Banner Advertiser

Sunday, August 3, 2014

[mukto-mona] নারায়ণগঞ্জ : নূর হোসেনের সাম্রাজ্য চার ভাইয়ের দখলে



http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2014/08/02/112608

নূর হোসেনের সাম্রাজ্য চার ভাইয়ের দখলে (কালের কন্ঠ)

নারায়ণগঞ্জের শিমরাইলের টেকপাড়ায় পৌঁছেই পাওয়া গেল বাড়িটি। ফটক খোলা। ভেতরে ঢুকে কাউকে পাওয়া গেল না। তিনতলা তিনটি ভবন নিথর দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিটির কলাপসিবল গেটেই তালা। বাড়ির আঙিনায় একটি ছোট্ট ঘরে গ্যাসের চুলা জ্বলছে। বাড়িতে কেউ নেই, অথচ চুলা জ্বলছে কেন? জিজ্ঞেস করায় এক প্রতিবেশী জানালেন, আশপাশের গরিব কোনো পরিবার হয়তো এখান থেকে রান্না করে নিয়ে যাচ্ছে। বাড়ির পেছনের দিকে আরো দুটি গেট আছে। সেগুলোও খোলা। পুলিশ অভিযান চালালে যাতে দ্রুত পালানো যায় সে জন্যই গেট দুটি বানিয়েছিলেন বাড়ির মালিক

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাত খুনের মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন বাড়ির মালিক। বাড়িতে কেউ থাকে কি না জানতে চাইলে রইস উদ্দিন নামের এক প্রতিবেশী বললেন, 'ঢাকা থেইকা আইসা অনুমতি না নিয়া নূর হোসেনের বাড়িতে ঢুকলেন। আগে হইলে পারতেন? কী কইমু? বাড়িটা ছাড়া সবই দখল হইয়া যাইতাছে।' বাড়ির পেছনের একটি বড় জলাশয় দেখিয়ে তিনি বলেন, 'চেয়ারম্যানের (নূর হোসেন) খামার। এহন শুনতাছি মনিরের হইয়া গেছে।' মনির কে? জানতে চাইলে বলেন, 'খোঁজ নিয়া দেখেন, হেরা চাইর (চার) ভাই- তো সব নিতাছে।' অন্য প্রতিবেশীরাও জানায় একই তথ্য। নূর হোসেনের দখলে থাকা সবই অন্যরা দখল করে নিচ্ছে

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নূর হোসেন সাত খুনের ঘটনার পর ভারতে পালিয়ে যান। পরে সেখানে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে অনুপ্রবেশের মামলায় পশ্চিমবঙ্গের একটি আদালতে তাঁর বিচার চলছে। তাঁর পাঁচ ভাই নূরুল ইসলাম, নূর সালাম, নূরুল হক, নূরুদ্দিন, নূরুজ্জামান জজ এবং নূর সালামের ছেলে সিটি করপোরেশনের নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহ জামাল বাদলের পরিবারও এলাকাছাড়া। নূর হোসেনের সহযোগীদের মধ্যে অনেকে পক্ষ বদল করেছে। কয়েকজন ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে। সুযোগে শিমরাইল, কাঁচপুর, চিটাগাং রোডসহ সিদ্ধিরগঞ্জের প্রাণকেন্দ্রের ক্ষমতা আর অপকর্মের দখল হাতবদল হয়েছে। তাই নূর হোসেন তাঁর ঘনিষ্ঠ লোকজন না থাকলেও স্বস্তিতে নেই এলাকার মানুষ। তাদের জায়গায় হাজির হয়েছে নতুন দখলদার

কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে জানা গেছে, নূর হোসেন এলাকা ছাড়ার পর প্রকাশ্যে মাদক বাণিজ্য জুয়ার আসর বন্ধ হয়েছে। তবে বন্ধ হয়নি দখল আর চাঁদাবাজি। শিমরাইল ট্রাক টার্মিনাল, শীতলক্ষ্যা নদীর শিমরাইল আটি মৌজার বিস্তীর্ণ এলাকা, শিমরাইলের পরিবহন কাউন্টার, মাছের খামার, বালুমহাল, ল্যান্ডিং স্টেশন, কারখানায় চাঁদাবাজিসহ সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে নতুন একটি গ্রুপ। তাদের নেতৃত্বে রয়েছে চার ভাই। তাঁরা হলেন শিমরাইলের মৃত ধনু মেম্বারের ছেলে মাযারুল হক, নজরুল ইসলাম ওরফে ছোট নজরুল, মনির হোসেন জহিরুল হক। ইতিমধ্যে এলাকায় ফিরেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন তাঁর সহযোগীরা। গিয়াস উদ্দিন নিজে একটি মার্কেট দখলে মাঠে নেমেছেন

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে মনির জহিরুলের যোগাযোগ রয়েছে। তাঁদের দখল অভিযানে পেছন থেকে সহায়তা করছেন গিয়াস উদ্দিন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানায়, কাউন্সিলর নজরুলের মৃত্যু এবং নূর হোসেন বিতাড়িত হওয়ায় পুরো সুবিধা নিচ্ছেন গিয়াস উদ্দিন

তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গিয়াস উদ্দিন বলেন, 'তাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক নাই। মনির নজরুল আওয়ামী লীগ করে। অনেক দিন ধরে নূর হোসেনের সঙ্গে তাদের বিরোধ। তারা আমার বিরুদ্ধেও কাজ করেছে।'

স্থানীয় কয়েকটি সূত্র জানায়, মনিরের বিরুদ্ধে ডেমরা সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ডাকাতি, ছিনতাইসহ বেশ কয়েকটি মামলা আছে। মনির একসময় নূর হোসেনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। সেই সুবাদে তিনি অনেক তথ্যই জানেন। কারণে তিনি এখন পুলিশের বড় সোর্সের ভূমিকা নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত মনিরের তথ্যে নূর হোসেনের এক ডজন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিনিময়ে মনির আদায় করে নিয়েছেন নিজের স্বার্থ। তবে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার . মহিদ উদ্দিন খন্দকার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মামলার আলামত হিসেবে নূর হোসেনের বাড়ি থেকে কিছু জিনিসপত্র জব্দ করা হয়েছে। কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তবে কোথাও সিলগালা করা হয়নি। তাঁর সম্পত্তির ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনাও নেই। নূর হোসেনের কোনো সম্পত্তি দখল হয়েছে বলে অভিযোগ আমরা পাইনি। সাধারণত ক্রাইম জোন এলাকায় কারো স্থান অন্য পক্ষ দখল করতে চায়। তবে ব্যাপারে আমরা সতর্ক আছি যেন কোনো পক্ষ ত্রাস সৃষ্টি করতে না পারে। আমাদের ৎপরতার কারণেই কোনো গ্রুপ এখনো সেভাবে দাঁড়াতে পারেনি।'

সূত্র জানায়, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জ-ডেমরা এলাকার ত্রাস ছিল জামান-সেলিম নামের ক্যাডার জুটি। তারা গিয়াস উদ্দিনের লোক। জামান-সেলিমের অনেক সহযোগী এখন মনিরের সঙ্গে কাজ করছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, শীতলক্ষ্যার তীরে ড্যানিশের কারখানার পাশে মনির নজরুলের নিজস্ব অফিস আছে। বালুমহাল দখলের অভিযোগে বিআইডাব্লিউটিএ সম্প্রতি মনিরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে

নূর হোসেনের বড় ভাই নূরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মাইনা নিলাম, আমার ভাই (নূর হোসেন) যখন ছিল তখন নদী দখল করছে সে। তাইলে কয় দিন আগে মনিরের বিরুদ্ধে মামলা হইল কিভাবে? এত দিন যা- হইছে সব কিছুর জন্য নূর হোসেনকে দায়ী করা হইছে, এখন কারা করতাছে, দেখেন আপনারা। চার ভাই (মনির তার ভাইয়েরা) আর গিয়াস এমপি কী করতাছে তাও আপনারা দেখেন। তাগো ভয়ে কেউ মুখ খুলতেও সাহস পায় না।'

ট্রাকস্ট্যান্ডে ফের চাঁদাবাজি

জুয়া, যাত্রার আসর আর মাদকের হাটের কারণে পরিচিতি পাওয়া শিমরাইলের ট্রাক টার্মিনালে দুই যুগ ধরে একক নিয়ন্ত্রণ ছিল নূর হোসেনের। ট্রাকের চাকা ঘোরাতে আর স্ট্যান্ডে অবস্থান নিতে চাঁদা দিতে হতো নূর হোসেনকে। ১৯৯০ সালে তিনি বাংলাদেশ আন্তজেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন চিটাগাং রোড শাখার সম্পাদক হন। এর পর থেকে একই পদে বহাল থেকে আন্তজেলা ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি নারায়ণগঞ্জ ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন। সড়ক জনপথের (সওজ) জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা টার্মিনালে নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য এক বছর ধরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন থেকে জায়গাটি ইজারাও নিয়েছিলেন তিনি। টার্মিনালের ভেতর ৩১০টি ট্রান্সপোর্ট বুথ বা কাউন্টার আছে। এগুলোর প্রতিটি থেকে মাসিক তিন হাজার ৩০০ টাকা করে ভাড়া আদায় করতেন নূর হোসেন। আর ট্রাক পার্কিংয়ের জন্য আদায় করা হতো ৩৩০ টাকা

টার্মিনালের ট্রাকচালকরা জানান, মাঝে দুই মাস চাঁদা বা ভাড়া তোলা বন্ধ থাকার পর গত জুলাই থেকে ফের শুরু হয়েছে চাঁদাবাজি। ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় এক বছরের জন্য টার্মিনাল ইজারা নিয়েছেন সালাউদ্দিন নামের এক শ্রমিক লীগ নেতা। তবে টার্মিনালটির নিয়ন্ত্রণ করছেন ছোট নজরুল তাঁর ভাই জহিরুল। এখন প্রতিবার ট্রাক আসা-যাওয়ার জন্য ৫০ টাকা করে রাখা হচ্ছে। আর ট্রান্সপোর্ট বুথ থেকে আগের হারেই ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। নূর হোসেন পালিয়ে যাওয়ার পর তাঁর দখলে থাকা সরকারি সম্পত্তি উদ্ধারে সওজ বিভাগ ৎপরতা শুরু করলেও বর্তমান দখলদারদের কারণে সফল হয়নি। নথিপত্র সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ জুলাই ভিটিকান্দি সড়ক উপবিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ট্রাকস্ট্যান্ডটি উচ্ছেদের জন্য নোটিশ দেন। এর তিন দিন পরই সালাউদ্দিন নিজেকে বৈধ ইজারাদার দাবি করে উচ্ছেদ অভিযান স্থগিতের আবেদন করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, জায়গাটি গত ৩০ জুন তিনি সিটি করপোরেশন থেকে এক বছরের জন্য ইজারা পেয়েছেন। অস্থায়ী স্থাপনা পরবর্তী সময়ে নির্দেশ দেওয়া হলে তিনি সরিয়ে নেবেন। সালাউদ্দিনের নামে টার্মিনাল ইজারা হলেও গত রবিবার সরেজমিন গিয়ে জহিরুলকেই তদারকি করতে দেখা যায়। তবে জহিরুল কালের কণ্ঠের কাছে দাবি করেন, 'এখন চাঁদাবাজি হচ্ছে না। কেউ যেন চাঁদাবাজি করতে না পারে বা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে সেদিকে সবাই সতর্ক আছে।' ট্রাক টার্মিনালের সঙ্গে সম্পৃক্ততা জানতে চাইলে তিনি নিজেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক বলে পরিচয় দেন। বলেন, নূর হোসেনের কারণে দীর্ঘদিন তিনি টার্মিনালে আসতে পারেননি। চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় তাঁর বিরুদ্ধে নূর হোসেন ১১টি মামলা দিয়েছেন। এদিকে ইউনিয়নের সভাপতি আমির হোসেন ভাণ্ডারি বলেন, 'টার্মিনালে আগেও অনেক কিছু অবৈধ হয়েছে। এখনো হচ্ছে। নূর হোসেনসহ কয়েকজনকে কেন্দ্র থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শিগগিরই নতুন কমিটি দেওয়া হবে।'

অনুসন্ধানকালে জানা গেছে, আগে শিমরাইল-চিটাগাং রোড এলাকা থেকে দেশের পূর্বাঞ্চলের ১৬ জেলায় চলাচলকারী বাসেও নিয়মিত চাঁদাবাজি হতো নূর হোসেনের নামে। ইতিমধ্যে এসব বাসের কাউন্টারে চাঁদা দাবি করে নোটিশ দিয়েছেন মনির তাঁর সহযোগীরা

মাছের খামার মনিরের

প্রভাব-প্রতিপত্তির জোরে শিমরাইল এর আশপাশের ছয়টি বড় জলাশয় ইজারা দখলে নিয়ে মাছের খামার গড়ে তুলেছিলেন নূর হোসেন। গত থেকে মে-এর মধ্যে এসব খামারের মাছ ধরে বিক্রি করে একটি মহল। এরপর খামার নিজের দখলে নিয়েছেন মনির। টেকপাড়ায় নূর হোসেনের বাড়ির পাশের প্রায় ১০০ বিঘার বড় খামারটি দেখাশোনার জন্য লোক নিয়োগ করেছেন তিনি। কাঁচপুর ব্রিজের পর ডান পাশের প্রায় ২০ বিঘা জমির আরেকটি খামার কাঁচপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল হকের ছেলে হানিফ হকের সহায়তায় দখলে নিয়েছে একই গ্রুপ

বালুমহালেও চাঁদাবাজি

শীতলক্ষ্যার তীরে কাঁচপুর ব্রিজ থেকে উত্তর দিকে বালুমহাল এলাকা। এখানে বালু পাথরের শতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করতেন নূর হোসেন। নদী দখল করে ব্যবসা, বালু-পাথর তোলা, পজিশন নেওয়া, পণ্য ওঠা-নামা, ড্রেজিং করানোসহ সব কিছুর জন্যই টাকা দিতে হতো তাঁকে। নূর হোসেন এলাকা ছাড়ার পর বিআইডাব্লিউটিএ এলাকায় অবৈধ দখল উচ্ছেদের অভিযানে নেমেছে। তবে স্থানীয় একটি মহল নেমেছে দখলে। অনুসন্ধানকালে জানা গেছে, বালুমহাল এলাকায় প্রায় এক হাজার ড্রেজার পাইপ ছিল নূর হোসেনের। সবই গায়েব হয়ে গেছে। বালুমহালে ভিটি বালুর ব্যবসার নামে নিয়মিত চাঁদা তুলছেন মনির ছোট নজরুল। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকার বালুমহালের ব্যবসার জন্য মনিরকে নিয়মিত মাসোহারা দিতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। কিছু জায়গা মনির নিজেই দখল করে নিয়েছিলেন। গত জুলাই বিআইডাব্লিউটিএর অভিযানের সময় দখলের অভিযোগে মনিরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। সূত্র জানায়, ট্রাকস্ট্যান্ডের কাছে শীতলক্ষ্যার তীরে ছোট নজরুল মনির কারখানার জায়গা দখল করে তাঁদের অফিস বানিয়েছেন। আশপাশের সব কারখানাকেই এখন নূর হোসেনের জন্য বরাদ্দ করা টাকা দিতে হচ্ছে দুই ভাইকে

অনুসন্ধান জানা গেছে, কাঁচপুর ব্রিজ থেকে তাজ জুট মিল পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকার বালু পাথরের ব্যবসায়ীরা এখন মনির তার ভাইদের ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করছে। অন্তত ৪০টি গদিঘর থেকে মাসিক ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ভাড়া আদায় করছে তারা। ড্যানিশ, অ্যাপোলো, রাসেল, রোবেল ঢেউ টিন, আরবাপলিসহ শতাধিক প্রতিষ্ঠানের পণ্য পরিবহন এবং বর্জ্য অপসারণের বাণিজ্য এখন মনিরের নিয়ন্ত্রণে। আগে এসব কাজের জন্য নূর হোসেনকেই টাকা দিতে হতো ব্যবসায়ীদের

মাদক বাণিজ্যের হাত বদল

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নব্বইয়ের দশকে শিমরাইলে মাদক বাণিজ্যের হোতা ছিল নূর হোসেনের চাচাতো ভাই নাসির ওরফে কালা নাসির। নাসিরের সঙ্গে নূর হোসেনের বিরোধ হলে তাকে পুলিশে দেন নূর হোসেন। পরে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে নাসির রূপগঞ্জে আস্তানা গাড়ে। কাঁচপুর, শিমরাইল, সিদ্ধিরগঞ্জে মাদক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন নূর হোসেন। বাড়ির পাশে ফিলিং স্টেশনের পেছনের ডিপো ছিল ফেনসিডিলের গোডাউন। সাত খুনের পর তাঁর এসব আস্তানা থেকে পুলিশ বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করে। বর্তমানে অন্য একটি গ্রুপ মাদক বাণিজ্য নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। মনিরের সঙ্গে কালা নাসিরের দীর্ঘদিনের যোগাযোগ কাজে লাগাচ্ছে তারা। নূর হোসেনের চাচাতো ভাই আনু, ভাতিজা সাইদুল, সানারপাড়ের তৈয়ম গোপনে চালান নিয়ে আসছে। চালান মনিরের শেল্টারেই বিক্রি হচ্ছে

তবে অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে মোবাইল ফোনে মনির কালের কণ্ঠকে বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে নূর হোসেনের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক বিরোধ চলছে। কারণে নূর হোসেনের সহযোগীরা এখন আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে।' বালুমহাল দখলের ব্যাপারে তিনি দাবি করেন, 'বিআইডাব্লিউটিএ ইতিমধ্যে অভিযান চালিয়ে দখলদারদের উচ্ছেদ করেছে। সেখানে দখলের সুযোগই নেই। আর কেউ বলতে পারবে না আমি কোনো ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদাবাজি করেছি।'

মাছের ঘের সম্পর্কে মনির বলেন, 'ঘেরগুলো নূর হোসেন দখল করে রেখেছিল। সে এলাকায় না থাকায় স্থানীয় লোকজন সেগুলো পুনরুদ্ধার করেছে। আমি কোনো দখল করিনি।'

ল্যান্ডিং স্টেশন শহীদ চেয়ারম্যানের

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কাঁচপুর ব্রিজের নিচে ডান পাশে শীতলক্ষ্যার তীরে বিআইডাব্লিউটিএর ল্যান্ডিং স্টেশনটি গত বছর ইজারা নিয়েছিলেন শুক্কুর আলী নামের এক ব্যক্তি। তাঁর কাছ থেকে সেটির দখল নিয়েছিলেন নূর হোসেন। এখন স্টেশনের ইজারা নিয়েছেন কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম চেয়ারম্যান। বিআইডাব্লিউটিএর নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদিন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'গত জুলাই থেকে শহীদ চেয়ারম্যানকে স্টেশনটি ইজারা দেওয়া হয়েছে।' তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ইজারার শর্ত ভেঙে ইচ্ছামতো টাকা আদায় করা হচ্ছে সেখানে। গত ২০ জুলাই দুপুরে ট্রাকে গমবোঝাই করে রাজশাহী যাওয়ার আগে ট্রাকচালক (ঢাকা মেট্রো--১১০-৮২৬) শাহজাহান আলী জানান, ঘাটে তাঁকে শ্রমিকদের খরচ ছাড়াই বাড়তি ১৫০ টাকা দিতে হয়েছে। সব মিলিয়ে দিতে হয়েছে ৩৩০ টাকা। দেখা গেছে, ল্যান্ডিং স্টেশনে বালু, পাথর, সিমেন্ট, সারসহ সব ধরনের পণ্যই খালাস হচ্ছে। সেখানে টোল আদায়কারী আমানউল্লাহ বিআইডাব্লিউটিএর তালিকা দেখিয়ে দাবি করেন, নিয়ম অনুযায়ী টোল আদায় করা হচ্ছে। তবে ওই তালিকায় কোনো ট্রাকে পণ্য পরিবহনের জন্য ৩০ টাকার বেশি হার লেখা নেই। অনুসন্ধানকালে একটি সূত্র জানায়, শিমরাইলের রেন্ট--কার এলাকা থেকে চাঁদা তুলছেন শহীদ চেয়ারম্যানের ছেলে সাইদুল ইসলাম

বাসের রুট বেদখল

চলতি বছরের শুরুর দিকে চিটাগাং রোড থেকে নারায়ণগঞ্জ রুটে এবিএস পরিবহন নামে একটি বাস সার্ভিস চালু করেছিলেন নূর হোসেন। রুটটি দখলের জন্য প্রভাব খাটিয়ে কমল নসিব পরিবহন নামের দুটি বাস সার্ভিসকে কোণঠাসা করেন তিনি। নূর হোসেনের ক্যাডার বাহিনী নসিব পরিবহনের নম্বর কাউন্টারটি দখল করে নেয়। গত এপ্রিলে নসিব পরিবহন বন্ধই হয়ে যায়। এখন নূর হোসেনের রুটটি দখল করে নিয়েছে প্রতিপক্ষ। গত মে থেকেই তাঁর এবিএস বাস বন্ধ। বন্ধ রয়েছে কমল পরিবহনও। আর নসিব পরিবহন এখন নাম পাল্টে হয়েছে বন্ধু পরিবহন। রুবেল, আসলাম, সাইফুল ইসলাম, তোফাজ্জল, আনিসসহ কয়েকজন এই পরিবহনের মালিক। সাইফুল ইসলাম বলেন, 'নসিব এবিএসের মালিকরা ঠেলাঠেলি কইরা রুট চালাইছে। তাই আমরা কয়েকজন মালিক মিলে বন্ধু পরিবহনের নতুন লাইন চালু করছি।' নূর হোসেনের এবিএস পরিবহনের ২৪টি বাস এখন দত্ত বাবুর মাঠ এলাকায় খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে। সেখান থেকে বাসের যন্ত্রাংশ চুরি হচ্ছে বলেও জানা গেছে

http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2014/08/02/112608


http://newsnarayanganj24.net/news/%E0%A6%A8%E0%A7%82%E0%A6%B0-%E0%A6%B9%E0%A7%8B%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%9A%E0%A6%BE/


Read more at:

http://newsnarayanganj24.net/news/


  1. মার্কেটটি চাই গিয়াসের | newsnarayanganj

    newsnarayanganj24.net/.../মার্কেটটি-চাই-গিয়...

    চিটাগাং রোডে মুক্তি সরণিতে ১০ শতাংশ জমির ওপর তিন তলা মার্কেটটির নাম হাজি বদর উদ্দিন শপিং টাওয়ার। মার্কেটের ৬৪ দোকান থেকে দুই লাখ টাকারও বেশি মাসিক ভাড়া আদায় হয়। মার্কেটটির মালিকানা নিয়ে প্রায় দুই যুগ ধরে নূর হোসেনের সঙ্গে বিরোধ চলছে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের। নির্মাণের পর ক্ষমতার পালাবদলের ...

http://newsnarayanganj24.net/news/%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%9F%E0%A6%9F%E0%A6%BF-%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%87-%E0%A6%97%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%B0/




মাদক বাণিজ্যের হাত বদল, ল্যান্ডিং স্টেশন শহীদ চেয়ারম্যানের ...

newsnarayanganj24.net/.../মাদক-বাণিজ্যের-হা...

নব্বইয়ের দশকে শিমরাইলে মাদক বাণিজ্যের হোতা ছিল নূর হোসেনের চাচাতো ভাই নাসির ওরফে কালা নাসির। নাসিরের সঙ্গে নূর হোসেনের বিরোধ হলে তাকে পুলিশে দেন নূর হোসেন। পরে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে নাসির রূপগঞ্জে আস্তানা গাড়ে। কাঁচপুর, শিমরাইল, সিদ্ধিরগঞ্জে মাদক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন নূর হোসেন। বাড়ির পাশে ফিলিং ..
http://newsnarayanganj24.net/news/%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%95-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A3%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%A4-%E0%A6%AC%E0%A6%A6%E0%A6%B2-%E0%A6%B2%E0%A7%8D/




                                                     



__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___