Banner Advertiser

Sunday, May 11, 2014

[mukto-mona] 'দিল্লিতে কে ক্ষমতায় বসছেন, তা আমাদের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ বটে'



Bhorer Kagoj, 12th May 2014:

http://www.bhorerkagoj5.net/new/blog/2014/05/12/174968.php


'দিল্লিতে কে ক্ষমতায় বসছেন, তা আমাদের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ বটে'

ভারতে নির্বাচনী ডামাডোলে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে দিল্লী ছিলাম। দিল্লীর আশেপাশের রাজ্য উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখন্ড হরিয়ানায় গেছি। নির্বাচন কভার করার কোন দাযিত্ব ছিলো না; তবে ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভাঙ্গে, তাই যেখানেই থেমেছি, সেখানেই মানুষের সাথে কথা বলেছি। জিজ্ঞাসা করেছি, কে হবেন প্রধানমন্ত্রী? আপনি ভোট দিয়েছেন? কাকে দিয়েছেনমানুষ স্বত:স্ফুর্ত উত্তর দিয়েছে এবং সবাই একবাক্যে উত্তর দিয়েছেন, 'এবার বিজেপি জিতবে।' এদের কথা যদি মাপকাঠি হয়, তবে নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন।' যদিও একই সপ্তাহে দিল্লিতে 'টাইমস' পত্রিকা সম্পাদকীয়তে লিখেছে, 'সবাই মোদির কথা বললেও কার্যত: দেখা যাবে কংগ্রেস জিতেছে।' তদুপরি নির্বাচনী প্রচারণার একবারে শেষের দিকে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর তীব্র আক্রমনাত্বক ভুমিকা বিজেপিকে কিছুটা কোনঠাসা করছে বলে মনে হচ্ছে। তাই মোদী জিতছেন বলে যারা খুশি হচ্ছেন বা ভয় পাচ্ছেন, তাদের বলা যায়, শেষ কথা বলবেন ভারতের জনগণ, এবং সেই চূড়ান্ত রায় যার পক্ষেই যাক না কেন, তা জানা যাবে ১৬ই মে ২০১৪।   

 

আমাদের যে ড্রাইভার ওই এক সপ্তাহ সাথে ছিলেন তাকেও জিজ্ঞাস করেছি, তিনি উত্তর প্রদেশের লোক এবং অনেকটা লাজুক হেসে বললেন, 'মোদিজি আয়েগা।' প্রশ্ন করলাম, আপনি কাকে ভোট দিয়েছেন? উত্তর, 'বিজেপিকে।' ভারতের নির্বাচন নিয়ে লেখা চাট্টিখানি কথা নয়; মন্তব্য করা আরো কঠিন। সারা ভারতের রাজনীতির খবর রাখা, দলীয় আঞ্চলিক ইক্যুয়েশন; আন্না হাজরা বা কেজরীওয়ালাদের প্রভাব এবং ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রাধান্য হিসাবের মধ্যে রেখেই কেবল কথা বলা যেতে পারে। তবে ছোট বুশের ২য় দফা নির্বাচনের সময় যেমন আমেরিকার গোঁড়া ক্রিস্টান সমাজ ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো, এবার তেমনি মনে হচ্ছে, ভারতের গোঁড়া হিন্দুরা মোদির পক্ষে নেমে এসেছে। এর অবশ্য বহুবিধ কারণও আছে; তবে কংগ্রেসের ব্যর্থতা এর অন্যতম। কংগ্রেস ব্যর্থ, তাই বিজেপি সফল, যেমন আওয়ামী লীগের ব্যর্থতাই বিএনপি-কে এগিয়ে দেয়!

 

দিল্লীর মসনদে উত্তর ভারতের প্রভাব বেশী। সেদিক থেকে দেখলে মনে হবে এবার তারা একজন গুজরাটিকে চাইছেন। তবে ভারতে ক্ষমতায় যাওয়ার চাইতে টিকে থাকাটা অনেক কষ্টকর। আর ক্ষমতায় গেলেই রাতারাতি সবকিছু উল্টে যাবে এমন ভাবার কোন কারণ নেই। বিজেপি আগেও ক্ষমতায় ছিলো, প্রাপ্তি 'শূন্য' এর কারণ, ভারতের প্রশাসন রাজনীতিকদের অঙ্গুলী হেলনে চলে না, আইন মত চলে। আবার ভারতের কেন্দ্রে কেউ আমাদের মত নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননা। আমাদের দেশের মত প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাই সবকিছু নয় সেখানে। তথায় প্রধানমন্ত্রীকেও জবাবদিহি করতে হয়। মোদী আসছেন বলে বাংলাদেশ বা পাকিস্তানে একটা ভয় ভয় অবস্থা দৃষ্ট হচ্ছে, তবে সেটা অল্পবিস্তর প্রগতিশীলদের মধ্যে। আবদুল গাফফার চৌধুরীর মত প্রখ্যাত কলামিস্টও লিখেছেন, মোদী ক্ষমতায় এলে ভারতের মুসলমানদের শংকিত হবার কারণ আছে। আমি জানিনা, হয়তো আছে, হয়তো নেই। তবে আমি জানি পাকিস্তান বা বাংলাদেশে মৌলবাদীরা মোদী আসার সংবাদে পুলকিত। আমাদের ম্যাডাম অপেক্ষা করছেনমোদীর কপাল খুললে তারও কপাল খুলবে! শুনেছি, ডিসেম্বর এবং এপ্রিলের শেষে দু'বার মোদীর প্রতিনিধি ম্যাডামের সাথে দেখা করে গেছেন। 

 

অনেকদিন আগে আমেরিকায় বিজেপি' এক ছোটখাট নেতাকে জিজ্জাসা করেছিলাম যে, 'আচ্ছা, ভারতের মত বৃহত্তম গণতন্ত্রে তোমাদের হিন্দু হিন্দু করতে হবে কেন বা ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র বানাতে হবে কেন?' উত্তরে তিনি বলেছিলেন, 'তোমরা পাকিস্তান বা বাংলাদেশে যদি ইসলাম ইসলাম করতে পারো বা তোমাদের দেশকে মুসলমান রাষ্ট্র বানাতে পারো, তবে আমরা করলে ক্ষতি কি?' তার উত্তরে খুশি হতে পারিনি, তাই বলেছিলাম, আমি হিন্দু হয়েও চাইনা ভারত হিন্দু রাষ্ট্র হোক, কারণ ধর্মীয় রাষ্ট্র মুখ থুবড়ে পরে। রাষ্ট্রে ধর্ম ঢুকলে সেটা রাষ্ট্র ধর্ম দু'টোর জন্যেই ক্ষতিকর। তাকে আরো বলেছিলাম, পৃথিবীতে সবগুলো উন্নত রাষ্ট্র অসাম্প্রদায়িক, কিন্তু তাই বলে ধর্ম সেখান থেকে উড়ে যায়নি, কিন্তু রাষ্ট্রে ধর্ম নেই। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলেই ভারত প্রতিদিন এগিয়ে যাচ্ছে; আর ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রগুলো পিছিয়ে যাচ্ছে। তিনি আমার কথা শুনেননি যেমন বিএনপি শুনেনা বা শুনবেনা। তাদের কাছে ধর্মটা বড় কথা নয়, ধর্মকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়াটাই আসল কথা

 

মোদী ক্ষমতায় আসলে ভালো হবে কি মন্দ হবে তা ভারতবাসীর বিষয়; আমাদের মাথাব্যথার কোন কারণ নেই। তবু যদি চিন্তা এসেই যায়তবে প্রশ্ন জাগে, তিনি কি খালেদা জিয়ার চেয়েও খারাপ? বিএনপি-বিজেপি মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। বাংলাদেশে যারা বিএনপি-জামাতকে ক্ষমতায় আনতে উদগ্রীব, তারা ভারতে বিজেপি আসবে বলে চিন্তিত কেন? মোদীর শাসনামলে গুজরাটে দাঙ্গার কথা আমরা জানি, সেখানে হিন্দু মুসলমান মরেছে, যদিও মুসলমান মরেছে বেশি। কিন্তু খালেদা জিয়ার সময় লোগাং হত্যাকান্ডে এক হাজার মানুষকে এক রাতের অন্ধকারে হত্যা করা হয়েছে। আর ২০০১-এর পর যা ঘটেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সুতরাং প্রশ্ন উঠতেই পারে কে বেশি খারাপ-খালেদা না মোদী? আমরা যদি খালেদার শাসনামল পাড়ি দিতে পারি তাহলে মোদীরটাও সামলাতে পারবো। তবে রাষ্ট্রে-রাষ্ট্রে বিষয়টা ভিন্ন। সেখানে কুটনৈতিক পারদর্শিতার বিষয় আছে। একটা উদাহরন দেই, তিস্তা চুক্তি হয়নি, দোষ মমতার আছে, আমাদের কি ব্যর্থতা নেই? আবার এসময়ের কথা যদি ধরা যায়, মোদী বাংলাদেশ বা বাঙ্গালীদের নিয়ে কথাবার্তা বলছেন, তিনি বলতেই পারেন, তার দেশের বা ভোটের প্রতি লক্ষ্য রেখে তিনি কথা বলছেন। মনে রাখতে হবে, ভোটের সময় অনেকে অনেক কথা বলেন, ভোটের পর সব ফাঁকা। পশ্চিমবঙ্গে ৪ঠা মে মোদী বিজেপি' এক সমাবেশে বলেছেন, 'বাংলাদেশের মুসলমানদের ভারত ছাড়তে হবে।' ইতিপূর্বে অপর এক সভায় তিনি বলেছেন, 'হিন্দুরা থাকতে পারবেন।' তিনি এও বলেছিলেন, অবৈধ বাংলাদেশীদের বের করা হবে। কোনটা তার আসল কথা বা ক্ষমতায় এলে তিনি কি করবেন সেটা দেখার বিষয়। তবে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান তো স্পস্ট; কোন বাংলাদেশী ভারতে নেই; সুতরাং চিন্তা কি? তবে ক্ষয়িষ্ণু বাংলাদেশী হিন্দু জনসংখ্যা কোথায় গেছে তা অবশ্য কারো জানা আছে বলে মনে হয়না! এরই মধ্যে মমতা একহাত নিচ্ছেন মোদীর ওপর, বলছেন, 'বাঙালী খেদানোর তুই বেটা কে?' মোদী এলেও মমতা থাকবেন, কেন্দ্রের সাথে মমতার ফাইট উপভোগ্য হবে বটে! বাংলাদেশ কি পারবে তা থেকে ফায়দা নিতে? বাস্তব কথা বলেছেন তসলিমা নাসরিন। তিনি বলেছেন, মমতার বাঙ্গালী মুসলমানদের জন্যে প্রেম অন্তরের নয়, ভোটের। আবার মোদীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, ইচ্ছা করলেও তিনি বাঙ্গালী মুসলমানদের তাড়াতে পারবেন না। কারণ, এতে তার বিরাট বদনাম হয়ে যাবে; তাছাড়া মুসলমান খেদালে মধ্যপ্রাচ্যের সাথে ঝামেলা হতে পারে, তিনি সেই রিস্ক নেবেন কেন?

 

ভারতের নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশে এরআগে এতটা উতসুক্য আগে কখনো ছিলোনা। এবার সবাই আগ্রহশীল,প্রথম কারণ মোদী; তাছাড়া সরকার বা বিএনপি দু'পক্ষই উদগ্রীব কে প্রথমে নুতন সরকারের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলবেন। মহাজোট সরকারের সুবিধা হলো, সরকারে-সরকারে কাজকর্ম চালিয়ে পরিস্থিতি নিজেদের অনুকূলে রাখা। বিএনপির সুবিধা হলো, তারা বিজেপিকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে যে, যেহেতু কংগ্রেস সরকার আওয়ামী লীগের সাথে ঘনিষ্ঠ, তাই বিজেপির সখ্যতা হওয়া উচিত বিএনপি' সাথে। বিএনপি চায় ভারত চাপ দিয়ে বাংলাদেশে স্বচ্ছ নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করুক। প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের বর্তমান পলিসি কি মোদী আসলেই পরিবর্তন হয়ে যাবে? মনে হয়না। তবে আওয়ামী লীগ সরকার দর কষাকষিতে সফল না হলে, আগাম নির্বাচনের সম্ভবনা উড়িয়ে দেয়া যায়না। আমেরিকা-ইউরোপ এমুহুর্তে একটু সুর নরম করলেও ভারত রাজি হলে পরিস্থিতি উল্টে যাবে। তবে কোনভাবে যদি কংগ্রেস পুনরায় ক্ষমতাসীন হয়, তাহলে তো আওয়ামী লীগের জন্যে পোয়াবারো। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তাই এজন্যে এবার ভারতের নির্বাচন এতটা গুরুত্ববহ। খালেদা জিয়া ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর সাথে দেখা করেননি, তাই সাউথ ব্লক ক্ষেপে যায় এবং ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনকে প্রত্যক্ষ সমর্থন দেয়। ফলে খালেদা জিয়ার কপাল পুঁড়ে। বিএনপি বা মৌলবাদীরাও এটা অনুধাবন করছেন, ভারতকে ক্ষেপিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া যাবেনা। তাই সবাই এখন ভারতমুখী। এটা দু:খজনক হলেও সত্য যে, আমাদের দেশের রাজনীতিহীনতা প্রতিদিনই আমাদের নেতানেত্রীদের জনগনের ওপর নির্ভরশীলতা বাদ দিয়ে দিল্লীর ওপর নির্ভরশীল করে দিচ্ছে। এজন্যে যতটা না ভারত দায়ী, তারচেয়ে বেশি দায়ী আমাদের স্বার্থপর রাজনীতি। কাজেই দিল্লিতে কে ক্ষমতায় বসছেন, তা আমাদের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ বটে!

 

শিতাংশু গুহ, কলাম লেখক

৯ই মে ২০১৪

 




__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___