আমরা CORRUPTION WATCH-125 ; জারজ তত্ব(Bastard theory)দ্বারা মূলতঃ জারজের সংজ্ঞা নিরূপন করার চেষ্টা করেছি। সে সংজ্ঞা মোতাবেক সমাজের উচ্চবিত্ত, উচ্চশিক্ষিত, পদস্থ/উচ্চপদস্থ এবং বাহ্যিকভাবে ভদ্র, নম্র, ধোপ-দুরস্ত, ধার্মিক লেবাসধারী কারা প্রকৃতপক্ষে জারজ তা তাদের কার্যকলাপের সাহায্যে পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করব।
প্রথমে আমরা সরকারী অফিসগুলোর দিকে দৃষ্টি দিব। রাজা বাদশাহ বা ব্রিটিশ আমল, পরে পাকিস্তান আমল থেকেই কোর্ট-কাচারীর পেশকার-সরেস্তাদার, ভূমি অফিসের কর্মচারী, থানার কনস্টেবল/ওসি/দারোগাদের ঘুষ খাওয়ার কথা জানি। পরবর্তীতে সেবা খাত যেমনঃ বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, ভ্যাট, কাস্টমস, আfয়কর, পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশন, ইত্যাদির ঘুষ সম্পর্কেও জানি। ঠিকাদারের বিলে পার্সেন্টেজ/কমিশনের কথা, পেনশন উত্তোলনে, অডিটে ঘুষ সারাবিশ্বে সর্বজনবিদিত। প্রত্যেকটি বা সর্বক্ষেত্রেই একটি নির্দিস্ট হার বা পরিমাণ ঘুষ বা পার্সেন্টেজ/কমিশন কালক্রমে একটি স্বতঃসিদ্ধ অলিখিত নিয়মে পরিনত হয়ে যায়।ইহা সারাদেশের সকল অফিসের জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য। সেবাপ্রার্থীর/গ্রহীতার দাবী/ডকুমেন্ট যত জেনুইনই হোকনা কেন তাকে একটি নির্দিস্ট পরিমানের ঘুষ বা পার্সেন্টেজ/কমিশন দিতে হবেই। সে বা তারা (সেবাপ্রার্থী/গ্রহীতা) হয়রানী এড়ানোর জন্য অনেক সময় স্বতঃস্ফূর্তভাবেই দেয়। অপরদিকে সেবাদাতাদের(সরকারী কর্মকর্তা/কর্মচারী) মধ্যে যেহেতু সবাই সৎ নহে, কোন একটি নির্দিস্ট অফিসে দুর্ঘটনাক্রমে ১/২জন সৎ হলেও এবং সে ঘুষ না খেলেও তাকে ঘুষের বৃত্ত থেকে বের হওয়া সম্ভব নহে। অর্থাৎ সৎ কারোর পক্ষে সে নির্দিস্ট অফিসের দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব নহে।
অর্থাৎ Existing running system-এ বাংলাদেশের "ভাল ঘুষখোররা" ঘুষ বা পার্সেন্টেজ/কমিশন খায়। একটি কাজে ৫জন সংশ্লিষ্ট থাকলে তার মধ্যে ১/২জন সৎ হলেও সেবাপ্রার্থী/গ্রহীতাকে Existing running system-এ ৫জনের হিসাবেই ঘুষ বা পার্সেন্টেজ/কমিশন দিতে হবে। ইহাকে নির্দিস্ট কোন কাজের Package বলা যায়। Existing running system-এ কাউকে "ঘুষ খেতেই হবে" এবং কাউকে "ঘুষ দিতেই হবে" এমন কোন কথা নেই। হয়রানী এড়ানোর জন্য বা সেবাপ্রার্থী/গ্রহীতার কোন দুর্বলতার জন্র সে(সেবাপ্রার্থী/গ্রহীতা) যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোন ঘুষ বা পার্সেন্টেজ/কমিশন দিয়ে থাকে তাহলে তা আমরা আমাদের আলোচনায় আনছিনা। স্বতঃস্ফূর্তভাবে হলেও কোন ঘুষ বা পার্সেন্টেজ/কমিশনই সমর্থনযোগ্য না হলেও ইহা সারাদেশে সারাবিশ্বে একটি স্বতঃসিদ্ধ নিয়মে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে নির্মম নিষ্ঠুর আইন প্রয়োগের দেশ চীনেও নববর্ষে স্থানীয় কর্মকর্তারা লাল খামে ১লাখ ডলার ঘুষ নেন।(দ্রস্টব্যঃ-:আন্তর্জাতিক : চীনে শুদ্ধি অভিযানের বলি: অনলাইন ডেস্ক | আপডেট: ০৯:৩৬, জুলাই ০৪, ২০১৪ :……. তিনি বলেন, স্থানীয় কর্মকর্তারা কম-বেশি সবাই ছয় লাখ ইউয়ান (এক লাখ মার্কিন ডলার) ঘুষ নেন। তিনিও তাই নিয়েছিলেন। ঝাউয়ের ভাষ্য, এটা নেওয়া নাকি স্থানীয় কর্মকর্তাদের একটি প্রথা। প্রতি নববর্ষে একটি লাল খামের মাধ্যমে এই অর্থ পান তাঁরা।……)।
সেবাপ্রার্থীর/গ্রহীতার দাবী/ডকুমেন্ট জেনুইন হওয়া সত্বেও তার কাছ থেকে যে বা যারা ক্ষমতার অপব্যবহারের সাহায্যে জোরপূর্বক ঘুষ বা পার্সেন্টেজ/কমিশন নিবে বা নিতে চাইবে এবং তা না পেলে তাকে(সেবাপ্রার্থী/গ্রহীতা) যে বা যারা হয়রানী করবে বা অন্যায়ভাবে ফাঁসিয়ে দিবে আমরা তাদেরকে জারজ বলব। এরা কারা তা পর্যায়ক্রমে আমরা প্রকাশ করব।
__._,_.___