Banner Advertiser

Friday, July 18, 2014

[mukto-mona] ব্যর্থ অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি কাম্য নয় - ওয়াহিদ নবি




শনিবার, ১৯ জুলাই ২০১৪, ৪ শ্রাবণ ১৪২১
ব্যর্থ অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়
ওয়াহিদ নবি
মানুষ জীবিকার তাগিদে রাজধানীতে আসে কিন্তু পরিজনরা থাকে দেশের বিভিন্ন স্থানে। তাদের মন পড়ে থাকে সেখানে। তাই ঈদ এলে সব রকমের অসুবিধা অগ্রাহ্য করে তারা দেশের আনাচে কানাচে অবস্থান করা আত্মীয়পরিজনের কাছে ছুটে যায়। আর এই ছুটে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েই তাদের মন ভরে থাকে অনেক দিন। সম্ভবত এই কারণেই বিএনপি নেত্রীর ঈদ পরবর্তী পরিকল্পনার ঘোষণা তাদের মনে দাগ কাটেনি। কিন্তু সচেতন মানুষের এই বিষয়ে সজাগ হওয়া উচিত। 
ঈদের পর বিরোধী জোট সরকার পতনের আন্দোলন করবে এমন হুঁশিয়ার বাণী উচ্চারণ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। এর আগেও তারা এমন আন্দোলন করেছে। তারা মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করেছে। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আন্দোলন করেছে। তারা অন্যান্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন করেছে। এই আন্দোলনগুলোর চরিত্র জনগণের ভেবে দেখতে হবে। গণতান্ত্রিক দেশে বিভিন্ন দাবিতে রাজনৈতিক আন্দোলন হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু গণতান্ত্রিক দেশে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন হবে এটাও কাম্য। মনে করা যাক গত নির্বাচনের পূর্ববর্তী মাসগুলোতে কি ঘটেছে? অনেক নিরপরাধ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে অনেকে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। অসংখ্য বাস ও মোটর গাড়ি পোড়ানো হয়েছে যেগুলোর মালিক আওয়ামী লীগের সদস্য এমন কোন প্রমাণ নেই। রেলগাড়ি পোড়ানো হয়েছে, রেললাইন উপড়ে ফেলা হয়েছে। অসংখ্য গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষতি করা হয়েছে। অফিস-আদালতের কাজ বিঘিœত হয়েছে। স্কুল কলেজে লেখাপড়ায় ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়েছে। এমনি অনেক অনাকাক্সিক্ষত কাজ হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তাৎক্ষণিক ক্ষতির কথা আমাদের মনে দাগ কাটে। দেশ সার্বিকভাবে পিছিয়ে গেছে। এই ধ্বংসাত্মক কাজের দীর্ঘমেয়াদী পরিণতির কথাও আমাদের ভাবতে হবে। 
কিন্তু দেশের ও জাতির এই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির বিনিময়ে বিরোধী জোট কি অর্জন করেছে? সংক্ষেপে বলা যায় যে, তাদের লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। তারা নির্বাচন বর্জন করেছিল; কিন্তু নির্বাচন হয়ে গেছে। বিরোধী দল নির্বাচনকে অবৈধ আখ্যা দিয়েছে। এর পেছনে ভাবালুতা রয়েছে তাদের; কিন্তু কোন যুক্তি নেই। দেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাজেই এই নির্বাচনকে অবৈধ বলা যায় না। উচ্চ আদালত এই নির্বাচনকে বৈধ বলেছে, যদিও বিরোধী দল আদালতকে নিরপেক্ষ বলতে চাইবে না। এটা তাদের মত যেটা সবাই গ্রহণ করবে না। নির্বাচনকে 'অবৈধ' বলার কারণ হিসেবে তারা বলছে যে, শতকরা ৫ জন ভোট দিয়েছে। এই পরিসংখ্যানের ভিত্তি কি তারা বলেনি। নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী শতকরা ৪০ জন ভোট দিয়েছে। এই পরিসংখ্যান বিরোধী দল গ্রহণ করেনি। তাহলে পরিস্থিতিটা দাঁড়াচ্ছে "বিরোধী দলের পরিসংখ্যান বনাম নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান।" কে কোন্টা গ্রহণ করবে! মনে পড়ে মার্ক টোয়েনের অমর মন্তব্য " লাই, ড্যাম লাই এ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিক্স।" তাদের পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে তারা একটি দেশের নির্বাচনকে অবৈধ বলছে এবং এই অবৈধতার কারণে তারা সরকারকে অবৈধ বিবেচনা করে আবার নির্বাচন দাবি করছে। 

গত নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হবার কারণগুলো বিশ্লেষণ করা উচিত। বাংলাদেশের মানুষ মনে করে এবং সেটাই ঠিক যে দেশে দুটি রাজনৈতিক জোট রয়েছে। আরও সূক্ষ্মভাবে দেখতে গেলে দুটি বৃহৎ দল রয়েছে। এর একটি নির্বাচন বর্জন করলে মানুষের আগ্রহ কমে যায়। রাজনৈতিক কর্মীদের উৎসাহ কমে যায়। ১৫৩টি আসনে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় সেখানে নির্বাচন হয়নি। রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন যে বিরোধী দলের কট্টর সমর্থকরা কেউ ভোট দিতে আসেনি। তাদের সংখ্যা কত তা অবশ্য আমাদের জানা নেই। নির্বাচনের আগে বিএনপি-জামায়াত যে রকম ধ্বংসাত্মক পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল তাতে করে মানুষ বাইরে বের হওয়াকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেছে। অনেক প্রবাসী এইসব কারণে এবার দেশে বেড়াতে আসেনি। কোন কোন নির্বাচনের দিনে ভোটারদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। রেডিও ও টিভির মাধ্যমে মানুষ তা সঙ্গে সঙ্গেই জেনেছে। এইসব কারণে ভোট কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি কম হয়েছে। কিন্তু বিরোধী দলকে সমর্থন করার কারণে কম মানুষ ভোট দিতে গিয়েছিল বিরোধী দলের নেত্রীর এমন দাবির পেছনে কোন যুক্তি নেই। 
দেশের ইতিহাস বলে আজ পর্যন্ত আন্দোলন করে কোন নির্বাচিত সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব হয়নি। গত নির্বাচনের আগের আন্দোলনের নামে ধ্বংসাত্মক ঘটনাই ঘটেছে শুধু। জনগণ এতে অংশগ্রহণ করেনি। সবাই মনে করে যে নির্বাচন ছাড়া বিরোধী দলের একটি অঘোষিত এজেন্ডা ছিল আর সেটি হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে বানচাল করা। বিরোধী দল এ ব্যাপারে কিছুই অর্জন করতে পারেনি। বিরোধী দল ঈদের পরে যে আন্দোলনের কথা বলছে তা হবে ব্যর্থ অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি। অতীত অভিজ্ঞতার কথা কতটা বিবেচনা করেছে বিরোধী দল তা আমাদের জানা নেই। তবে 'সরকারের পতন' জাতীয় কথাবার্তা আমাদেরকে হিংসাত্মক প্রবণতার কথা মনে করিয়ে দেয়। আমাদের মনে হয় বিরোধী দলকে কিছু বাস্তবতার কথা ভেবে দেখতে হবে। বিএনপিকে মনে রাখতে হবে এরশাদবিরোধী আন্দোলন আর আওয়ামী লীগবিরোধী আন্দোলন এক নয়। এরশাদের কোন গণভিত্তি ছিল না। সে আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ সব বিরোধী দল অংশগ্রহণ করেছিল। জনগণ সামরিক কর্তৃত্বের হাত থেকে মুক্ত হতে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছিল। এখনকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন।
বিএনপিকে নিজেদের সাংগঠনিক অবস্থার কথা ভেবে দেখতে হবে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা আলোচিত হয়েছে। এই পত্রিকাগুলো আওয়ামী লীগের বন্ধু নয়। বিশেষ করে গত আন্দোলনের সময় ঢাকায় বিএনপির দুর্বল অবস্থানের কথা আলোচিত হয়েছে। বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থার কোন উন্নতি হয়নি। যেসব নেতা আর্থিকভাবে সচ্ছল তারা আন্দোলনবিমুখ এমন কথা আলোচিত হয়েছে ব্যাপকভাবে। কাউন্সিল মিটিং ইত্যাদির কথা তো সবার জানা। একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল বছরের পর বছর 'ভারপ্রাপ্ত' মহাসচিব দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এটা দেখলে সবাই সহজে বুঝে নেবে যে, দলটি গভীর সমস্যার মধ্যে আছে। নেতৃত্বের জন্য বাস্তবসম্মত হবে দলটির আদর্শিক ভিত্তির কথা গভীরভাবে চিন্তা করা। এই দলে আছে এককালের চরম বামপন্থী চীনপন্থী ন্যাপের মানুষেরা, অন্যদিকে রয়েছে মুসলিম লীগসহ বিভিন্ন ডানপন্থী দলের মানুষেরা। এরা একসঙ্গে আছেন কেন? "বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ" ঐক্যের ভিত্তি হতে পারে না। জাতীয়তাবাদ যারা বোঝেন তাঁরা এটা বুঝবেন। জিয়াউর রহমান প্রবর্তিত বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ শুধু গোলাম আযমদের আকৃষ্ট করার জন্য চালু করা হয়েছিল তখন। এই জাতীয় জাতীয়তাবাদের বহির্প্রকাশ যেমন ভারতবিদ্বেষিতার আজ কি অবস্থা! বিএনপির ভারত তোষণ নীতি ও ভারত বিরোধিতা একসঙ্গে চলতে পারে না। মনে হচ্ছে নীতিচ্যুতিই একতার ভিত্তি। বিএনপিতে আর এক শ্রেণীর মানুষ রয়েছেন যাদের 'সব ছুট' বলা যায়। প্রাক্তন আমলা, সুযোগসন্ধানী শিক্ষাবিদ, সুবিধাবাদি সাংবাদিকসহ অন্যরা রয়েছেন এই দলে। এদের প্রধান লক্ষ্যই ক্ষমতা। ক্ষমতার দ্বারা বৈষয়িক উন্নতি এদের লক্ষ্য। আন্দোলনের কঠিন পরীক্ষায় এরা কতটা সহায়ক হবে সে কথা আন্দোলনে নামবার আগে নেতাদের ভেবে দেখতে হবে। মনে হচ্ছে ক্ষমতালিপ্সুরা ক্ষমতা লাভের আকাক্সক্ষায় মরিয়া হয়ে উঠেছে। দশ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকলে দলের ভেতরে কতজন থাকবে বিএনপিকে গভীরভাবে তা ভেবে দেখা প্রয়োজন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে জনগণ কি করবে এই পরিস্থিতিতে? বিরোধী দলের গত আন্দোলনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তাদের এবং অন্যদের উচিত হবে প্রতিষেধক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। কথায় বলে "প্রতিষেধক ব্যবস্থা চিকিৎসার চেয়ে ভাল।" পরিবহন কর্মীদের উচিত হবে তাদের ইউনিয়নের মাধ্যমে সতর্কবাণী প্রকাশ করা। সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীদের একই ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। বৃক্ষ ধ্বংসের বিরুদ্ধে সজাগ হতে হবে। জাতীয় সম্পদ রেল রক্ষা করতে হবে। আসলে জনগণকে সজাগ হতে হবে। জাতীয় সম্পদ রক্ষা করতে হবে, কারণ এগুলো আওয়ামী লীগের সম্পদ নয়। সাংবাদিক ও অন্যান্য সচেতন ব্যক্তিদের উচিত হবে এখন থেকেই সাবধানবাণী উচ্চারণ করা। কিন্তু জাতির দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থের কথা চিন্তা করা সচেতন মানুষের নৈতিক দায়িত্ব। যারা আগুন লাগিয়ে বেড়ায় তাদের ভাবতে হবে বিরাট ঝুঁকি নিয়ে তারা যা করছে তাতে লাভবান হচ্ছে কে?
সরকারের উচিত হবে এখন থেকেই পরিকল্পনা গ্রহণ করা যাতে করে নিরপরাধ মানুষের জীবন রক্ষা পায় এবং জাতীয় সম্পদ বিনষ্ট না হয়। কিন্তু তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তারা যেন এমন কাজ করে যাতে করে মানুষ তাদের সঙ্গে তাদের বিরোধীদের পার্থক্য বুঝতে পারে।
লেখক : রয়্যাল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্টের ফেলো
প্রকাশ: শনিবার, ১৯ জুলাই ২০১৪, ৪ শ্রাবণ ১৪২১




__._,_.___

Posted by: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___