Banner Advertiser

Friday, February 7, 2014

[mukto-mona] দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় উন্মোচিত যাদের স্বরূপ



হাসান মামুন

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় উন্মোচিত যাদের স্বরূপ

জানুয়ারী ৩১, ২০১৪
হাসান মামুন

হাসান মামুন

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল কী মানের রায় দিয়েছেন, তা নিয়ে দৃঢ়ভাবে মন্তব্য করা এ লেখকের পক্ষে সঙ্গত নয়। সুনির্দিষ্টভাবে কোনো বিষয়ে কাজ করতে করতে সাংবাদিকদেরও কারও কারও এক রকম 'অথরিটি' জন্মে যায় ওই বিষয়ে। দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় এ লেখকের তেমন অথরিটিও নেই। তাই রায় নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করা থেকে সচেতনভাবেই বিরত থাকব।

বরং দৃষ্টি দেব চাঞ্চল্যকর এ মামলা যে ধারায় অগ্রসর হয়েছে, যেসব ঘটনা ও তথ্য এর সাক্ষ্য-প্রমাণ থেকে বেরিয়ে এসেছে, তার এবং এর রাজনৈতিক তাৎপর্যের দিকে। প্রসঙ্গত বলি, মামলাটির প্রাথমিক রায় নিয়ে উত্তেজিত হয়ে মন্তব্য করারও প্রয়োজন নেই বোধহয়। এর বিরুদ্ধে তো আপিল করা যাবে।

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীরও ফাঁসির রায় হয়েছে। এতে তার দল নাকি স্তম্ভিত। তা হতেই পারে। তবে এ নিবন্ধ লেখা পর্যন্ত রায়ের প্রতিক্রিয়ায় তারা যে আগেকার মতো অরাজকতা করেনি, সেটি লক্ষণীয়। এখন বিভিন্ন স্থানে যৌথবাহিনীর অভিযান মোকাবেলা করতে হচ্ছে তাদের। দলের নেতাকর্মীদের মনোবলেও ফাটল ধরেছে বোধহয়।

বিএনপি-জামায়াত শাসনামলের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকেও ফাঁসি দেওয়া হয়েছে রায়ে। তিনি ছিলেন তারেক রহমান নিয়ন্ত্রিত আলোচিত 'হাওয়া ভবনের' ঘনিষ্ঠ লোক। দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের সময় তিনি প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াই ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও ছিল তাঁর হাতে।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের তের জন

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের তের জন

তাঁকে এ মামলার আওতায় কোনোভাবেই আনা হয়নি কেন, সে প্রশ্ন তাই উঠেছে। খালেদা জিয়ার কাছে বিপুল অস্ত্র আটকের ওই ঘটনা উপস্থাপনের সময় তিনি 'নিরব' ছিলেন বলে মামলা চলাকালে জানান এক পদস্থ সামরিক কর্মকর্তা।

আমরা দেখেছি, বেগম জিয়ার শাসনামলে বহুল আলোচিত ওই মামলার তদন্ত সঠিক খাতে প্রবাহিত হয়নি। অস্ত্র চোরাচালানে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত নিম্ন পর্যায়ের কয়েকজনকে অভিযুক্ত করেই তখন ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল বললে কি ভুল হবে?

এও লক্ষ করি, যে দুজন সাধারণ পুলিশ কর্মকর্তার সাহসী ভূমিকায় চট্টগ্রামে সে মারাত্মক ঘটনা ধরা পড়ে, তাদের বিরুদ্ধে ওই আমলে উল্টো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আইনানুগ ও দেশপ্রেমমূলক কাজের জন্য পুরস্কৃতের বদলে তাদের করা হয় চাকরিচ্যুত; সাজানো মামলা দিয়ে রিমান্ড ও জেলে নেওয়া হয়। ওয়ান-ইলেভেনের পটপরিবর্তনের ধারায় তারা রেহাই পান এবং পুলিশেই কর্মরত রয়েছেন এখন।

সরকারের বোধহয় উচিত তাদের জন্য বিশেষ কিছু করা। ওই রাতে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানার (সিইউএফএল) জেটিতে সন্দেহজনক মালপত্র খালাসের ঘটনা নজরে আসার পর তারা কিন্তু পারতেন কিছু উৎকোচের বিনিময়ে সেটা চেপে যেতে। অস্ত্র পাচারের সঙ্গে জড়িতরা তাদের কঠোর ভাষায় হুমকিও দিয়েছিল। সে সব উপেক্ষা করে তারা বরং স্থানীয় প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করেন।

তৎকালীন ডিসিও (পোর্ট) বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন ঘটনাটি জাতির সামনে তুলে ধরতে। অস্ত্র চোরাচালানে জড়িত বলে মামলায় প্রমাণিত তৎকালীন জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) প্রধানের সঙ্গে টেলিফোন ধরিয়ে দেওয়া হলেও তিনি কথা বলেননি। বরং উদ্যোগী ছিলেন আসামি ধরতে ও আটককৃত অস্ত্র সরকারের হেফাজতে নিতে।

তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, আটককৃত অন্তত পাঁচজনকে পরে ছেড়ে দেওয়া হয় তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে। এদের সবাই নাকি ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) লোক। গভীর বঙ্গোপসাগর থেকে অস্ত্রের বাক্সগুলো নামিয়ে জেলেনৌকায় করে উল্লিখিত জেটিতে এনে ট্রাকে তোলার পুরো সময়টায় তারাও নাকি ছিল।

ওগুলো ছিল যুদ্ধাস্ত্র। সাধারণ সন্ত্রাসীরা এসব ব্যবহার করে না। নিয়মিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধেই ব্যবহৃত হয় ওগুলো। মামলায় বেরিয়ে এসেছে, উলফার জন্যই চীনে তৈরি ওইসব অস্ত্র আনা হচ্ছিল। বাংলাদেশ ভূখণ্ডে সেগুলো ব্যবহারের উদ্দেশ্য নাকি ছিল না। যুদ্ধাস্ত্রের ওই চালান জায়গামতো পৌঁছে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল এদেশের মাটি, যা শহীদের রক্তে রঞ্জিত

দশ ট্রাক অস্ত্র খালাসের সেই ঐতিহাসিক ঘটনার ফাইল ছবি

দশ ট্রাক অস্ত্র খালাসের সেই ঐতিহাসিক ঘটনার ফাইল ছবি

আমাদের মনে আছে, চট্টগ্রামে উদ্ধারকৃত যুদ্ধাস্ত্র নেড়েচেড়ে দেখতে গিয়েছিলেন লুৎফুজ্জামান বাবর। অদ্ভূত ইংরেজিতে মিডিয়ার কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেও তিনি আলোচিত হন তখন। কিন্তু উপযুক্ত তদন্তের ব্যবস্থা করেননি। বিএনপি-জামায়াত আমলে ওই ঘটনা তদন্তে আসলে করা হয়েছিল কালক্ষেপণ; আর না পারতে প্রদর্শন করা হচ্ছিল সিকিভাগ সত্য।

দেশের ভেতর রাষ্ট্রায়ত্ত একটি সার কারখানার জেটিতে বিপুল যুদ্ধাস্ত্র আটকের ঘটনায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছিল একজন স্থানীয় চোরাচালানি, ট্রলার মালিক ও শ্রমিক সংগ্রহকারীর নামে। আর কারও সংশ্লিষ্টতা ছাড়াই যেন এত বড় ঘটনা ঘটতে পারে! অস্ত্র কোত্থেকে ও কাদের জন্য আসছিল, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছিল না। অথচ দেশে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারের সেটিই ছিল সবচেয়ে বড় ঘটনা। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাও এতে ছিল সরাসরি জড়িত।

এদিকে বৃহৎ প্রতিবেশি দেশ ভারত স্বভাবতই ওই ঘটনায় সরকারের ভূমিকার দিকে দৃষ্টি রাখছিল নিবিড়ভাবে। বিশেষত নাইন-ইলেভেনের পর জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ বিষয়ে অতি সতর্ক হয়ে ওঠা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও নড়েচড়ে বসেছিল। বিএনপি-জামায়াত সরকার কি বোকা ভেবেছিল সবাইকে?

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় তাদের আমলে যেভাবে তদন্ত হয়েছিল, তার রাজনৈতিক দায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে নিতে হবে বৈকি। ২০০৮-এর নির্বাচনে আলোচ্য মামলায় দণ্ডিত বাবরকে তিনি মনোনয়ন দেননি অবশ্য। এ নিবন্ধ লেখা পর্যন্ত বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়াও জানানো হয়নি দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায় বিষয়ে। কিন্তু এভাবে কি হাত ধুয়ে ফেলা যাবে?

খালেদা জিয়ার দুই শাসনামলেই ভারতের তরফ থেকে কখনও মৃদু আর কখনও জোরালোভাবে অভিযোগ তোলা হচ্ছিল যে, বাংলাদেশ ভূখণ্ড ব্যবহার করছে উলফাসহ ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন। এদের নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে না বা প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করে ভারত। চট্টগ্রামে তাদেরই শাসনামলে দশ ট্রাক যুদ্ধাস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারের ঘটনায় কিন্তু ওই অভিযোগই প্রমাণ হয়ে যায়।

বিএনপি-জামায়াত সরকার ঘটনাটির তদন্তও এমনভাবে করে যে, তাতে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়ে ওঠে। এখন তো দেখা যাচ্ছে, তৎকালীন সরকার ও প্রশাসনের একটি উচ্চ পর্যায় ছিল এর সঙ্গে বিভিন্নভাবে জড়িত। তারা নিজেরা পরস্পরের ভূমিকার বিষয়ে যেভাবে বক্তব্য দিয়েছেন এবং সংশ্লিষ্ট সামরিক ও বেসামরিক কর্তাব্যক্তিরা তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আদালতের কাছে যা বলেছেন, তাতে রীতিমতো লজ্জিত হতে হয়।

এই প্রথম কোনো মামলায় মন্ত্রীর পাশাপাশি একসঙ্গে দণ্ডিত হলেন রাষ্ট্রের সাবেক দুই গোয়েন্দা প্রধান। বিশ্বের কোনো গণতান্ত্রিক দেশে কি এমন মামলা ও রায়ের দৃষ্টান্ত রয়েছে?

আমরা একটু হলেও আশ্বস্ত হতে পারতাম, যদি রায়ের সময় দেখতে পেতাম সাবেক সামরিক গোয়েন্দা প্রধানসহ ওই দু'জনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন বা তারা সেভাবে জড়িত ছিলেন না। কিন্তু তাদের সংশ্লিষ্টতার যে সব তথ্য বেরিয়ে এসেছে, তা এককথায় লোমহর্ষক। ভারতীয় নির্মাতারা এমন কাহিনী পেলে এতদিনে হয়তো ছায়াছবি বানিয়ে ফেলতেন।

তদন্তে প্রকাশ, দশ ট্রাক অস্ত্র এখানে এনে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে দেশে-বিদেশে তারা বৈঠক করেছেন উলফা ও পাকিস্তানি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের লোকজনের সঙ্গে। এনএসআইয়ের দুই কর্মকর্তা সিইউএফএল জেটিতে অস্ত্র খালাসের সময় শুধু উপস্থিতই ছিলেন না, তাদের একজন ছদ্মনামে নিজেকে উলফার লোক বলে পরিচয় দিয়েছিলেন পুলিশের কাছে। তাদেরও মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত।

একই দণ্ড দেওয়া হয়েছে চোরাচালানি চক্রের হোতাকেও। তার সঙ্গে নাকি সরাসরি যোগাযোগ ছিল উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়ার। পলাতক এ আসামিকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একদা তিনি রাজধানীতে আদর-যত্নে আছেন বলে খবর মিলত। উলফা নেতা অনুপ চেটিয়াও এদেশে অবস্থান করে তৎপরতা চালাচ্ছিলেন ভারতে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় এসে তাকে আটক করে ও বিচারে সাজা হয় তার।

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাবেক অতিরিক্ত শিল্প সচিবেরও মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। তিনি যুদ্ধাস্ত্র উদ্ধারের ওই রাতে অবস্থান করছিলেন সার কারখানাটির রেস্ট হাউসে। কিছুই হয়নি দেখাতে বোধহয় এর পরপরই তিনি কক্সবাজার বেড়াতে চলে যান। তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিজামী তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। তার মন্ত্রণালয়ের অধীন কারখানার জেটিতে সরকারি ক্রেন দিয়ে অস্ত্র খালাসের ঘটনায় ব্যবস্থা করেননি কোনো বিভাগীয় তদন্তেরও। অধঃস্তন কর্মকর্তারা অনুরোধ করার পরও নয়। এগুলো গভীরভাবে সন্দেহজনক বৈকি।

এদের সবার অপরাধ মৃত্যুদণ্ডযোগ্য কিনা– আপিলের সুযোগ নেওয়া হলে তা নিশ্চয়ই আরও নিবিড়ভাবে খতিয়ে দেখবেন উচ্চ আদালত। ধরে নেওয়া যাক, এ মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া অর্ধেক লোক চরম এ সাজা এড়াতে পারলেন। তারা দণ্ডিত হলেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে। এদের মধ্যে না হয় পড়ে গেলেন একজন সাবেক মন্ত্রী, একজন সাবেক গোয়েন্দা প্রধান, একজন বেসামরিক কর্মকর্তা প্রভৃতি। তাতেও কি লজ্জা কমবে আমাদের?

আমাদের একটি নির্বাচিত সরকার ও জনপ্রশাসনের অন্তত একাংশ যে প্রতিবেশি দেশে অস্ত্র পাচারের ওই ঘটনায় জড়িত ছিল, সেটি তো প্রমাণ হয়ে গেল! আরও প্রমাণ হল, ওই ঘটনার কদর্যতা এভাবে প্রকাশ পেত না ওয়ান-ইলেভেন ও পরবর্তীকালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার না এলে।

মামলার রায় ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা

মামলার রায় ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা

আর যত অভিযোগই উঠুক– এ অভিযোগ কিন্তু শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তোলা যাবে না যে, তার সরকার ভারতের একাংশে গোলযোগ বাঁধিয়ে রাখার কাজে দেশের মাটি ব্যবহার করতে দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে স্পষ্ট ঘোষণা দিয়ে তিনি বরং অভিযান পরিচালনা করেন দেশের বিভিন্ন স্থানে। সেনাবাহিনীও এতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখে। আর সন্দেহ কী, সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারই দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা তদন্তের উদ্যোগ নেয় নতুন করে। হাসিনা সরকার এটাকেই এগিয়ে নেয় পরিণতির দিকে।

আমাদের মনে থাকার কথা, বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে বগুড়ায় বিপুল পরিমাণ গুলি উদ্ধার হয়েছিল। সেগুলোও ছিল যুদ্ধাস্ত্রে ব্যবহার্য। ওগুলোও নাকি আনা হয় ভারতীয় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পাচারের জন্য। সে ঘটনার যথাযথ তদন্ত কি হয়েছিল? না হয়ে থাকলে বর্তমান সরকার এর দায়িত্ব নিক।

বাংলাদেশ ভূখণ্ড ব্যবহার করে পরিচালিত এ ধরনের তৎপরতায় আমাদেরও বিপদের দিক রয়েছে। ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জন্য বিভিন্ন রুটে আসা এসব যুদ্ধাস্ত্রের একাংশ দেশেও থেকে যেতে পারে। আর তা চলে যেতে পারে জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী রাজনৈতিক কর্মীদের হাতে। ইতোমধ্যে যে তেমনটি ঘটেনি, তা কে নিশ্চিত করে বলবে?

দশ ট্রাক অস্ত্র ঘটনাচক্রে আটক হয়েছিল বলেও অনেকে মনে করেন। স্থানীয় প্রশাসন যোগে থাকলে তা হয়তো ঠিকই হালুয়াঘাট দিয়ে পৌঁছে যেত উলফার হাতে। এমন-বা এর চেয়ে ছোট একাধিক চালান কি যায়নি? তবে ভারতে উলফার তৎপরতা ঝিমিয়ে আসার ঘটনায় বোঝা যায়, তাদের রসদ ফুরিয়ে এসেছে। সরকারের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়ায় উপনীত এখন তাদের বড় অংশটি; স্বাধীনতার বদলে চাইছে স্বায়ত্তশাসন।

ভারতে উলফাসহ বিভিন্ন গোষ্ঠীর বিদ্রোহের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণ রয়েছে হয়তো। কিন্তু আমাদের কী দায় পড়েছে এতে ঘৃতাহুতি দেওয়ার? 'শত্রুরাষ্ট্র' পাকিস্তান ভারতের অভ্যন্তরে যা চাইতে পারে এবং যাতে শামিল হয়ে আনন্দে থাকতে পারে– আমরা তার অংশীদার হব কেন? কেন আমাদের সরকার ও প্রশাসনের একাংশকেও এতে শামিল হতে দেব?

ভারতের প্রত্যক্ষ সহায়তায় স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম বলেই নয়, একটি গণতান্ত্রিক ও আপন ভবিষ্যতে বিশ্বাসী দেশ হিসেবেও আমরা পারি না নিজেরা উদ্যোগী হয়ে বা তৃতীয় কোনো পক্ষের হয়ে এসব কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হতে।

যুদ্ধাস্ত্র পাচারের একটি অপরাধ যখন প্রকাশ্য হয়ে পড়েছে, তখন আমাদের দায়িত্ব কুতর্ক করা নয়– এর জন্য
দায়ীদের আইনানুযায়ী কঠোরতম শাস্তি চাওয়া। বৃহৎ ও শক্তিশালী প্রতিবেশি ভারত আমাদের সঙ্গে কিছু অন্যায় নীতি গ্রহণ ও আচরণ করছে সন্দেহ নেই। তা সত্ত্বেও নিজেদের 'ক্লিন' রাখতে হবে আমাদের। ক্লিন থাকলেই 'বারগেইন' করার নৈতিক জোর পাওয়া যায়।

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার সুষ্ঠু নিষ্পত্তির বিষয়কে এ লক্ষ্যেও ব্যবহার করতে হবে। এটা বিশ্বেও উজ্জ্বল করবে আমাদের ভাবমূর্তি। নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতপূর্বক আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনে কেবল মৌখিক অঙ্গীকার করলে তো হবে না। উপযুক্ত ও দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিয়ে এর প্রমাণও দিতে হবে।

এ অঞ্চলে বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ অংশগ্রহণমূলক ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতেও এমন পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ।

হাসান মামুন: সাংবাদিক, কলামিস্ট।

http://opinion.bdnews24.com/bangla/archives/14795






__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___