Banner Advertiser

Thursday, May 21, 2015

[mukto-mona] Please Read/ প্রকাশের জন্যে-





'গরুর হাট' প্রস্তাবটি মন্দ নয়!


ঢাকায় গরুর মাংসের দাম বেড়ে ৪শ টাকা কেজি। আমাদের সুফিযৰ রহমান ভাই বলতেন, ''গরুর মাংস নয়, গোশত। গরুর গোশত না বললে ঠিক মুসলমান মনে হয়না। মানে, মাংস হলো হিন্দু শব্দ, আর গোশত মুসলিম শব্দ!'' সুফিভাই একদা রেডিও বাংলাদেশের প্রযোজক ছিলেন, একটি পত্রিকা অফিসে খন্ডকালীন বসতেন। যাহোক, গোশত-ই হোক বা মাংস-ই হোক, ওটা গরু-যার দাম এখন বাড়তি। কারণ পত্রিকার খবর অনুযায়ী চোরাচালান নাকি কিছুটা কমেছে। গরুর চালান কমলে দাম বাড়বে সেটাই স্বাভাবিক।

গরু গৃহপালিত জন্তু। গরু রচনা ছোটবেলায় কে না পড়েছে! এক ছাত্র পরীক্ষার জন্যে মাত্র একটি রচনা মুখস্ত করে, সেটা 'নদী'। পরীক্ষায় আসে গরু রচনা। কি আর করা, ছাত্রটি গরুকে হাটিয়ে হাটিয়ে নদীর পাড় পর্যন্ত নিয়ে যায়, এবং তারপর 'নদী আপন বেগে----'। আমাদের দেশে গবেট ছাত্রটিকে 'গরু' ডাকা বা 'তোর্ মাথায় কি গোবর?' ইত্যাকার মুখরোচক শব্দ একদা বেশ প্রচলিত ছিলো। সংবাদের সন্তোষ গুপ্ত প্রায়শ: বলতেন, 'গরু দুধ দেয়; মা-ও দুধ দেয়; তাহলে মা গরু অথবা গরু মা' -এযুক্তি তো অচল। গরু রচনা এ লেখার প্রতিপাদ্য নয়। মহিষ বা শরৎ চন্দ্রের 'মহেশ'-ও আজকের আলোচ্য নয়, এ লেখার প্রতিপাদ্য 'ভারতীয় গরু'।

সাম্প্রতিক কালে গরু নিয়ে বেশ কিছু নিউজ এসেছে, প্রথমে ক'টি সংবাদের হেডলাইন দেখা যাক: সীমান্তে কড়াকড়িতে ভারতীয় গরু আসছে না/ সাতক্ষীরার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিনই আসছে বিপুল সংখ্যক ভারতীয় গরু বাংলাদেশে/ বাংলাদেশিদের গরুর মাংস খাওয়া ঠেকাবে ভারত!/  বাংলাদেশে গো-মাংস বন্ধে ভারতের ক্ষতি ৩১ হাজার কোটি/ ইউসুফপুর সীমান্তে গরু ব্যবসায়ী অপহৃত / সাপাহার সীমান্তে আবারো এক গরু ব্যবসায়ী বিএসএফ' হাতে আটক/ কাঁটাতারের বেড়া কেটে আসছে ভারতীয় গরু/ হাজার হাজার গরু আসছে প্রতিদিন/ ভারত থেকে গরু আসছে ব্যাপকহারে : খাটাল মালিকরা দিনে চাঁদা নিচ্ছে ৩৫ লাখ টাকা/ জীবনের ঝুকি থাকলেও থেমে নেই গরু চোরাচালান/ ইত্যাদি।

এরমধ্যে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথের বক্তব্য এবং আমাদের দেশে এক কৃষকের গরু নিয়ে যাবার ঘটনাটা একটু বিধৃত করা দরকার। রাজনাথের নিউজটি এরকম: 'গরু পাচার রোধে আরও কড়া মনোভাব নিল ভারত সরকার সীমান্ত দিয়ে যাতে একটি গরুও বাংলাদেশে যেতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-কে সীমান্ত বরাবর আরও কড়া নজরদারি চালানোর নির্দেশ দিলেন দেশটির গৃহমন্ত্রী রাজনাথ সিংউত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার আঙ্গরাইল সীমান্ত পরিদর্শনে এসে বিএসএফ জওয়ানদের উদ্যেশ্যে তিনি একথা বলেন' দ্বিতীয় ঘটনাটি বাংলাদেশের এবং তা এরকম: হিন্দু চাষী ক্ষেতে কীটনাশক দিয়েছেন। পাশের মুসলমান বাড়ীর ছাগল ওই বাগানে ঘাস খেয়ে মারা যায়। ক্ষতিপূরণ হিসাবে মুসলমান প্রতিবেশী এসে হিন্দুর গরুটি নিয়ে যায়। অর্থাৎ গরু নিয়ে মন্ত্রী থেকে সাধারণ মানুষ সবাই মাথা ঘামায়!

গরু চোরাচালান একটি বিরাট লাভজনক ব্যবসা। তাই ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হবেনা। তেমনি মুসলমানরা কি গরু খাওয়া ছেড়ে দেবে? তাও নয়। সুতরাং একটি আপোষ দরকার। একদা, সৈয়দ মুজতবা আলী হিন্দু-মুসলমান ঐক্যের স্বার্থে মুসলমানদের গরু খাওয়া ছেড়ে দেবার পরামর্শ দিয়ে এক প্রবন্ধ লিখেছিলেন। ক'দিন আগে ভারতের লোকসভার এমপি অভিজিত মুখার্জী আমেরিকায় এসেছিলেন। এক ঘরোয়া অনুষ্টানে এ সমস্যা সমাধানে তিনি সীমান্তে 'গরুর হাট'-এর কথা বললেন। তার কথা হলো, দুই দেশের সীমান্তে গরুর হাট বসলে দুই দেশই লাভবান হবে, চোরাচালান কমবে, বাংলাদেশ গরু পাবে, আর ভারতের লোকসান হবেনা। প্রস্তাবটি মন্দ নয় এবং সেদিন ওই ঘরোয়া সভায় কেউ এতে কোন অভিসন্ধি খুঁজে পাননি। দুই দেশের সরকার বিষয়টি  ভেবে দেখতে পারেন।  

মোদী ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশে যাতে গরু না যায় তত্জন্যে ওদেশে ​
অনেকে বেশ তোড়জোড় চালাচ্ছেন।
​শেষ পর্যন্ত ওটা কার্যকর হবেনা। কারণ চাহিদা থাকলে সরবরাহ হতে বাধ্য, তা পন্থা যাই হোকনা কেন। গরু নিয়ে বিপত্তি-ও কম নয়! ভারতে মফস্বল শহরে রাস্তার ওপর গরু চলাচল কোন বিরল ঘটনা নয়। গরু রফতানী না হলে, সংখ্যাধিক্যের কারণে হাইওয়েতে গরু চলবে বটে। ভারতে ২/৩টি রাজ্যে প্রকাশ্যে গরু কাটা নিষিদ্ধ। ওরা অবশ্য জানেনা, কোরবানির সময় হিন্দু বাড়ীর উঠানে গরু কাটার অন্যরকম একটি আনন্দ আছে। স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে স্বরস্বতী পূজার দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজের নার্সিং পূজা মন্ডপে গরু কাটার ঘটনার আমরাও সাক্ষী ছিলাম। তবে বাংলাদেশে 'বিফ ফ্যাটেনিং' ব্যবসা হওয়া দরকার, কেন হয়না, তা  বোধগম্য নয়। এ বিষয়ে ডাকসু'র জিএস শফি আহমদ-এর বক্তব্য বোধহয় সঠিক। আশির দশকে তার মাথায় 'বিফ ফ্যাটেনিং' ব্যবসার একটি পরিকল্পনা এসেছিলো। শেষ পর্যন্ত তা এগোয়নি, কারণ ছাড়া গরু পেলে মানুষ খেয়ে ফেলবে, এই ভয়ে!

আরো কথা আছে।
হিন্দুরা গরু খায়না।মুসলমানরা গরু খায়।আরো অনেকেই গরু খায়। বৌদ্ভরা খায়না। শ্রীকৃষ্ণ গোকুলে বড় হয়েছে বলে গরু তার সাথী, কৃষ্ণের সাথে তাই গরুও হিন্দুর পূজা পায়। হিন্দু তাই গরু খায়না। অন্য কারণও থাকতে পারে। তবে সব হিন্দু একবারে গরু খায়না, তা নয়। বছর তিনেক আগে এক মন্ত্রীর সাথে আমরা স্বপ্ল-সংখ্যক মানুষ দুপুরে এক রেস্তোরায় খাচ্ছিলাম। দোকানের মালিক আমার পরিচিত বিধায় ঠাট্টা করে বলেন, 'দাদাকে বেশি করে গরুর মাংস দে।' বললাম, ওতে কাজ হবেনা। মন্ত্রী তখন একটি ঘটনা বললেন: " আমরা সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলাম। সাথে আমাদের দাদা। খেতে বসেছি, গরুর মাংস দিল। দাদা বললেন, এটা অস্ট্রেলিয়ান গরু, তাইনা (মন্ত্রীর নাম), এটা খাওয়া যায়!" গল্পটি সত্যি হলেও আমার জন্যে বিব্রতকর ছিলো।

আবার অনেক মুসলমান হিন্দুকে গরু খাইয়ে তৃপ্তি পান! মাত্র ক'দিন আগে পত্রিকায় দেখলাম, এক জামাতি শিক্ষক হিন্দু ছাত্রদের জোর করে গরুর মাংস খাইয়েছেন। বেশ কিছুকাল আগে এক পাবলিক অনুষ্টানে নিউইয়র্কে আমি প্লেটে খাবার নেবার পর বন্ধু ফাহীম বললো, দাদা, ওটা কিসের মাংস নিয়েছেন? বললাম, কেন? ফাহিম জানালো, 'ওটা গরু'। প্লেটসহ ফেলে দিলাম। নুতন করে খাওয়া নিলাম। পাশ থেকে জনৈক জীবন বললেন, 'আমার আপত্তি নেই'। সাথে সাথে প্রফেসর সব্যসাচিদা বললেন, 'আমার আপত্তি আছে'। ফাহিম দু:খ প্রকাশ করলো। নিউইয়র্কে আজকাল পাবলিক অনুষ্টানে গরু পরিবেশিত হয়না বললেই চলে, বা হলেও সাইন থাকে। এমনকি কোন কোন বাঙ্গালী মাংসের দোকানে বিলবোর্ড থাকে 'হিন্দুদের জন্যে পৃথক ব্যবস্থা আছে'।

যাহোক, গরু নিয়ে রাজনীতি হিন্দু-মুসলমানের সম্প্রীতিতে আঘাত হানতে পারে। কারণ এই দুই সপ্ম্রদায়ের কাছে গরুর অবস্থান সম্পুর্ন বিপরীত এবং এটা রাতারাতি বদলে যাবার কোন কারণ  নেই। তদুপরি, গরু প্রজাতি বিলুপ্তির কোন আশু সম্ভবনাও দেখিনা। সুতরাং সমস্যা বাস্তব; সমাধানও বাস্তব হওয়া চাই। ক'দিন আগে মমতা দিদি কলকাতায় ইলিশ যাবার প্রসঙ্গ তুললে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ওপার থেকে পানি এলে এপার থেকে ইলিশ যাবে। শিগগিরই মোদী আসছেন, সীমান্ত চুক্তি, তিস্তা ছাড়াও 'গরু' কি আলোচনার উপযুক্ত? ওপার থেকে গরু এলে এপার থেকে কি যাবে? 

শিতাংশু গুহ, কলাম লেখক।

নিউইয়র্ক।












 







 

  


 














  


 

 

 







 

 

 

 






__._,_.___

Posted by: Sitangshu Guha <guhasb@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___