Banner Advertiser

Friday, June 13, 2014

[mukto-mona] বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও জামায়াতে ইসলামী



বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও জামায়াতে ইসলামী
শাহরিয়ার কবির
বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে কোনও সরকার কখনও সামগ্রিক ও কার্যকরী কোনও নীতি বা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এমন প্রমাণ আমরা এখনও পাইনি। বিএনপি-জামায়াত জোট যখন ক্ষমতায় ছিল তখন শতাধিক জঙ্গী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আত্মপ্রকাশ এবং তাদের যাবতীয় কার্যক্রম থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের আমলে সংঘটিত বিডিআর বিদ্রোহ বা ২০১৩-এ জামায়াত বিএনপির মদদে হেফাজতে ইসলামের উত্থান, ৫ মে'র মহাতা-ব এবং সরকার উৎখাতের নীলনকশা সবই জাতীয় নিরাপত্তার অন্তর্গত। দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে সরকার এসব সমস্যাকে সব সময় আইন-শৃঙ্খলাজনিত অথবা বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকা-জনিত অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করেছে। যে কারণে এসব অপরাধের তদন্ত হয়েছে প্রচলিত ফৌজদারি দ-বিধিতে, অধিকাংশ অপরাধী, বিশেষভাবে নেপথ্য নায়করা অধরা থেকে গেছে। চাক্ষুস সাক্ষী ও প্রমাণসাপেক্ষে কিছু ব্যক্তির বিচার ও শাস্তি হলেও জাতীয় নিরাপত্তার হুমকির মূল কারণ নির্ণিত হয়নি।
গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার থেকে র‌্যাব কর্তৃক বিপুল পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র উদ্ধারের পর গণমাধ্যমে নিরাপত্তার সঙ্কটের বিষয়টি আবারও সামনে এসেছে। বিএনপি-জামায়াত জোট যখন ক্ষমতায় ছিল তখন হরকত-উল-জিহাদ, জামাতুল মুজাহিদীন, লশ্করে তৈয়বা প্রভৃতি শতাধিক জঙ্গী সংগঠনের মৌলবাদী সন্ত্রাসী তৎপরতার পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসী সংগঠনের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ। বিএনপি জামায়াত জোট অবশ্য এসব সংগঠনকে সবসময় ধর্মীয় সংগঠন অথবা স্বাধীনতাকামী সংগঠনের মর্যাদা দিয়েছে। ২০০১ সালে বিএনপি জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর উত্তর-পূর্ব ভারতের কয়েকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছিল, শেখ হাসিনা তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসী মনে করেন, কিন্তু খালেদা জিয়ার বিবেচনায় তারা স্বাধীনতাকামী। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশে অবস্থানকারী অনুপ চেটিয়াসহ উলফার কয়েকজন নেতাকে গ্রেফতার করে তাদের ব্যাংক এ্যাকাউন্ট জব্দ করার পাশাপাশি যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিল। ২০০১ সালে খালেদা-নিজামীরা ক্ষমতায় এসে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার কথা বিবেচনা করে অনুপ চেটিয়াদের জেল থেকে ছেড়ে না দিলেও নতুনভাবে বাংলাদেশে তাদের তৎপরতা শুরু হয়েছিল, যা ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর বন্ধ হয়েছে।
৯ জুন ২০১৪ দৈনিক জনকণ্ঠে এ বিষয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। শংকর কুমার দে'র লেখা এই প্রতিবেদনের শিরোনাম হচ্ছে 'বিএনপির আমলে উলফার দাপট এতই ছিল যে রাজধানীতেই থাকত তারা'। দীর্ঘ এই প্রতিবেদনের অংশবিশেষ উদ্ধৃত করছি¯
'ভারতের ১৩টি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন অবৈধভাবে বাংলাদেশের সীমান্তে আনার পর গত ১০ বছরে ১১ হাজারের বেশি অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে পুলিশ ও র‌্যাব। বাংলাদেশের জামায়াত-শিবির, জঙ্গী সংগঠন ও ধর্মভিত্তিক উগ্র মৌলবাদী সংগঠনগুলোর কাছেও বিভিন্ন সময়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদ হস্তান্তর করেছে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো। এখনও প্রায় প্রতি মাসেই বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা থেকে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো অবৈধভাবে আনা শতাধিক অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হচ্ছে। সীমান্তবর্তী হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ির সংরক্ষিত বনাঞ্চলের দুটি টিলার বাংকার ও গর্ত ভর্তি ১৮৪টি ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী রকেট, ১৫৩টি রকেট লঞ্চার উদ্ধারের পর ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু করেছে র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থা। 
'সূত্র জানায়, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার প্রায় ১০ বছর আগে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো বাংলাদেশের ভূখ-ে ঘাঁটি গেড়ে বসে। এর মধ্যে ইউনাইটেড লিবারেশন অব অসমের (উলফা) দাপট এতই বেশি ছিল যে সীমান্ত এলাকা ছেড়ে খোদ রাজধানী ঢাকাতেও এ সংগঠনের নেতারা বাসা ভাড়া নিয়ে আস্তানা গড়ে তুলে। ভারতের ১৩টি জঙ্গী সংগঠনের মধ্যে ত্রিপুরা পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (টিপিডিএফ), ট্রাইবাল ফোর্স (টিএফ), ন্যাশনাল লিবারেল ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা (এনএলএফটি), ত্রিপুরা কিংডেম (টিকি), পিপলস লিবারেল আর্মি (পিএলএ), প্রিপাক, অল ত্রিপুরা টাইগার ফোর্স (এটিটিএফ), রয়েল বরাক আর্মি (আরবিএ), পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময়ে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার জন্য আনা চট্টগ্রামের ১০ ট্রাক অস্ত্র ও গোলাবারুদ, বগুড়ার কাহালুতে ধরা পড়া গোলাবারুদের চালান অন্যতম।
'গোয়েন্দা সংস্থা ও র‌্যাবের অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য ও পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ভারতের ১৩টি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের বাংলাদেশের সীমান্তে আনার পর গত ১০ বছরে ১১ হাজারের বেশি তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ বাংলাদেশের ভেতরে আনার পর জামায়াত-শিবির, জঙ্গী সংগঠন ও উগ্র মৌলবাদী দলগুলোর ক্যাডারদের হাতে হস্তান্তর হতো। এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ দিয়ে বাংলাদেশের ভেতরে উগ্র মৌলবাদী ধর্মান্ধতার প্রচার, প্রসার ছাড়াও তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন এবং স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হতো।'
২০০৪ সালের এপ্রিলে চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চালান ধরা পড়ার পর বলা হয়েছে¯ যা ধরা পড়েছে তার দশগুণ ধরা পড়েনি, যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছে গেছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী বিভিন্ন গোষ্ঠীকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের কার্যক্রম শুরু হয়েছে পাকিস্তান আমল থেকে। প্রথমে নাগাল্যান্ড ও মিজোরাম এবং পরে অসম ও ত্রিপুরার বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী দল সব সময় পাকিস্তানের সাময়িক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই সার্বিক সহযোগিতা পেয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর মুক্তিযুদ্ধে যারা পাকিস্তানের সামরিক জান্তার সহযোগী ছিল¯ জামায়াত ইসলামী, মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলাম প্রভৃতি পাকিস্তানপ্রেমী মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক দল আইএসআই-এর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছে। তাদের সবার লক্ষ্য হচ্ছে '৭১-এর পরাজয়ের প্রতিশোধ গ্রহণের পাশাপাশি বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানে রূপান্তরিত করা এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের মিত্রদের সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রাখা। ১৯৯১ সাল থেকে বিএনপিও আইএসআই'র এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, যা নিয়ে বছর তিনেক আগে পাকিস্তানের উচ্চতর আদালতে একটি মামলাও হয়েছে।
বাংলাদেশে আইএসআই'র নেটওয়ার্ক বুঝতে হলে, আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্কে বুঝতে হলে প্রথমেই জানতে হবে জামায়াতের রাজনৈতিক দর্শন, যা মওদুদীবাদ নামে পরিচিত। আমরা জানি সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্ত্বভিত্তিক পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটির জনক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা আবুল আলা মওদুদী প্রথমে জিন্নাহর সমালোচনা করতে গিয়ে পাকিস্তান আন্দোলনের সমালোচনা করেছিলেন এই কারণে যে, জিন্নাহর মতো ধর্মহীন একজন ব্যক্তির নেতৃত্বে কখনও খাঁটি ইসলামী রাষ্ট্র পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর জিন্নাহ যখন ইসলামী রাষ্ট্রের পরিবর্তে পাকিস্তানকে একটি আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গঠনের অভিপ্রায় ব্যক্ত করলেন তখনই মওদুদী এবং তার সহযোগীরা এর বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে জিন্নাহর স্বপ্নকে কবর দিয়ে পাকিস্তানে ইসলামী হুকুমত কায়েম করেছিলেন।
পাকিস্তানে জামায়াত এককভাবে কখনও ক্ষমতায় যেতে না পারলেও একাধিকবার ক্ষমতার শরিক হয়েছে। কখনও ক্ষমতায় না গিয়েও তারা সরকারকে দিয়ে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়িত করেছে। জামায়াতের কাছে ক্ষমতায় যাওয়ার চেয়ে বেশি জরুরী হচ্ছে দলের রাজনৈতিক অগ্রযাত্রা নির্বিঘ্ন করবার পাশাপাশি সংগঠনের আদর্শ বাস্তবায়ন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় জামায়াতের অন্যতম এজেন্ডা হচ্ছে 'কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা'। এই এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়েই ১৯৫৩ সালে পাকিস্তানের লাহোরে কাদিয়ানি দাঙ্গা সংঘটিত করে শত শত নিরীহ মানুষ হত্যা করেছিল জামায়াত, যার কারণে পাকিস্তানের সামরিক আদালতে মওদুদীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল। পাকিস্তানে মুসলিম লীগ নয়, জামায়াতের এই এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে জুলফিকার আলী ভুট্টোর পিপিপি, যা মুসলিম লীগের চেয়ে অনেক আধুনিক একটি রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাধ্যমিক পর্যায়ে মওদুদী ও অন্যান্য জামায়াত নেতাদের জীবনী পড়ানো হচ্ছে বর্তমান সরকারের আমলেও, যে সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে।
জামায়াত যে ধরনের রাষ্ট্র চায় একাত্তর-উত্তর পাকিস্তান হচ্ছে তার আদর্শ রূপ, যার সর্বোচ্চ অভিব্যক্তি আমরা প্রত্যক্ষ করেছি জেনারেল জিয়াউল হকের জমানায়। বাংলাদেশেও জেনারেল জিয়াউর রহমানের আমল থেকে একই লক্ষ্যে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে জামায়াত। লক্ষ্য অর্জনের জন্য যে কোনও ধরনের সন্ত্রাস, হত্যা এবং যাবতীয় মানবতাবিরোধী অপরাধকে বৈধতা দিয়েছে মওদুদীবাদ। মুক্তিযুদ্ধকালে মানবজাতির ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যাকে ইসলামের নামেই বৈধতা দিয়েছিল জামায়াত।
বাংলাদেশকে পাকিস্তানের মতো মনোলিথিক জঙ্গী মুসলিম রাষ্ট্র বানাবার জন্য জামায়াত যে বহুমাত্রিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, তা শুধু বাংলাদেশের নয়, ভারত ও বার্মার জাতীয় নিরাপত্তারও অন্তর্গত। বিএনপি-জামায়াত জোটের জমানায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে পশ্চিম বার্মার আরাকানের ১৭টি জঙ্গী সন্ত্রাসী সংগঠনের তৎপরতার সংবাদ বিভিন্ন দৈনিকে ও গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে। আমরা এসব মোকাবেলা করছি আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা হিসেবে, কখনও করছি বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী তৎপরতা হিসেবে। তদন্ত ও মামলা হয় ফৌজদারি আইনে। হাজার হাজার গ্রেফতারও হয় কিন্তু সাক্ষী ও প্রমাণের অভাবে গ্রেফতারকৃতরা সংক্ষিপ্ত সময়ের ভেতর জেল থেকে বেরিয়ে আসে, নতুন উদ্যমে সংগঠিত হয় এবং অব্যাহত থাকে জামায়াতের যাবতীয় অভিযান। ফৌজদারি আইনের সীমাবদ্ধতা, দুর্বল অভিযোগনামা এবং প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অবস্থানকারী জামায়াতের প্রবল অবস্থানের কারণে জামায়াত এবং সমমনা অপরাপর জঙ্গী মৌলবাদী সংগঠনের সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার হলেও অনায়াসে জামিন নিয়ে বেরিয়ে এসে গেরিলাদের মতো জনারণ্যে মিশে যায়। এ বিষয়ে ৮ জুন (২০১৪) 'দৈনিক বর্তমান'-এ প্রকাশিত 'জামিন নিয়েই আত্মগোপন' শিরোনামে গাফফার খান চৌধুরীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে¯ 'এ ব্যাপারে জামায়াতে ইসলামীর প্রচার বিভাগের কেন্দ্রীয় সহকারী মোহাম্মদ ইব্রাহিম দৈনিক বর্তমান-এর সঙ্গে কথা বলার সময় দাবি করেন, ২০০৯ সাল থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে সারাদেশ থেকে জামায়াত-শিবিরের প্রায় এক লাখ নেতাকর্মী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়। তিনি দাবি করেন, এখনও কারাগারগুলোতে প্রায় ৫ হাজার নেতাকর্মী বন্দী রয়েছে। বাকিরা জামিনে রয়েছেন। জামিনপ্রাপ্তদের মধ্যে অনেকেই উচ্চ আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্ত হয়েছেন। আবার অনেকেই নিম্ন আদালত থেকে জামিনে মুক্ত আছেন।
'জামিনে মুক্ত নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে গেছেন, তারা নিয়মিত আদালতে হাজির হচ্ছেন না¯ এমন অভিযোগের বিষয়টি পুরোপুরি সত্য নয় দাবি করে তিনি বলেন, যারা জামিনে রয়েছেন তাদের অনেকেই নানা ব্যস্ততার কারণে আদালতে হাজির হন না। তবে বেশির ভাগই আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের হওয়ার সময় বা আদালতে হাজির হওয়ার সময় গ্রেফতার হওয়ার ভয় থেকে আদালতে হাজির হন না।'
এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে¯ 'কারা ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা লাভের পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম শুরু করে। এ নিয়ে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের সারাদেশে বহু দাঙ্গা-হাঙ্গামা পুলিশের ওপর চোরাগোপ্তা হামলার ঘটনা ঘটে। দেশের বিভিন্ন থানায় জামায়াত-শিবিরের শত শত নেতাকর্মীকে আসামি করে এ সংক্রান্ত শত শত মামলা দায়ের হয়। শুরু হয় মামলার আসামিদের গ্রেফতার। আসামিদের অধিকাংশই এখন জামিনে মুক্ত। কারাগারে বর্তমানে জামায়াত-শিবিরের গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীর ৫ ভাগও নেই।
'গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরিকল্পনা চলছে। তার প্রস্তুতিও প্রায় শেষ। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রধান ইস্যু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি। নারায়ণগঞ্জ ও ফেনীর ঘটনাকে পুঁজি করে সরকার পতনের ডাক আসছে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন জোট থেকে। সেই আন্দোলনে পরিকল্পিতভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি ঘটানো হবে। আর তাতে অংশ নেবে জামায়াত-শিবিরের আত্মগোপনে থাকা প্রশিক্ষিত সদস্যরা।'
সরকারের নীতিনির্ধারকরা জামায়াতের রাজনীতি এবং দলীয় সকল কর্মকা- যতক্ষণ পর্যন্ত জাতীয় নিরাপত্তার সামগ্রিক কাঠামোর ভেতর স্থাপন করতে ব্যর্থ হবেন ততক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস নির্মূল করা যাবে না, জাতীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নির্বিঘœ করা যাবে না। 
২০০৯ সালে মহাজোট সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইন প্রণয়ন করেছে জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী। ২০১১ সালে এই আইনের আরও সংস্কার হয়েছে। আমরা বহুবার বলেছি সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একাধিক ধারা প্রয়োগ করে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে জামায়াত নিষিদ্ধ করা যায়। সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে সংগঠনের স্বাধীনতা সম্পর্কে বলা হয়েছে¯
৩৮। জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতার স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে সমিতি বা সংঘ গঠন করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে ঃ তবে শর্ত থাকে যে, কোন ব্যক্তির উক্তরূপ সমিতি বা সংঘ গঠন করিবার কিংবা উহার সদস্য হইবার অধিকার থাকিবে না, যদি¯
(ক) উহা নাগরিকদের মধ্যে ধর্মীয়, সামাজিক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করিবার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়;
(খ) উহা ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ, জন্মস্থান বা ভাষার ক্ষেত্রে নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করিবার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়;
(গ) উহা রাষ্ট্র বা নাগরিকদের বিরুদ্ধে কিংবা অন্য কোন দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী বা জঙ্গী কার্য পরিচালনার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়; বা
(ঘ) উহার গঠন ও উদ্দেশ্য এই সংবিধানের পরিপন্থী হয়।
সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে বর্ণিত 'ক' থেকে 'ঘ' পর্যন্ত সব কটি ধারা জামায়াতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য এবং এসব ধারা অনুযায়ী অনায়াসে জামায়াত নিষিদ্ধ করা যায়। এর জন্য আদালতে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, সংসদে নতুন আইন প্রণয়নেরও প্রয়োজন নেই।
আওয়ামী লীগের যেসব নেতা বিএনপিকে শায়েস্তা করার জন্য জামায়াত ও হেফাজতকে বিএনপির খপ্পর থেকে বের করে এনে কিছু সুযোগ-সুবিধা দিয়ে তাদের কাছ থেকে বন্ধুত্বের সনদ আদায় করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার কথা ভাবছেন, তাঁরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পাশাপাশি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি সম্পূর্ণ উপেক্ষা করছেন। আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় এই প্রবণতা যদি প্রবল হয়, তাহলে বিএনপি আর আওয়ামী লীগের ভেতর চরিত্রগত কোন পার্থক্য থাকবে না এবং বাংলাদেশ ও বাঙালী জাতির জন্য সর্বনাশেরও কিছু বাকি থাকবে না।

১০ জুন ২০১৪
প্রকা : শুক্রবার, ১৩ জুন ২০১৪, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২১




__._,_.___

Posted by: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___