Banner Advertiser

Monday, March 10, 2014

[mukto-mona] রাজনীতিতে ‘গুণগত’ পরিবর্তন!!! by মাসুদা ভাট্টি




মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০১৪, ২৭ ফাল্গুন ১৪২০
রাজনীতিতে 'গুণগত' পরিবর্তন!!!
মাসুদা ভাট্টি
২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পরাজয়ের পর বিএনপি রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনার ঘোষণা দেয়। বেগম জিয়া নিজেই দেন এই ঘোষণা। সন্দেহ নেই, এই ঘোষণা কেবল নির্বাচনে পরাজয়ের কারণে আসেনি। বরং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চলা বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে যে ভয়ঙ্করের রাজনীতি এদেশের মানুষের ঘাড়ে জেঁকে বসেছিল তা থেকে মানুষ উত্তরণের পথ খুঁজছিল। আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে এদেশের মানুষকে এই অপশাসন থেকে মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছে সফলভাবে। ফলে বিএনপি-জামায়াতের ভূমিধস পরাজয় ঘটেছে। বেগম জিয়া সে কারণেই ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, দলীয় রাজনীতিতে তিনি গুণগত পরিবর্তন ঘটাবেন। কিন্তু গুণগত পরিবর্তন ঘটাতে হলে তো প্রথমেই তাঁর গুণধর পুত্রদের রাজনীতি থেকে দূরে সরাতে হবে। কারণ, এই দুই পুত্রের কারণেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সমান্তরালে হাওয়া ভবন নামে একটি ভবন প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সেখান থেকে প্রকৃত সরকারের চেয়েও শক্তিশালী একটি ছায়া সরকার বাংলাদেশ চালাতে শুরু করেছিল। এমনকি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অনেক সিদ্ধান্তও এই হাওয়া ভবন থেকে আসত তখন। দেশকে জঙ্গীরাষ্ট্রে পরিণত করার সকল আয়োজনও সম্পন্ন হয়েছিল এখান থেকেই। এছাড়া বিরোধী দলকে নেতৃত্বশূন্য করতে হাওয়া ভবন থেকে গ্রেনেড হামলার মতো ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে ক্রমশ প্রমাণ বেরিয়ে আসছে। কিন্তু বেগম জিয়া যেহেতু তাঁর পুত্রদের বিশেষ করে বড় পুত্র তারেক জিয়াকে দল থেকে সরাতে পারেননি সেহেতু তাঁর কথিত 'গুণগত পরিবর্তন' দেখার সৌভাগ্য আমাদের হয়নি। তারপর গত ছয় বছরে বিএনপির রাজনীতি ক্রমাগত আমাদের সেই 'গুণগত'(?) পরিবর্তনের প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছে, যাতে বোঝা যাচ্ছে যে, বিএনপি আসলে নিজেদের রাজনীতিই ভুলে গিয়েছে। রাজনীতি ও আন্দোলনকে 'আউটসোর্স' করার যে নতুনতর আয়োজন বেগম জিয়া আমাদের সেটিই শিখিয়েছেন তাঁর রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়ে। 
যাহোক, বিএনপি রাজনীতির এই গুণগত পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি যোগ হয়েছে নতুন একটি অধ্যায়। হঠাৎই ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী বেগম জিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বলে গণমাধ্যম জানিয়েছে। বিষয়টি কৌতুককর, সন্দেহ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোহ্্রাওয়ার্দী উদ্যানে ৭ মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে কৌতুক করেছেন বিষয়টি নিয়ে। এবং তিনি বলতে গেলে অতিকথনই করেছেন এ নিয়ে এবং যথারীতি তিনি এ জন্য সমালোচিতও হয়েছেন। আমরা মনে করি যে, প্রধানমন্ত্রীর এ বিষয়ে এভাবে বলাটা উচিত হয়নি। কারণ, তিনি প্রধানমন্ত্রী এবং কোন ধরনের উস্কানিমূলক ভাষা তিনি ব্যবহার করবেন না বলেই আশা করা যায়। কিন্তু বেগম জিয়া ও বদরুদ্দোজা চৌধুরী সাহেবের বৈঠকের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির আরেকটি কঠিন সত্যও যে বেরিয়ে এসেছে সে বিষয়টি নিয়েই আজকে আলোচনা করতে চাইছি। তা হলো জেনারেল জিয়া আমাদের জানিয়েছিলেন যে, রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে আসলে কিছুই নেই। এই বৈঠক আবারও সে কথাটি আমাদের সামনে এনে হাজির করেছে। এই বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে বিএনপি বিশেষ করে বেগম জিয়া স্ব উদ্যোগে এক সময় চরম অপমান করে দল থেকে বের করে দিয়েছিলেন। কবর জিয়ারতের রাজনীতি থেকে ডা. চৌধুরী নিজেকে একটু সরাতে চেয়েছিলেন বলেই তাঁর এ পরিণতি হয়েছিল বলে অনেকে মনে করে থাকেন। কিন্তু সে জন্য তাঁকে রেললাইন ধরে দৌড়াতে হয়েছিল মনে করার কোন কারণ নেই। এর পেছনে আরও বড় কোনও কারণ ছিল যা কোনদিনই হয়ত বেরিয়ে আসবে না। কারণ, সেগুলো জনসম্মুখে আনার দায় ও দায়িত্ব ছিল ডা. চৌধুরীর। তিনি এতদিন যেহেতু সে বিষয়ে মুখ খোলেননি এখন তো তিনি আবার তাঁর সাবেক রাজনীতির ঘরে ফিরে যাওয়ার আয়োজন প্রায় শেষই করেছেন; সেহেতু জাতি জানতেও পারবে না কেন বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে প্রায় 'ইমপীচ্' করা হয়েছিল? কেনই বা তাঁকে নিজ হাতে গড়া রাজনৈতিক দল থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছিল? কেন তাঁকে রেললাইন ধরে দৌড়ে প্রাণ বাঁচাতে হয়েছিল? 
আমরা দেখেছি যে, বিগত বছরগুলোতে ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিএনপি-জামায়াতের বাইরে (কিন্তু রাজনীতিতে একই কাতারভুক্ত) ড. কামাল হোসেন, আ স ম রব, কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্নাদের নিয়ে একটি বিকল্প রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গঠনের চেষ্টা করেছেন। মূলত এই প্ল্যাটফর্ম যতটা না আওয়ামী লীগবিরোধী ততটাই বিএনপি-জামায়াতের নিকটবর্র্তী। মজার ব্যাপার হলো, এদের পক্ষ থেকে এদেশের জঙ্গী রাজনীতির প্রবক্তা, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতকে কখনওই সমালোচনা করে কিছু বলা হয়নি। এদেশে দুর্নীতিকে স্থায়িত্ব দেয়া বিএনপি বা তারেক জিয়ার সমালোচনাও এখান থেকে কখনও শোনা যায়নি। কেবলমাত্র আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার যে কোন ত্রুটি-বিচ্যুতিতে এঁরা মুখর থেকেছেন। তা খারাপ অবশ্যই নয়, কিন্তু তাতে তাঁদের গ্রহণযোগ্যতা অর্জন হয়নি এদেশের মানুষের কাছে। আমরা জানি, ড. কামাল হোসেন এদেশের রাজনীতিতে কেবল একজন 'ব্যক্তি' মাত্র, একসময় আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর থেকে তিনি নিজেকে সরিয়ে নিতে শুরু করেছিলেন এবং এক সময় তিনি দল থেকে বেরিয়ে আসেন। কিন্তু বেরিয়ে এসে তিনি রাজনৈতিক দল গঠনে কার্যত ব্যর্থ হন। কারণ মানুষের কোন স্পষ্ট ধারণা তাঁর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সম্পর্কে গড়ে ওঠেনি। বিশেষ করে আওয়ামী রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে এর বিকল্প কোন সুষ্ঠু রাজনৈতিক প্রোগ্রাম তিনি জনগণের সামনে হাজির করতে পারেননি। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধকালীন তাঁর অবস্থান এবং বঙ্গবন্ধু পরবর্তীকালে তাঁর রাজনৈতিক দোলাচল, বিদেশী যোগাযোগ ইত্যাদি তাঁকে এদেশের মানুষের রাজনৈতিক ভাবনা থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। ফলে তিনি যখন নিজেই সক্রিয় রাজনৈতিক দল খোলার ঘোষণা দিলেন তখন তাঁর পাশে কতিপয় ছাড়া বিশাল কোন জন-এর সমাবেশ দেখা গেল না। 
অন্যদিকে ডা. বি. চৌধুরী এদেশে বিএনপির রাজনীতির প্রাণপুরুষ বলতে গেলে। যদিও তাঁরও জন্ম আওয়ামী পরিবারেই। কিন্তু তিনি জেনারেল জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক হাত হিসেবেই এদেশে পরিচিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের বিকল্প প্ল্যাটফর্ম হিসেবে একটি রাজনৈতিক শক্তির প্রয়োজনীয়তা তিনি জিয়াউর রহমানকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন এবং সে লক্ষ্যেই তিনি কাজ করে গিয়েছেন। এমনকি বিএনপিকে ইসলামী জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সঙ্গে ট্যাগ করার কৃতিত্বও তাঁরই। মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ এবং অবস্থান কি সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই আমার। কিন্তু স্মরণ করা যেতে পারে, ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে এটিএন বাংলা টেলিভিশনে 'সাবাশ বাংলাদেশ' নামক কুরুচিপূর্ণ অনুষ্ঠানটির নেপথ্যকার তিনি নিজেই এবং তখন জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির যে জোট গঠিত হয়েছিল তাতেও তিনি কোন প্রকার বাধা হননি। ফলে এদেশের রাজনীতিতে ডা. বি চৌধুরী আসলে সনাতনপন্থীই অর্থাৎ ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে উস্কে দিয়ে আওয়ামী লীগের বিকল্প একটি প্ল্যাটফর্মে থেকেই রাজনীতিকে তিনি দেখেছেন মূলত।
এরপর বাকি থাকলেন আ স ম রব। এক সময়ের জাসদ এবং তারপর এরশাদ শাহী। এর সম্পর্কে বলার বিষয় সামান্যই। কাদের সিদ্দিকী সম্পর্কেও যত কম বলা যায় ততই স্বাস্থ্যকর। কারণ একজন মুক্তিযোদ্ধা যে চিরকাল মুক্তিযোদ্ধা নন তার জ্বলজ্বলে প্রমাণ কাদের সিদ্দিকী স্বয়ং। এদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তাঁর ভূমিকা সর্বাধিক বলেই আমি মনে করি। কারণ, তখন যে অনেক মুক্তিযোদ্ধাই আসলে চেতনা-বিষয়ে অজ্ঞ ছিলেন পরবর্তীকালে কাদের সিদ্দিকীর মতো অনেকেই তার প্রমাণটি আমাদের দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে বনিবনা হয় না ভাল কথা, কিন্তু তাই বলে আওয়ামী বিরোধিতার নামে দেশবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারদের সঙ্গে গিয়ে নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার 'পাপ'(!) খ-াতে হবে তা কাদের সিদ্দিকীই জানিয়েছেন আমাদের। এখন তো আবার শুনছি তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে আদালত পর্যন্ত দৌড়াচ্ছেন। দেখা যাক, দৌড়ের ফলাফল কী হয়? ডা. চৌধুরী রেললাইন দিয়ে দৌড়ে তো আবার সেই বেগম জিয়ার কাছেই পৌঁছেছেন!!
এখন প্রশ্ন হলো, এই যে যাঁদের কথা উপরে বলেছি তাঁদের সকলেই নিজ নিজ অবস্থান এবং গোষ্ঠীগতভাবে বিগত নির্বাচনের আগে তা বন্ধ করার জন্য যারপরনাই শক্তি খরচ করেছেন। ধর্ণা দিয়েছেন দেশী ও বিদেশী বিভিন্ন অপশক্তির কাছে। কিন্তু তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন, ঠেকাতে পারেননি নির্বাচন। যে প্রকারেরই হোক না কেন, নির্বাচন একটি হয়েছে এবং দেশে আপাত শান্তি ফিরে এসেছে। স্বাভাবিক গতি ফিরে পেয়েছে অর্থনীতি। আমরা কিছুদিন যাবত এদের কোন কর্মকা-ই দেখতে পাচ্ছিলাম না; অনেকেই হয়ত ভেবেছেন যে, যাক বাঁচা গেল, এদের চুপ করানো গিয়েছে। কারণ, জনসমর্থনের অভাব যাঁদের রয়েছে তাঁদের কথা মানুষ শুনতেও চায় না, বিশ্বাসও করে না। ব্যক্তিকে কিছু ব্যক্তিমাত্রই শোনেন বা বোঝার চেষ্টা করেন, সমষ্টির কাছে ব্যক্তির অবস্থান সামান্যই। একথা বুঝতে পেরেই হয়ত ডা. বি চৌধুরী তাঁর মিত্রদের অর্থাৎ ড. কামাল হোসেন, আ স ম রব, কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্নাকে ছেড়ে আবার গিয়ে হত্যে দিয়ে পড়েছেন বেগম জিয়ার কাছে। প্রশ্ন হলো, এঁদের কাছ থেকে দেশের, রাজনীতির, গণতন্ত্রের এবং সর্বোপরি জাতির আর কিছু পাওয়ার আছে কি? 
প্রশ্নটি দিয়েই শেষ করতে চাই আজকের আলোচনার। বেগম জিয়ার রাজনীতিতে গুণগত মান ফিরিয়ে আনার কথা দিয়ে শুরু করেছিলাম। জানি না, এই গুণগত মান বলতে তিনি আমাদের কী বুঝিয়েছিলেন? আমরা এখনও বুঝতে পারিনি, বিএনপি রাজনীতির কি মানের তিনি পরিবর্তন এনেছেন? অপরদিকে ডা. চৌধুরী, ড. হোসেন, সিদ্দিকী, রব, রহমানরাই বা এদেশের রাজনীতিকে কি দিতে পারেন? কি দিতে চান সে বিষয়েও আমরা এখন পর্যন্ত বুঝতে পারিনি, পারব কি-না তাও জানি না। আশা করি, পাঠকও এতক্ষণে একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছেন? প্রশ্নটি আর কিছুই নয়, সত্য সত্যই কি দেশের রাজনীতিতে একটি নতুন ও গুণগত পরিবর্তন প্রয়োজন নয়? আমি তো বিশ্বাস করি, প্রয়োজন, অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু সে পরিবর্তন নিশ্চয়ই উপরে যাঁদের কথা বলেছি তাঁদের হাত ধরে আসবে না? আপনারা কি একমত আমার সঙ্গে? 

ঢাকা ॥ ১০ মার্চ, সোমবার ॥ ২০১৪ ॥ 
masuda.bhatti@gmail.com
প্রকাশ :মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০১৪, ২৭ ফাল্গুন ১৪২০





__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___