মহিবুল ইজদানী খান ডাবলু, স্টকহোলম, সুইডেন: অতীতে দীর্ঘদিন থেকে ক্ষমতায় থাকা বিএনপি সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াকে নানাভাবে নানা কৌশলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের হিরো বানানোর চেষ্টা করেছে। এজন্য তারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সত্য ও বাস্তব ইতিহাসকে করেছে কলংকিত। স্বাধীনতা বিরোধী চক্র এই কাজটা করেছে তাদের নিজেদের স্বার্থেই। কারণ মুক্তিযুদ্ধের কথা আসলেই আসবে আওয়ামী লীগের একক নেতৃত্বের কথা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কথা। বিএনপিতে আসা যুদ্ধপরাধীদের জন্য এই সত্য ইতিহাস ছিল একটা বড় বাধা। এই কারণেই জেনারেল জিয়াকে স্তম্ব বানিয়ে ইতিহাসের মিথ্যাচার শুরু করে বিএনপি। যার প্রতিফলনে যাদের বয়স আজ ৩৫/৪০ তারা শুনেছে শুধু জিয়ার সুনাম, দুর্নাম নয়। জিয়ার কার্যকলাপের আসল সত্য ধামা চাপা দিয়ে বিএনপি সৃষ্টি করেছে এক মিথ্যা ও কাল্পনিক ইতিহাস। পাকিস্থানপন্থী বাঙালি সামরিক অফিসার, রাজাকার ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের রাজনীতিতে আসতে হলে, টিকে থাকতে হলে এছাড়া আর কোনো পথ খোলা ছিল না। তাই তারা ইতিহাসের খোল নায়ক জেনারেল জিয়াকে একটি রাজনৈতিক স্তম্ব বানিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলংকিত করার চেষ্টা করে আসছে বিএনপি। যে কথা সামরিক শাসক জেনারেল জিয়া নিজে কখনো বলেননি তারা তাই আজ বলে বেড়াচ্ছে।
জেনারেল জিয়ার আসল সত্য ইতিহাস হলো তিনি অত্যন্ত ক্ষমতালোভি ছিলেন। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জিয়া কৌশলে ক্ষমতা তার হাতের মুঠোয় নিয়ে আসেন। পরবর্তিতে তিনি প্রেসিডেন্ট সায়েমকে দিয়ে বাংলাদেশে সামরিক আইন জারি করেন। জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম সামরিক শাসক। জিয়া ক্ষমতায় বসেই ক্ষমতাকে দীর্ঘ মেয়াদী করার লক্ষে গঠন করেছিলেন রাজনৈতিক দল বিএনপি। প্রথমদিকে দলটি অন্য নামে আত্বপ্রকাশ করলেও বিএনপি নামেই জিয়া দলটিকে পরিচিত করে তুলেন। এইসময় তিনি যখন রাজনৈতিক দল গঠন করেন তখন ভারত বিরোধী ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ পক্ষকে সাথে নিয়েছিলেন। এছাড়াও পাকিস্থান ফেরত কিছু বাঙালি সামরিক অফিসারদের সমর্থনও পেয়েছিলেন তিনি। অন্যদিকে ক্ষমতার লোভে কিছু সুবিধাবাদী মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য দলের রাজনৈতিক নেতা সহ বিভিন্ন পেশায় নিয়জিত লোকেরাও এসে ভিড় করে নুতন এই দলটিতে। রাজনৈতিক দল গঠনে জিয়া যাদের সন্মুখ ভাগে রেখেছিলেন বলতে গেলে এসকল রাজনৈতিক বেক্তিরা সকলেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে পাকিস্থানের পক্ষ নিয়েছিলেন। জিয়া নিজে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করলেও এইসময় তিনি মুক্তিযোদ্ধা সামরিক অফিসারদের দুরে সরিয়ে পাকিস্থান ফেরত বাঙালি অফিসারদের গুরুত্ব দিয়েছিলেন সবচেয়ে বেশি। ফলে মুক্তিযোদ্ধা সামরিক অফিসাররা জিয়ার কার্যকলাপে মনক্ষুন্ন হন এবং বিভিন্ন সময় তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ পর্যন্ত করেন। এসকল বিদ্রোহের কারণে জিয়া অনেক মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের গ্রেফতার করে পরবর্তিতে ফাসি পর্যন্ত দিয়েছিলেন।
সমালোচকেরা যাই বলুক না কেন এইসময় জিয়ার এই পথ অবলম্বন করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প পথ খোলা ছিল না। দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষমতায় থাকতে হলে তাকে রাজনৈতিক দল গঠন করতে হবে। অন্যদিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরুদ্ধ পক্ষকে সাথে না নিলে একটি নুতন শক্তিশালী রাজনৈতিক দল গঠন করা তার পক্ষে কিছুতেই সম্ভবপর ছিল না। তাছাড়া এইসময় তার এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনী থেকে যারাই বিরোধিতা করেছে তাদের তিনি নানা কৌশলে হত্যা করেন। এসকল হত্যার বিচার এখন পর্যন্ত করা হয়নি, করলে জিয়ার বিরুদ্ধে আরো অনেক সত্য, অনেক কলংক বেরিয়ে আসতো। একথা চির সত্য যে পূর্ব পাকিস্থান পাকিস্থান থেকে স্বাধীন হয়ে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হোক তা সকল বাঙালিরা চায়নি। চাইলে এদেশে বাঙালি রাজাকার সৃষ্টি হতো না, যুদ্ধপরাধী সৃষ্টি হতো না, ত্রিশ লক্ষ্য বাঙালিকে জীবন দিতে হতো না। বাঙালিদের মধ্যে যারা কট্টর ভারত বিরোধী তারা কখনই চায়নি মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্থান ভেঙ্গে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র বাংলাদেশ সৃষ্টি হোক। যার কারণে তারা হানাদার পাকিস্থানি বাহিনীর সাথে হাত মিলিয়ে মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্থান রক্ষার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছে, জীবনও দিয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর এরা অনেকেই গ্রেফতার হন, অনেকে বিদেশে পালিয়ে যান ও আত্বগোপন করেন। আবার অনেকে সিরাজুল আলম খান, আ স ম আব্দুর রব, মেজর জলিল ও শাহজাহান সিরাজের নুতন প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)এ এসে গোপনে আস্থানা গাড়েন।
স্বাধীনতা বিরোধী এই গ্রুপের প্রধান শত্রু হলো আওয়ামী লীগ। কারণ এই আওয়ামী লীগের কারণেই পাকিস্থান ভেঙ্গে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। অর্থাত যারাই আওয়ামী লীগ ও ভারত বিরোধিতা করবে আমরা তাদের সাথেই আছি। এটাই ছিল মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের মূল নীতি। চতুর জিয়া নিজের স্বার্থে ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার লক্ষে এই নীতির লোকদের তার কাছে টেনে এনেছিলেন এবং এদের অনেককে সামনে রেখেই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিএনপি। তিনি যখন বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন তখন তার অবস্থান ছিল ঢাকা কেন্টনমেন্টের অভ্যন্তরে। এই কারণেই আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন বিএনপির সৃষ্টি ঢাকা কেন্টনমেন্টে। তবে ইতিহাসের এই চির সত্যকে বিএনপি নেতারা শিকার করতে রাজি নয়। তারা কৌশলে আওয়ামী লীগের এই দাবিকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। শুধু তাই নয় ইতিহাসের এই সত্য কথাটা এড়িয়ে গিয়ে তারা জিয়ার নামের পূর্বে সেনা শাসক কিংবা জেনারেল শব্দ বেবহার না করে করেন শহীদ জিয়া। কারো নামের পূর্বে যদি শহীদ বলতে হয় তাহলে তো সবার আগে বলতে হবে শহীদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। কিন্তু সেখানে শহীদ বলাতো দুরের কথা বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবন্ধু পর্যন্ত বলতে বিএনপির আপত্তি। কি অদ্ভূত মিথ্যাচার। এখন প্রশ্ন হলো সেনা শাসক জেনারেল জিয়া কি করে শহীদ জিয়া হলেন? বিষয়টি কি একটু ভেবে দেখা উচিত নয়?
১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলে প্রথমে জিয়া ও পরবর্তিতে এরশাদের কারণে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ পক্ষ পুনরায় রাজনীতিতে সোচ্চার হওয়ার সুযোগ খুঁজে পায়। জিয়া ও এরশাদ তাদের স্ব স্ব রাজনৈতিক দল গঠন করতে গিয়ে নিজেদের স্বার্থে এসকল স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রকাশ্যে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন। যারা একসময় পাকিস্থানকে রক্ষা করার জন্য লক্ষ্ লক্ষ্ বাঙালিকে হত্যা করেছিল তাদের কোনো বিচার না করেই রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ করে দেন প্রথমে জিয়া তারপর এরশাদ সবশেষে বেগম খালেদা জিয়া। এইসময় সেনা শাসক জিয়া মুক্ত করে দেন সকল রাজাকার আর রাজাকারদের নেতাদের। এমনকি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেভেন মার্ডারের প্রমানিত অপরাধী শফিউল আলম প্রধানের মতো খুনিকেও মুক্ত করে দেন তার রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষে। জিয়ার মূল লক্ষ্য ছিল ভারত বিরোধী সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করা। নিজের প্রতিষ্ঠিত দলকে শক্তিশালী করা। সেই পরিপেক্ষিতে বলা যেতে পারে বিএনপি শুরু থেকেই ছিল ভারত বিরোধী ও স্বাধীনতা বিরোধীদের একটি রাজনৈতিক দল। আর জিয়া ছিলেন তাদের স্তম্ব। ভারতের বিরুদ্ধে ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলংকিত করা ছিল দলটির প্রধান রাজনৈতিক লক্ষ্য।
এইকারণে পরবর্তীতে জিয়ার মির্তুর পর মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ পক্ষরা তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সামনে এনে সেনা শাসক জিয়াকে স্তম্ব বানিয়ে বিএনপির পতাকাতলে দলে দলে শরিক হতে থাকে। এইজন্য জিয়াকে বলা যেতে পারে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধীদের একটা রাজনৈতিক স্তম্ব। জিয়া নামের এই স্তম্বকে হাতে পেয়ে স্বাধীনতা বিরোধীরা পুনরায় রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পেয়ে যায়। একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে আজকের বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার পিতা কিংবা তারা নিজেরাই ছিলেন পাকিস্থান পন্থী। এরা সকলেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে যাতে প্রতিষ্ঠিত না হতে পারে এজন্য তারা বাঙালি হয়ে বাঙালিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন। হত্যা করেছিলেন অসংখ বাঙালিকে। জিয়ার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতিতে টেনে এনে তারা প্রথমেই জিয়ার নামের পূর্বে ঘোষণা করে শহীদ জিয়া। কিন্তু কেন? এবেপারে বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা জানান জিয়াকে যেহেতু গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এই কারণে আমরা তার নামের আগে শহীদ বলে থাকি। ইসলামী নিয়মে একজন বেক্তিকে এভাবে গুলি করে হত্যা করা হলে তিনি শহীদ হয়েছেন বলেই ধরা হয়ে থাকে। কথাটা যদি ইসলামের দৃষ্টিতে মানতে হয় তাহলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মির্তুটাও তো স্বাভাবিকভাবে হয়নি। তাকেও তো গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাহলে বঙ্গবন্ধুর নামের আগে আপনারা শহীদ বলেন না কেন? তখন তিনি বলেন একথা আমাকে জিজ্ঞাসা না করে আওয়ামী লীগারদের বলুন। তারা তাকে কেন শহীদ বলে না এটা আমাদের বিষয় নয়। তারমানে পরিষ্কারভাবে লক্ষনীয় যে শহীদ শব্দটাকে বিএনপি এখানে দলীয়করণ করেছে নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ ও স্বার্থ হাসিলের জন্য। কারণ তাহলে জিয়ার নামের পূর্বে জেনারেল কিংবা সামরিক শাসক নামের সত্য কথাটা ঢাকা পরে যাবে।
জিয়াকে স্তম্ব বানিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস বিকৃতি করার কাজ এখানেই শেষ নয়। ইতিহাসকে বিকৃত করার লক্ষে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে অন্য ধারায় প্রভাহিত করার লক্ষে বিএনপি পরবর্তিতে নুতন করে আবিষ্কার করে বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সন্মানে বাঙালি জাতি যখন ১৫ আগস্টকে শোক দিবস হিসেবে পালন করছে তখন হটাত করে তারা আবিষ্কার করলেন বেগম খালেদা জিয়ার জন্ম দিন নাকি ১৫ আগস্ট। অর্থাত ঐদিন শোক পালন না করে বড় বড় কেক কেটে আনন্দের সাথে পালন করা হয় বেগম জিয়ার হটাত করে আবিষ্কার করা জন্মদিন। বিকৃত রাজনৈতিক চিন্তা ও মিথ্যাচারের কোনো শেষ নেই। ৯১ খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলে তখন সরকারী গেজেটে তার জন্মদিনের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল অন্যদিন অন্য তারিখ। এখন রাতারাতি তা পরিবর্তন করে হয়ে গেলো ১৫ আগস্ট। এবেপারে বেগম খালেদা জিয়ার একজন উপদেষ্টাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমরা মেডামকে বিষয়টির নিগেটিভ সাইড তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। বলেছি ১৫ আগস্ট আপনার জন্মদিন এভাবে ঢাকঢোল বাজিয়ে উদযাপন না করে অন্যভাবেও তো করা যেতে পারে। কিন্তু মেডামের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি। তবে বিষয়টি মেডামের সম্পূর্ণ নিজস্য ও বেক্তিগত বিষয়। আমাদের এখানে কিছু করার নেই। পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী চক্র যারা আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে তারা কৌশলে খালেদা জিয়াকে বুঝিয়ে দিনটি নির্ধারণ করে দিয়েছে। এখন আর খালেদা জিয়ার পক্ষে সেখান থেকে ফিরে আসা সম্ভব নয়।
সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াকে স্তম্ব বানিয়ে বিএনপির মিথ্যা রাজনীতি এভাবে টিকিয়ে রাখা এখন আর সম্ভব নয় বলে অনেকে মনে করছেন। কারণ দলটি সাত বত্সর ছয় মাস থেকে ক্ষমতার বাহিরে। তাছাড়া বিভিন্ন দল থেকে যারা একদিন হালুয়া রুটি খাওয়ার জন্য এসে আস্তানা গেড়েছিলেন তাদের অনেকেই এখন সময় বুঝে কেটে পড়েছেন। অনেকে দল ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা ভাবনাও করছেন। আবার কেউ কেউ নিজেকে সক্রিয়তা থেকে দুরে রেখেছেন। আর যারা পুনরায় ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে এখনো পরে আছেন তাদের মধ্যে চলছে পদের লড়াই, ক্ষমতার লড়াই, সংঘাত আর বিভক্ততা। যার কারণে বিএনপির ভবিষ্যত এখন অনিশ্চিত বলা যেতে পারে। দলটির ভেতর এতই গ্রুপিং যে এখন আর কেউ কাউকে মানতেই চায় না। অন্যদিকে ঈদের পরে আন্দোলনের ডাক দিয়ে দীর্ঘদিন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব পদে থাকা মির্জা আলমগীর হটাত করেই স্বাস্থ্য পরীক্ষায় চলে গেছেন সিঙ্গাপুর। এমতাঅবস্থায় আন্দোলন কিভাবে করা হবে সেটাই এখন দেখার বিষয়। এছাড়া আন্দোলনের এজান্ডা কি তাও জনগণ এখনো পরিষ্কারভাবে অবহিত নয়। তবে আন্দোলন যদি মধ্যবর্তী নির্বাচনের জন্য হয়ে থাকে তাহলে তা আদৌ সফল হবে কি না সন্দেহ রয়েছে। কারণ সরকার ইতিমধ্যেই শক্তভাবে জানিয়ে দিয়েছে ২০১৯ আগে নির্বাচন না দেওয়ার কথা। জিয়াকে স্তম্ব বানিয়ে মিথ্যা রাজনৈতিক বুলি দিয়ে বিভক্ত ও দুর্বল বিএনপি আসছে আন্দোলনে যদি সফল না হয়ে পিছিয়ে যায় তাহলে তা হবে বিএনপির রাজনীতির জন্য এক বিরাট পরাজয়। এইসময় দলটির ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভবনা দেখা দিতে পারে।