Banner Advertiser

Thursday, January 8, 2015

[mukto-mona] এসো ফিরে বীর গৌরবে ॥ ৮ জানুয়ারি বাহাত্তর - ২



এসো ফিরে বীর গৌরবে ॥ ৮ জানুয়ারি বাহাত্তর - 
তারিখ: ০৯/০১/২০১৫
  • জাফর ওয়াজেদ
(৮ জানুয়ারির পর)
তিনিই সেই বঙ্গবন্ধু যিনি, নির্জন সেলের সামনে কবর খুঁড়তে দেখেও ভয় পাননি; বরং পাক জেলারকে বলেছিলেন,"আমি বাঙালী, আমি মুসলমান, আমি মানুষ। মানুষ একবারই মরে, বারবার মরে না। আমি কখনোই আত্মসমর্পণ করব না। যদি তোমরা আমাকে মেরে ফেলো, মৃত্যুর পর আমার লাশটা আমার দেশে আমার মানুষদের কাছে পৌঁছাইয়া দিও।" ভয় বঙ্গবন্ধুকে কাবু করেনি কখনও। পরম প্রতাপশালী সাহস ছিল জীবনজুড়ে। ভয়কে তুচ্ছ করেছেন। আকাশবাণী কলকাতা থেকে ৮ জানুয়ারি বেজে উঠেছিল শ্যামল গুপ্তর লেখা, শ্যামল মিত্রর সুর দেয়া মান্নাদের কণ্ঠে গান, " সাড়ে সাতকোটি মানুষের ভাগ্যবিধাতা শেখ মুজিবুর তোমায় প্রণাম।" সে এক অভূতপূর্ব আনন্দ যেন বয়ে যাচ্ছিল তরুণ মনে, কিশোর মনেও। শরণার্থী জীবন ছেড়ে আসা স্বদেশের বিধ্বস্ত বাসভূমিতে দাঁড়িয়ে মা-বোনেরা প্রার্থনাই করেছেন বাঙালীর আরাধ্য পুরুষের শুভ কামনায়। 
॥ ৩ ॥
বঙ্গবন্ধুর মুক্তির খবর রটে গেল সারা বিশ্বে। আলোড়িত হয়েছিলেন বাংলাদেশের মানুষ ছাড়াও বহির্বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। আরো আলোড়িত হয়েছিলেন ৭৫ বছর বয়সী দিলীপ কুমার রায় ওরফে মন্টু। বঙ্গবন্ধুর প্রিয় গান 'ধন ধান্য পুষ্পভরা আমার এই বসুন্ধরা'র স্রষ্টা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের সুযোগ্য পুত্র। সুদর্শন শিক্ষিত আধুনিক বিলেতফেরত দিলীপ কুমার রায় পুরো বিশ শতক জুড়েই ছিলেন আলোচিত, আলোকিত এবং বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু ছিলেন তার বন্ধু স্থানীয় এবং গানের ভক্ত। মহাত্মা গান্ধী তাঁর গানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে গান নিয়ে 'বাহাস' তো এখন গ্রন্থিত। নজরুলের সঙ্গে ঢাকায় এসেছেন। রাণু সোমকে গান শিখিয়েছেন। কাজী মোতাহার হোসেনের সঙ্গেও ছিল ঘনিষ্ঠতা। একসময় শ্রী অরবিন্দের আশ্রমে প-িচেরিতে কাটিয়েছেন ১৯২৮ থেকে ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত। এরপর দেশের নানা জায়গায় গান করতেন, ভাষণ দান এবং ভ্রমণ করতেন, গান শেখাতেনও। ১৯৫৩ সালে ভারত থেকে যে শিল্পী প্রতিনিধি চীন গিয়েছিলেন, তাতে তিনিও ছিলেন। বঙ্গবন্ধু সে সময় চীন সফর করছিলেন। সেখানেই দিলীপ কুমার রায়সহ অন্যান্য বাঙালী শিল্পী সাহিত্যিকদের সঙ্গে পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা। বঙ্গবন্ধু তার গানের মুগ্ধ শ্রোতা ছিলেন। দিলীপ কুমার মন্টু হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছিলেন। তাঁর গান সম্পর্কে বলা হয়, "সেকি গান, সুরের মধ্যে যেন জাদুস্পর্শ ছিল। প্রত্যেক শ্রোতা সুরে সম্মোহিত হয়ে থাকতেন। তাঁকে সুভাষ বসু বলতেন, দেশ যদি হয় পরাধীন তো দেশের বন্ধন মুক্তিই প্রধান লক্ষ্য। মন্টু সেই লক্ষ্য থেকে নিজেকে চ্যুত করেননি। ভুবন বিখ্যাত সঙ্গীতবিশারদ দিলীপ কুমার রায় পিতা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গান ছাড়াও রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুল সঙ্গীত, ভজন, গীত, গজল, ঠুংরি গেয়েছেন। বহু শিল্পীকে দীক্ষা দিয়েছেন। বহুমুখী ও বহুমাত্রিক দিলীপ কুমার তার সময়কালে মাতিয়ে রেখেছিলেন সঙ্গীত জগতকে। মহাত্মা গান্ধীর ¯েœহ পেয়েছেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে বেশ সমঝদার হিসেবে মূল্যায়ন করতেন। নজরুলের সঙ্গেও ছিল সখ্য। একাত্তর সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সত্তরোর্ধ বয়সেও যুগিয়েছেন প্রেরণা। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে বিবৃতিও দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির সংবাদ শুনে তিনি যারপর নাই আলোড়িত হয়েছিলেন। নেতাজী সুভাস চন্দ্র বসু, কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ, মহাত্মা গান্ধী, নজরুল, জসীম উদ্দীনের সান্নিধ্যে বেড়ে ওঠা দিলীপ কুমারের কাছে একটি জাতির মুক্তিদাতা হিসেবে মূল্যায়িত হয়েছেন গভীর আলোড়ন থেকেই বঙ্গবন্ধু। আর সে দিনই তিনি লিখে ফেলেন এক গীতিকবিতা। পিতার সৃষ্ট বিখ্যাত গান, যা মুক্তিযুদ্ধকালে বাঙালীর প্রেরণা হয়ে বেজেছিল আবারও, সেই 'বঙ্গ আমার জননী আমার' গানটির আদলে লিখে ফেলেন গীতিকবিতাটি। পাঠিয়ে দেন সাপ্তাহিক দেশ সম্পাদক সাগরময় ঘোষকে। ১৫ জানুয়ারি ৭২ সংখ্যায় ছাপা হয় 'শ্রী দিলীপ কুমার রায়' এর লেখা কাব্য। শিরোনাম 'মহামতি মজবুর রহমান'। বঙ্গবন্ধুর নাম সে সময় কোথাও মুজিবুর, কোথাও মুজিবর, আবার কোথাও মজিবুর কিংবা মজবুর ছাপা হয়েছে। দিলীপ কুমার রায় সম্ভবত ফার্সী উচ্চারণকে প্রাধান্য দিয়েছেন। ত্রিশ লাইনের কবিতায় পাঁচটি স্তবক এবং ৬ লাইনের প্রতি স্তবকের শেষের দু'টি লাইনে পুনরাবৃত্তি ঘটিছে। কবিতার নিচে তারিখ '৮/১/৭২' দেয়া হয়েছে 'এবং বন্ধনীর মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে '(দ্বিজেন্দ্র লালের-'বঙ্গ আমার জননী আমার সুরে গেয়)" 
বঙ্গবন্ধু যখন বাহাত্তর সালের ফেব্রুয়ারিতে কলকাতা যান। দিলীপ কুমার রায় বাংলার মুকুটহীন সম্রাটের সঙ্গে সাক্ষাত করেন এবং গানটি গেয়ে শুনিয়েছিলেন।
৮ জানুয়ারি একাত্তর আলোড়িত করেছে আনন্দের উল্লাসে বাঙালী জাতিকে। দিলীপ কুমার গাইলেন "সোনার বাংলা তোমার কণ্ঠে ঝঙ্কৃত মধু মূর্ছনায় / তারি আহ্বানে মুক্তিবাহিনী অভিনন্দিত বাংলা মায়।/ এসো ফিরে বীর গৌরবে, করো বাংলা মায়ের কোলে বিরাজ/ "ভাই ভাই" এই সুর বাংলায় জাগাও তোমার সঙ্খে আজ।/ বাংলা মায়ের দীপ্ত দুলাল! মা গাইছে শোন; "আয় রে আয় !/ কালো বেদনার মেঘের বিদ্যুৎ ফোটে দেখ তোর আরাধনায়!'/ সেদিন সত্যি বিদ্যুৎ ফুটেছিল/বাঙলায়। লাখো লাখো মানুষের আত্মদান, বিধ্বস্ত নগর, জনপদ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহহীনতা, ধ্বংসের ভেতর আঁধার জেগে ওঠার আকুতির মধ্যে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির পথ চেয়ে থেকেছে বাঙালী। আর মুক্তির ঘোষণা ঝঙ্কার তুলেছিল সাড়ে সাতকোটি তন্ত্রীতে। দিলীপ কুমার রায়ের কবিতাটা এই ৪৩ বছর পর পাঠ করার মুহূর্তে সে সময়ের তারুণ্যের স্মৃতিতে নাড়া দেবে ৮ জানুয়ারি বাঙালীর মুক্তির বজ্রনিনাদ গর্জে ছিল। বাঙালী ফিরে পেয়েছিল তাঁর সাহসের আবরণ। কবিতাটি এখনও সতেজ করে।
৮ জানুয়ারি বাহাত্তর এসো ফিরে বীর গৌরবে- 
তারিখ: ০৮/০১/২০১৫
  • জাফর ওয়াজেদ
(বাকী অংশ আগামীকাল)







__._,_.___

Posted by: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___