ঈদ তো চলে গেল, তারপর? | উপ-সম্পাদকীয় | কালের কণ্ঠ
ঈদের আগে বিরোধী দল ঘোষণা করেছিল যে ঈদ পার হলে তারা সরকার পতনের জন্য আন্দোলন করবে। ঈদ ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং আনন্দের উৎস। উন্মুখ হয়ে থাকে ঢাকায় চাকরিরত হাজার হাজার মানুষ আপনজনদের কাছে যেতে ঈদের ছুটিতে। যানবাহনের সব অসুবিধা অগ্রাহ্য করে তারা ছুটে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। সে জন্যই সম্ভবত বিরোধী দলের অপেক্ষা ঈদ পর্যন্ত। ঈদের আগে মানুষ এক মাস ধরে কৃচ্ছ্রসাধন করে রমজান মাসে। এই ধর্মীয় মাসে শুরু হয় এক বিশেষ ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, যার নাম 'ইফতার পার্টি'। টিভি ক্যামেরার সামনে সেজেগুজে রাজনীতিবিদরা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন। যদিও নাম ইফতার পার্টি, কিন্তু ধর্মীয় কর্মকাণ্ড নয়, চলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। সারা দিনের রোজার শেষে রোজাদারদের ক্লান্ত দেখায়। কিন্তু টিভি ক্যামেরার সামনে থাকার আনন্দেই হোক বা রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণেই হোক কিংবা সাজগোজের কারণেই হোক, এসব ইফতার পার্টির অংশগ্রহণকারীদের বেশ 'ফ্রেশ' দেখায়।
ঈদের আগে আরেক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হচ্ছে 'ওমরাহ'। সাধারণ মানুষ ওমরাহ করতে যায় ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করতে। আর আমাদের কোনো কোনো রাজনীতিবিদ বছর বছর ওমরাহ করতে যান রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে। টিভি ক্যামেরায় তাঁদের দেখানো হয়। ওমরাহ যেহেতু ধর্মীয় অনুষ্ঠান, কাজেই তাঁরা মনে করেন যে মানুষ তাঁদের পরহেজগার মনে করে। মানুষের সারল্য সম্পর্কে তাঁদের অগাধ বিশ্বাস। বড় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ওমরাহে যান অপেক্ষাকৃত ছোট রাজনৈতিক দলের নেতারা এবং কোনো কোনো সময় অনৈতিক নেতারাও। ইফতার পার্টি আর ওমরাহ ঘিরে চলে জাঁকজমকপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। প্রচারের এমন মোক্ষম সুযোগ নেতারা হারাতে চান না।
যা হোক, ঈদ তো পার হলো, এখন কী হতে চলেছে? এই প্রশ্ন মানুষের মনে। ঈদের আমেজ কেটে গেলে এই প্রশ্ন আরো স্পষ্ট হয়ে দেখা দেবে। ঈদের পরের আন্দোলন সম্পর্কে যে ধরনের ভাষা বিরোধী দল ব্যবহার করেছিল, তাকে ঠিক শান্তিপূর্ণ বলা যায় না। ইদানীং বিরোধী দলের নেত্রী শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথা বলেছেন। তাঁর কথা সত্য হোক । তবে বিরোধী দল 'কিন্তু' ব্যবহার করেছে। তারা বলেছে, সরকার যদি তাদের আন্দোলনে বাধা দেয় তাহলে তুমুল কাণ্ড বেধে যাবে। বাধা দেওয়া বলতে কী বোঝায় তা তাঁরা বলেননি। এই বাধা দেওয়াকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে লঙ্কাকাণ্ড বাধানো হবে না- এটাই জনগণ আশা করে।
বিরোধী দলের এই প্রস্তাবিত আন্দোলন সম্পর্কে সরকারপক্ষ কী বলছে? তারা বলছে, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকার সবার রয়েছে। খুব ভালো কথা। তবে উসকানিমূলক কথা না বলাই ভালো। বিএনপির আন্দোলন করার ক্ষমতা নেই- এ-জাতীয় কথাকে বিরোধী দল তাদের 'প্রেস্টিজের' প্রতি আঘাত মনে করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রেরণা পেতে পারে। 'মাঠে দেখা হবে' জাতীয় কথা বিরোধী দলের সম্ভাব্য ধ্বংসাত্মক কাজের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করবে, না তাদের অনুপ্রাণিত করবে, সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে দলীয় ব্যক্তিদের শৃঙ্খলাবোধ সম্পর্কে নেতাদের সজাগ থাকতে হবে। আরেকজন বিশ্বজিৎ যেন নিহত না হয়।
বিরোধী দলের প্রস্তাবিত আন্দোলনকে কেন্দ্র করে প্রাসঙ্গিক নানা কথা আলোচিত হচ্ছে এবং তার কিছু কিছু প্রাসঙ্গিক। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আর ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের পারস্পরিক সম্পর্কের কথা ভেবে দেখতে হবে। মানুষ হত্যা, সম্পত্তি বিনষ্ট, বিশেষ করে রেলগাড়ি পোড়ানো, রেললাইন উপড়ে ফেলা, বাস পোড়ানো, গাছ কেটে ফেলা ইত্যাদি নিশ্চয়ই অপরাধ। দণ্ডনীয় অপরাধ। রাজনীতির নাম করে এসব করলে এসব অপরাধ বলে গণ্য হবে না- এ ধারণা যেন আমাদের মনে স্থান না পায়। যারা এসব কাজে জড়িত হবে তাদের বিচার করে শাস্তি দিতে হবে। কিন্তু যাঁদের সিদ্ধান্তের ফলে এসব ধ্বংসাত্মক কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে নওজোয়ানরা, তাঁদেরও বিচার হওয়া উচিত। ন্যুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালে যাঁদের শাস্তি হয়েছিল, তাঁরা তো নিজের হাতে মানুষ হত্যা করেননি।
বিদেশিদের আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো আমাদের একটা লজ্জাজনক অভ্যাস। কিছু হলেই বিদেশিদের কাছে ছুটে যাওয়া বন্ধ করা উচিত। এখন যেটা ঘটছে তাতে আমাদের আরেকটা অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ প্রকাশ পাচ্ছে, আর তা হচ্ছে 'স্ববিরোধিতা'। ক্যামেরন আমাদের সম্পর্কে কী বলেছেন তা নিয়ে দুই পক্ষের দুই রকমের বক্তব্য আমাদের মাথা হেঁট করে দেয় না কি? ক্যামেরনের সার্টিফিকেট কি আমাদের গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য? আমেরিকার রাষ্ট্রদূত আমাদের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করেছেন। ক্যামেরন সম্পর্কে যা বলেছি, আমেরিকার এই ভদ্রলোক সম্পর্কে একই কথা বলব। আমেরিকা তো আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামের সরাসরি বিরোধিতা করেছে। আমাদের কেউ কেউ এমন কথা বলেন যে ইংল্যান্ড আর আমেরিকার কথা একেবারে ধ্রুব সত্য। কিন্তু এই ব্যক্তিদের কথা শুধু আমাদের দেশের ব্যাপারে। এখানেই আমাদের স্ববিরোধিতা। গাজা বা ইসরায়েলের ব্যাপারে তাদের আবার অন্য মনোভাব। আমেরিকা বা ইংল্যান্ড সেখানে ভুল। অর্থাৎ আমাদের মনোভাবটা হচ্ছে, 'ওরা এখানে সঠিক কিন্তু সেখানে ভুল।' ওরা যে এখানে ভুল হতে পারে, এটা আমাদের অনেকে মেনে নেন না।
বিরোধীদলীয় জোটের কী অবস্থা? বিএনপি ও জামায়াত ছাড়া অন্য ১৮টি দলের জনশক্তি কেমন? জোটের একটি শরিক দলের প্রধান দেশের উত্তর প্রান্তে ভবিষ্যৎ আন্দোলন নিয়ে এমন ভাষা ব্যবহার করেছেন, যা জোট নেত্রীর ইদানীংকালের ভাষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। জোটের বিভিন্ন শরিক দলের আচরণ একই ধরনের হবে তো আন্দোলন শুরু হলে। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক কেমন যাচ্ছে? এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। জামায়াতের সঙ্গে সরকারি দলের সম্পর্ক কেমন, সেটি নিয়েও নানা কানাঘুষা শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে জামায়াতের প্রয়োজন কী?
বিএনপির নিজের অবস্থা কী, সেটা নিয়েও জল্পনাকল্পনার শেষ নেই। সাংগঠনিক দুর্বলতা, কোন্দল, নির্লিপ্ততা ইত্যাদির কথা লেখা হচ্ছে সংবাদমাধ্যমে। গত আন্দোলনের ব্যর্থতার দায়ভার সাদেক হোসেন খোকার ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে। এ-জাতীয় 'স্কেপগোটিং' ভালো লক্ষণ নয়। রাজধানীর নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির অন্তর্দ্বন্দ্ব সব পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে। বিশেষ করে আব্বাস সাহেবের নেতিবাচক মনোভাব হাবিব উন নবী সম্পর্কে এখন বহুল প্রচারিত। নেত্রীর উচ্চকণ্ঠ অভিমান পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। আব্বাস আর সাদেক হোসেন খোকার দ্বন্দ্ব্ব কি শুধু ব্যক্তিগত, না দলটির বিভিন্ন ধরনের মানুষের উপস্থিতির কারণে ঘটছে? আমাদের ভয় হচ্ছে এই যে দলের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রখর হলে বাইরে আগ্রাসন করে তা মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা চলতে পারে। এর ফলে আন্দোলন ভীষণভাবে ধ্বংসাত্মক হতে পারে।
বি. দ্র. : লেখক রয়াল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্টের ফেলো
http://www.kalerkantho.com/print-edition/sub-editorial/2014/08/09/115039
ঈদের আগে বিরোধী দল ঘোষণা করেছিল যে ঈদ পার হলে তারা সরকার পতনের জন্য আন্দোলন করবে। ঈদ ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং আনন্দের উৎস। উন্মুখ হয়ে থাকে ঢাকায় চাকরিরত হাজার হাজার মানুষ আপনজনদের কাছে যেতে ঈদের ছুটিতে। যানবাহনের সব অসুবিধা অগ্রাহ্য করে তারা ছুটে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। সে জন্যই সম্ভবত বিরোধী দলের অপেক্ষা ঈদ পর্যন্ত। ঈদের আগে মানুষ এক মাস ধরে কৃচ্ছ্রসাধন করে রমজান মাসে। এই ধর্মীয় মাসে শুরু হয় এক বিশেষ ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, যার নাম 'ইফতার পার্টি'। টিভি ক্যামেরার সামনে সেজেগুজে রাজনীতিবিদরা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন। যদিও নাম ইফতার পার্টি, কিন্তু ধর্মীয় কর্মকাণ্ড নয়, চলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। সারা দিনের রোজার শেষে রোজাদারদের ক্লান্ত দেখায়। কিন্তু টিভি ক্যামেরার সামনে থাকার আনন্দেই হোক বা রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণেই হোক কিংবা সাজগোজের কারণেই হোক, এসব ইফতার পার্টির অংশগ্রহণকারীদের বেশ 'ফ্রেশ' দেখায়।
ঈদের আগে আরেক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হচ্ছে 'ওমরাহ'। সাধারণ মানুষ ওমরাহ করতে যায় ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করতে। আর আমাদের কোনো কোনো রাজনীতিবিদ বছর বছর ওমরাহ করতে যান রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে। টিভি ক্যামেরায় তাঁদের দেখানো হয়। ওমরাহ যেহেতু ধর্মীয় অনুষ্ঠান, কাজেই তাঁরা মনে করেন যে মানুষ তাঁদের পরহেজগার মনে করে। মানুষের সারল্য সম্পর্কে তাঁদের অগাধ বিশ্বাস। বড় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ওমরাহে যান অপেক্ষাকৃত ছোট রাজনৈতিক দলের নেতারা এবং কোনো কোনো সময় অনৈতিক নেতারাও। ইফতার পার্টি আর ওমরাহ ঘিরে চলে জাঁকজমকপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। প্রচারের এমন মোক্ষম সুযোগ নেতারা হারাতে চান না।
যা হোক, ঈদ তো পার হলো, এখন কী হতে চলেছে? এই প্রশ্ন মানুষের মনে। ঈদের আমেজ কেটে গেলে এই প্রশ্ন আরো স্পষ্ট হয়ে দেখা দেবে। ঈদের পরের আন্দোলন সম্পর্কে যে ধরনের ভাষা বিরোধী দল ব্যবহার করেছিল, তাকে ঠিক শান্তিপূর্ণ বলা যায় না। ইদানীং বিরোধী দলের নেত্রী শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথা বলেছেন। তাঁর কথা সত্য হোক । তবে বিরোধী দল 'কিন্তু' ব্যবহার করেছে। তারা বলেছে, সরকার যদি তাদের আন্দোলনে বাধা দেয় তাহলে তুমুল কাণ্ড বেধে যাবে। বাধা দেওয়া বলতে কী বোঝায় তা তাঁরা বলেননি। এই বাধা দেওয়াকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে লঙ্কাকাণ্ড বাধানো হবে না- এটাই জনগণ আশা করে।
বিরোধী দলের এই প্রস্তাবিত আন্দোলন সম্পর্কে সরকারপক্ষ কী বলছে? তারা বলছে, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকার সবার রয়েছে। খুব ভালো কথা। তবে উসকানিমূলক কথা না বলাই ভালো। বিএনপির আন্দোলন করার ক্ষমতা নেই- এ-জাতীয় কথাকে বিরোধী দল তাদের 'প্রেস্টিজের' প্রতি আঘাত মনে করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রেরণা পেতে পারে। 'মাঠে দেখা হবে' জাতীয় কথা বিরোধী দলের সম্ভাব্য ধ্বংসাত্মক কাজের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করবে, না তাদের অনুপ্রাণিত করবে, সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে দলীয় ব্যক্তিদের শৃঙ্খলাবোধ সম্পর্কে নেতাদের সজাগ থাকতে হবে। আরেকজন বিশ্বজিৎ যেন নিহত না হয়।
বিরোধী দলের প্রস্তাবিত আন্দোলনকে কেন্দ্র করে প্রাসঙ্গিক নানা কথা আলোচিত হচ্ছে এবং তার কিছু কিছু প্রাসঙ্গিক। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আর ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের পারস্পরিক সম্পর্কের কথা ভেবে দেখতে হবে। মানুষ হত্যা, সম্পত্তি বিনষ্ট, বিশেষ করে রেলগাড়ি পোড়ানো, রেললাইন উপড়ে ফেলা, বাস পোড়ানো, গাছ কেটে ফেলা ইত্যাদি নিশ্চয়ই অপরাধ। দণ্ডনীয় অপরাধ। রাজনীতির নাম করে এসব করলে এসব অপরাধ বলে গণ্য হবে না- এ ধারণা যেন আমাদের মনে স্থান না পায়। যারা এসব কাজে জড়িত হবে তাদের বিচার করে শাস্তি দিতে হবে। কিন্তু যাঁদের সিদ্ধান্তের ফলে এসব ধ্বংসাত্মক কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে নওজোয়ানরা, তাঁদেরও বিচার হওয়া উচিত। ন্যুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালে যাঁদের শাস্তি হয়েছিল, তাঁরা তো নিজের হাতে মানুষ হত্যা করেননি।
বিদেশিদের আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো আমাদের একটা লজ্জাজনক অভ্যাস। কিছু হলেই বিদেশিদের কাছে ছুটে যাওয়া বন্ধ করা উচিত। এখন যেটা ঘটছে তাতে আমাদের আরেকটা অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ প্রকাশ পাচ্ছে, আর তা হচ্ছে 'স্ববিরোধিতা'। ক্যামেরন আমাদের সম্পর্কে কী বলেছেন তা নিয়ে দুই পক্ষের দুই রকমের বক্তব্য আমাদের মাথা হেঁট করে দেয় না কি? ক্যামেরনের সার্টিফিকেট কি আমাদের গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য? আমেরিকার রাষ্ট্রদূত আমাদের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করেছেন। ক্যামেরন সম্পর্কে যা বলেছি, আমেরিকার এই ভদ্রলোক সম্পর্কে একই কথা বলব। আমেরিকা তো আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামের সরাসরি বিরোধিতা করেছে। আমাদের কেউ কেউ এমন কথা বলেন যে ইংল্যান্ড আর আমেরিকার কথা একেবারে ধ্রুব সত্য। কিন্তু এই ব্যক্তিদের কথা শুধু আমাদের দেশের ব্যাপারে। এখানেই আমাদের স্ববিরোধিতা। গাজা বা ইসরায়েলের ব্যাপারে তাদের আবার অন্য মনোভাব। আমেরিকা বা ইংল্যান্ড সেখানে ভুল। অর্থাৎ আমাদের মনোভাবটা হচ্ছে, 'ওরা এখানে সঠিক কিন্তু সেখানে ভুল।' ওরা যে এখানে ভুল হতে পারে, এটা আমাদের অনেকে মেনে নেন না।
বিরোধীদলীয় জোটের কী অবস্থা? বিএনপি ও জামায়াত ছাড়া অন্য ১৮টি দলের জনশক্তি কেমন? জোটের একটি শরিক দলের প্রধান দেশের উত্তর প্রান্তে ভবিষ্যৎ আন্দোলন নিয়ে এমন ভাষা ব্যবহার করেছেন, যা জোট নেত্রীর ইদানীংকালের ভাষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। জোটের বিভিন্ন শরিক দলের আচরণ একই ধরনের হবে তো আন্দোলন শুরু হলে। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক কেমন যাচ্ছে? এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। জামায়াতের সঙ্গে সরকারি দলের সম্পর্ক কেমন, সেটি নিয়েও নানা কানাঘুষা শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে জামায়াতের প্রয়োজন কী?
বিএনপির নিজের অবস্থা কী, সেটা নিয়েও জল্পনাকল্পনার শেষ নেই। সাংগঠনিক দুর্বলতা, কোন্দল, নির্লিপ্ততা ইত্যাদির কথা লেখা হচ্ছে সংবাদমাধ্যমে। গত আন্দোলনের ব্যর্থতার দায়ভার সাদেক হোসেন খোকার ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে। এ-জাতীয় 'স্কেপগোটিং' ভালো লক্ষণ নয়। রাজধানীর নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির অন্তর্দ্বন্দ্ব সব পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে। বিশেষ করে আব্বাস সাহেবের নেতিবাচক মনোভাব হাবিব উন নবী সম্পর্কে এখন বহুল প্রচারিত। নেত্রীর উচ্চকণ্ঠ অভিমান পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। আব্বাস আর সাদেক হোসেন খোকার দ্বন্দ্ব্ব কি শুধু ব্যক্তিগত, না দলটির বিভিন্ন ধরনের মানুষের উপস্থিতির কারণে ঘটছে? আমাদের ভয় হচ্ছে এই যে দলের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রখর হলে বাইরে আগ্রাসন করে তা মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা চলতে পারে। এর ফলে আন্দোলন ভীষণভাবে ধ্বংসাত্মক হতে পারে।
বি. দ্র. : লেখক রয়াল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্টের ফেলো
http://www.kalerkantho.com/print-edition/sub-editorial/2014/08/09/115039
শনিবার, ৯ আগষ্ট ২০১৪, ২৫ শ্রাবণ ১৪২১
বিভীষণদের বিষয়ে সতর্কতা অপরিহার্য ওয়াহিদ নবি প্রকাশ: শনিবার, ৯ আগষ্ট ২০১৪, ২৫ শ্রাবণ ১৪২১
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ
০৬ ই মার্চ, ২০০৯ রাত ৮:৪০ |
মনে রাখবা, ''রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেবো এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ''।
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম''।জয় বাংলা।
__._,_.___