Banner Advertiser

Tuesday, November 5, 2013

[mukto-mona] সংলাপ ও আওয়ামী লীগের অবস্থান



সংলাপ ও আওয়ামী লীগের অবস্থান

এরশাদ মজুমদার
গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে কথা খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। কথা বলতেই হবে, এটা নাকি গণতন্ত্রের ভদ্রতা বা সংস্কৃতি। আমেরিকা কথা বলে আর যুদ্ধ করে। বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই দেখে আসছি আমেরিকা শক্তি প্রয়োগ করে কাজ হাসিল করতে চায়। ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি, রাজনৈতিক দল ও দেশকে অনুগত রাখা আমেরিকার একটা নীতি। আমেরিকার ক্ষমতা আছে, তাই বিশ্ব জনমতকে তোয়াক্কা করে না। আমেরিকা ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের ফোনেও আড়ি পাতে। এর মানে আমেরিকা বন্ধুদেরও বিশ্বাস করে না বা সম্মান করে না।
আমাদের প্রতিবেশী ভারতও ভয় দেখিয়ে প্রতিবেশীদের চিরদিনের জন্য দলে রাখতে চায়। আশপাশের দেশগুলোতে ভারতের গোয়েন্দাদের উপস্থিতি একেবারেই প্রকাশ্য। শান্তিপ্রিয় দেশ শ্রীলঙ্কায় কয়েক যুগ ধরে তামিলদের স্বাধীনতার উস্কানি দিয়ে দেশটাকে অশান্ত করে রেখেছিল। সেই তামিলদের হাতেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী প্রাণ হারিয়েছেন। পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের বৈরিতা '৪৭ সাল থেকে। এর আগে বৈরিতা মুসলমানদের সঙ্গে। কংগ্রেস মানে হিন্দু নেতারা চেয়েছিলেন ভারতবাসীর জন্য শুধু একটি রাজনৈতিক দল থাকবে দেশ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত। শুরুতে কংগ্রেস ছিল সর্বজনীন সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দল। এর ছায়াতলে থেকে সবাই দখলদার ইংরেজদের সঙ্গে দেনদরবার করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, কংগ্রেস নেতারা ভারতীয় বলতে শুধু হিন্দুদেরই মনে করেন। তারা বলতেন, হিন্দু-মুসলমানের সমস্যা একটিই। মুসলমানদের আলাদা কোনো সমস্যা নেই। ফলে একপর্যায়ে মুসলমানেরা নিজেদের সমস্যা নিয়ে কথা বলার জন্য আলাদা রাজনৈতিক দল মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করে, যা ১৯০৬ সালে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮৭৩ সালেই স্যার সৈয়দ প্রশ্ন তুলেছিলেন, ইংরেজরা ক্ষমতা দখল করেছে মুসলমানদের কাছ থেকেই। এখন যাওয়ার সময় কার কাছে ক্ষমতা দিয়ে যাবে? এটা ছিল একটা মৌলিক প্রশ্ন। অখণ্ড ভারত রক্ষা করার জন্যে মুসলমানেরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু হিন্দু নেতারা মেজরিটি বা সংখ্যাতত্ত্বের জোরে মুসলমানদের কোনো প্রস্তাবই গ্রহণ করতে রাজি হয়নি। ফলে সময়ের পরিক্রমায় ভারতের স্বাধীনতার প্রশ্নে হিন্দু-মুসলমানের রাস্তা আলাদা হয়ে যায়। এর পরেই জিন্নাহ সাহেব দ্বিজাতি তত্ত্ব পেশ করেন। তিনি প্রমাণ করতে সফল হন যে, ভারতের মুসলমানেরা সব দিক থেকেই একটি আলাদা স্বতন্ত্র জাতি। ফলে '৪৭ সালে মুসলিম মেজরিটি ভৌগোলিক এলাকা নিয়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয়।
অখণ্ড বঙ্গদেশেও মুসলমানেরা মেজরিটি ছিল। অখণ্ড স্বাধীন বঙ্গদেশ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে মুসলমানদের আগ্রহ ছিল সবার চেয়ে বেশি। কিন্তু কংগ্রেস নেতারা রাজি হননি। কারণ তারা প্রতিবেশী হিসেবে মুসলিম মেজরিটি বঙ্গদেশ দেখতে চাননি। তাই বংগদেশকে বিভক্ত করে এবং পাকিস্তানের সঙ্গে জুড়ে দেয়। সেই মুসলিম মেজরিটি খণ্ড পূর্ব বাংলাই আজ স্বাধীন বাংলাদেশ। ২৩ বছর বাঙালি মুসলমানেরা পাকিস্তানের সঙ্গে ছিল। এই সহ-অবস্থান নানা কারণে সুখের ছিল না। ফলে বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। '৭০ সালের নির্বাচন ছিল এক ধরনের রেফারেন্ডাম। পূর্ব বাংলা বা পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি মুসলমানেরা বাঙালিদের রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে একতরফাভাবে ভোট দেয়। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ বাঙালিদের একক রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রকাশিত হয়। নির্বাচনের ফলাফল খুবই বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করে। এমন পরিবেশে কোনো সমঝোতাই সম্ভব হয়ে ওঠেনি। বঙ্গবন্ধু হয়তো সমঝোতা চেয়েছিলেন। কিন্তু বাইরের পরিবেশ একেবারেই অনুকূলে ছিল না। সমঝোতা না হওয়ার জন্য বাইরে নানা অদৃশ্য শক্তি কাজ করে চলছিল। এর মধ্যে ভারত ছিল অন্যতম প্রধান শক্তিশালী খেলোয়াড়। ভুট্টো ও পাকিস্তান সেনাবাহিনী হাত মিলিয়ে জেনারেল ইয়াহিয়াকে বেকুব বানিয়েছে। ভারত চেয়েছিল পাকিস্তান ভেঙে যাক। ভারতের শাসকরা মনে করেছিলেন, যদি পাকিস্তান ভেঙে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হয়, তাহলে ইসলাম ও মুসলমানমুক্ত একটি রাষ্ট্র হবে, যা চিরদিনের জন্য ভারতের তাঁবেদার হয়ে থাকবে। পাকিস্তান ত্যাগ করে স্বাধীন হয়ে ইসলাম ও মুসলমানিত্ব এমনভাবে আঁকড়ে ধরবে, তা ভারতের ধারণায় ছিল না।
১৯০৬ সালে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষিত আর '৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষিত একই ছিল। এর মানে হচ্ছে, মুসলমানদের নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্যে দুই পক্ষের সঙ্গে নেগোশিয়েট করতে হয়েছে। এই দুই পক্ষ হচ্ছে শাসক ইংরেজ ও কংগ্রেস। এই দুই পক্ষ ছিল শক্তিশালী ও মেজরিটি। ফলে তারা সংখ্যাতত্ত্ব বা মেজরিটির জোরে সমস্যার সমাধান চেয়েছিল। সমঝোতা হয়নি, ভারত ভেঙে গেল। হিন্দু নেতাদের গোঁয়ার্তুমির কারণে ভারত ভেঙে দুটি দেশ হলো— পাকিস্তান ও ভারত। কিন্তু ভারত স্বপ্ন দেখে মহাভারতের। যে মহাভারত আফগানিস্তান থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। '৭১ সালেও সমঝোতা হয়নি। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও ভুট্টোর সঙ্গে শেখ মুজিবের সমঝোতা। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী মনে করেছিল, শক্তি প্রয়োগ করে সমস্যার সমাধান করবে। এ বিষয়ে অদৃশ্য স্টেকহোল্ডার ভারতের কথা চিন্তা করেনি। ভারত পাকিস্তান ভেঙেছে তার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ও পরিকল্পনা হিসেবে। আর আমরা পেয়েছি স্বপ্নের স্বাধীনতা। সেই '৭১ সাল থেকে ভারত এখন আমাদের পরম বন্ধু। আর এ বন্ধুত্ব হচ্ছে পরম আনুগত্যের। ফলে আমাদের ভেতর ঝামেলা অশান্তি লাগিয়ে রেখে ভারত নিয়মিত দুধ-মাখন খেয়ে যাচ্ছে।
এই তো ক'দিন আগেই ভারতীয় সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক ভারতীয় কাগজ টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ইকোনমিক টাইমসে এক মতামতভিত্তিক নিবন্ধে ভারত সরকারকে পরামর্শ দিয়ে লিখেছে, বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট থেকে রাজনৈতিক ফায়দা লুটে হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় বসাতে হবে ভারতেরই স্বার্থে। ভৌমিক সাহেব ক্ষেপে গিয়ে বাংলাদেশস্থ আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজীনাকে বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য বলে অভিহিত করেছেন। যদিও কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা বলেছে, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে হাসিনা পরাজিত হবে। বুঝে হোক বা না বুঝে হোক বাংলাদেশে শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ দিল্লির স্বার্থ রক্ষাকারী একটি রাজনৈতিক দল। অনেকদিন ধরেই বিষয়টা কিছুটা রাখঢাক ছিল। এখন একেবারেই প্রকাশ্য হয়ে গেছে। দিল্লি চায় এ অঞ্চলে তার নিরঙ্কুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হোক। এ ব্যাপারে দিল্লি আমেরিকা ও তার বন্ধুদের সমর্থন চায়। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়, '৭১ সালে ইজরাইল ভারতীয় সৈন্যদের সঙ্গে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। ইজরাইল মনে করে, হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে ইজরাইলের স্বার্থ রক্ষা হয়। আমরা নতুন হিসাব পেয়েছি যে, মুসলমানদের দুই পবিত্র স্থানের খাদেম সৌদি বাদশাহ এখন মিসরের মুরসির বিরুদ্ধে ইজরাইলকে সমর্থন দিচ্ছে। ইজরাইলের স্বার্থ মুসলমানবিরোধী আর বাদশাহর স্বার্থ গণতন্ত্রবিরোধী। বাদশাহ এ ব্যাপারে মিসরের ইজরাইলের সমর্থক সেনাবাহিনীকে ১২ বিলিয়ন ডলার সাহায্য দিয়েছে। ভারত '৪৮ সাল থেকেই ইজরাইলের বন্ধু। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ভারত ও ইজরাইলের মুসলিমবিরোধী জোটকে সমর্থন করে। ভারতীয় কাগজে প্রকাশিত হয়েছে '৭১ সালে ইজরাইলি সেনাবাহিনী ভারতের সমর্থনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। ইন্দিরা গান্ধীর নাতি রাহুলও বলেছেন, তার পরিবারই পাকিস্তান ভেঙেছে। পাকিস্তান সৃষ্টি ভারত কখনই মেনে নিতে পারেনি। ফলে '৪৭ সাল থেকেই ভারত পাকিস্তান ভাঙার পরিকল্পনা করে। কারণ ভারত প্রতিবেশী হিসেবে কোনো দেশ চায় না।
প্রশ্ন হচ্ছে, ভারত বাংলাদেশকে কেমন দেশ হিসেবে দেখতে চায়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিগত ৪৩ বছর ধরে এটাই প্রধান দ্বন্দ্ব। ভারত বাংলাদেশকে শুধুই একটা তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ (ধর্মহীন) বা ইসলামবিহীন বাঙালি রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়। আওয়ামী লীগ ও হাসিনা ও ভারতের এই নীতিকে সমর্থন করে। এমনকি ভারত ও হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ নিজেরা ছাড়া বাকি সব রাজনৈতিক দলকে ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল মনে করে। এবার ক্ষমতায় এসে হাসিনা সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ শব্দ বাদ দিয়ে দিয়েছে। অপরদিকে সাধারণ মানুষ বা ভোটারদের ধোঁকা দেয়ার জন্য রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রেখে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ও এর নেতারা বক্তৃতা দেয়ার সময় আল্লাহু আকবর বা বিসমিল্লাহ বলেন না নিজেদের সেক্যুলার বা ধর্মহীন প্রমাণ করার জন্য। কারণ ভারত হাসিনা ও তার দলকে ধর্মহীনই দেখতে চায়। আমাদের সংবিধানে বহু সাংঘর্ষিক বিষয় রয়েছে। কারণ রাজনৈতিক দলগুলোর একটি অংশ ধোঁকাবাজ। তারা মানুষ ধোঁকা দেয়ার জন্যে মুখে এক কথা বলে আর অন্তরে আরেক কথা পোষণ করে। ক'দিন আগে একটি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন সংবিধানের মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিনা তা নিয়ে আদালত মত প্রকাশ করেছে। ইস্যুটা ছিল সার্বভৌমত্ব কার? প্রশ্ন উঠেছে মানুষ সার্বভৌম না আল্লাহ সার্বভৌম? আমাদের সংবিধান বলছে, মানুষ সার্বভৌম। একটি রাজনৈতিক দল বলছে, আল্লাহ সার্বভৌম। যুক্তি-তর্ক হলো যারা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সংবিধান অনুযায়ী মানুষের সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে না বা মানে না তারা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অস্তিত্ব মানে না। সংবিধান ভুল হোক বা শুদ্ধ হোক যতক্ষণ জারি থাকবে বা বহাল থাকবে, ততক্ষণ আমরা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব মানতে পারি না আইনের দৃষ্টিতে। পুরো বিষয়টাই হচ্ছে রাজনৈতিক। আধুনিক রাষ্ট্র একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন রাজনীতিকরা। যদি কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি ধর্মহীন বা নাস্তিক হন তাহলেও বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি চালাতে তাদের কোনো অসুবিধা নেই। একসময়ে স্বেচ্ছাচারী রাজা-বাদশাহরা বলতেন, আমিই আইন। আল কোরআনে বর্ণিত ফেরাউন তো নিজেকে খোদা বলেই দাবি করেছে। কিছু কাল আগেও গির্জা বড় না সিংহাসন বড়—এ নিয়ে মারামারি ও খুনাখুনি হয়েছে। মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান—সব ধর্মের অনুসারীদের ভেতর এমন মারামারি দিন দিন বেড়ে চলেছে। তবে মুসলমানের বিরুদ্ধে বাকি ধর্মাবলম্বীরা সব একাট্টা। বড় বড় রাষ্ট্রও এখন ইসলাম ও মুসলমানের বিরুদ্ধে ক্রুসেড শুরু করেছে। পশ্চিমা গবেষকরা মনে করেন, আগামী শতাব্দীতে বিশ্বে ইসলাম আরও অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে যাবে। এখনই ইসলামের এই অগ্রযাত্রাকে প্রতিহত করতে হবে। যদিও বেশ কিছু মুসলমান দেশ ও মুসলমান রাজনৈতিক দলও ইসলামবিরোধী এই জোটে ঢুকে পড়েছে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও একই ঘরানার অন্য দল ও গোষ্ঠী ইসলামবিরোধী বিশ্বজোটের তাঁবেদারে পরিণত হয়ে গেছে, যদিও এরা প্রকাশ্যে বলে, 'আমরাই সবচেয়ে বেশি ইসলামিক।' রাষ্ট্রক্ষমতা নিজেদের দখলে রাখার জন্য এরা নানা ধরনের ফন্দিফিকির করে। এসব কথার মাধ্যমে আমি বলছি না যে আওয়ামী ঘরানার বিরোধী শক্তিগুলো ইসলামবিদ্বেষী জোট সম্পর্কে সজাগ আছে। বিএনপি যদিও বলে থাকে তারা জাতীয়তাবাদী ইসলামী শক্তির পক্ষে আর দেশের ইসলামী দলগুলোও বিএনপিকে মিত্র মনে করে। আমি দেখেছি, বিএনপি যখন ক্ষমতায় থাকে তখন সবচেয়ে বেশি অবহেলিত থাকে ধর্ম ও সংস্কৃতি। ধর্ম ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের জন্য তেমন কোনো বরাদ্দ থাকে না। ডাকসাইটে অর্থমন্ত্রী মরহুম সাইফুর রহমান বলতেন, গান-বাজনার জন্য এর চেয়ে বেশি বরাদ্দ দেয়া যাবে না। মইন-ফখরুদ্দীনের সরকারের সময় একজন ধর্মমন্ত্রী ছিলেন যিনি নামে মুসলমান ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ধর্ম থেকে হাজার মাইল দূরে থাকতেন।
বিষয়গুলো নিয়ে বারবার লিখছি শুধু পাঠকদের স্মৃতিকে একটু নাড়া দেয়ার জন্যে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন যে অবস্থা বিরাজ করছে, তার মৌলিক কারণ ভারত। ভারত মনে করে, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার আরও কয়েকবার ক্ষমতায় থাকা দরকার। তাহলে বাঙালি (ইসলামমুক্ত) সংস্কৃতির মূল আরও গভীরে যাবে এবং রাষ্ট্র ইসলাম থেকে দূরে সরে যাবে, দিল্লির মহাভারত স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে আর কোনো বাধা থাকবে না। পাঠকদের বলব, আপনারা নেহেরু ডক্ট্রিন বা গুজরাল ডক্ট্রিন পড়ুন। বাংলাদেশে প্রকাশিত ইন্ডিয়া ডক্ট্রিন পড়ুন। ভারত কী চায় তা জানলে বাংলাদেশের রাজনীতি, সংস্কৃতি, ধর্মনীতি কিছুই বুঝতে পারবেন না।
এবার অনুধাবন করুন, শেখ হাসিনা সংবিধানের মৌলিক নীতি, গণতন্ত্র ও আদালতের দোহাই দিয়ে সংসদে মেজরিটির জোরে কেন নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দিলেন। ক'দিন আগেই তো দিল্লি বলেছে, তারা নির্বাচিত সরকারের অধীনেই নির্বাচন চায়। তবে সমঝোতা হলে ভালো। কিন্তু ভারতের মিডিয়া সরকার পরামর্শ দিচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের উপস্থিতিকে আরও দৃশ্যমান করা হোক। ভারতের সিনিয়র সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক মনে করেন বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দিল্লির চুপ করে থাকা চলবে না। ভৌমিক বাবু আবার বাংলাদেশের বিডিনিউজ২৪ডটকমের সম্পাদক মর্যাদার লোক। তিনি ভারতীয় কাগজে লেখার জন্যে পরামর্শ গ্রহণ করেন ওই বিডিনিউজ থেকে।
দিল্লির মতামত ছাড়া শেখ হাসিনার পক্ষে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করা অসম্ভব। কারণ শেখ হাসিনাই একমাত্র রাজনীতিক যিনি খুবই বিশ্বস্তভাবে ভারতের স্বার্থ রক্ষা করতে পারবেন। বাংলাদেশে নিজের স্বার্থ রক্ষার ব্যাপারে ভারত আর দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে চায় না। '৭১ সালে দিল্লির সঙ্গে আওয়ামী লীগের যে সমঝোতা হয়েছে, তা আজও ষোলোয়ানা বাস্তবায়িত হয়নি। তাহলে ভারত আর কতকাল অপেক্ষা করবে? ভারতের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়, এমন কোনো সরকারকে দিল্লি ঢাকার ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এ কারণেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে চলমান সঙ্কট দেখা দিয়েছে। নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থায় ফিরে যেতে হাসিনাকে দিল্লিই ইশারা দিতে পারে। কোনো ধরনের ইশারা বা সঙ্কেতের সম্ভাবনা নেই মনে করেই আওয়ামী নেতারা লম্ফঝম্ফ দিচ্ছেন। ভারতের আনন্দবাজার তো বলে দিয়েছে, সঠিক নির্বাচন হলে হাসিনার ক্ষমতায় ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই।
লেখক : লেখক ও ঐতিহ্য গবেষক
www.humannewspaper.wordpress.com


__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___