Banner Advertiser

Monday, August 18, 2014

[mukto-mona] সম্প্রচার নীতিমালা : যে ১০টি কারণে আওয়ামী লীগের গ্রহণযোগ্য যে ১টি কারণে বিরোধীদের পরিত্যাজ্য



সত্তর দশকের গোড়ার দিকে।
আওয়ামী লীগ তখন ক্ষমতাসীন।
শেখ মুজিবুর রহমান তখন প্রধানমন্ত্রী।
তদানীন্তন শীর্ষ ব্যবসায়ী শিল্পপতি রূপে খ্যাত মি. জহুরুল ইসলামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গ্রুপ ফাইনান্স ডিরেক্টর রূপে আমি কাজ করছিলাম।
এছাড়া আমি পরিচিত হয়ে উঠেছিলাম টিভি উপস্থাপক রূপে।
সেই সময়ে বাংলাদেশ টেলিভিশন কর্পরেশনের (বিটিভি) একমাত্র স্টুডিও এবং অফিসসমূহ ছিল মতিঝিলে ডিআইটি ভবনে।
হঠাত্ এক সকালে বিটিভি কর্তৃপক্ষ থেকে ফোনে আমাকে জানানো হলো, একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আমাকে উপস্থাপন করতে হবে।
জানতে চাইলাম অনুষ্ঠানটির বিষয় বস্তু কি? বিশেষ কেন? এবং কারা উপস্থাপিত হবেন?
উত্তর পেলাম, অনুষ্ঠানের বিষয় বাংলাদেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (ফার্স্ট ফাইভ ইয়ার প্ল্যান)। সেজন্য এটি জাতীয়ভাবে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত হবেন প্ল্যানিং কমিশনের প্রধান চার সদস্যের মধ্যে দুই সদস্য, প্রফেসর রেহমান সোবহান এবং ড. মোশাররফ হোসেন।
বললাম, ঠিক আছে। তবে আমাকে প্রস্তুতির সময় দিতে হবে। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার একটি কপি আমাকে পাঠিয়ে দিন। ওটি পড়ে, যতটা সম্ভব আত্মস্থ করে, আমাকে যেতে হবে।
যদিও আমি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে (১৯৫২-১৯৫৬) ইকনমিক্সের ছাত্র রূপে তদানীন্তন সভিয়েট ইউনিয়নের ফাইভ ইয়ার প্ল্যান সম্পর্কে জানতাম তবুও সেই জ্ঞান ছিল খুব অল্প এবং সতের বছর আগের। এ রকম একটি দুর্বল স্থানে থেকে উপস্থাপক রূপে বাংলাদেশের প্রথম ফাইভ ইয়ার প্ল্যান বিষয়ে দুই জাদরেল ইকনিমিস্টকে ইন্টারভিউ করার কাজটি ছিল চ্যালেঞ্জিং।
প্রফেসর রেহমান সোবহান ও ড. মোশাররফ হোসেন ১৯৭১-এ কলকাতায় থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ভূমিকা রেখেছিলেন। সেই সময়ে এই দুজন ইকনমিস্টের সঙ্গে ছিলেন ঢাকা ইউনিভার্সিটির আরো দুই প্রফেসর, ড. নুরুল ইসলাম ও ড. আনিসুর রহমান। মোট এই চার ইকনমিস্ট ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্ল্যানিং কমিশনের সদস্য এবং প্রথম ফাইভ ইয়ার প্ল্যান প্রণেতা।
তবে বিটিভি কর্তৃপক্ষ যখন আমাকে ফোন করেন তখন ড. নুরুল ইসলাম ও ড. আনিসুর রহমান দেশে ছিলেন না। বস্তুত, স্বাধীনতার পর থেকে এই দুই ইকনমিস্ট অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন বিদেশে। ড. নুরুল ইসলাম আমেরিকায় এবং ড. আনিসুর রহমান সুইজারল্যান্ডে।

আমি একটু ভরসা পেলাম। চারজনকে মোকাবিলা করতে হবে না। দুইজনকে করতে হবে।
বিটিভি কর্তৃপড়্গ এক কপি ফার্স্ট ফাইভ ইয়ার পস্ন্যান আমাকে দ্রম্নত পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। যত দূর মনে পড়ে, ওই বইটি ছিল ৫২৮ পৃষ্ঠার। মাত্র ৪৮ ঘন্টা সময়ে বইটি পড়ে উপস্থাপনের লাইনআপ করলাম এবং বইটি নিয়ে চলে গেলাম স্টুডিওতে। 
তখন দিনের বেলা।
যথা সময়ে স্টুডিওতে এলেন প্রফেসর রেহমান সোবহান ও ড. মোশাররফ হোসেন। সেই সময়ে অর্থনীতি বিষয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের সবচেয়ে বেশি কাছের লোক রূপে পরিচিত এই দুই ইকনমিস্টের প্রভাব ও মর্যাদা ছিল অনেক মন্ত্রীর চাইতে বেশি। ড. নুরম্নল ইসলাম, ড. আনিসুর রহমান, প্রফেসর রেহমান সোবহান ও ড. মোশাররফ হোসেনকে সম্মিলিতিভাবে বলা হতো শেখ মুজিবুর রহমানের এ-টিম। এই চারজনই পূজিবাদি পশ্চিমে শিড়্গিত হলেও সভিয়েট ইউনিয়নের পস্ন্যান ও ইকনমির প্রতি ঝুকে পড়েছিলেন যেটা ছিল কেন্দ্রীয় সরকার ও কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দ্বারা শক্তভাবে নিয়ন্ত্রিত। অর্থাত্, এই চার ইকনমিস্ট মুক্তবাজার অর্থনীতিতে পড়াশোনা করলেও গ্রহণ করেছিলেন বন্ধ অর্থনীতি এবং তাদের কর্মকান্ড হয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমানের এক দলীয় শাসনের পরিপূরক। বলা যায় এই চারজনের ইচ্ছা ছিল সত্ ও লড়্গ্য ছিল উচু। কিন্তু তাদের পন্থা ছিল অকার্যকর ও গন্ত্মব্য ছিল ভ্রান্ত্ম।

তাদের প্রনীত ফার্স্ট ফাইভ ইয়ার পস্ন্যান পড়ে আমি সেই সিদ্ধান্ত্মে এসেছিলাম। বিটিভি কর্তৃপড়্গ জানিয়েছিলেন পঞ্চ বার্ষিকী পরিকল্পনা বিষয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রফেসর রেহমান সোবহান ও ড. মোশাররফ হোসেন থাকবেন। তারপর ধারাবাহিকভাবে পঞ্চ বার্ষিকী পরিকল্পনার বিভিন্ন খাত, যেমন, শিড়্গা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা, কৃষি, শিল্প, ইত্যাদি বিষয়ে প্রতি সপ্তাহে অন্ত্মত একটি করে অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হবে। এবং সেসব অনুষ্ঠান আমাকেই উপস্থাপন করতে হবে।

এই গুরম্নভার দায়িত্বটি পাওয়ার আগে আমি জুন ১৯৭২-এ মাসিক সচিত্র সন্ধানীর জন্য "মানুষ তৈরির মেশিন" নামে একটি গল্প লিখেছিলাম যেখানে আমি বর্ধিত জনসংখ্যার চাপে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের কি দুর্দশা হতে পারে তার কাল্পনিক ছবি তুলে ধরেছিলাম।
বস্তুত বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা আমাকে তখন থেকে উদ্বেগের মধ্যে রেখেছিল। আমি মনে করেছিলাম বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক সব উন্নতি ব্যাহত হবে জনসংখ্যার অবাধ বৃদ্ধিতে।
এই দৃষ্টিভঙ্গিতে আমি বাংলাদেশের প্রথম পঞ্চ বার্ষিকী পরিকল্পনা পড়ে প্রচন্ড হতাশ হয়েছিলাম। আমি বুঝতে পারি এই বইয়ে খাতওয়ারি বিভিন্ন পস্ন্যানের সঙ্গে অবধারিত জনসংখ্যা বৃদ্ধির সংশিস্নষ্টতা কম। সুতরাং এই পস্ন্যানে চললে পাচ বছরের শেষে বাংলাদেশের বর্দ্ধিত জনসংখ্যার জন্য সুফল হবে কম। এত ঢাকঢোল পিটিয়ে পস্ন্যান প্রকাশ করলেও সেটা সরকারের জন্য বয়ে আনবে হতাশা ও ব্যর্থতা।
স্টুডিওতে রেকর্ডিংয়ের সময়ে যখন এই দু:সম্ভাবনাটি আমি তুলে ধরি তখন প্রফেসর রেহমান সোবহান ও ড. মোশাররফ হোসেন হকচকিয়ে যান। তারা উপস্থাপকের কাছ থেকে এ রকম বর্ণনা ও প্রশ্ন আশা করেননি। তারা কেউই জানতেন না, এক. সতের বছর আগে আমি বাংলাদেশে ইকনমিক্সের ছাত্র থাকার ফলে কিছুটা হলেও তাত্ত্বিক জ্ঞান ছিল। দুই. সতের বছর যাবত্ ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশে চার্টার্ড একাউন্টেম্লট রূপে বিভিন্ন শিল্প-ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার ফলে ইকনমি বিষয়ে বাসত্মব অভিজ্ঞতা ছিল এবং তিন. বর্ধিত জনসংখ্যা বিষয়ে উদ্বিগ্ন লেখক রূপে জনসংখ্যার বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত আমার কাছে ছিল।
পঞ্চ বার্ষিকী পরিকল্পনার অবাসত্মবতা এবং তার পরিণতিতে সম্ভাব্য ব্যর্থতা বিষয়ে প্রশ্নবাণে জর্জরিত রেহমান সোবহান-মোশাররফ জুটি সেদিন কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

রেকর্ডিং শেষে আমরা ডিআইটি ভবন থেকে বিদায় নিলাম।
সেদিনই সন্ধ্যায় বিটিভিতে বারবার প্রমো যেতে থাকল, "আগামী রাতে বাংলা খবরের পরপরই সম্প্রচারিত হবে বাংলাদেশের প্রথম পঞ্চ বার্ষিকী পরিকল্পনা বিষয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান"।
কিন্তু পরদিন বিটিভি খুলে হতাশ হলাম।
বাংলা খবরের পর সেই অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হলো না।
শুধু একটি টেলপ ছিল : অনিবার্য কারণে অনুষ্ঠানটি আজ রাতে সম্প্রচারিত না হয়ে, আগামী রাতে সম্প্রচারিত হবে।
আমি বুঝলাম অনুষ্ঠানটির সম্প্রচার নিয়ে বিটিভি কর্তৃপড়্গ সমস্যায় পড়েছেন। সরকারের শীর্ষ পর্যায় জেনেছেন অনুষ্ঠানে কি আলোচনা হয়েছে এবং তারা আগে নিজেরা অনুষ্ঠানটি দেখে সিদ্ধান্ত্ম নেবেন, এটি টেলিকাস্ট করা তাদের স্বার্থের অনুকূলে হবে কি না।
আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ পর্যায় এই অনুষ্ঠানটি দেখেছিলেন এবং সিদ্ধান্ত্মে এসেছিলেন এটি টেলিকাস্ট হলে ফার্স্ট ফাইভ ইয়ার পস্ন্যান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির প্রথম সনদ রূপে নয় - বরং অর্থনৈতিক বন্ধ্যাত্বের প্রথম পরিচয় রূপে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। সুতরাং অনুষ্ঠানটি টেলিকাস্ট করা যাবে না। 
পরদিন টিভিতে বাংলা খবরের পর ছোট একটি টেলপে জানিয়ে দেওয়া হলো অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হবে না।
আমি অনুমান করতে পেরেছিলাম আমার উপস্থাপিত এই অনুষ্ঠান বিষয়ে বিটিভি কর্তৃপড়্গকে কি জবাবদিহিতা করতে হয়েছিল সরকারের কাছে। তাই আমি কখনোই বিটিভি কর্তৃপড়্গকে জিজ্ঞাসা করিনি কেন অনুষ্ঠানটি নিষিদ্ধ হয়ে গেল।
এটিই ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নিষিদ্ধ টিভি অনুষ্ঠান!
এরপর আর কখনই কোনো আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমাকে বিটিভিতে কোনো অনুষ্ঠানে ডাকা হয়নি।

ফাস্ট ফরোয়ার্ড।
সেই ঘটনার ৪১ বছর পরে এখন ২০১৪ সালের আওয়ামী লীগ সরকার একটি সম্প্রচার নীতিমালা তৈরি করে অতীতের সেই মানসিকতার নতুন এবং স্থায়ী প্রতিফলন ঘটাতে চাইছে।
গত কয়েকদিন যাবত্ এই প্রসত্মাবিত সম্প্রচার নীতিমালার বিরোধিতা করে টক শোর কিছু বক্তা তাদের মত প্রকাশ করেছেন, সেমিনার ও রাউন্ড টেবিল কনফারেন্সে অংশগ্রহণকারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল বিড়্গোভ করেছে।
এসবের ফলে আওয়ামী ঘরানার যে গুটিকয়েক সত্ সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী আছেন তারা বিপাকে পড়ে গিয়েছেন। তাদের মনে পড়ে যাচ্ছে শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হবার মাত্র দুই মাস আগে ১৬ জুন ১৯৭৫-এ বাংলাদেশ সরকারের সংবাদপত্র অর্ডিনান্স ঘোষিত হয়েছিল যার ফলে স্বাধীন বাংলাদেশে সংবাদপত্রে স্বাধীন মত প্রকাশের কন্ঠ রোধ করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে সংবাদপত্রের কালো দিবস রূপে চিহ্নিত হয়েছিল ১৬ জুন।
আওয়ামী ঘরানার এই বিপদগ্রসত্ম সাংবাদিক গোষ্ঠি (মাইনরিটি) এবং আওয়ামী ঘরানার নির্বিকার ও প্রসত্মাবিত সম্প্রচার নীতিমালা সমর্থনকারী (মেজরিটি) সবার সাহায্যার্থে নিচে সম্প্রচার নীতিমালা কেন দেশে চালু হওয়া উচিত (আওয়ামী দৃষ্টিকোন থেকে) তার দশটি কারণ দেওয়া হলো :

১ গান
সরকারি এবং সকল বেসরকারি টিভিতে সম্প্রচারিত হচ্ছে দেশের আইন শৃঙ্খলা বিপন্নকারী গীতিকারদের বিভিন্ন গান। যেমন, কাজী নজরম্নল ইসলামের :

আমি দুর্বার
আমি ভেঙ্গে করি সব চুরমার
আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,
আমি দলে যাই যতো বন্ধন,
যতো নিয়ম কানুন শৃঙ্খল
আমি মানিনা কো কোনো আইন...
আমি হোম-শিখা, আমি সাগ্নিক জন্মদগ্নি
আমি যজ্ঞ, আমি পুরোহিত, আমি অগ্নি।

কাজী নজরম্নলের এই ধরনের বহু উস্কানিমূলক গান আছে। নি:সন্দেহে তিনিই ককটেল বোমা ও পেট্রল বোমার প্রথম ব্যবহারকারী ও তার প্রচারক। গত ২০১৩-তে বাংলা মোটরে বাসে অগ্নিকান্ডের জন্য মির্জা ফখরম্নল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যান্য যেসব বিএনপি নেতাদের বিরম্নদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে আশা করা যায়, এই নীতিমালা গৃহীত হলে, কাজী নজরম্নলের বিরম্নদ্ধেও মামলা (মরণোত্তর) করা সম্ভব হবে।
বস্তুত এই কবি কাজী নজরম্নল বিদ্রোহী কবি নন - তিনি অরিজিনাল বিএনপি কবি। এই বিএনপি কবিই লিখেছিলেন, "ছাত্রদলের গান", যার কয়েকটি লাইন হচ্ছে :

আমরা শক্তি আমরা বল
আমরা ছাত্রদল।
মোদের পায়ের তলায় মূর্ছে তুফান
উর্ধে বিমান ঝড়-বাদল
আমরা ছাত্রদল...
আমরা তাজা খুনে লাল করেছি
সরস্বতীর শ্বেত কমল।

বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ছিলেন পাকিসত্মানি গুপ্তচর এবং বিএনপি কবি কাজী নজরম্নল ছিলেন ছাত্রদলের স্বপ্নদ্রষ্টা। এই বিএনপি কবির সব গান টিভি রেডিওতে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং অচিরেই ঢাকায় কাজী নজরম্নল ইসলাম রোডের নাম বদলে ফেলতে হবে। ওই রাসত্মায় নজরম্নলের যে আবড়্গ মূর্তি বিএনপি নেতা মেয়র সাদেক হোসেন খোকার আমলে স্থাপিত হয়েছিল এবং এখন যেটি অবহেলিত ও অপরিষ্কার অবস্থায় আছে সেটি অবিলম্বে সরিয়ে ফেলতে হবে।
কাজী নজরম্নলের তুলনায় অনেক কম উস্কানিমূলক হলেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেরও সব গান নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তাকেও বাংলা মোটর বাসে অগ্নিকান্ড মামলায় আসামী (মরণোত্তর) করতে হবে। রবি ঠাকুরের গুরম্নতর অপরাধ প্রমাণের জন্য পুলিশ বিভাগের মি. বেনজির আহমদ যদি আদালতে মাত্র দুটি কবিতা পেশ করেন তাহলেই যথেষ্ট হবে। যেমন:

আগুনে হলো আগুনময়।
জয় আগুনের জয়।
অথবা
ওরে, আগুন আমার ভাই।
আমি তোমারই জয় গাই।

আওয়ামী লীগ এখন গণতন্ত্রের বদলে উন্নয়নের রাজনীতির পড়্গে বলছে। ক্লিয়ারলি, এসব গান দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ার বিরম্নদ্ধে। মানুষ দেশের উন্নতি চায়। তাই এই দুই অনিষ্টকারী কবিকে সব চ্যানেলে নিষিদ্ধ করতে হবে।
নো কাজী নজরম্নল।
নো রবি ঠাকুর।

এরপর সলিল চৌধুরীকেও টোটালি নিষিদ্ধ করতে হবে। এই ব্যক্তি আরো বিপজ্জনক। তার একটি গানের প্রথম তিনটি লাইন :

আমার প্রতিবাদের ভাষা
আমার প্রতিশোধের আগুন
জ্বলে দারম্নন দ্বিগুন ...

তাকেও বাংলা মোটর মামলায় আসামী (মরণোত্তর) করতে হবে।

সলিল চৌধুরী আরো বিপজ্জনক এই কারনে যে বিচারপতিদের বিচার করার কাজে তিনি আওয়ামী এমপিদের নয়, জনগনকে অগ্রনী হতে বলেছেন। তার একটি বিখ্যাত গান :

বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা
আজ জেগেছে সেই জনতা ...

আশা করি আওয়ামী সরকারের এটর্নি জেনারেল মি. মাহবুবে আলম অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন। ইতিমধ্যে সব চ্যানেলে সলিল সঙ্গীতও নিষিদ্ধ করতে হবে। আফটার অল, বিচারপতিদের বিচার আওয়ামী এমপিদেরই তো করতে হবে। সে রকমই আইনই তো হতে চলেছে।
নজরম্নল-রবি-সলিলই শুধু নয়। দেশের বর্তমান স্থিতিশীল পরিস্থিতিকে স্থায়ী করার জন্য শুধু একটি গানই টিভি-রেডিওতে প্রচার করাই কাম্য। সেটি হলো গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা :

শোনো একটি মুজিবুরের কন্ঠ থেকে
লড়্গ মুজিবুরের কন্ঠস্বরের ধ্বনি
আকাশে বাতাসে ওঠে রণি
বাংলাদেশ, আমার বাংলাদেশ।

কেউ কেউ হয়তো প্রতিবাদ করতে পারেন, শুধু একটি মাত্র গান দিয়েই টিভি চ্যানেলগুলো কি চলতে পারে? শুধু একটি গানেই কি শ্রোতারা সন্তুষ্ট থাকবে?
উত্তর : হ্যা, থাকবে। কারণ বাংলাদেশের মানুষ শুধু একটি বক্তৃতা ৭ মার্চের, অবিরাম প্রচারে সন্তুষ্ট থেকেছে।

২ নাটক
নাটকের ইংরেজি প্রতিশব্দ ড্রামা শব্দটির উত্পত্তি হয়েছে একটি গৃক শব্দ থেকে যার মানে একশন। সুতরাং সব নাটকই টিভি চ্যানেল থেকে বাদ দিতে হবে। একশন মানে কর্মসুচি। আর কর্মসুচি বলতেই সাধারণ মানুষ বোঝে বিরোধী দলগুলোর কর্মসুচি। তাছাড়া, বিরোধী দল সমর্থক বা সহানুভূতি সম্পন্ন নাট্যকাররা নাটকের মাধ্যমে বিরোধীদের কর্মসুচি ঘোষনা করতে পারে। সেই ঝুকি কিছুতেই নেওয়া উচিত হবে না। তারা প্রধানমন্ত্রীকে শেক্সপিয়ারের ড়্গমতা লোভী, রক্ত পিপাসু, ডাইনি রানি লেডি ম্যাকবেথ-এর মতো চিত্রিত করতে পারে। "রং হেডেড" নয় - যে কোনো সুস্থ মসিত্মস্কের আওয়ামী প্রধানমন্ত্রীর উচিত হবে এই সম্ভাবনা অঙ্কুরেই বিনাশ করা। সুতরাং বাংলাদেশি নাট্যকারদের সব নাটক নিষিদ্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশে এখন বছরে প্রায় ১৬,০০০ ঘন্টা নাটকের প্রয়োজন। তাহলে টিভি চ্যানেলগুলো চলবে কি করে?
উত্তর : প্রসত্মাবিত সম্প্রচার নীতিমালায় ইনডিয়ান সব টিভি সিরিয়াল বাংলাদেশি সব চ্যানেলে বাধ্যতামূলকভাবে দেখাতে হবে। কেউ ইনডিয়ান টিভি চ্যানেলের সমালোচনা করলে তাকে জেল দন্ড দেওয়ার বিধান থাকতে হবে। এই পদড়্গেপে একদিকে প্রতিবেশি দেশ ইনডিয়ার সঙ্গে যেমন বাংলাদেশের সম্পর্ক কনডেন্সড মিল্কের চাইতেও ঘন হবে তেমনি বাংলাদেশের হাউজওয়াইফরা দ্রম্নত শিখবেন, কি করে আড়ি পেতে কথা শুনতে হয়, সংসারে ষড়যন্ত্র করতে হয়, চব্বিশ ঘন্টা তিনশ পয়ষট্টি দিনের কখনোই সাংসারিক কোনো কাজকর্ম না করে বেসিক ব্রাইট কালারের শাড়ি বস্নাউজ পরে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকতে হয় এবং কিভাবে পূজা-অর্চনা করতে হয়।

৩ খবর
পাবলিকের মনে একটা ধারনা আছে যে খবরে সত্য কথা বলতে হয়। খবর সত্য বলে।
এই ধারনা সম্পূর্ণ ভুল।
খবরে মিথ্যা বলতে হবে। উন্নয়ন বাড়িয়ে বলতে হবে। দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা কম বলতে হবে। লাশ গুম করার মতো খবরও গুম করতে হবে। এ বিষয়ে সম্পূর্ণ নির্লজ্জ বা টোটালি শেইমলেস হতে হবে। আওয়ামী লীগের মিথ্যা বলার কালচার টিভির সব চ্যানেলে অকুতোভয়ে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর সেজন্যই ভবিষ্যতে কাটাতারে কিশোরী ফেলানির লাশের ছবি অথবা গোপনে আশুগঞ্জ-আখাউড়া দিয়ে ইনডিয়াকে ফৃ ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার মতো কোনো খবর সম্প্রচার করা যাবে না। গোপালিশ বাহিনী যে বিরোধীদের নির্মম নির্যাতন করছে সেই ছবি দেখানো যাবে না। খবর মানেই হতে হবে আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্যের সব খবর। খবর মানেই হতে হবে ক্রন্দনরত নেতা-নেত্রীর দড়্গতার খবর। সেটা আনন্দাশ্রম্ন নাকি কুম্ভীরাশ্রম্ন সেই বিতর্কে যাওয়া যাবে না।


৪ টক শো
আলো-স্টার প্রণীত এবং মইন-ফখরম্ন প্রতিষ্ঠিত ওয়ান-ইলেভেন সামরিক সরকার বিদায় নিয়ে আজকের আওয়ামী লীগ সরকারকে ড়্গমতায় আনার পেছনে ২০০৭-২০০৮-এর বিভিন্ন টক শোর উপস্থাপক ও বক্তাদের বিশাল অবদান ছিল। এদের মধ্যে উপস্থাপক মতিউর রহমান চৌধুরী, মোসত্মফা ফিরোজ, গোলাম মোর্তজা ও জিলস্নুর রহমান এবং বক্তা নুরম্নল কবীর, মাহফুজউলস্নাহ, আসিফ নজরম্নল, আসাফউদ্দৌলস্নাহ প্রমুখের নির্ভীক মন্ত্মব্যসমূহ মইন-ফখরম্নর অসম্মানজ্জনক বিদায় ও নির্বাসনের সহায়ক ছিল। কিন্তু এখন এদের ভূমিকা অস্বীকার করতে হবে। কোনো টকশোর প্রতি কোনো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হবে দুর্বলতার পরিচায়ক। আওয়ামী লীগ একটি শক্ত, কঠিন, কঠোর দল। এই ইমেজ বজায় রাখতে হলে বর্তমান ফরমাটে টক শো আর রাখা চলবে না। পরিবর্তে আওয়ামী নেতা সুরঞ্জিত্ সেনগুপ্ত, আওয়ামী মন্ত্রী মহসিন আলী, আওয়ামী নেতা শামীম ওসমান (তিনি সম্প্রতি একাত্তর টিভিতে নারায়ণগঞ্জ মেয়র আইভি রহমান মোকাবেলায় সাফল্য দেখিয়েছেন) প্রমুখকে নিয়ে একটি স্থায়ী টক শো প্যানেল করতে হবে। আর উপস্থাপকের মুলা ঝুলিয়ে দিতে হবে সব টিভি চ্যানেলের নিউজ হেড এবং সব পত্রিকার সম্পাদকদের সামনে। এরা সবাই মিলে ১০০% নির্ভেজাল আওয়ামী শো করতে পারবেন।

৫ ধর্মীয় অনুষ্ঠান
সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশের প্রায় ৮৫% মানুষ মুসলমান এবং এদের কেউ কৃশ্চিয়ান হতে চান না। আবার কেউ হিন্দু হতে চাইলে সেটা হিন্দু ধর্মে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে সব টিভি চ্যানেলের অধিকাংশ ধর্মীয় অনুষ্ঠানে শুধু দাড়ি-টুপিওয়ালা বক্তাদের দেখা যায়। একটি ধর্মনিরপেড়্গ বা সেকুলার রাষ্ট্রে বিম্বাসী দল আওয়ামী লীগের জন্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এসব ইসলাম প্রচারকদের মধ্যে ছদ্মবেশে হেফাজতিরা ঢুকে পড়তে পারে। এই সম্ভাবনা সমূলে ধ্বংস করতে হবে। তার মানে এই নয় যে, ধর্মীয় অনুষ্ঠান বাদ দিতে হবে। ধর্মীয় অনুষ্ঠান থাকবে কিন্তু সেসব সেকুলার করতে হবে।
কিছু টিভি চ্যানেল অলরেডি এই বিষয়টি বুঝতে পেরে সময়োচিত পদড়্গেপ নিয়েছে। যেমন : এবারের ঈদ-উল-ফিতরের ঈদ অনুষ্ঠান মালায় বাংলাভিশনের একটি অনুষ্ঠানে পূজার নাচ ছিল। কিছুকাল আগে দৈনিক ইত্তেফাক বিশেষ পুজা সংখ্যা প্রকাশ করেছিল। এসব সময়োপযোগী প্রগতির চিহ্ন। এসব ইনডিয়ার নতুন নির্বাচিত হিন্দুত্ববাদি নরেন্দ্র মোদির সরকারের সঙ্গে বন্ধুত্ব সম্পর্ক স্থাপনে সহায়ক হবে। তবে সংকীর্ণমনা মুসলিম দর্শকরা বলবেন, জন্মাষ্টমীর কোনো বিশেষ অনুষ্ঠানে "রমজানের ওই রোজার শেষে এল খুশির ঈদ" জাতীয় কোনো গান শোনা যায়নি।
এটা উচিত হয়নি।
বাংলাদেশকে সেকুলারিজমের অগ্রগতির জন্য প্রতিটি (মুসলিম, হিন্দু, কৃশ্চিয়ান ও বৌদ্ধ) ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রতিটি ধর্মেরই বক্তা রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

৬ অপরাধ
সবাই জানে বাংলাদেশে খুন, গুম, ডাকাতি, রাহাজানি, ধর্ষণ, ছিনতাই প্রভৃতির সংখ্যা গত সাড়ে পাচ বছরে খুব কমে গিয়েছে। "অধিকার" নামে একটি সংস্থা (যার প্রধান কর্মকর্তা আদিলুর রহমান খানকে উচিত হেনসত্মা করা হয়েছে) অনির্ভরযোগ্য খবর প্রকাশ করতো। কিছু দৈনিক পত্রিকাও শুধু মাত্র সেনসেশনালিজমের জন্য বাংলাদেশে অপরাধের মাত্রা বাড়িয়ে বলা হয়। এটা সবচেয়ে বড় অপরাধ।
সুতরাং ইলিয়াস আলী গুম, সাগর-রম্ননি হত্যা, ত্বকী হত্যা, নারায়গঞ্জের ৭ খুন, প্রভৃতি বিষয়ে তদন্ত্মের প্রবনতা বাদ দিতে হবে। বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষের মধ্যে বছরে ষোল জন খুন-গুম হতেই পারে। অন্য দেশেও হয়। সেটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করা উচিত হবে না।
তাই অপরাধ বিষয়ক সব অনুষ্ঠান বাদ দিতে হবে। বরং সেই সস্নটে দেখাতে হবে পদ্মায় পিনাক-৬ ডুবির পরে বাংলাদেশের বিভিন্ন বাহিনীর সাফল্য, রানা পস্নাজা বিধ্বসত্ম হবার পরে সাফল্য প্রচারের মতো। ক্রাইমওয়াচের পরিবর্তে টেলিকাস্ট করতে হবে সাকসেসওয়াচ।

৭ খেলাধুলা
একথা সবাই স্বীকার করতে বাধ্য যে খেলাধুলায়, বিশেষত আন্ত্মর্জাতিক ড়্গেত্রে বাংলাদেশের কোনো পারফরমেন্সই নেই। যদিও জনৈক আওয়ামী নেতা বলেছেন শিগগিরই বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড কাপে খেলবে তবুও আওয়ামী লীগের মধ্যে এখনো যারা কিছুটা ব্যালান্সড আছেন, তারা বোঝেন, এই স্বপ্ন সোনার বাংলার স্বপ্নের চাইতেও বেশি অসাধ্য ও অসম্ভব। বাংলাদেশকে আন্ত্মর্জাতিক ড়্গেত্রে, যেমন, অলিম্পিক, প্যারা-অলিম্পিক, কমনওয়েলথ গেমস, এশিয়ান গেমস প্রভৃতিতে বাচিয়ে রেখেছেন, প্রতিযোগীরা নয়, বিভিন্ন স্পোর্টস ফেডারেশনের কর্মকর্তারা, বিদেশের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাদের সংখ্যা হয় প্রতিযোগীদের বেশি। এরা সদর্পে বাংলাদেশের ফ্ল্যাগ নিয়ে মাঠে চক্কর দেন। বাংলাদেশ পরিণত হয় দর্শকের দেশে। তারা বলতে পারে ওয়ার্ল্ড কাপের ফাইনালে জার্মানি বিজয়ী হয়েছে - নাকি আর্জেনটিনা? তারা ফ্ল্যাগ ওড়ায় ব্রাজিল, ইটালি, স্পেন, জার্মানি ও আর্জেনটিনার। কিন্তু তারা বলতে পারেনা পরবর্তী ওয়াল্ড কাপে বাংলাদেশ কোয়ালিফাইং রাউন্ডে কোন দেশের বিরম্নদ্ধে খেলবে? তারা জানে না এই মাসেই ফিফার ওয়ার্ল্ড র্যাংকিংয়ে ২০৯টি সদস্য দেশের মধ্যে বাংলাদেশ আরো সাত ধাপ নিচে নেমে গিয়েছে। দড়্গিণ এশিয়াতে বাংলাদেশ এখন আফগানিসত্মান (শীর্ষ ১২৯), মালদ্বীপ (১৪৫), ইনডিয়া (১৫০), মায়ানমার (১৬০), পাকিসত্মান (১৬৪), ও নেপালের (১৬৬) নিচে। বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৭০ নাম্বারে।
কৃকেটে যেটুকু সম্মান বাংলাদেশ অর্জন করেছিল তাও হারিয়েছে সাকিব ও আশরাফুলের কল্যাণে।
কিন্তু সবচাইতে বিপজ্জনক সংবাদটি হচ্ছে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ গেমসে যে একটি মাত্র মেডাল বাংলাদেশ পেয়েছে সেটি হচ্ছে শুটিংয়ে সিলভার মেডাল। আবদুলস্নাহ হেল বাকী এই মেডালটি পেয়েছেন।
কিন্তু এটা কিসের আলামত? কেন বাংলাদেশের প্রতিযোগীদের মধ্যে শুধু শুটাররাই ভালো করছেন? এই দৃষ্টান্ত্মে অনুপ্রানিত হয়ে বাংলাদেশিরা যদি শুধু শুটিংয়ের দিকেই ঝুকে পড়ে তাহলে আন্ত্মর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী মি. সজীব ওয়াজেদ জয়-এর ভবিষ্যদ্বানী বাসত্মবায়নে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারে। কলকাতা দি ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, তাকে এবং তার মাকে হত্যা না করা পর্যন্ত্ম এই দেশে ড়্গমতা হসত্মান্ত্মরিত হবে না। এবং সেই প্রচেষ্টা করলে অনেক রক্তপাত হবে। 
বাংলাদেশে এর আগে অনেক রক্ত ঝরেছে। সজীব ওয়াজেদ জয় সেই পথে উস্কানি দিলেও আর কেউ হয়তো এগোবেন না শুধু এই আন্ত্মর্জাতিকভাবে কৃতিত্ব অর্জনকারী শুটারস ছাড়া। কারণ, তারা মনে করতে পারেন, লক্ষ্য ভেদ করতে পারবেন।
এসব অলুড়্গনে কথা চিন্ত্মা বাদ দিতে হবে। খেলাধুলায় ব্যর্থ বাংলাদেশ টিভি চ্যানেলে সব স্পোর্টস প্রোগ্রাম বাদ দিতে হবে।
পরিবর্তে এই সস্নটে বাংলাদেশের স্মরণীয় সবগুলো মাসের ইতিহাস প্রচার করতে হবে। যেমন :
জানুয়ারি : হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের পাকিসত্মান থেকে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন।
ফেব্রম্নয়ারি : ভাষা আন্দোলনের মাস।
মার্চ : স্বাধীনতার মাস।
এপৃল : আওয়ামী লীগ কাউন্সিল অধিবেশনে (৮ এপৃল ১৯৭২) (বিশেষণ প্রযোজ্য) শেখ মুজিবুর রহমান দলীয় প্রধান নির্বাচিত।
মে : মে দিবসের মাস, যা আন্ত্মর্জাতিকভাবেও পালিত হয়।
জুন : জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, ধর্ম নিরপেড়্গতা ও গণতন্ত্র - এই চার মূলনীতি নিয়ে বাকশালের সংবিধান ঘোষণার (৬ জুন ১৯৭৫) মাস।
জুলাই : জাতির নাতি মি. সজীব ওয়াজেদ জয়-এর জন্ম (২৭ জুলাই ১৯৭১) মাস।
আগস্ট : শোকের মাস।
সেপ্টেম্বর : বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জন্ম (২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭) মাস।
অক্টোবর : (বিশেষণ প্রযোজ্য) শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি পুরস্কার প্রাপ্তি (১০ অক্টোবর ১৯৭২) মাস।
নভেম্বর : বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দ্বিতীয়বার আমেরিকা থেকে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের (৭ নভেম্বর ২০০৮) মাস।
ডিসেম্বর : বিজয়ের মাস।

৮ ব্যবসা বাণিজ্য শিল্প
বেসিক ব্যাংক বসে যাওয়া, সোনালি-অগ্রণী প্রভৃতি ব্যাংকে হাজার হাজার কোটি লোপাট হয়ে যাওয়া, শেয়ার বাজারে ১৫ লড়্গ বিনিয়োগকারী ও তাদের অন্ত্মত এক কোটি আত্মীয় স্বজনের নি:স্ব হওয়া, আওয়ামী পৃষ্ঠপোষিত সেনাপতি হারম্ননের অধীনে মালটি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ডেসটিনি জাতীয় ত্রিশের বেশি কম্পানি দ্বারা সাধারণ এবং অজ্ঞ মানুষের প্রতারিত হওয়ার খবর প্রভৃতি, বারবার সম্প্রচারিত হবার ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে নৈরাজ্য এসেছে এবং আওয়ামী সরকারের সদিচ্ছা বিষয়ে মানুষ সন্দেহ প্রবণ হয়েছে। এটা ঘোরতর অন্যায়। ১৪ বছরের মধ্যে এই বছরেই প্রথম বিদেশি রেমিটান্স কমে গিয়েছে। জনশক্তি রফতানি এবং আবাসন শিল্পে ধ্বস নেমেছে। দেশে বেকার মানুষের সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। এগুলো খুব নেতিবাচক ঘটনা। সুতরাং ব্যবসা বানিজ্য শিল্প সস্নটে এসব সংবাদ পরিবেশন চলবে না। বরং বলতে হবে, রাজনৈতিক বিবেচনায় আওয়ামী লীগ সরকার যেসব ব্যাংক এবং ইউনিভার্সিটিকে চালুর অনুমতি দিয়েছে তাদের সাফল্য গাথা। বলতে হবে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, চাষীর ছেলে আতিউর রহমান পেরেছেন কারেন্সি নোট ও কয়েনে (বিশেষণ প্রযোজ্য) শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ছাপতে।

৯ রান্না
ইদানিং বিভিন্ন চ্যানেলে রন্ধন প্রণালী বিষয়ক অনুষ্ঠান প্রচারিত হচ্ছে। আরো দেখা যাচ্ছে সাধারণত এসব অনুষ্ঠানের উপস্থাপিকা হন স্থূলাঙ্গী। যেমন, চ্যানেল আইয়ের রান্না বিষয়ক উপস্থাপিকা। যদিও চ্যানেল আই আওয়ামী বান্ধব তবুও তারা কেন আওয়ামী লগের সূ্থলাঙ্গী নেত্রীদের এই অনুষ্ঠানে চান্স দেয়নি। অবেসিটি ভালো নয়- এই যুক্তিতে টিভি চ্যানেলগুলো যদি বিএনপি নেত্রী সিস্নম খালেদা জিয়াকে দিয়ে রান্নার অনুষ্ঠানগুলো প্রচার করায়, তাহলে দেশের তাবত্ নারীকুল বিএনপির দিকে ঝুকে পড়তে পারে। এই সম্ভাবনা বিনাশ করতে হবে। সম্প্রচার নীতিমালায় সিস্নম নারীদের রান্নার অনুষ্ঠানে ড্রপ করার নির্দেশ দিতে হবে। পরিবর্তে আওয়ামী লীগের স্থুলাঙ্গীদের নিতে হবে।

১০ রূপচর্চা ও ফ্যাশন
ইউনিলিভার জাতীয় কম্পানিগুলো ফেয়ার অ্যান্ড লাভলির অবিরাম বিজ্ঞাপন দিয়ে বাংলাদেশে এক নিন্দনীয় বৈষম্য এবং অসহ্য অগণতান্ত্রিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। টিভি চ্যানেলের বিভিন্ন রূপচর্চা ও ফ্যাশনের অনুষ্ঠানে ফর্শাদেরই গুনগান করা হচ্ছে। ফর্শাদের এই জয়জয়কারের বড় বাহন হচ্ছে ইউনিলিভার। সম্প্রতি কিছু বাংলাদেশি টয়লেটৃজ ম্যানুফ্যাকচারারও এদিকে ঝুকে পড়েছে।
এর ফলে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বিরাট অ্যাডভানটেজ পাচ্ছেন। এটা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। আশার বিষয় যে অন্ত্মত এক ব্যক্তি এই ফর্শা ম্যানিয়াতে ভুগছেন না। মি. মোসত্মফা সারওয়ার ফারম্নকী নির্মিত একটি বিজ্ঞপনী জিংগলে এখন বলা হচ্ছে ফর্শা মানেই সুন্দরী নয়। এই সত্ উচ্চারনের জন্য আগামী বছরে যুগপত্ একুশে পদক ও স্বাধীনতা পদক মি. ফারম্নকী পেয়ে একটি নতুন রেকর্ড করতে পারেন।
বাংলাদেশ শ্যামাঙ্গিনী ও কৃষ্ণকায় নারীর দেশ। আওয়ামী লীগ তাদের ভোট চায়। সুতরাং রূপচর্চা ও ফ্যাশন অনুষ্ঠানগুলোর উপস্থাপিকাদের নতুন ভাবে চিন্ত্মা করতে হবে।
একই সময়ে শিফন শাড়ির (বিএনপি নেত্রীর পছন্দ) চাইতে জামদানি শাড়ি (আওয়ামী নেত্রীর পছন্দ) যে অধিকতর কাম্য, সেই কথাটিও বারবার বলতে হবে।
উপরোক্ত এই দশটি কারণ বাদেও আরো বহু কারনে আওয়ামী লীগের উচিত হবে সময় নষ্ট না করে সম্প্রচার নীতিমালা পাস করা। তবে বাংলাদেশের সব বিরোধী দল এবং জনগোষ্ঠির উচিত হবে শুধু একটি কারণে সম্প্রচার নীতিমালার বিরম্নদ্ধে দেশ জুড়ে সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তোলা। আর সেই কারণটি হলো :

১ সম্প্রচার নীতিমালা আইনে পরিণত হলে বাংলাদেশে কখনোই কোনো সরকার বিরোধী দল, জনগোষ্ঠি এবং ব্যক্তির মত প্রকাশের কোনো স্বাধীনতা থাকবে না, যার পরিণতিতে তাদের কারো কোনো অসিত্মত্বও থাকবে না।


১৮ আগস্ট ২০১৪

ভধপবনড়ড়শ.পড়স/ঝযধভশজবযসধহচত্বংবহঃং


__._,_.___

Posted by: Shahadat Hussaini <shahadathussaini@hotmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___