যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লার মৃত্যু পরোয়ানা জারি হয়েছে।যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিবন্ধক এ কে এম নাসিরউদ্দিন রোববার বিকালে পরোয়ানা জারির এই তথ্য জানিয়েছেন।
এরপর লাল কাপড়ে মোড়া পরোয়ানা কারা কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে গেছেন ট্রাইব্যুনালের উপনিবন্ধক অরুণাভ চক্রবর্তী।
নাসিরউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছেন, তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যদের কাছেও অনুলিপি পাঠিয়েছেন। বাকি আনুষ্ঠানিকতা কারা কর্তৃপক্ষ করবে।
নিয়ম অনুযায়ী,এখন কারা কর্তৃপক্ষ কাদের মোল্লার কাছে জানতে চাইবেন তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চাইবেন কি না।
ক্ষমা ভিক্ষা চাইলে জামায়াতে ইসলামীর এই নেতাকে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সাত দিনের মধ্যে আবেদন জানাতে হবে। তার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করবে কারা কর্তৃপক্ষ।
আপিল বিভাগে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর তৎকালীন আইনমন্ত্রী ও বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা শফিক আহমেদ বলেছিলেন, এই ধরনের অপরাধে বিশ্বের কোথাও অপরাধী সাধারণত ক্ষমা পান না।
একাত্তরে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটের জন্য কাদের মোল্লাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত ফেব্রুয়ারি মাসে যাবজ্জীবন সাজার আদেশ দিলেও পরে আপিলের রায়ে মৃত্যুদণ্ড হয় একাত্তরে 'মিরপুরের কসাই' নামে পরিচিতি পাওয়া এই জামায়াত নেতার।
ওই রায়ের অনুলিপি সকালে ট্রাইব্যুনালে পৌঁছার পর মৃত্যু পরোয়ানা জারির প্রক্রিয়া শুরু হয়। সন্ধ্যার আগেই তা পৌঁছানো হয় কারা কর্তৃপক্ষের কাছে।
প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের গত ১৭ সেপ্টেম্বর দেয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিতে বিচারকদের স্বাক্ষরের পর গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়।
এই রায় পর্যালোচনার আবেদন জানানো হবে বলে কাদের মোল্লার প্রধান আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক বলে এলেও প্রসিকিউটরদের বক্তব্য, ট্রাইব্যুনালের বিচারের ক্ষেত্রে আসামির সেই সুযোগ নেই।
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিমের সমন্বয়ক এম কে রহমান বলে আসছেন, কাদের মোল্লার দণ্ড বাস্তবায়নের দিনক্ষণ সরকারের সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করছে।
"আইন অনুসারে সরকারের সিদ্ধান্তে এই রায় বাস্তবায়ন হবে। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকার চাইলে জেল কোড অনুসরণ করতে পারে।…তবে জেল কোড অনুসরণের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।"
ব্যারিস্টার রাজ্জাকের দাবি, রায় বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কারাবিধি অনুসরণের বিকল্প নেই।
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, দ্রুত এই রায় বাস্তবায়ন করা হবে।
কাদের মোল্লা গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।
সাধারণ মামলায় বিচারিক আদালত কোনো আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিলে দণ্ডাদেশ কার্যকরের জন্য জন্য হাই কোর্টের অনুমোদন লাগে। এক্ষেত্রে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির আপিলের সুযোগও রয়েছে।
তবে আপিল না করলেও ওই দণ্ড কার্যকরে হাই কোর্টের অনুমোদন লাগে। হাই কোর্টে নিষ্পত্তির পর আসামি আপিল বিভাগে লিভ পিটিশন দায়ের করতে পারেন।
তবে যুদ্ধাপরাধের বিচারে ট্রাইব্যুনালই হাই কোর্টের সমমর্যাদা সম্পন্ন। ওই আইন অনুসারে ট্রাইব্যুনালের যে কোনো দণ্ডের বিরুদ্ধে উভয় পক্ষ আপিল বিভাগে সরাসরি আপিল করতে পারেন।
সাধারণ ক্ষেত্রে আপিল বিভাগে আবেদন না করলে হাই কোর্ট মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে অনুমোদন দেয়ার পর মৃত্যুদণ্ডের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
কারা বিধিতে বলা আছে, প্রত্যেক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দির ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করার অধিকার থাকবে।কোনো মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির পর জেল সুপার তা বন্দিকে জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার বিষয়ে তার মত চাইবেন। ক্ষমা প্রার্থনার জন্য আসামির সর্বোচ্চ সময় সাতদিন।
আবেদন পাওয়ার পর জেল সুপার তা স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে পাঠাবেন। সঙ্গে পৃথক পত্রে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সম্ভাব্য তারিখ এবং আসামির দণ্ডের বিষয়ও থাকবে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি দেয়া রায়ে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আনা মোট ছয়টি অভিযোগ বিবেচনায় নিয়ে পাঁচটিতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল।
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে ওই রায়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া থেকে জন্ম নেয় শাহবাগের আন্দোলন, যা বহির্বিশ্বে 'বাংলা বসন্ত' নামে পরিচিতি পায়।
দেশজুড়ে প্রতিক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন সংশোধন করে দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিলের ক্ষেত্রে আসামি ও প্রসিকিউশন উভয় পক্ষের সমান সুযোগ আনা হয়।
সংশোধিত আইনের বলে প্রসিকিউশনের আপিলে ছয় নম্বর অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের দেয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বদলে আপিল বিভাগ দেয় সর্বোচ্চ সাজার আদেশ।
এই অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের ২৬ মার্চ কাদের মোল্লা তার সহযোগীদের নিয়ে মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনে হযরত আলী লস্করের বাসায় যান। সেখানে কাদের মোল্লার নির্দেশে লস্করের স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং দুই বছরের এক ছেলেকে হত্যা করা হয়। এক মেয়ে হন ধর্ষণের শিকার।
৭৯০ পৃষ্ঠার রায়ে বলা হয়, ষষ্ঠ অভিযোগে ৪:১ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলো। মৃত্যু পর্যন্ত তাকে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
--
--
Disclaimer: All content provided on this discussion forum is for informational purposes only. The owner of this forum makes no representations as to the accuracy or completeness of any information on this site or found by following any link on this site. The owner will not be liable for any errors or omissions in this information nor for the availability of this information. The owner will not be liable for any losses, injuries, or damages from the display or use of this information.
This policy is subject to change at anytime.
---
You received this message because you are subscribed to the Google Groups "Bangladesh Progressives" group.
To unsubscribe from this group and stop receiving emails from it, send an email to bangladesh-progressives+unsubscribe@googlegroups.com.
For more options, visit https://groups.google.com/groups/opt_out.
--
"Religion is not going to come up with any new arguments." CH
__._,_.___