খালেদা-মুজাহিদরাও সেই একই উদ্দেশ্যেই আগস্ট মাস বেছে নেয়। বস্তুত তারা চেয়েছিল ১৪ আগস্ট অর্থাৎ রাত ১২টার মধ্যে, তা পারেনি। রাত ১২টা পেরিয়ে ১৫ আগস্ট প্রথম প্রহর হয়ে গিয়েছিল। যেমন পরের বছর আগস্ট মাসে দেশের ৬৩ জেলায় ৫০০ স্থানে একই সঙ্গে বোমার বিস্ফোরণও একই বার্তা দিচ্ছে নাকি?
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আইভী রহমানসহ ২৪ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর হত্যাকা-, যাদের মধ্যে আদা চাচাও রয়েছেন, যে মানুষটি আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনার এমন কোন সভা-সমাবেশ ছিল না যেখানে আদা চাচা নেই এবং তার কৌটা থেকে এক রকম রান্না করা মসলা-মেশানো আদার টুকরা বিলাচ্ছেন না, সেই আদা-চাচাও গ্রেনেডের স্পিøন্টারে ছিন্নভিন্ন হয়েছিলেন। এই বর্বর হত্যাকা- এবং তিন শতাধিক আহত নেতাকর্মী-সমর্থকদের যন্ত্রণার বিচার আজও হলো না। তখন সরকারে ছিল বিএনপি এবং খালেদা; তারা বিচার করলই না, বরং খুনীদের আড়াল করার ষড়যন্ত্র করল। আওয়ামী লীগ সরকারেরও সাড়ে ৪ বছর পার হলো, আমরা আশাবাদী হতে পারছি না। কিন্তু কেন? এ প্রশ্নটি আজ সবার মনে। এটিও কি বঙ্গবন্ধু হত্যার বা জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচারের মতো দীর্ঘসূত্রতার দিকে যাচ্ছে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দল আইনের শাসনে বিশ্বাস করেন এবং বিচার প্রক্রিয়ায় কোন হস্তক্ষেপে বিশ্বাস করেন না, করবেনও না; কিন্তু বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে এমন আত্মঘাতী জড়তা কেন? এ প্রশ্নের জবাব কে দেবে? শোনা যায় বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে নাকি আরও ৮-১০ মাস লাগবে। তার মানে আওয়ামী লীগ সরকারের এ মেয়াদে হবে না। ভয় হলো, দেশের বুকে যদি কালো মেঘ জমে এবং খালেদা জিয়ারা ক্ষমতায় আসে (আসবে না, তবু শঙ্কা থাকে) তাহলে তো আর এই বিচার এগোবে না। কেননা খালেদাপুত্র তারেক এই গ্রেনেড হামলা পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত বলে আজ মানুষ বিশ্বাস করে। খালেদা জিয়াও এমন গণতান্ত্রিক বা আইনের শাসনে বিশ্বাসী নন যে, নিজ সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা চলতে দেবেন! তাছাড়া যে নারী জাতির পিতার শাহাদাত দিবসে ভুয়া জন্মদিন বানিয়ে ৬৯ পাউন্ড কেক কেটে উল্লাস করে (বস্তুত তা বিকৃত রুচি) তার কাছে ভব্যতা আশা করা বোকামি ছাড়া কিছু নয়। 
তাহলে আমরা পাবলিক কি করতে পারি? আমরা চিৎকার করে আওয়াজ তুলতে পারি-আমার মানবাধিকার ক্ষুণœ করা হচ্ছে। যারা করছেন আমি তাদের ঘৃণা করি। 

স্মৃতি-২
শেখ হাসিনার আগের টার্ম (১৯৯৬-২০০১)। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া শেখ লুৎফুর রহমান কলেজের অনুষ্ঠানে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। জন্মভূমিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাচ্ছেন, তাও আবার ওই মাটিরই সন্তান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তথা গোপালগঞ্জবাসীর শেখের বেটার সন্তান শেখ হাসিনা, স্বাভাবিকভাবেই মানুষের ঢল নামবে। প্রস্তুতি চলছে। এরই মধ্যে আগের দিন সকালে এক চা দোকানের কিশোর কর্মচারী খালের পানিতে কাপ প্লেট সাফ করতে গিয়ে চকচকে তার দেখে মালিককে বলে। মালিক এসে তার তুলে দেখেন তারের একপ্রান্ত খালের অপর পাড়ে অনেক দূরে চলে গেছে। অপর প্রান্ত কলেজের পাশের রাস্তায়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানালে বিশেষজ্ঞ এনে দেখা গেল তারের মাথায় কলেজের পাশের রাস্তায় মাত্র এক ফুট মাটির তলে বিশাল এক বোমা। অপরপ্রান্ত থেকে রিমোট কন্ট্রোলে বিস্ফোরণ ঘটানোর আয়োজন করা হয়েছিল। বোমা বিশেষজ্ঞরা আরও একটি বোমা উদ্ধার করলেন হেলিপ্যাডের মাটির তলা থেকে।
পরদিন নির্ধারিত সময়ে প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে নবনির্মিত হেলিপ্যাডে নামলেন। দু'টি হেলিকপ্টার- একটিকে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, অপরটিতে তার সফরসঙ্গী আমরা সাংবাদিকরা এবং তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তাবৃন্দ। অবাক-বিস্ময়ে দেখলাম প্রধানমন্ত্রী যে হেলিপ্যাডে যে জায়গাটায় অবতরণ করলেন তারই পাশে একটি বোমা পোতা হয়েছিল। একইভাবে দেখলাম হেলিকপ্টার থেকে নেমে গাড়ি করে কলেজের পাশে যে জায়গাটিতে প্রধানমন্ত্রী গাড়ি থেকে পা রাখবেন সেখানেই অপর বোমাটি পোতা হয়েছিল। প্রশ্ন হচ্ছে জঙ্গীরা কি করে প্রধানমন্ত্রীর অবতরণস্থলে মেপে মেপে বোমা দু'টি পুঁতেছিল (একেকটির ওজন ৭৬ কেজি), যা বিস্ফোরিত হলে আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতো। এর অর্থ স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে যে নিরাপত্তা ম্যাপ বানিয়েছিল তা জঙ্গীদের হাতে চলে গিয়েছিল বলেই ওরা অমন মেপে মেপে বোমা পুঁতেছিল। 
এখানেও আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অপার করুণা, তিনি বঙ্গবন্ধু- কন্যার প্রাণ বাঁচিয়ে দিয়েছেন। একবার ভাবুন তো ঐ টি-স্টলের কিশোর যদি কাপ- প্লেট ধুতে খালে না যেত এবং তার না দেখত বা তার মালিক প্রশাসনকে না জানাতেন, তাহলে কি বঙ্গবন্ধু এভিনিউর মতো ঘটনা ঘটত না? আল্লাহ পাক ওই কিশোরকে দিয়ে ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে দিয়েছিলেন। আমরা বাংলাদেশ তথা বিশ্বের তাবৎ গণতন্ত্র, আইনের শাসন, অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি এবং ধর্মপ্রাণ মানুষ আল্লাহ পাকের কাছে কৃতজ্ঞ এবং আমরা তার শুকরিয়া আদায় করছি। শেখ হাসিনার মতো নেতা এক যুগে জন্মায় না। অনেক সাধনায় কয়েক যুগ পর আল্লাহর অনুগ্রহ হয়। আমরা শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করছি। 

স্মৃতি-৩

স্মৃতি-২- এর আগের ঘটনা। রাসেল স্কোয়ার থেকে গ্রীণ রোড চৌরাস্তায় শেখ হাসিনার সমাবেশ। নির্ধারিত সময় শেখ হাসিনা এলেন, অন্যান্য নেতার বক্তৃতা শেষে নেত্রী বক্তৃতা দিচ্ছেন। বক্তৃতা প্রায় শেষের দিকে, হঠাৎ দেখলাম সমাবেশের সামনের শেষ প্রান্ত থেকে বৃষ্টির মতো বোমা গুলি ছোড়া শুরু হলো। বোমার ধোঁয়ায় মঞ্চ এলাকাও আবছা অন্ধকারে নিমজ্জিত, নেত্রী তখনও বক্তৃতা করছেন: ঝঃড়ঢ় ভরৎরহম- বন্ধ কর বোমা-গুলি। কিন্তু বোমা-গুলি থামছে না। তিনি বক্তৃতা দিয়েই চলেছেন। সামনের দিকটা প্রায় ফাঁকা। আমি, যুগান্তরের সাইফুল আলম (তৎকালীন ইনকিলাব রিপোর্টার) এবং নেত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (বর্তমানে সহকারী দফতর সম্পাদক) মৃণাল কান্তি দাস মঞ্চের পাশে প্রেস টেবিলে মাথা লুকিয়ে ছিলাম, দেখলাম নেত্রী তখনও এমন ভয়ঙ্কর ঝুঁকির মধ্যে বক্তৃতা করছেন। আমরা তিনজন উঠে এসে এক রকম হাত ধরে টেনে মঞ্চ থেকে নামিয়ে গাড়িতে তুলে দিলাম। সেদিন আল্লাহপাক তাঁকে এভাবে রক্ষা করলেন। নইলে যেভাবে গুলি-বোমা হচ্ছিল যে কোন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যেতে পারত। ঘটেনি আল্লাহ পাকের শুকরিয়া।
এমনি সাহস দেখেছিলাম এরশাদ আমলে। নেত্রী ৩২নম্বর রোডের বঙ্গবন্ধু ভবনে গৃহবন্দী। ঘোষণা দিলেন প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিক সম্মেলন করবেন। কিন্তু ৩২ নম্বরের সামনে মিরপুর সড়ক পর্যন্ত যুদ্ধাবস্থার মতো হেলমেট বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরা পুলিশ আর পুলিশ। মহিলা পুলিশও রয়েছে ডজন ডজন। এর মধ্যে নেত্রী প্রেসক্লাবের উদ্দেশে রওনা দেবেন। বললাম, আমরা সঙ্গে যাব। অনেক বিদেশী সাদা চামড়ার সাংবাদিকও রয়েছেন। ভবনের গেটেই নেত্রীকে বাধা দেয়া হলো। মহিলা পুলিশের পেছনে পুরুষ পুলিশ দাঁড়িয়ে ব্যারিকেড রচনা করে আছে। নেত্রী ব্যারিকেড ভেঙ্গে ভেঙ্গে মিরপুর সড়কের মুখে এসে আর এগোতে পারছিলেন না, কয়েকজন একটি রিকশা আনলে নেত্রী তাতে উঠলেন ,আমরা প্রশ্ন করতে শুরু করলাম। এক পর্যায়ে বিদেশী সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতে শুরু করলে নেত্রী পরিষ্কার ইংরেজীতে জবাব দিতে লাগলেন: ঞযরং রং ঢ়বড়ঢ়ষব'ং ংঃৎঁমমষব ভড়ৎ রিঃযফৎধধিষ ড়ভ সরষরঃধৎু ৎঁষব ভড়ৎ ৎবংঃড়ৎধঃরড়হ ড়ভ ফবসড়পৎধপু, যঁসধহ ৎরমযঃং ধহফ ৎঁষব ড়ভ ষধি রহ ঃযব পড়ঁহঃৎু. এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন: ড়ভ পড়ঁৎংব ড়ঁৎ ভরমযঃ রং ধষংড় ধরসরহম ধঃ ংঃবঢ়ঢ়রহম ফড়হি সরষরঃধৎু ঔঁহঃধ মবহবৎধষ ঊৎংযধফ ধহফ যরং পড়হাড়ু ভৎড়স ঃযব ইধহমধনযধাধহ. এইভাবে একটির পর একটি প্রশ্নোত্তর দিচ্ছিলেন শেখ হাসিনা। এক পর্যায়ে মহিলা পুলিশের কয়েকজন অফিসার শেখ হাসিনাকে একরকম জোর করে রিকশা থেকে নামিয়ে পুনরায় বঙ্গবন্ধু ভবনে পৌঁছে দেন। সেদিন বিদেশী সাংবাদিকরা আমাদের কাছে তাঁর সাহসের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। 
কিন্তু স্মৃতি এখানেই শেষ নয়। এই ৩২ নম্বরেই শেখ হাসিনাকে লক্ষ করে গুলি চালানো হয়েছিল। গুলি চালানো হয়েছিল চট্টগ্রামে (কয়েকজন নিহত হয়), নাটোরে তাঁকে বহনকারী ট্রেনে, জামালপুরে জনসভায় যাবার পথে গাড়িতে, এমনিভাবে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয় বার বার। 
কিন্তু কেন? 
মুক্তিযুদ্ধকালে আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বলেছিলেন ইরৎঃয ড়ভ ইধহমষধফবংয রং সু ঢ়বৎংড়হধষ ফবভবধঃ (বাংলাদেশের জন্ম আমার ব্যক্তিগত পরাজয়)। মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকি জান্তার সহযোগী জামায়াত নেতা গোলাম আযম (যিনি রাজাকার-আলবদর-আল শামস বাহিনী বানিয়ে গণহত্যা, নারী নির্যাতন, বুদ্ধিজীবী হত্যায় নেতৃত্ব দেন) বিজয়ের শেষ দিকে পাকিস্তানে পালিয়ে গিয়ে 'পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি' বানিয়ে পরাজিত পাকিস্তান-কিসিঞ্জার চক্রের সঙ্গে মিলে স্বাধীন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। তাদেরই ষড়যন্ত্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, দ্বিতীয় স্তরের জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী ও এ এইচএম কামরুজ্জামান, তৃতীয় স্তরের শেখ ফজলুল হক মনি ও শেখ কামালকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। হত্যা করা হয় কর্নেল তাহের, জেনারেল খালেদ মোশাররফ, জেনারেল মনজুরকে। একই ষড়যন্ত্রের রক্তাক্ত পথে জিয়া ক্ষমতায় আসে। বোমা মারা হয় পল্টনে, রমনার বটতমূলে ও যশোর উদীচীর অনুষ্ঠানে। হত্যা করা হয় কিবরিয়া, আহসানউল্লাহ মাস্টার, খুলনার মন্জরুল ইমাম ও রাজশাহীর মমতাজকে। এইভাবে স্বাধীনতাবিরোধীরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে একে একে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়। এখন তাদের টার্গেট শেখ হাসিনা। এজন্যই বারবার তাকে টার্গেট করে আঘাত হানার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, এই ষড়যন্ত্রে রহস্যময় মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন। তেমনি স্বাধীনতা বিরোধীদের নেতৃত্ব গ্রহণ করে তার স্ত্রী খালেদা জিয়া এবং জিয়া- খালেদার সন্তান তারেকের নামও প্রকাশ্যে এসেছে। খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত দিবসে ভুয়া জন্মদিন বানিয়ে এবারও ৬৯ কেজি কেক কেটে উল্লাস করে তার প্রমাণ দিয়েছেন। অথচ কি আশ্চর্য! প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমদ, প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনূস, প্রফেসর মনিরুজ্জামান মিয়া, প্রফেসর মাহবুবুল্লাহ গং নিজামী-খালেদা সরকারকে সমর্থন করছেন। হালে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন অর্বাচীন পিয়াস করিম, আমেনা মহসিনরা। মাহফুজউল্লাহ, ফরহাদ মযহারদের তো ওটাই জায়গা। তাছাড়া খারাপ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে ১৫ সম্পাদক তাদের কমিউনিটির আসল চেহারাটা তুলে ধরলেন। 
এ অবস্থায় আমরা কি করতে পারি? আমরা আল্লাহ পাকের কাছে শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করছি এবং দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার দাবি জানাচ্ছি। সঙ্গে সঙ্গে যারা ২১ আগস্টের বর্বর ঘটনার সঙ্গে জড়িত এবং এই বর্বরতাকে সমর্থন করে তাদের ঘৃণা করতে পারি। তাদের ঘৃণা করা আমাদের মানবাধিকার। 

লেখক : ফিল্যান্স সাংবাদিক


On Wed, Aug 21, 2013 at 7:18 AM, SyedAslam <syed.aslam3@gmail.com> wrote:

  1. Tareq Zia promised attackers safe exit | DIGITAL BANGLADESH

    digitalbangladesh.blog.com/2012/.../tareq-zia-promised-attackers-safe-ex...
    Tarique promised attackers safe exit BNP Senior Vice Chairman ... a meeting at Hawa Bhaban, Tarique assuredhim that all the attackers would ...

†MÖ‡bW nvgjvKvix‡`i wbðqZv w`‡qwQj nvIqv feb

 GKz‡k AvM÷ Uªv‡RwW AvR

http://www.amaderorthoneeti.com/content/2013/08/21/news0708.htm


Also read:


তারেক-বাবরের নির্দেশে হান্নানের জবানবন্দি নিতে পারেনি র‌্যাব

আদালত প্রতিবেদক | আপডেট: ০৩:১৪, আগস্ট ২১, ২০১৩ প্রিন্ট সংস্করণ

21 August Grenade Attack A brutal Bloodshed .mp4

21st August,2004 Dhaka:

http://www.youtube.com/watch?v=qFbAEilfhVc

Tarek Zia Mufte Hannan plans to kill Sheikh Hasina

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস  
২১ আগস্ট। স্মরণকালের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার অষ্টম বার্ষিকী। 

  1. যথাযোগ্য মর্যাদায় রক্তাক্ত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস পালনের আহ্বান

    1 hour ago - ঢাকা : আগামী বুধবার ভয়াল ও বিভীষিকাময় রক্তাক্ত ২১ আগস্ট গ্রেনেড.
    1. আজ ভয়াল বিভীষিকাময় রক্তাক্ত ২১ আগস্ট-গ্রেনেড হামলা দিবস

      ২১ আগস্ট ২০১২. ভয়াল বিভীষিকাময় রক্তাক্ত ২১ আগস্ট-গ্রেনেড হামলা দিবস আজ । বারুদ আর রক্তমাখা বীভৎস হত্যাযজ্ঞের দিন। সভ্য জগতের অকল্পনীয় এক নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালানো হয় এইদিনে; গ্রেনেডের হিংস্র দানবীয় সন্ত্রাস আক্রান্ত করে মানবতাকে। ২০০৪ সালের এই দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা এবং নির্যাতন-নিপীড়নের প্রতিবাদে ...
      1. জোট সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা : শেখ হাসিনাকে ...

        ভয়াল বিভীষিকাময় রক্তাক্ত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস ১০ বছরে পদার্পন করছে। ১০ বছর আগের সেদিনের বিকেলটি ছিল বারুদ আর রক্তমাখা বীভৎস হত্যাযজ্ঞের দিন। সভ্য জগতের অকল্পনীয় এক নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালানো হয় সেদিন। গ্রেনেডের হিংস্র দানবীয় সন্ত্রাস সেদিন আক্রান্ত করে মানবতাকে। এরপর দিনে দিনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিশ্চিত ...








__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___