মীজান রহমানের কিছু দিক ছিল যা হয়তো এমনকি তার কাছের মানুষেরাও অবহিত নন। তিনি সম্ভবত ছিলেন কানাডার প্রথম বাংলাদেশি অধ্যাপক। তিনি শুধু গণিতবিদই ছিলেন না, মুক্তিযুদ্ধের সময়টিতে সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠিত করেছিলেন, তাদের দিয়ে তহবিল গঠন করে কোলকাতায় বাংলাদেশের হাইকমিশনারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করতেন। প্রবাসে জনমত গঠন, বাংলাদেশে পাকিস্তানি গণহত্যার সঠিক চিত্র তুলে ধরে পশ্চিমা দেশগুলোর সরকারকে চিঠি পাঠানোসহ স্বাধীনতা যুদ্ধে পরোক্ষভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন তিনি। তাঁর লেখালেখিতে মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা ছিল স্পষ্ট। এমনকি মুক্তমনায় যে লেখাগুলো পোস্ট করতেন, সেগুলো তিনি শেষ করতেন 'মুক্তিসন' উল্লেখ করে।
তিনি ভালো রান্না করতেন। তবে সেটা যত না শখে, তার চেয়েও বেশি বোধ করি 'জীবনের প্রয়োজনে'। অনেকেই হয়তো জানেন না, মীজান রহমানের স্ত্রী মারা যাবার আগে দীর্ঘদিন পক্ষাঘাতগ্রস্ত অবস্থায় শয্যাশায়ী ছিলেন। মীজান রহমান তখন একা হাতে সংসার সামলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করিয়েছেন, বাসায় ফিরে এসে রান্না করেছেন, স্ত্রীকে খাইয়েছেন, তাঁর যাবতীয় পরিচর্যা করেছেন। শুধু তাই নয়, তাঁর ছোট দুই ছেলেকে একা হাতে মানুষ করেছেন। তাঁর দু'ছেলে, বাবু এবং রাজা, বলা যায় মীজান রহমানের হাতেই মানুষ হয়ে বাড়ির গণ্ডি ছেড়েছেন। এ ধরনের অনুপম দৃষ্টান্ত বাঙালি সমাজে খুব বেশি দেখা যায় না।
ছিলেন মনে-প্রাণে আমূল নারীবাদী। প্রথাগত জেন্ডার-রোলে বিশ্বাস ছিল না তাঁর। রান্না করা, বাচ্চা মানুষ করা যারা মেয়েদের কাজ মনে করতেন, মীজান রহমান কেবল তত্ত্বে নয়, ব্যবহারিক প্রয়োগেও এই সমস্ত আপ্তবাক্য ভুল প্রমাণ করে গেছেন। তাঁর সামনে নারীদের অপমানসূচক কোনো কথা বলা যেত না, তা যতই হাস্যরসে বলা হোক না কেন। ...
বিডিনিউজে আমার লেখা প্রবন্ধে বিস্তারিত ~
অধ্যাপক মীজান রহমান: এক নক্ষত্রের মহাপ্রয়াণ | মতামত-বিশ্লেষণ
বিডিনিউজে আমার লেখা প্রবন্ধে বিস্তারিত ~
অধ্যাপক মীজান রহমান: এক নক্ষত্রের মহাপ্রয়াণ | মতামত-বিশ্লেষণ
Avijit
__._,_.___