Banner Advertiser

Wednesday, February 4, 2015

[mukto-mona] অভিধানের সবচেয়ে নোংরা শব্দ



                                         'অভিধানের সবচেয়ে নোংরা শব্দ'
ভোর হতে না হতেই চিৎকার চ্যাঁচামেচিতে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। চিৎকারটা খুব সম্ভব পাশের ফ্ল্যাট থেকেই আসছে। আকস্মিক বিপদের আশঙ্কায় বিছানা ছেড়ে ওয়াশরুমে না গিয়ে চলে গেলাম তাঁদের ফ্ল্যাটে।  এই ফ্ল্যাটে আমরা বিগত তিন বছর যাবৎ আছি। কিন্তু, পাশের ফ্ল্যাটে যাওয়ার দুর্ভাগ্য কখনো হয় নি। দরজাটা খোলা ছিল বলে কলিং বেলে চাপ দিতে হলো না। এক ভদ্রমহিলা পোশাকে গৃহকর্ত্রীর ধরণ আমাকে নিয়ে বসালেন তাঁদের ড্রয়িং রুমে,যার এক কোণে রয়েছে সবুজের মাঝে চাঁদ-তারা খচিত পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা। আমি ওদিকে তাকিয়ে রয়েছি দেখে ভদ্রমহিলা বলে উঠলেন, সামনে তো বিশ্বকাপ ক্রিকেট তাঁর পরিবারের সবাই পাকিস্তান সমর্থক বলে .....। তৎক্ষনাকই আমার মনটা বিষিয়ে উঠলো যেন,যদিও তা বাইরে প্রকাশ করলাম না। এবার আমি যে কারণে এসেছি অর্থাৎ এতো ভোরে চ্যাঁচামেচির কারণ জানতে চাইলে ভেতরের কক্ষ থেকে ভদ্রমহিলার স্বামী বের হয়ে যোগ করলেন, আজ তাদের অবরোধের ত্রিশ দিন অর্থাৎ এক মাস পূর্তি। তিনি আরও বলছিলেন, দরকার হয় তো সারা বছরই অবরোধ থাকবে তবুও প্রধানমন্ত্রীকে পদস্খলন না ঘটিয়ে...।তাদের চিৎকার, হৈ চৈ এর কারণ অনুমান করতে পেরে  আমার মনের ক্ষোভটা আরও বেড়ে যাওয়ায় ভদ্রমহিলার স্বামীর পুরো কথা না শুনেই অশালীন ভাবে বের হয়ে গেলাম। পরে বাসায় এসে জানতে পারি তিনি একজন স্থানীয় উচ্চপদস্থ বি এন পি নেতা।
অবরোধের যে এক মাস পূর্ণ হয়েছে তা সত্যি ভুলেই গিয়েছিলাম । কারণ আমাদের সময়টা বর্তমানে এমন হয়ে গেছে যে, বছরে কয়দিন অবরোধ-হরতাল তা হিশেব করার চেয়ে সংখ্যালঘু অর্থাৎ অবরোধ-হরতাল মুক্ত দিন হিশেব করাই সহজ। প্রতিদিন টিভির সুইচ অন করলেই শুধু পোড়া মানুষের আর্ত চিৎকার ব্যতীত আর কিছু চোখে পড়ে না । পত্রিকার পাতা খুললেও প্রতিদিনকার সেই একই চিত্র। আমার দেশের রাজনীতিবিদরা হয়ে উঠছেন এক একজন যমদূত । তাদের হিংস্র থাবায় শত মায়ের বুক খালি হয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। বাসে ছোট শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে মা নিজে অগ্নিদগ্ধ হয়ে কয়লায় রূপান্তরিত হচ্ছেন তবুও শিশুটিকে বাঁচানো যাচ্ছে না। আকাশে পেট্রোল বোমার ধোঁয়ায় জমেছে দূষিত কালো মেঘ, বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে পুড়া মানুষের গন্ধে। চিল-শকুনও তাঁদের গ্রাহ্য করছে না। শহরে অনেকেই এসেছেন গ্রাম থেকে, গার্মেন্টসে ছোট কারখানায় কাজ করে যাদের শাকান্ন জুটাতে হয়। কোন কোন দিন ছেলে-মেয়ে শীতের প্রকোপে অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসা খরচ জোগাতে কয়েকদিন থাকতে হয় অভুক্ত। কোন রাজনীতিবিদ তাঁদেরকে এক মুঠো অন্নের ব্যবস্থা কখনো করে দেন না। ফলে, যত অবরোধ-হরতাল হোক না কেন প্রাণের দায়ে তাকে ছুটতে হয় প্রাণের মায়া ত্যাগ করেই। প্রতিনিয়ত জীবনে যেন ঘটে চলেছে এক একটি যুদ্ধ। কর্মস্থল থেকে নিরাপদে বাসায় ফেরা সম্ভব হলে ক্ষণকালের জন্য তাঁরা যুদ্ধে জয়ী। যারা নিরাপদে ফিরতে পারছেন না তাঁরা হচ্ছেন শত্রুর কাছে পরাজিত। যারা বিজয়ী হচ্ছেন তাঁদেরকে আবার নতুন উদ্যোগে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। কে জানে, আজকের বিজয়ী পরবর্তী দিনের পরাজয়ী নয়? তাঁদের জীবন মাত্রই অনিশ্চয়তার অপর নাম। অনেকের কাছে আবার হয়ে উঠছে প্রতিদিনকার মরে মরে বাঁচার চেয়ে একবারে মরে যাওয়াই শ্রেয়!
রাজনীতিবিদ শব্দটা উচ্চারণ করতে গেলে এখন  মনে হয়, কোথায় জানি এক বিশাল অপূর্ণতা রয়ে গেলো। সে অপূর্ণতাটা বিশেষ কিছু নয় শব্দের পূর্বে একটি উপসর্গ মাত্র, 'অপ'। তাদের কাছে এই হীন রাজনীতির লক্ষ জানতে চাওয়া হলে তারা উচ্চস্বরে বলেন, "আমরা সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করি। মানবতাই আমাদের রাজনীতির একমাত্র উদ্দেশ্য" ।
কিন্তু এই কি আপনাদের সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতির নমুনা? সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি দূরেই  রাখুন,এখন আপনারা হয়ে উঠছেন সাধারণ মানুষের শত্রু। যমদূত হয়ে প্রতিদিন কেড়ে নিচ্ছেন সাধারণ মানুষেরই প্রাণ। দু-একটা গাড়ি পুড়িয়ে দিতে পারলে, কিছু মানুষকে বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করতে পারলে বিজয়ী বীরের আনন্দে ফেটে পড়ছেন। আজকের বিজয়ের অনুপ্রেরণায় পরবর্তী দিন ভয়ংকর থেকে আরও ভয়ংকর হয়ে উঠছেন। অবরোধের এই এক মাস পূর্তিতে হিশেব করে দেখেছেন কি, যতো সংখ্যক মানুষের প্রাণ আপনারা হরণ করলেন তাঁদের কয়জনই আপনাদের ঘৃণিত অপরাজনীতির সাথে জড়িত ছিল? অথচ আপনাদের ক্ষমতার লড়াইয়ের বলি হতে হল ঐ খেটে খাওয়া মানুষদের! দলের একজন আহত হলে উঁচু গলায় শোক প্রকাশ করেন । কিন্তু এই একমাসে আপনাদের মতো যমদূতদের কবলে পড়ে কতো শত মানুষ আহত-নিহত কিংবা স্বজন হারা হয়েছেন অন্তত তাঁদের সংখ্যা কি একবারের জন্য স্মরণ করেছেন?
আমার এস, এস, সি পরীক্ষার্থী ছোট ভাই বাল্যকাল থেকে স্বপ্ন দেখত বড় হয়ে সে একজন রাজনীতিবিদ হবে। কিন্তু এখন তার পরীক্ষাই ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে ঐ রাজনীতিবিদরাই। তার কাছে এখন সবচেয়ে আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে 'রাজনীতি'।
আজ এ কথা বলতে আমি দ্বিধাগ্রস্ত নই, এই মুহূর্তে বাংলা অভিধানের সবচেয়ে নোংরা শব্দটি হলো 'রাজনীতি', অথচ যা হওয়ার কথা ছিল অভিধানের সবচেয়ে পবিত্র শব্দ। জানি না কোন বঙ্গবন্ধু এই মুহূর্তে ইহজগতে থাকলে বলতেন কিনা যার যা আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থেকো, অপ-রাজনীতিবিদদের মোকাবেলা করতে হবে..।
 
লেখকঃ অলোক অর্ক


__._,_.___

Posted by: Rationalist Arc <rationalist.arc@outlook.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___