ঢাকা : বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা এবং সেবামূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে একনিষ্ঠভাবে মনোনিবেশ করা ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান সম্মানীত হয়েছেন। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য 'সেন্ট্রাল ব্যাংকার অব দ্য ইয়ার- ২০১৫' পুরস্কার লাভ করার পর গতকাল মঙ্গলবার বাসস-এর সাথে আলাপকালে ড. আতিউর রহমান আশাবাদ প্রকাশ করেন যে, আগামী সাতবছরের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং এ লক্ষ্যে কাজ করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। যুক্তরাজ্যের লন্ডন ভিত্তিক পত্রিকা 'দ্য ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস'-এর সাময়িকী 'দ্য ব্যাংকার' গত সেমাবার এ পুরস্কার ঘোষণা করে। ড. আতিউর রহমান আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা অর্জনের ক্ষেত্রে সমন্বিত উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বলেন এটা আমার শুধু একার অর্জন নয়'।
এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ পুরস্কার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি উৎসর্গ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের মেয়াদে দারিদ্রের হার ৪০ শতাংশ থেকে ১৬ শতাংশে নেমে আসে এবং এসময়ে পাঁচ কোটি নিম্ন আয়ের মানুষের উপার্জন বৃদ্ধি পেয়ে তা মাঝারি আয়ের শ্রেণীতে উন্নীত হয়। ড. রহমান বলেন, দেশের অবস্থান নিম্ন আয়ের দেশের সারি থেকে উন্নীত করার ক্ষেত্রে এটা একটা যুগান্তকারী ঘটনা। দারিদ্রতার হার ২৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে আনার লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আর ড. আতিউর রহমান অনুসৃত মুদ্রা নীতির কারণে দারিদ্র বিমোচনের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির আকাঙ্খা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ড. আতিউর দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে বলেন, শুধুমাত্র ২০১৪ সালে দেশে সরকারি ও বেসরকারি খাতে প্রায় এককোটি চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ২৫ লাখ বাংলাদেশির চাকরি নিয়ে বিদেশে যাওয়ার বিষয়টিকেও তিনি গুরুত্ব দেন। ২০১৪ সালের শেষ নাগাদ বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। একই সময়ে মানুষের মাথাপিছু আয় ও কর্মসংস্থানও বাড়ছে। দেশে ক্রমান্বয়ে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির হার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলো একটি উন্নততর অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য প্রধান মাপকাঠি। তিনি বলেন, সকল ধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও ২০১২-১৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ছয় দশমিক ১২ শতাংশ ও মাথাপিছু আয় ছিল এক হাজার ৪৪ মার্কিন ডলার। এক বছর পরে ২০১৩- ১৪ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় এক হাজার ১৯০ মার্কিন ডলার।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২২ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার স্পর্শ করে। আর ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ রেমিট্যান্সের প্রবাহ ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়। গভর্নর বলেন, দক্ষিন এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের টাকা দৃঢ় অবস্থান বজায় রেখেছে, ডলারের বিপরীতে লক্ষ্যণীয়ভাবে শক্তিশালী ছিল। তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার জন্যই ২০১৫ সালে অবকাঠামো, রাজস্ব, সম্পদ স্থানান্তর এবং জ্বালানী খাতে যথেষ্ট নজর দেওয়া প্রয়োজন।
http://khabor.com/archives/40792
__._,_.___