Banner Advertiser

Wednesday, December 25, 2013

[mukto-mona] বাম বিভ্রান্তি ॥ নগরীতে আগুন লাগলে দেবালয়ও রক্ষা পায় না



বাম বিভ্রান্তি ॥ নগরীতে আগুন লাগলে দেবালয়ও রক্ষা পায় না
মুহম্মদ শফিকুর রহমান
নগরীতে আগুন লাগলে দেবালয়ও রক্ষা পায় না। এই মহাজনী প্রবচনটি আমাদের বাম বন্ধুরা (সিপিবি+বাসদ ও অন্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বাম) জানেন না বা কখনও শোনেননি এমন মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে সময় এসেছে বন্ধুদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়াÑবন্ধুরা, ওই দেখুন নগরীতে আগুন লেগেছে, এখন কি করবেন, কোন্ পথ ধরবেন; এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। না-কি এখনও 'নিরপেক্ষ' 'নিরপেক্ষ' বলে বলে বুদ্ধির ভ-ামি করবেন, না অগ্নিনির্বাপকদের কাফেলায় যোগ দেবেন?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার গণভবনে ১৪ দলের সভা থেকে পাকিস্তানের প্রতি সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। পাকিস্তানের নাক গলানোর পদক্ষেপকে তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে বসবাসকারী পাকিস্তানী দালালদেরও সতর্ক করে দেন। 
এদিকে গণজাগরণ মঞ্চও বিক্ষোভ মিছিলসহকারে ঢাকার পাকিস্তানী দূতাবাস ঘেরাও করেছে। এমনিভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানেও মুক্তিযুদ্ধের বাঙালী বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ পাকিস্তান পার্লামেন্টে গৃহীত কাদের মোল্লার পক্ষে গৃহীত প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেছেন, অন্যথায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানাবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিএনপি তার নেতিবাচক রাজনীতির বহির্প্রকাশ ঘটাল। দলের পক্ষে বলা হলো পাকিস্তানের প্রস্তাব নেয়ার সুযোগ পেয়েছে আওয়ামী লীগের কারণে। অবশ্য বিএনপির এ ধরনের নেতিবাচক অবস্থান নতুন কিছু নয় এবং বেগম খালেদা জিয়াও বুধবার রাত পর্যন্ত কোন মন্তব্য করেছেন বলে শোনা যায়নি। অথচ এই খালেদা জিয়াই পাকিস্তানী এক মিলিটারি জেনারেল জাঞ্জুয়ার মৃত্যু হলে সকল কূটনৈতিক শিষ্টাচার ব্রেক করে শোকবাণী পাঠিয়েছিলেন। সেদিন স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক সচেতন বাঙালী ছিঃ ছিঃ করেছেন। কিন্তু তাতে তাদের কিছু যায়-আসে না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিজয় দিবসে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে না যাওয়াকে বললেন, এটাও সরকারের অগণতান্ত্রিক কার্যক্রমেরই কুফল। বস্তুত তারা নিজের চেহারা ভুলে গিয়ে আয়নায় কেবল আওয়ামী লীগের মুখ দেখছেন। 
পাকিস্তান পার্লামেন্টে কসাই কাদের মোল্লার ব্যাপারে গৃহীত প্রস্তাবের (অর্থাৎ ফাঁসির বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব) ব্যাপারে আমাদের বামপন্থীরা কি ভূমিকা পালন করবেন সেটা এখন দেখার বিষয়। বামরা হয়ত ভাবেন সব কিছুরই মাঝখান দিয়ে হাঁটলে আওয়ামী লীগকে সবক দেয়া যাবে এবং গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে। ক'দিন আগে শাহবাগ চত্বরে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর সমাবেশে বক্তৃতা শুনতে যেয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছিলাম। একজন চেম্বার বিচারপতি কর্তৃক কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করা স্থগিত করে দেয়ার পর দেশব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। শাহবাগেও তা-ই। পাশে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা শুনছিলাম। এ ধরনের সমাবেশে যেয়ে বক্তৃতা শোনা আমার দীর্ঘদিনের অভ্যাস। তার ওপর এখন চলছে রাজনৈতিক সঙ্কট। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের হরতাল-অবরোধের নামে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী জামায়াত-শিবির, রাজাকার-আলবদর-আলশামসের সন্ত্রাসী ও রগকাটা বাহিনী দেশব্যাপী হত্যা, অগ্নিসংযোগ, মানুষের গাড়ি-বাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দেয়া, আওয়ামী লীগ এবং সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে আক্রমণ চালানো হচ্ছে, জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন অগ্নিদগ্ধ বাসযাত্রী হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে যাচ্ছে, প্রতিদিন লাশ হয়ে বেরোচ্ছে। কিন্তু এই পরিস্থিতি বামদের যতখানি উদ্বিগ্ন করছে তারচে বেশি ক্ষোভ প্রকাশ পাচ্ছে সরকারের প্রতি। 'দুই নেত্রী' 'দুই নেত্রী' বলে সমানভাবে দায়ী করতে চাইলেও তাদের আসল উদ্দেশ্য রাজনীতির মহাসড়ক থেকে বিচ্যুত খালেদা জিয়াকে আবার রাজনীতির মঞ্চে তুলে আনা। আর এ জন্যই শেখ হাসিনার পাশে খালেদা জিয়াকে দাঁড় করানোর কৌশল নেয়া হয়েছে। বামদের কাছে আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপি এবং শেখ হাসিনার চেয়ে খালেদা জিয়া বেশি ফেবারিট এ জন্য যে বিএনপির আদর্শ ও নীতিগত দুর্বলতাগুলোকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যাওয়া যাবে। যে কারণে আমাদের মার্কসপন্থী কমিউনিস্টরা কাছা মেরে জিয়ার খাল কাটতে চলে গিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগে সম্ভব নয়। যিনি চরম ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছেন, তার সঙ্গে যিনি বলছেন ক্ষমতায় গেলে ট্রাইব্যুনাল ভেঙ্গে দেবেন এবং যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করবেন, তাকে এককাতারে দাঁড় করানোর পেছনে একটা চালাকি রয়েছে। আকবর বাদশার সঙ্গে হরিপদ কেরানির তুলনা করা হলে হরিপদের মর্যাদা বাড়ে, জাতে ওঠে, আকবর বাদশার বাড়ে না। আমাদের বাম বন্ধু, তথাকথিত সুশীল বাবু, টিভি টক-শোর অর্ধশিক্ষিত প-িতরা সেই চালাকিটাই করে চলেছেন গত তিন দশকের কাছাকাছি সময় ধরে। 
বক্তৃতার মাঝে ঘোষণা করা হচ্ছিল তাদের সঙ্গে যারা সংহতি প্রকাশ করছিলেন তাদের নাম। এরই মধ্যে আমার নামও। দুইবার-একবার জাতীয় প্রেসক্লাবের 'সাবেক সাধারণ সম্পাদক' বলে আরেকবার 'সাংবাদিক-কলামিস্ট' হিসেবে। স্বাভাবিকভাবে আমি বিব্রত হলাম। এ জন্য যে দুই নেত্রীকে এককাতারে দাঁড় করানোর মতো মতলববাজি আমি করি না। কে না জানে বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কটের জন্য খালেদা জিয়াই এককভাবে দায়ী। দু'জনকে সমানভাবে দায়ী করার পেছনের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে আমি জড়াব কেন। একবার ভাবলাম গিয়ে মাইকে বলিÑ না ভাই, আমি আপনাদের সঙ্গে একমত নই। সংহতি প্রকাশের তো প্রশ্নই ওঠে না। আমি ভ-ামি করি না, ভ-ামিকে ঘৃণা করি। চক্ষু লজ্জার খাতিরে মাইকে গিয়ে বলতে পারলাম না কথাটা। বলতে পারলাম না, লাল ভাইয়েরা, 'দুই নেত্রী' 'দুই নেত্রী' বলে বর্তমান সঙ্কটাপন্ন রাজনীতিকে আরও জটিল করার দায় কেন নেব আমি? নেব না। আপনারা যত পারেন এবার খালেদা জিয়ার খাল কাটুন আর কুমির আনুন। সেদিন চোখ উল্টে প্রতিবাদ করতে পারেনি, আজ এই কলামে লিখে হাল্কা হলাম।
কে এই খালেদা জিয়া
খালেদা জিয়ার নামের সঙ্গে একটা বিশেষণ আমি বহুদিন আগে দিয়েছিলাম। আজ আবার দিচ্ছি- অঘটনঘটনপটিয়সিনী। এই ভদ্রমহিলা সম্পর্কে আমাদের জানা দরকার। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে জানতে হবে। তাহলে তাদের পক্ষে সঠিক পথে অগ্রসর হওয়া সহজ হবে:
ক. এই খালেদা জিয়া স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের স্ত্রী এবং তার পলিটিক্যাল লিগাসির ধারক। 
খ. এই খালেদা জিয়া যার স্বামী মিলিটারি স্বৈরাচার জিয়া যিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্য সহযোগী এবং চক্রান্তের অন্যতম কারিগর, খুনি মুশতাকের সহযোগী। 
গ. এই সেই খালেদা জিয়া যার স্বামী মিলিটারি স্বৈরাচার জিয়া যিনি লাখো শহীদের রক্তে লেখা সংবিধানের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক চরিত্রকে পাল্টে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ রচনা করেছিলেন, যার বিষাক্ত হাওয়া আজ বাংলার আকাশ-বাতাস-জমিন অসহনীয় করে তুলেছে। বসবাসের অযোগ্য করে তুলতে চাইছে। 
ঘ. এই সেই খালেদা জিয়া যার স্বামী মিলিটারি শাসক জিয়া একাত্তরে পাকিস্তানী হানাদার সামরিক জান্তার প্রধান সহযোগী জামায়াত-শিবির, রাজাকার-আলবদর, আলশামসের প্রধান গোলাম আযমকে পাকিস্তান থেকে ফিরিয়ে এনে আবার রাজনীতি করতে দিয়েছিলেন এবং খালেদা জিয়া তাকে নাগরিকত্ব দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। 
ঙ. এই সেই খালেদা জিয়া যার স্বামী মিলিটারি ক্যুদেতা জিয়া বহুদলীয় গণতন্ত্রের অজুহাত এনে নিষিদ্ধ ক্রিমিনাল সংগঠন জামায়াত-শিবিরকে পুনরায় রাজনীতি করতে দেন। 
চ. এই সেই খালেদা জিয়া যার স্বামী মিলিটারি জান্তা প্রধান জিয়া শাহ আজিজের মতো রাজাকারকে প্রধানমন্ত্রী এবং আলীম-মান্নানের মতো রাজাকারদের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী বানিয়েছিলেন। 
ছ. এই সেই খালেদা জিয়া যার স্বামী মিলিটারি জিয়া হ্যাঁ-না ভোটের নামে ভোটারবিহীন নির্বাচন করে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো গণতন্ত্রকে হুমকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছিলেন। ঐ নির্বাচনের প্রায় ৯৯% ভোট পড়া দেখানো হয়, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে শতকরা ১০০ ভাগেরও বেশি ভোট পড়া দেখানো হয়েছিল। জিয়া একবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনও করেছিলেন। তাতেও মানুষ ভোটকেন্দ্রে না গেলেও বাক্স ভরে গেছিল। 
জ. এই সেই খালেদা জিয়া যার স্বামী মিলিটারি জিয়া একদিকে সংবিধানে 'বিসমিল্লাহ....' সংযোজন করেছিলেন ভাল কথা, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে আবার একই সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত মদের লাইসেন্স দিয়েছিলেন। একদিকে কয়েক শ' লাইসেন্স স্বাক্ষর করেছিলেন জিয়া। সম্ভবত সে কারণেই ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হবার পর খালেদা জিয়ার বেড রুমের ফ্রিজে বোতল আবিষ্কার হয়েছিল। 
ঝ. এই সেই খালেদা জিয়া যার স্বামী মিলিটারি জিয়া হিযবুল বাহারে করে প্রমোদ ভ্রমণের নামে মেধাবী ছাত্রদের হাতে অর্থ, অস্ত্র এবং মদের গ্লাস তুলে দিয়েছিলেন। 
ঞ. এই সেই খালেদা জিয়া যার স্বামী মিলিটারি জিয়া কারফিউ দিয়ে জাতীয় নির্বাচন করেছিলেন। 
ত. এই সেই খালেদা যার স্বামী মিলিটারি জিয়া সড়হবু রং হড় ঢ়ৎড়নষবস বলে রাজনীতি ও রাজনীতিক কেনাবেচা শুরু করেন। অবাঞ্ছিত এলিমেন্টদের কিনে নিয়ে মন্ত্রী-এমপি বানান এবং রাজনীতিতে জায়গা করে দেন। 
থ. এই সেই খালেদা জিয়া যার স্বামী মিলিটারি জিয়া সংবিধানে ৫ম সংশোধনী এনে সব অপকর্ম জায়েজ করে নেন। 

এইভাবে দ ধ ন বাংলা বর্ণমালা শেষ হয়ে যাবে মিলিটারি জিয়ার অপকর্মের ফিরিস্তি শেষ হবে না। খালেদা জিয়াও তার স্বামীর ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলেছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল, তাজউদ্দীন, মনসুর আলী, কামারুজ্জামানকে হত্যার মাধ্যমে সেদিন জিয়া যে বিষবৃক্ষ রোপণ করেছিলেন খালেদা জিয়া সেই বিষবৃক্ষের নার্সিং করে চলেছেন :
ক. খালেদা জিয়ার হেঁসেল থেকে রাজনীতিতে এসে দেশপ্রেমিক না হয়ে রাতারাতি স্বৈরাচার হয়ে উঠতে এতটুকু সময় লাগেনি। জিয়ার মৃত্যুর পর প্রথমে দলের ভাইস চেয়ারপারসন হন। বিচারপতি সাত্তার ছিলেন চেয়ারম্যান। মিলিটারি রক্তের লিগাসি নেচে উঠল তার। সেদিনের দলীয় নেতা কর্নেল (অব.) জাফর ইমাম এবং জেনারেল মাজেদুল হককে (অব) পাঠান বিচারপতি সাত্তারের কাছ থেকে পদত্যাগপত্র আদায়ের জন্য। তাদের কাছে পিস্তল ছিল কিনা দেখিনি, তবে সাত্তার সাহেব স্বাক্ষরটা করে দিয়েছিলেন এবং খালেদা জিয়া চেয়ারপারসন হয়ে গেলেন। এটাই সম্ভবত মিলিটারি-সিভিলিয়ান প্রথম ক্যু, সামরিক শাসন জারি হলো না অথচ সামরিক কায়দায় ক্ষমতা দখল হয়ে গেল। 
খ.এই সেই খালেদা জিয়া যিনি স্বামী মিলিটারি জিয়ার নির্দেশিত ঢ়ড়ষরঃরপং ড়ভ নধষধহপব নাম দিয়ে রাজাকারদের পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করেন। স্বামী গোলাম আযমের মতো কুখ্যাত রাজাকার সর্দারকে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আনেন, স্ত্রী তার নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেন। খালেদা কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী আলবদর-নিজামী ও মুজাহিদীকে মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে শহীদের রক্তে আঁকা জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবার, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম তথা গোটা জাতিকে অপমান করেন। চট্টগ্রামের কুখ্যাত রাজাকার ফাঁসির দ-প্রাপ্ত সাকা চৌধুরীকে বিএনপির নেতা বানান। 
গ. এই সেই খালেদা জিয়া যিনি ক্ষমতায় গেলে যুদ্ধাপরাধ বিচার ট্রাইব্যুনাল ভেঙ্গে দেবেন এবং দ-প্রাপ্ত ও বিচারাধীন সকল যুদ্ধাপরাধীকে ছেড়ে দেবেন। 
ঘ. এই সেই খালেদা যিনি তার কুখ্যাত লুটেরা ও দুর্নীতিপরায়ন দুই পুত্র তারেক-কোকোকে (বিদেশে পলাতক) প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সমান্তরাল 'হাওয়া ভবন' 'খোয়ার ভবন' বানাতে দিয়ে অপকর্ম করতে দেন। যে হাওয়া ভবনে বসে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনা ও অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতাকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউর সমাবেশে গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। 
ঙ. এই সেই খালেদা যিনি শাপলা চত্বরে জমায়েত হেফাজতীদের সব রকম সহায়তাদানের জন্য তার দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তার নির্দেশ অনুযায়ী নেতাদের একটি দল শাপলা চত্বরে হেফাজতী মঞ্চে যান। তার আস্কারা পেয়েই হেফাজতীরা মতিঝিল, বিজয়নগর, জিরোপয়েন্ট এলাকায় ভাংচুর এবং বায়তুল মোকাররমের আশপাশে হকারদের দোকানপাট, বিশেষ করে কোরান-হাদিস বিক্রয় কেন্দ্র জ্বালিয়ে দেয়, শত শত কোরান শরীফ, হাদিস-এ-রসুল (সঃ) পুড়ে ছাই হয়ে যায়। যার যুদ্ধাপরাধী মন্ত্রী (শিল্প) নিজামীর মাধ্যমে ভারতের পূর্বাঞ্চলে পাচারকালে ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়ে। যার প্রধানমন্ত্রিত্বে ভারতের পূর্বাঞ্চলে সাপ্লাই দেয়ার জন্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে উলফা জঙ্গীর কারখানা করতে দেয়া হয় (অর্থাৎ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র)। যার আমলে শায়খ আবদুর রহমান, বাংলা ভাই, হান্নানের মতো ভয়ঙ্কর জঙ্গী জন্ম হয়েছিল। এই জঙ্গীরা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালেও তাঁকে হত্যার জন্য কোটালিপাড়ায় ৭৬ কেজির দুটি ল্যান্ডমাইন পুঁতেছিল। আল্লাহর অশেষ কৃপায় তিনি এবারও বেঁচে যান। 
চ. রাষ্ট্র পরিচালনার দিক বিবেচনায় নিলে খালেদা জিয়া দুইবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অথচ পারফরমেন্স ছিল বিগ-জিরো। একটা হানিফ ফ্লাইওভার বানাতে না পারলেও কালো টাকা বানাতে কসুর করেননি, যা পরবর্তীতে জরিমানা দিয়ে সাদা করতে হয়েছিল। অবশ্য ধরা খেয়ে। অবৈধভাবে দখল করে রাখা ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি আদালতের রায়ে হাত ছাড়া হয়ে যাবার পর যেভাবে কেঁদেছিলেন, স্বামীর মৃত্যুর পরও সেভাবে কেঁদেছেন বলে কোন তথ্য নেই। 
ছ. সবচে বড় কথা হলো যিনি আন্দোলনের নামে দেশব্যাপী জামায়াত-শিবিরকে দিয়ে যে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছেন, কিশোর মুনীরের অঙ্গার হওয়া শরীর বা সুমীর অচেতন মুখম-ল খালেদা জিয়াকে কোন বার্তা দেয় না। বরং এই ধ্বংসের মধ্যে আরও প্রতিহিংসাপরায়ণই মনে হয়। নইলে যে মিরপুরের কসাই কাদের মোল্লার ফাঁসিকে কেন্দ্র করে এবং গত এক বছর ধরে, বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হবার পর থেকে যেভাবে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, গাড়ি-বাড়ি-দোকানপাট জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছাই করা হচ্ছে, সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর দখল করার যে তা-ব চলছে, একাত্তরের মতো কোথাও কোথাও ধর্ষণের ঘটনাও ঘটানো হচ্ছে, এমনি পরিস্থিতিতেও খালেদা জিয়া দল আওয়ামী লীগকেই দায়ী করছে। এই কারণেই এরা মিথ্যার ডিকশনারি এবং রাজাকার-আলবদরের ছাতাধারী। 
পাকিস্তান সেই বর্বরই রয়ে গেল
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যখন বলেন একাত্তরে 'অখ- পাকিস্তান' চাওয়ায় কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। যখন পাকিস্তানী জামাত তাদের সরকারকে বাংলাদেশ আক্রমণ করতে বলে, যখন পাকিস্তান পার্লামেন্টে (পিপিপির প্রতিবাদের মধ্যে) বাংলাদেশবিরোধী নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করে তখনও খালেদা জিয়া নীরব। বোঝা যায় তার সুতা কোথায়? তবে হ্যাঁ, বুধবার দৈনিক জনকণ্ঠে দেখলাম বিএনপির পক্ষে নজরুল ইসলাম খান একটা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তাতেও তিনি আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছেন। আওয়ামী লীগের কারণে নাকি পাকিস্তানে এই প্রতিক্রিয়া (?)
দেবালয়ে আগুন লাগার পরও
লেখার শুরুতে বলেছিলামÑনগরীতে আগুন লাগলে দেবালয়ও রক্ষা পায় না। রাজনৈতিক দলের অফিসও রক্ষা পায় না। হেফাজতীদের হাত থেকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের সবচে বড় ঘাঁটি সিপিবির কার্যালয়ও রক্ষা পায়নি। তারপরও কমিউনিস্ট বন্ধুদের বোধোদয় হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। এখনও তারা শেখ হাসিনার সঙ্গে খালেদা জিয়াকে এক পাল্লায় মাপছেন। তারা কি বোঝেন না, প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের শিখ-ি খালেদা জিয়া এবার ক্ষমতায় এলে কেবল আওয়ামী লীগ নয়, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল সংগঠন, প্রতিষ্ঠান জ্বলে ছাই হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন ও সংরক্ষণকারী ব্যক্তিও তাদের হাত থেকে বাঁচতে পারবে না। খালেদা জিয়ার ছত্রছায়ায় জামায়াত-শিবির, হিজবুল মুজাহিদীন, হিজবুত তাহরীর এবং এ ধরনের যত সংগঠন আছে তারা যৌথভাবে ঐ সব অপকর্ম করবে। তারা ইতোমধ্যেই ভাড়া করা সন্ত্রাসীদের উপযুক্ত ট্রেনিং দিয়ে রাজপথে-গ্রামীণ জনপদে ছেড়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ বিরোধিতা করছে ভাল কথা। জঙ্গীদের নির্মূল করুন আগে। যদি মনে করে থাকেন আওয়ামী লীগ বেকায়দায় আছে নিজেরা এগিয়ে যাবেন, সে চিন্তার গুড়ে বালি। হয় ওদের কাছে তওবা করে (যেমন করে প্রথম আলো স¤পাদক মতিউর রহমান বায়তুল মোকাররম মসজিদে গিয়ে করেছিলেন) ওদের দলে বিলীন হয়ে যেতে হবে, নয়ত ওদের রগকাটা পার্টির হাতে পড়তে হবে। 
একাত্তরে মানবতা কোথায় ছিল?
বহির্বিশ্বের কেউ কেউ মোল্লাদের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। ১৯৭১ সালে যখন পাকি সামরিক জান্তার সঙ্গে এই কাদের মোল্লারা গণহত্যা, বুদ্ধিজীবী হত্যা চালিয়েছিল, আমাদের মা-বোনদের ধর্ষণ করে করে হত্যা করেছিল তখন তাদের মানবাধিকার কোথায় ছিল? তাছাড়া নুরেমবার্গ ট্রায়াল কিংবা টোকিও ট্রায়ালের চেয়েও বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের ট্রায়াল হয়েছে এবং হচ্ছে অনেক বেশি স্বচ্ছ, আইনানুগ এবং মানবিকতা রক্ষা করেই। বিশ্বের কোথাও এ ধরনের ট্রায়ালে আপীলের সুযোগ ছিল না, আজও নেই। কেবল আমাদের বাংলাদেশেই আপীলের সুযোগ রয়েছে। 
পক্ষপাতদুষ্ট মিডিয়া 
কিছু বিদেশী মিডিয়া (সংবাদপত্র, টিভি, অনলাইন সংবাদপত্র) কাদের মোল্লার ফাঁসির সংবাদের শিরোনাম করেছে- ইধহমষধফবংয যধহমবফ ওংষধসরংঃ ষবধফবৎ তাদের উদ্দেশে কি বলব? তারাও কসাই কাদের মোল্লার সহযোগী। বাংলাদেশ কোন ওংষধসরংঃ খবধফবৎ এর বিচার করে ফাঁসি দেয়নি, দিচ্ছে না। দিয়েছে এক নারীধর্ষক, খুনি তথা একাত্তরের এক যুদ্ধাপরাধীকে। জামায়াত যেমন ট্রাইব্যুনালের ভাষায় ক্রিমিনাল সংগঠন এবং আলবদর-আলশামসও হিটলারের গেস্টাপো বাহিনীর মতোই ঘাতক বাহিনী। ঠিক একইভাবেই কাদের মোল্লা মিরপুর অঞ্চলে হত্যা, গণহত্যা, বুদ্ধিজীবী হত্যা, নারী ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। যে কারণে তার নামও হয় মিরপুরের কসাই এবং এই কসাইরই ফাঁসি হয়েছে; কোন রাজনৈতিক নেতার নয়, ইসলামিস্ট লিডারেরও নয়। একই স্বচ্ছতায় গোলাম আযম, নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদী, সাকা চৌধুরী, মীর কাশেম আলী, আবদুল আলিম, ইউসুফ, কামারুজ্জামান সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার হয়েছে এবং হচ্ছে আইনের স্বাভাবিক পথে। যুদ্ধাপরাধীদের আইনজীবীরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাক্ষ্য, সওয়াল-জওয়াব, শুনানি, বিচারিক প্রক্রিয়ার প্রতিটি পর্যায়ে অপরাধীদের পক্ষে আইনী সহায়তা দিয়েছেন। তারপরও যারা বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিচার চলছে, তাদের উদ্দেশে শুধু একটাই কথা বলতে হয় তারা কাদের মোল্লাদেরই দোসর। ঐ সব আন্তর্জাতিক মিডিয়া বা তথাকথিত মানবাধিকার সংগঠন সবই জামায়াতীদের অর্থের কাছে আত্মসমর্পণ করে বসে আছে। স্বদেশী টক-শোঅলা তথাকথিত প-িতদের (?) মতো। 

ঢাকা- ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩
লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক





__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___