Banner Advertiser

Tuesday, August 26, 2014

[mukto-mona] আমাদের রাজনৈতিক আদর্শের চারটি স্তম্ভ - ওয়াহিদ নবি




বুধবার, ২৭ আগষ্ট ২০১৪, ১২ ভাদ্র ১৪২১
আমাদের রাজনৈতিক আদর্শের চারটি স্তম্ভ
ওয়াহিদ নবি
রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক আদর্শিক ভিত্তি থাকতেই হবে। রাজনৈতিক দলের মধ্যে পার্থক্য হবে আদর্শের পার্থক্য। রাজনৈতিক আলোচনার ভিত্তি হওয়া উচিত রাজনৈতিক আদর্শ। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় আমাদের দেশে সেটি হচ্ছে না। আমাদের দুটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে প্রধানত পারস্পরিক দোষারোপ, যার প্রধান বক্তব্য হচ্ছে দুর্নীতি ও যথেচ্ছাচার। দলীয় নেতাদের মুখে আদর্শের কথা না শোনায় দলীয় কর্মীরাও আদর্শের কথা বলে না এবং যার ফলে তারা কিছু শিখছে না রাজনীতি সম্বন্ধে। এর ফলশ্রুতিতে এমনকি ছাত্র রাজনীতিতে দেখতে পাচ্ছি ব্যবসায়িক প্রবণতা। এই প্রবণতা আমাদের পরিহার করতে হবে। বেরিয়ে আসতে হবে আদর্শহীনতার গাঢ় অন্ধকার থেকে। 
আমাদের রাজনৈতিক আদর্শের চারটি স্তম্ভ হচ্ছে (১) জাতীয়তাবাদ, (২) ধর্মনিরপেক্ষতা, (৩) সমাজতন্ত্র ও (৪) গণতন্ত্র। আমরা এই স্তম্ভগুলো সম্বন্ধে অতিসংক্ষেপে আলোচনা করব এই আশায় যে, এগুলো সম্বন্ধে বিস্তৃততর ও গভীরতর আলোচনা হবে।
জাতীয়তাবাদ 
১৮৮২ সালে ফরাসী দার্শনিক আর্নেস্টো রেনাঁ একটি মহামূল্যবান ভাষণ দেন জাতীয়তাবাদ সম্বন্ধে। জাতীয়তাবাদ সম্বন্ধে আলোচনা হলে রেনাঁর এই ভাষণের কথা কেউ না কেউ উল্লেখ করবেনই। অথচ ছাপার অক্ষরে এই ভাষণটি মাত্র ৭২ লাইন। রেনাঁ বলেছিলেন "অতীতে আমাদের পূর্বপুরুষরা যে বীরত্বপূর্ণ গৌরবগাথা সৃষ্টি করেছিলেন তাই হচ্ছে আমাদের জাতীয়তার ভিত্তি। বর্তমানে আমরা যখন অতীতের সেই গৌবের কথা স্মরণ করে সমষ্টিগতভাবে ভবিষ্যতে মহান কাজ করার সঙ্কল্প গ্রহণ করব তখন আমরা একটা প্রকৃত জাতি গড়ে তুলব।" তিনি আরও বলেছিলেন, ''অতীতের গৌরবের চেয়ে অতীতের শোক ও দুঃখ আমাদের কাছে বেশি মূল্যবান। কারণ দুঃখ আমাদের কর্তব্যবোধ জাগ্রত করে এবং একত্রে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে।'' একাত্তরে বাঙালী জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস আমাদের গৌরবগাথা। আমাদের মুক্তিবাহিনীর বীরত্ব, আমাদের মিত্র ভারতীয় বাহিনীর প্রায় ২০ হাজার সৈনিকের আত্মদান, রাশিয়ার মানুষের সর্বাত্মক সমর্থন-এসব আমাদের মানসনেত্রে চিরজাগরুক থাকবে। কিন্তু এর চেয়েও বড় ৩০ লাখ মানুষের আত্মদান, শতসহস্র নারীর সম্ভ্রম হারানো, অগণিত আহত মানুষের সীমিত জীবনযাপন-এগুলো আমাদের শোকগাথা। আমাদের গৌরবগাথা আর শোকগাথা আমাদের কর্তব্যবোধকে জাগরিত করুক। এই হোক আমাদের জাতীয়তার ভিত্তি। 
রবীন্দ্রনাথ তাঁর 'আত্মশক্তি' গ্রন্থের 'নেশন কি' প্রবন্ধে জাতি সম্বন্ধে আলোচনা করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে ইংরেজী 'নেশন' শব্দের কোন বাংলা প্রতিশব্দ নেই। তিনি বলেছেন যে ইংরেজী race ev caste শব্দগুলোর বাংলা প্রতিশব্দ হতে পারে 'জাতি'। এসব কথা চিন্তা করে তিনি 'নেশন' শব্দটিই ব্যবহার করেছেন। দেখা যাচ্ছে জাতীয়তাবাদ বিষয়টি বেশ জটিল। সেক্ষেত্রে ভুঁইফোঁড় কোন রাজনীতিবিদের দেয়া জাতীয়তাবাদের সংজ্ঞা আমরা যেন গ্রহণ না করি। রেনাঁ বলেছিলেন ''মানুষ তার গোত্র বা ভাষার দাস নয়, তার ধর্মেরও দাস নয়। একটি বিশাল মানবগোষ্ঠী যখন সুস্থ মস্তিষ্ক আর উষ্ণ হৃদয় নিয়ে একটি নৈতিক চেতনা গড়ে তোলে তখন একটা জাতি গড়ে ওঠে।'' 
রেনাঁ যে ধরনের জাতীয়তাবাদের কথা বলেছেন তাকে 'সিভিক জাতীয়তাবাদ' বলে বর্ণনা করা হয়। আর এক ধরনের জাতীয়তাবাদের কথা বর্ণনা করেছেন জার্মান চিন্তাবিদ জোহান গটফ্রিড হার্ডার। একই বংশোদ্ভূত মানুষকে নিয়ে গড়ে ওঠে এই ধরনের জাতি। ইচ্ছুক মানুষদের নিয়ে গড়ে ওঠে সিভিক ধরনের জাতি। জাতীয়তাবাদ হিসেবে সিভিক জাতীয়তাবাদ অপেক্ষাকৃত উদারপন্থী। অনেকে মনে করেন, একটি দেশের প্রয়োজন হয় একটি জাতির। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। কুর্দীরা একটা বিশাল জনগোষ্ঠী। এদের নিজের কোন দেশ নেই। এরা ইরাক, ইরান ও তুরস্কে বাস করে। এই জাতীয় জাতিকে 'ডায়াসুপারা' বলা হয়। কানাডা, বেলজিয়াম ও সুইজারল্যান্ডে একাধিক বংশোদ্ভূত জাতি বাস করে। লেবাননে মুসলিম ও খ্রীস্টানরা বাস করে। পৃথিবীতে এমন দেশ আর খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে একই বংশোদ্ভূত জাতি যাঁরা একই ভাষায় কথা বলেন এবং একই ধর্ম পালন করেন। 
মার্কিন লেখক বেনেডিক্ট এন্ডারসন তাঁর বিখ্যাত বই 'ইমাজিনড কমিউনিটি'তে লিখেছেন যে, জাতিগুলো আসলে কল্পিত। তিনি বলেছেন যে, একটি জাতির স্বল্পসংখ্যক মানুষকে পরস্পরকে চেনে। এন্ডারসন প্রশ্ন করেছেন, 'তবে সেই জাতির জন্য সে প্রাণ দিতে যায় কেন?' 
এন্ডারসন জাতিসত্তার জন্মের কথা আলোচনাকালে বলেছেন, জাতীয়তাবাদের জন্ম হয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে পশ্চিম ইউরোপে। এই সময় রাজার প্রতাপ কমে যায় এবং সেই সময় প্রভাব কমে যায় ধর্মভিত্তিক চিন্তাধারার। এর আগে সমাজ ছিল শ্রেণীবিভক্ত। রাজ্য ছিল রাজধানীভিত্তিক। সমস্ত ইউরোপে ধর্মের ভাষা ছিল লাতিন। এই 'পবিত্র ভাষার' মাধ্যমে ক্ষমতাবানরা অক্ষরজ্ঞানহীন প্রজাদের শাসন করত। আমাদের দেশের ইতিহাসের দিকে তাকালে একই চিত্র দেখা যায়। আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় ধর্মচর্চা নিষিদ্ধ ছিল। আমাদের মধ্যযুগের কবি সৈয়দ সুলতান, বদিউদ্দিন, আব্দুল হাকিম প্রমুখ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। 
ইউরোপে রেনেসাঁসের প্রভাবে মানুষ পার্থিবমনা হয়ে ওঠে। রাজা আর পাদ্রীরা প্রভাব হারিয়ে ফেলে। ছাপাখানা আবিষ্কার হওয়ায় বিভিন্ন ভাষায় বাইবেল প্রকাশিত হয়। মানুষ মাতৃভাষায় শিক্ষালাভের সুযোগ পেয়ে শিক্ষিত হয়ে ওঠে।
আমাদের নিজ দেশের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখি-এখানে একে একে এসেছে মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেনরা। ধর্মে ধর্মে যুদ্ধ হয়েছে। পালরা বাঙালী ছিল; কিন্তু তারা ছিল বিহারকেন্দ্রিক। যদিও গণতন্ত্রের ইতিহাসে বলা হয় যে, গোপাল প্রজাদের ইচ্ছায় রাজ্যশাসনভার গ্রহণ করছিলেন কিন্তু; তিনি রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। জেলের সন্তান দিব্যক-এর নেতৃত্বে প্রজারা বিদ্রোহ করেছিল।
*(অন্য তিনটি স্তম্ভ নিয়ে লেখক পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে আলোচনা করবেন)
লেখক : রয়্যাল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্টের ফেলো
প্রকাশ : বুধবার, ২৭ আগষ্ট ২০১৪, ১২ ভাদ্র ১৪২১

Also read:

উপ-সম্পাদকীয় | কালের কণ্ঠ

আমাদের একঘেয়েমি বোধটাও কি ভোঁতা হয়ে গেছে! 


http://www.kalerkantho.com/print-edition/sub-editorial/2014/08/26/121133







__._,_.___

Posted by: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___