জয় মাঠে নেমেছেন, তারেক রহমান কোথায়? আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর নাতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় সক্রিয় রাজনীতিতে নেমেছেন। প্রত্যক্ষ দলীয় রাজনীতিতে তিনি নামেননি। একটি সাধারণ নির্বাচন সামনে নিয়ে নির্বাচনে মাকে এবং দলকে সাহায্য করার জন্য দেশে রাজনীতির মাঠে নেমেছেন, গণসংযোগ, সাক্ষাতকার, ফেসবুক ইত্যাদির মাধ্যমে তিনি দেশের তরুণ সমাজের জন্য নতুন বক্তব্য নিয়ে এসেছেন এবং তাতে বেশ সাড়াও পড়েছে। তার সমালোচকেরাও স্বীকার করছেন, জয় গতানুগতিক কথা বলছেন না। তার ইতিবাচক কথা অনেকের মনেই নতুন করে আশা জাগাচ্ছে। জয় ঘোষণা করেছেন, আগামী সাধারণ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না। তিনি মায়ের সাহায্য নিয়ে দলের কোন উচ্চপদও দখল করেননি। আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে জয়ী হলে ভারতের রাহুল গান্ধীর মতো সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ খুলে যাবে এমন কথা কেউ বলছেন না। 'যুবরাজ' টাইটেলটিও কেউ তাকে দেয়নি এবং তিনিও তা নেননি। রাজনীতির মগডালে তিনি একলা যে চড়ার চেষ্টা করছেন না। তার প্রায় পদক্ষেপ দলের নির্বাচন প্রচারকার্যে অংশ নেয়া। দলের নেতৃত্ব গ্রহণ বা দল নির্বাচি হলে ক্ষমতায় বসার জন্য তিনি উদগ্রীব নন। এই ভূমিকা তিনি ২০০৭ সালের সাধারণ নির্বাচনেও নিয়েছিলেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনার উগ্ধতা সজীব জয়ই বলে আমি অনেকের কাছে শুনেছি। শেখ হাসিনার এই একমাত্র পুত্র সম্পর্কে আমার জন্য ধারণা ছিল। আমার ধারণা ছিল ইন্দিরা-পুত্র রাজীব গান্ধীর মতো সজীব ওয়াজেদ একজন টেকনোক্রাট হবেন। পিতা ড. ওয়াজেদের মতো তিনি বিজ্ঞানমনস্ক হবেন, রাজনীতি তাকে টানবে না। ভারতে ইন্দিরা গান্ধী তার পুত্র রাজীবকে তার অনিচ্ছাসত্ত্বেও রাজনীতিতে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি রাজনীতিতে খুব একটা ভাল করেননি। বাংলাদেশেও শেখ হাসিনা যদি তার বিজ্ঞানমষ্ক পুত্রকে রাজনীতিতে টানেন, তাহলে তিনি কতটা ভাল করবেন, সে সম্পর্কে আমার মনে সন্দেহ ছিল। তার উপর জয় শৈশব থেকেই বেশির ভাগ সময় বিদেশে অবস্থান করেছেন। ফলে দেশের রাজনীতির কাদামাটির সঙ্গে তার পরিচয় কম। এদেশে উন্নত পশ্চিমা দেশের কায়দায় রাজনীতি করতে চাইলে তিনি মার খেতে পারেন। কিন্তু জয়ের সাম্প্রতিক পারফরমেন্স আমার মনের এই শঙ্কা অনেকটাই দূর করেছে। তার কোন কোন কথাবার্তা দেশে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। তা করবেই। রাজনীতিতে বিতর্কমূলক কথাবার্তা বলা থেকে বড় বড় রাজনৈতিক নেতারাও মুক্ত থাকতে পারেন না। আর হয়ত এখনও একজন নবীশ রাজনীতিক। তবে এবার দেখছি, তিনি নবীশ রাজনীতিকের চাইতেও অনেক বেশি প্রজ্ঞার পরিচয় দিচ্ছেন। দেশের সমস্যা, দলের সমস্যাÑবিশেষ করে দেশের তরুণ প্রজন্মের সমস্যা সম্পর্কে তাকে অনেক বেশি সচেতন মনে হয়। অর্থাৎ দীর্ঘদিন বিদেশে বাস করলেও দেশের সমস্যা সম্পর্কে তিনি ভালভাবে হোমওয়ার্ক করেননি তা নয়। একজন রাজনীতিকের পক্ষে ভাল টেকনোক্রাট হওয়া সহজ নয়। কিন্তু একজন টেকনোক্রাট চেষ্টা করলে ভাল রাজনীতিক হতে পারেন, বর্তমান বিশ্বে তার বহু প্রমাণ রয়েছে। ভারতে রাহুল গান্ধী হতে পারেননি সেটা তার দুর্ভাগ্য। তবু বাংলাদেশে সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে সম্প্রতি অঅশাবাদী হয়ে যাতে সহসাই আমার আশাবাদ হোচট না খায় সেজন্য তার হালের কথাবার্তা, কর্মকা-ের দিকে আমি সতর্ক দৃষ্টি রাখছি। আগের আড়ষ্টতা ও রাজনৈতিক অনভিজ্ঞতার ছাপ তিনি কাটিয়ে উঠতে যাচ্ছেন মনে হয়। দেশের রাজনৈতিক সমস্যাগুলো তিনি যেভাবে তুলে ধরছেন এবং তার প্রতীকারের কথা বলছেন, তার সবগুলোর সঙ্গে আমি সহমত পোষণ করি না; কিন্তু তিনি গতানুগতিকতা এবং বাংলাদেশের রাজনীতির অচলায়তন অবস্থায় মধ্যে আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গী এবং তারুণ্যের গতিময়তা সৃষ্টির (তার সাধ্যানুসারে) যে চেষ্টা করছেন তাতে আমি আশাবাদী হয়েছি। সজীব জয় বয়সে তরুণ। কিন্তু তার মধ্যে যে চরিত্র-বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করেছি, তা ভারতের ইন্দিরা গান্ধীর কনিষ্ঠপুত্র সঞ্জয় গান্ধী বা বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠপুত্র তারেক রহমানের মধ্যে লক্ষ্য করিনি। সঞ্জয় নিজের প্রতিভা বা যোগ্যতার জোরে নয়, ক্ষমতাসীন মায়ের সাহায্যে ও সমর্থনে শতাধিক বছরের পুরনো কংগ্রেস প্রতিষ্ঠানের এবং কংগ্রেস সরকারের কাঁধে চড়ে বসেছিলেন এবং ভারতের যুবরাজ বলে পরিচিত হয়েছিলেন। অর্থাৎ ইন্দিরার পর তিনিই ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবেন। সঞ্জয়ের যথেচ্ছাচারে ইন্দিরা গান্ধীর ভাবমূর্তি ও জনপ্রিয়তা ধ্বংস হয়েছে এবং নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে। ইন্দিরা গান্ধী নিজেও এক অখ্যাত প্রতিদ্বন্ধীর কাছে নির্বাচনে হেরেছেন। বাংলাদেশে জিয়াউর রহমানের পুত্র রাজনীতিতে নামায় শিক্ষা, অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা অর্জনের আগেই ক্ষমতাসীন মায়ের কাঁধে চড়ে বিএনপি দল ও বিএনপি সরকারের সর্বোচ্চ হয়ে বসেন। ক্ষমতায় বিকল্প ঘাঁটি তৈরি করেন হাওয়া ভবন। এই হাওয়া ভবন দেশে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের সবচাইতে বড় ঘাঁটি হয়ে দাঁড়ায় দেশে আহসান উল্লা মাস্টার হত্যা, কিবরিয়া হত্যা, দশ ট্রাক ভর্তি অবৈধ অস্ত্র চোরা আমদানির ঘটনা, শেখ হাসিনার সভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলাÑঅর্থাৎ এমন কোন বড় সন্ত্রাসী ঘটনা নেই, যার সঙ্গে সবান্ধব তারেক রহমান ও হাওয়া ভবনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ছিল না, কোটি কোটি টাকার দূর্নীতি ও বিদেশে টাকা পাচারের মামলা তারেক ও কোকো দু'জনের বিরুদ্ধে রয়েছে বিদেশে এসব মামলার কোন কোনটিতে কোকো দ-িত হয়েছে এবং বিদেশে পাচার করা কোকোর অর্থ এখনো দফায় দফায় বিদেশী আদালতের রায়ের মাধ্যমেই দেশে ফেরত আনা হচ্ছে। তথাপ মস্তান স্নেহে অন্ধ মাতা খালেদা জিয়া তার বড় পুত্রকে নিজের মনোনয়নে দলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট করেছেন এবং আগামীতে দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদটিও তার জন্য রক্ষিত বলে দলের নেতাকর্মীরা জেনে গেছেন। তা নিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরেও চলছে কোন্দল। তারেক রহমানের কেবল রাজনৈতিক যোগ্যতাও সততা নয়, শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কেও প্রশ্ন উঠেছে। দেশের সকলেই জেনে গেছেন, পুত্র ও মায়ের মতোই স্বশিক্ষিত। এখানেই শেখ হাসিনার পুত্র সজীব জয় অতুলীয়। তার মাতাও দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলটির নেত্রী অন্তত: তিন দশক ধরে। দু'বার দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন এবং এখনও ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী। তার পুত্র হিসেবে জয় দেশে বসবাস করে কী না করতে পারতেন। হাওয়ার ভবনের চাইতেও দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বড় আখড়া তিনি গড়ে তুলতে পারতেন। তারেক রহমানের যে সব দুর্বৃত্ত ও অবৈধ ধন সম্পত্তির মালিক সহচর আছে, তাদের নিজের কাছে টেনে আনতে পারতেন। খালেদা জিয়া ও বিএনপির সভায় বোমা হামলা চালানোর ব্যবস্থা করতে পারতেন। (পাঠক লক্ষ্য করবেন, শেখ হাসিনার প্রাণনাশের বার বার চেষ্টা হয়েছে; কিন্তু খালেদা জিয়ার গায়ে একটি ফুলের টোকাও কখনও পড়েনি। আওয়ামী লীগের কেউ সে চেষ্টা করেনি)। জয় আরও কিছু করতে পারতেন। শেখ হাসিনার কাছে আবদার ধরতে পারতেন (শেখ হাসিনা সেই আবদার রাখতেন বলে মনে হয় না) তাকে সভানেত্রীর ক্ষমতা বলে দলের সিনিয়র নেতাদের ডিঙিয়ে উচ্চ কোন পদে বসিয়ে দেয়ার জন্য। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চমানের। এই যোগ্যতার জন্য তাকে সরকারী উচ্চপদেও বসিয়ে দেয়া যেত। যে যোগ্যতার অভাবে তারেক রহমানকে নাকি একটি উচ্চ কূটনৈতিক পদে বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েও খালেদা জিয়াকে তা বাতিল করতে হয়েছে। খবরটা বিএনপি-সূত্রেই জেনেছি। কতটা সত্য জানি না। তবে এটা শুনেছি চীনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে তাকে পাঠানোর চেষ্টা করা হলে চীন প্রশ্ন তুলেছিল কোন রাজনৈতিক পদাধিকার বলে তিনি চীনে যাবেন? তখন স্নেহান্ধ মা জননী তাঁকে নিজে মনোনয়ন দিয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক পদে বসিয়ে দেন। এই তারেক রহমানকে 'বাংলাদেশের তারুণ্যের ভবিষ্যত' আখ্যা দিয়ে একশ্রেণীর বুদ্ধিজীবী ও কলমজীবীকে নাচানাচি করতে দেখে বিস্মিত হই। ফখর মির্জা বা বিএনপির নেতানেত্রীদের তারেক রহমানকে নিয়ে নাচানাচি করতে দেখে বিস্মিত হই না। বিএনপির রাজনীতির ভা-ারে আজ আর কোন মূলধন নেই। তাই তারেক রহমানের নামে মিথ সৃষ্টি করে তারা সেই মিথের (সুঃয) আড়ালে বাঁচতে চায়। কিন্তু তারেক রহমান তাদের সেই আশা পূর্ণ করতে পারবেন তা মনে হয় না। তাঁর অতীতের দুষ্কর্মই তাঁকে তাড়া করে ফিরছে। দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের অসংখ্য মামলা-মোকদ্দমা মাথায় নিয়ে তিনি বিদেশে অনির্দিষ্টকাল ধরে বসবাস করছেন। রাজকীয় হালে পাঁচ-ছ বছর যাবত তাঁর সপরিবারে বিদেশে বসবাসের বিশাল ব্যয় ভূতে যোগাচ্ছে মনে হয়! একটি সাধারণ নির্বাচনের সম্ভাবনা সামনে নিয়ে তিনি দলের হাল ধরার জন্য দেশে ফিরছেন না কেন? ফখর মির্জা, ব্যারিস্টার রফিকুল হকেরা বলছেন, তারেক এখন এত জনপ্রিয় যে, দেশে ফিরলে লাখো লাখো লোক তাঁকে সংবর্ধনা দেবে। তাই যদি হয় এবং তিনি যদি প্রকৃতই একজন রাজনীতিক হন, তা হলে দেশে ফেরার সাহস দেখাচ্ছেন না কেন? এক-এগারোর সময় শেখ হাসিনা তো বড় বড় মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা, হুলিয়া ইত্যাদি অগ্রাহ্য করে দেশে ফিরেছিলেন; কারাবন্দী হয়েছিলেন। গণ-আন্দোলন তাঁকে মুক্ত করেছে। একজন সাহসী তরুণ রাজনীতিকের হিম্মত থাকলে তারেক রহমান দেশে না ফিরে বিদেশে পালিয়ে আছেন কেন? তিনি রাজনীতি করার জন্য দেশে ফিরে আসুন। লাখো লাখো লোক যদি তাঁকে ঢাকা বিমানবন্দরে সংবর্ধনা দেয়, তা হলে সেই জনতাই বর্তমান সরকার তাঁকে গ্রেফতার করলে আন্দোলন করে মুক্ত করে আনবে। জনগণের ওপর এই আস্থা যদি তারেক রহমানের না থাকে, তা হলে কোন রাজনৈতিক ত্যাগ ও সংগ্রামের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে দেশের নেতা হতে চান? মায়ের কোলে চড়ে, আর অর্থের জোরে দেশের নেতা হওয়ার যুগ কি এখন আর আছে? বলা হয়, বিদেশে তারেক রহমানের এখনও চিকিৎসা চলছে। ফলে তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না। পাঁচ-ছ বছর ধরে বিদেশে তাঁর কী রোগের চিকিৎসা চলছে তা গায়েবের মালিক আল্লা মালুম। স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না, লন্ডনেও বাইরের মানুষ দেখলেই লাঠি হাতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলেন, কিন্তু তাঁর অন্তরঙ্গ মহল থেকে জানা যায়, তিনি ঘরে লাঠি ব্যবহার করেন না এবং দেশে বিএনপির রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ, জামায়াত ও হেফাজতীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা ইত্যাদি ব্যাপারে মাতা খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দেয়ার জন্য সিঙ্গাপুরে, দুবাই ও রিয়াদে দৌড়াদৌড়ি করতে তাঁর স্বাস্থ্যের কোন ব্যাঘাত হয় না। এখানেই জয় এবং তারেক রহমানের চরিত্রের পার্থক্য। সজীব জয় কোন উচ্চপদ, সরকারী ক্ষমতার অভিলাষ নিয়ে রাজনীতিতে আসেননি। তিনি আগামী নির্বাচনে দল এবং দেশের গণতান্ত্রিক জোটের বিজয়ে সাহায্য যোগানোর জন্য রাজনীতির প্রকাশ্য মাঠে নেমেছেন এবং দেশবাসী ও তরুণ প্রজন্মের মানুষের সামনে তারুণ্যের সাহস ও দর্শন নিয়ে হাজির হয়েছেন। তারেক রহমানের মতো তাঁর কোন নিন্দিত অতীত নেই এবং বিতর্কিত বর্তমান নেই। বরং সম্ভাবনাময় ভবিষ্যত রয়েছে। পাশাপাশি তারেক রহমানও রাজনীতি করছেন, কিন্তু প্রকাশ্য রাজনীতি নয়। করছেন বিদেশে বসে চক্রান্তের রাজনীতি। অবিলম্বে দেশে ফিরে জনগণের মুখোমুখি হওয়ার সাহস তাঁর নেই। তিনি আশা করে বসে আছেন, বাংলাদেশে হেফাজত-জামায়াতের সহযোগিতায় বিএনপি চক্রান্তের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে এবং তখন তিনি 'বীরের বেশে' দেশে ফিরবেন, তাঁর সব অসুস্থতা দূর হয়ে যাবে এবং বিমানবন্দরে তাঁকে সংবর্ধনা জানাবে রেন্টেড ক্রাউড, তাদের মধ্যে বেশিরভাগ থাকবে জামায়াত ও হেফাজতীরা (খালেদা জিয়ার হালের জনসভাগুলোতে যেমন থাকছে)। মাতা তাঁকে হাত ধরে বঙ্গের সিংহাসনে বসাবার পদক্ষেপ নেবেন। তারেক রহমানের এই খোয়াব বাস্তবে সফল হবে তা আমার মনে হয় না। বাংলাদেশের মানুষ প্রচার প্রোপাগান্ডায় সাময়িকভাবে বিভ্রান্ত হতে পারে; কিন্তু তারা অন্ধ হয়ে দেশকে বিএনপির মুখোশের আড়ালে জামায়াতী-হেফাজতী রাজ্য বানাবে, তা বিশ্বাস করা আমার পক্ষে কঠিন। সজীব জয়ের সঙ্গে তারেক রহমানের আমি কোন তুলনাই করি না। শিক্ষাগত যোগ্যতা, রাজনৈতিক সততা এবং আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে তারেক রহমানের নাম সজীব জয়ের পাশাপাশি কেন, কাছাকাছিও উচ্চারণ করা যায় না। আমার বলতে দ্বিধা নেই একজন ভোরের পাখি, আরেকজন রাতের পেঁচক। তাই সজীব জয় প্রকাশ্যে রাজনীতির মাঠে নেমেছেন, কিন্তু তারেক রহমান এখন কোথায়? তাঁর রাজনীতি তো বিদেশে বসে চক্রান্তের চরকা ঘোরানো।
লন্ডন, ১৭ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার, ২০১৩ । | |