Banner Advertiser

Monday, December 1, 2014

[mukto-mona] স্থিতিশীল সরকারে নীরব বিপ্লব বদলে যাচ্ছে গ্রাম




বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০১৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪২১

স্থিতিশীল সরকারে নীরব বিপ্লব বদলে যাচ্ছে গ্রাম
সমুদ্র হক
মানুষের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। বছর দশেক আগেও কেউ কেউ বলত শহুরে মধ্যবিত্ত ও গ্রামের মানুষরা নাকি ভাল নেই। মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছে। নুন আনতে পান্তা ফুরাচ্ছে। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি একেবারে লেজে গোবরে অবস্থা। বর্তমানে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। মানুষের সার্বিক অবস্থার বদল ঘটেছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। এখন আর কোন অভাব নেই। আশ্বিন কার্তিকের যে তীব্র অভাব (মঙ্গা হিসাবে অধিক পরিচিত) বলে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু হতো সেই অভাব এখন টেলিস্কোপেও খুঁজে পাওয়া যাবে না। যে গ্রাম নিয়ে এত কথা বলা হয় সেই গ্রামের পথে পা বাড়ালে দেখা যাবে ষাটের দশকের ছোট্ট শহরগুলো যেমন ছিল গ্রামের চিত্র প্রায় সেই রকম। পাকা সড়ক। বিদ্যুতায়িত ঘরবাড়ি। মধ্যম কৃষকের বাড়িতে কেবল সংযোগসহ রঙ্গিন টেলিভিশন, ফ্রিজ আছে। গৃহস্থঘরের ছেলেমেয়েদের কারও হাতে ল্যাপটপ, কারও হাতে ডেস্কটপ। মোবাইল ফোন তো প্রত্যেকের কাছে, স্মার্টফোন তরুণ-তরুণীদের হাতে। 
ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রের পাশাপাশি ধনী গৃহস্থরা নিজেদের ঘরেই মডেমে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। বর্তমানে গ্রামে কুঁড়েঘর সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না। ছোট কৃষক ইটের বাড়ি করার বাস্তব স্বপ্ন দেখে টিনের বাড়ি করেছে। মধ্যম সারির কৃষক আধাপাকা বাড়ি বানিয়েছে। বড় গৃহস্থদের এখন ইটের বাড়ি। কৃষকের বাইরের আঙিনায় (স্থানীয় ভাষায় খুলি) গোয়ালঘর নেই। সেসবের প্রয়োজনও নেই। কৃষির সকল কাজই হয় যন্ত্রে। বলদের হালের চাষ উঠেই গিয়েছে। এখন পাওয়ারটিলারে চাষ হয়। মধ্যম সারির কৃষক কেউ নিজে কেউ যৌথভাবে টিলার কিনে নিজেদের জমিতে হাল চাষ করার পর ক্ষুদ্র কৃষকের জমিতে ভাড়ায় চাষ করে দেয়। প্রতি বিঘায় তিনবার চাষের জন্য নেয়া হয় দেড়শ' থেকে দুইশ' টাকা। এতে সময়ও বাচে, খরচ কম। একটা ফসল থেকে আরেকটি ফসলে যেতে দেরি হয় না। সেচের ক্ষেত্রেও তাই। হালে বড় গৃহস্থরা বীজ ও চারা রোপণ করে যন্ত্রে। এই যন্ত্র ভাড়াও দেয়া হয়। ধান কাটার জন্য ভাড়ায় চালিত জায়েন্ট হারভেস্টার মেশিন মাঠে গিয়ে ধান কেটে মাড়াই করে বস্তায় ভরে গৃহস্থ ও কিষাণ বাড়ির আঙিনায় পৌঁছে দেয়। গ্রামের বধূরা ধান সিদ্ধ শুকান করে বস্তায় ভরে রাখে। ভ্রাম্যমাণ হাসকিং মেশিন বাড়ির উঠানে গিয়ে ধান ভেঙ্গে চাল করে দেয়। 
সেদিনের সেই ঢেঁকি এখন এ্যান্টিকসের খাতায়। এভাবে যন্ত্র কৃষি মাঠ পর্যায়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় কৃষক মজুররা নিজেদের পৈত্রিক জমিতে আবাদ করে অন্তত ঘরের চালে খাবার নিশ্চিত করে বাড়তি ফসলের দিকে যাচ্ছে। কৃষি প্রধান উত্তরাঞ্চলসহ দেশের প্রতিটি জায়গায় কৃষক এখন নিজেদের গরজে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকল ধরনের ফসল ফলাচ্ছে। আবাদি ভূমি, কেউ আর ফেলে রাখে না। এমন কি বসতভিটার আঙিনাতেও মাচাং ফেলে লাউ কুমরো ফলাচ্ছে। গ্রামে পাকা সড়ক হওয়ায় শহরের সঙ্গে সময় দূরত্ব অনেক কমেছে। একটা সময় কাঁচা সড়কের ধারে যে হাট-বাজার বসত সেখানে পাকা সড়কের মোড়ে শহরের ডিপার্টমেন্ট স্টোরের মতো ছোট দোকানে ফার্স্ট ফুড, কোল্ড ড্রিংক, আইসক্রিম, কসমেটিকস টিস্যু পেপার সবই মেলে। গ্রামীণ পাকা সড়কে বাসের পাশাপশি সিএনজি চালিত অটোরিকশা, ব্যাটারি চালিত যানবাহন চলে। 
কৃষক তার উৎপাদিত পণ্য হাট-বাজারে বিক্রির জন্য এখন আর গরুর গাড়ি ব্যবহার করে না। টিলারের সঙ্গে ট্রলিজুড়ে পণ্য বোঝাই করে নিয়ে যায়। একটা সময় কৃষি বলতে শুধু ধান, পাট ও গমকে বোঝান হতো। এখন মৌসুমভিত্তিক ধানের জাত তো আসছেই, বন্যা খরা শীত তথা প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবিত হচ্ছে। ধানের মধ্যে যাতে খাদ্যমান বেশি থাকে সেই জাতও উদ্ভাবিত হয়েছে। কোন আবাদ কোন কারণে মার খেলে কৃষক আর হাপিত্যেশ করে না। পরবর্তী আবাদে দ্রুত ঝাঁপিয়ে পড়ে। কৃষকের এখন একদণ্ড ফুরসত নেই। 
অপেক্ষাকৃত বড় কৃষক ফসল উৎপাদনের পাশাপশি পুকুরে মাছ চাষ, পোলট্রি ও ডেইরি ফার্ম হাঁস-মুরগি গরু-ছাগল পালন করছে। কৃষির খাতটি দিনে দিনে এতটাই সম্প্রসারিত হয়েছে যে, উৎপাদিত পণ্য রফতানির প্রক্রিয়া শুরু"হয়েছে। শাক-সবজি তো রফতানি তালিকায় উঠেছে অনেক আগেই, এখন ধানও সেই তালিকায় ওঠার পথে। সূত্র জানায় শীঘ্রই উদ্বৃত্ত ধান (চাল আকারে) শ্রীলঙ্কায় রফতানি শুরু"হবে। চাল উদ্বৃত্ত অঞ্চলের মধ্যে কৃষিপ্রধান উত্তরাঞ্চল এগিয়ে আছে। এক সূত্র জানায় দেশে যে পরিমাণ চাল উৎপাদন হয় তার অন্যতম বড় অংশ উৎপাদিত হয় উত্তরের ১৬ জেলায়। সবজি উৎপাদনে বড় ধরনের বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছে উত্তরাঞ্চল। একটা সময় আলু ও কলা আবাদের জন্য পূর্বাঞ্চলের সুখ্যাতি ছিল। 
এখন বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের দুইধারে নিত্যদিন সকালে মহাস্থানগড়, চন্ডিহারা, ফাঁসিতলা হয়ে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের কাছাকাছি যে কলার হাট বসে তা দেখে বলাবলি হয় এ যেন নানাজাতের কলার বড় মেলা। দেশের প্রতিটি এলাকা থেকে ট্রাকের পর ট্রাক এসে এই কলা কিনে নিয়ে যায়। বগুড়ার শিবগঞ্জ থেকে জয়পুরহাটের কালাই পর্যন্ত একইভাবে আঞ্চলিক মহাসড়কের ধারে হাটবারে যত আলু ওঠে দেখে মনে হবে আলুর পাহাড়।
উত্তরাঞ্চলের প্রতিটি এলাকায় কত সবজি ফলে তার প্রকৃত হিসাব মেলা কঠিন। এমনও হয় শীত মৌসুমে অনেক হাটে বেগুন, মুলা ও কপি কেজি দরের বদলে মণ (৪০ কেজি) হিসাবে বিক্রি হয়। মহাস্থান ও শিবগঞ্জের অনেক হাটে এইটা নিলে ওইটা ফ্রির মতো সবজি বিক্রি হতে দেখা যায়। একটা সময় উত্তরের লালমনিরহাট কুড়িগ্রাম নীলফামারী অঞ্চলে কচুঘেঁচু ছিল গরিব মানুষের খাদ্যের প্রতীক তা এখন উন্নত ভিটামিন সমৃদ্ধ সবজি হয়ে রাজধানী ও বড় শহরের তারকা খঁচিত হোটেলে এবং চীনা রেস্তোরাঁর মেন্যুতে ঠাঁই পেয়েছে। জয়পুরহাটের পাঁচবিবি ক্ষেতলাল আক্কেলপুর এলাকায় বিদেশে রফতানির লক্ষ্যে ওল কচুর আবাদ হচ্ছে। এক সূত্র জানায় উত্তরাঞ্চলের উৎপাদিত সবজি প্রতিদিন ট্রাকে লোড দিয়ে সাভার ও ঢাকায় পৌঁছে বিশেষ ধরনের হিমাগারে রেখে তা এয়ার কারগো বা ফ্রেইটে বিদেশে রফতানি হচ্ছে। 
ইউরোপ আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসীরা ফোনে নিকটজনের কাছে জানায় তারা বাংলাদেশের সকল ধরনের সবজি বিদেশ বিভূঁইতে পেয়ে দেশের খাবারের স্বাদ পাচ্ছে। বিদেশীদের কাছেও এসব সবজি জনপ্রিয় হয়েছে। তার প্রমাণ মেলে। যেমন মাস কয়েক আগে বগুড়ায় বিদেশী সংস্থার একটি অনুষ্ঠানে আসা ইউরোপের কয়েক নাগরিক খাবারের টেবিলে করলা ঢেঁড়শ ও পটলের ছবি দেখিয়ে এই খাবারের আশা প্রকাশ করলে ক্যাটিরিং সার্ভিসের লোকজন অবাক হয়ে যায়। বিদেশীরা জানায় এসব খাবার দিনে দিনে জনপ্রিয় হচ্ছে। এই বিষয়ে এক রফতানিকারক বললেন, বিদেশের বাজারে এত সবজি যাবে আগে ভাবনাতেও পারিনি। এই খাত থেকেও এখন দেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ হচ্ছে। বর্তমানে গ্রামের হাট-বাজার পণ্যের বেচাকেনায় এতটাই এগিয়ে গিয়েছে যে, কৃষি অর্থনৈতিক বৃত্ত ফুলে ফেঁপে বাড়ছেই। গ্রামের কৃষকের ঘরে স্বাচ্ছন্দ্য এসেছে। কৃষির অগ্রযাত্রার সঙ্গে আরও দুইটি অর্থনৈতিক সম্পূরক ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে নীরবে নিভৃতে। 
বলা যায় কৃষি বিপ্লবের সঙ্গে এই দুই বিপ্লব অর্থনীতির মেরুদ- আরও শক্ত করেছে। ১. গার্মেন্ট ২. বিদেশী রেমিট্যান্সবেশ কিছুদিন আগেও গার্মেন্ট শিল্প প্রসারের কথা অনেকেই ভাবেনি। সরকারী ও বেসরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এবং বিদেশীদের আকৃষ্ট করলে কত বড় জাদু দেখানো যায় বাংলাদেশ তা দেখিয়ে দিয়েছে গার্মেন্ট শিল্পকে সমৃদ্ধ করে। এই শিল্পে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে বাংলার নারী। তারা দেখিয়ে দিয়েছে কিষাণ ঘরে থেকে যেভাবে ফসল ফলায় সেলাই মেশিনে বসেও একইভাবে পোশাক বানিয়ে তাক লাগিয়ে দেয়। ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে এখন মেড ইন বাংলাদেশ লেখা পোশাক দেশকে মর্যাদার আসনে বসিয়েছে। 
রফতানির এই অর্থে সেন্ট্রাল ব্যাংকের (বাংলাদেশ ব্যাংক) বৈদেশিক মুদ্রার ভা-ার তড়তড়িয়ে বেড়ে গিয়েছে। এক হিসাবে বলা হয় ফরেন কারেন্সির রিজার্ভের পরিমাণ তিন বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকবে শীঘ্রই। বৈদেশিক মুদ্রার ভা-ার বাড়াতে আরেকটি ক্ষেত্রের যে অবদান তা হলো এই দেশেরই চাষাভূষা কৃষকের সন্তানরা। দেশের প্রতিটি এলাকার গ্রামের তরুণরা মধ্যপ্রাচ্য দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ও ইউরোপের দেশে গিয়ে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে যে অর্থ রোজগার করে দেশে পাঠাচ্ছে তা দিয়েই ফুলে ফেঁপে উঠছে অর্থনৈতিক বলয়। গ্রামের এই তরুণরাই বিদেশ থেকে যে অর্থ পাঠাচ্ছে তা অবকাঠামো স্থাপনাকে উন্নত করছে। 
খড়ের ঘর পাল্টে ইটের বাড়ি হচ্ছে। কৃষি যন্ত্রপাতি কেনা হচ্ছে। গ্রামের এসব দালানে বাস করছে একদার কৃষক। যাদের বলা হতো কুড়েঘরে বাস করা মানুষ। এই কৃষকের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়াসহ জীবন মান বেড়ে গিয়েছে। এখন গ্রামের অনেক স্কুলেই শহরের মতো ড্রেস আছে। অনেক প্রাথমিক স্কুলে ছেলে শিক্ষার্থীর চেয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। যে গ্রামে পল্লী বিদ্যুত পৌঁছেনি সেখানে সোলার প্যানেল বসেছে। এমন কি সোলার প্যানেলে সেচপাম্প চলছে। একটা সময় গ্রামের বধূরা শুধু শাড়ি পরত। এখন তারাও কামিজ পায়জামা পরে। তরুণীরা জিনস টি-শার্ট পরে। জীবন মান উন্নত হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিশুদ্ধ পানি স্যানিটেশনসহ সব কিছুরই উন্নয়ন হয়েছে। প্রসূতি ও শিশু মৃত্যুর হার অনেক কমেছে। পুষ্টিমান বেড়েছে। মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ায় সাধারণ চিকিৎসার জন্য এখন আর শহরমুখী হতে হয় না। মাঠ পর্যায়ের এই সাফল্যের পেছনে যা কাজ করেছে তা হলো স্থিতিশীল সরকার। কি গ্রাম কি শহর কোন এলাকার মানুষ এখন হরতাল ও দেশ অচল হয়ে পড়া কোন কর্মসূচীর প্রতি সমর্থন দেয় না। যারা এসব কর্মসূচী দেয় তাদের প্রতি ন্যূনতম সমর্থন নেই সাধারণ মানুষের। সকলের কথা দেশ তো এগিয়েই যাচ্ছে! এক রিকশাচালক বললেনÑ আগে দিনেরাতে গতর খেটে যা মিলত তা দিয়ে কোন রকমে দিন গুজরান করা হতো। এখন একবেলা খেটে যা মেলে তাই দিয়ে ভালভাবে থাকা যায়। শরীর ঠিক থাকে। 
লেখক : সাংবাদিক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০১৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪২১




__._,_.___

Posted by: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___