'শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান থেকে শহীদ কামারুজ্জামান' লাগাম টানা জরুরি
জুয়েল রাজ
জন্মের পর থেকেই শুনে আসছি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। সানগ্লাস চোখে, গায়ে গেঞ্জি পরা এক লোক খালের পাড়ে বসে আছেন। পুরাই সিনেমার নায়ক নায়ক একটা ভাব। আমিও ভক্ত হয়ে গেলাম। ছেড়া গেঞ্জি আর ভাঙা স্যুটকেসের গল্প শুনেই কেটেছে আমাদের ছেলেবেলা। ১৯৯১ সালে মধ্যবিত্ত পরিবারের বেশভূষা নিয়ে বেগম জিয়া রাজনীতিতে এসে বাজিমাৎ করলেন। ছেড়া গেঞ্জি আর বেগম খালেদা জিয়ার দুঃখী দুঃখী চেহারাও সেইক্ষেত্রে অনেক ভূমিকা রেখছিল বলেই আমার ধারণা।
আমার ছোটবেলায় ধারণা ছিল ৩০ লক্ষ শহীদের সাথের কোন বড় শহীদ মনে হয় জিয়াউর রহমান। শহীদদের প্রেসিডেন্ট নিশ্চই বড় কিছু। কারণ বঙ্গবন্ধুর নামের আগেও শহীদ নাই। কিন্তু জিয়াউর রহমানের নামের আগে শহীদ আছে। তার মানে বিরাট কিছু অবশ্যই।
যতটুকু জানি শহীদ একটি আরবী শব্দ। শহীদ ( شَهيد) তাঁদের বলা হয়, যাঁরা ধর্ম যুদ্ধ অথবা দেশ রক্ষার কাজে নিজের জীবনকে বিলিয়ে দেন এবং জীবন ত্যাগ করেন।
জিয়াউর রহমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সপ্তম রাষ্ট্রপতি, সাবেক সেনাপ্রধান এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করে। মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর একজন বেনিফেশিয়ারী হয়ে জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১শে এপ্রিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন এবং ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠা করেন। চার বছর বাংলাদেশ শাসন করার পর ১৯৮১ সালের ৩০শে মে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন।
এখানে কোনটা ধর্ম যুদ্ধ্ব আর কোনটা দেশের জন্য যুদ্ধ্ব? যার কারণে প্রাণ দিতে হয়েছে জিয়াউর রহমানকে। কিন্তু একটা প্রজন্মকে শহীদ হিসাবে জিয়াউর রহমানকে পরিচিত করিয়ে দেয়া হয়েছে। আর তা হয়েছে শুধু মাত্র শহীদ শব্দটা অপব্যবহারের কারণে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব.) এম এ তাহের বীর উত্তমসহ অন্যদের গোপন বিচার, সাজা কার্যকর এবং বিচারের জন্য ১৯৭৬ সালের ১৬ নম্বর সামরিক আইন আদেশের মাধ্যমে সামরিক ট্রাইব্যুনাল গঠনকে অবৈধ ঘোষণা করে ২০১১ সালের ২২ মার্চ রায় দেন হাইকোর্ট। ১৯৭৬ সালে জিয়ার আমলে বিশেষ সামরিক আদালতে মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার তাহেরকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়, যা হত্যাকাণ্ড ছিলো বলে রায়ে বলেছে আদালত। রায়ের অভিমতে বলা হয়, "ট্রাইব্যুনাল গঠনের অনেক আগেই জেনারেল জিয়াউর রহমান কর্নেল তাহেরের মৃত্যুদণ্ড প্রদানে মনস্থির করেন।"
রায়ে আদালত বলেন, "যেহেতু জেনারেল জিয়াউর রহমান জীবিত নেই, আইন অনুযায়ী তার বিচার সম্ভব নয়। কিন্তু তারপরও সরকারের উচিত হবে, এই হত্যার জন্য দায়ী কেউ জীবিত থাকলে তাকে খুঁজে বের করে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা।" আদালতের এই রায়ের পরও খলনায়ক জিয়াউর রহমান নায়ক হয়েই বাংলাদেশে বহাল তরবিয়তে বিরাজমান।
পৃথিবীর বুকে একমাত্র দেশ বাংলাদেশ যেখানে দেশের স্বাধীনতার বিরোধীতাকারীরা সম্মানের সহিত পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে এদের জামাই আদরে বরণ করেছিলেন জিয়াউর রহমান। ১৯৭৩ সালের ১৮ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরকার দালালী এবং স্বাধীনতাবিরোধী ক্রিয়াকর্মের অভিযোগে যে ৩৯ জন ঘাতকের নাগরীকত্ব বাতিল করেন। জিয়াউর রহমান তাদের অনেককেই পুনর্বাসিত করেন, তাদের মধ্যে জুলমত আলী খান (উকিল) প্রাক্তন জিয়া সরকারের মন্ত্রী হয়েছিল। গোলম আযম, প্রাক্তন জেনারেল সেক্রেটারি, ডিইউসিএসইউ, জামাতে ইসলামীর আমীর এবং
দালাল আইনে সাজাপ্রাপ্ত শাহ আজিজুর রহমানকে নিয়ে বিএনপি গঠনের পূর্বে ১৯৭৮ সালে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট নামক একটি দল গঠিত হয়। এই দলে তৎকালীন মুসলিম লীগের একটি অংশ নিয়ে শাহ আজিজুর রহমান যোগদান করেন। এই জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে জিয়াউর রহমান ৩ জুন , ১৯৭৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট এবং আরো কয়েকটি রাজনৈতিক সংগঠন মিলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গঠিত হলে তিনি এই দলে বেশ প্রভাবশালী নেতায় পরিণত হন। ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমান প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তাকে দেশের প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হয়। শাহ আজিজুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশে বিএনপি সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। জিয়ার মৃত্যুর পর বিচারপতি আবদুস সাত্তার প্রেসিডেন্ট হলে শাহ আজিজুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর পদে অসীন থাকেন।
৭৫ এর ২৪ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বাধ্য করেন সেনাপ্রধানের দায়িত্ব হস্তান্তর করার জন্য এবং সেই শর্তে তিনি খুনিদের বিদেশে পাঠিয়ে পুরস্কৃত করেন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধা কতজন সেনা অফিসারকে তিনি কোট মার্শাল করে ফাঁসি দিয়েছেন তার হিসাব নেই! কারন তাকে ক্ষমতায় থাকতে হবে। এক দিনেই প্রায় ৬ শত বিমান বাহিনীর সদস্য/কর্মকর্তাদের কোর্ট মার্শাল করে ফাঁসি দেন। তার প্রথম টার্গেট ছিলো মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসার। তিনি জাতীর জীবনে যা ক্ষতি করে গেছে তার মাশুল আজও দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। ৭১'র ঘাতকদের বিরদ্ধে আমরা যেই যুদ্ধ করছি, সেই ঘাতকদের বিষবৃক্ষ খুনী জিয়া বপন করেছিলেন বহুদলীয় গনতন্ত্রের নামে। বাকী কাজটা সম্পন্ন করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। গোলাম আজমের নাগরিকত্ব থেকে শুরু করে নিজামী মুজাহিদকে মন্ত্রী বানানো পর্যন্ত।
দীর্ঘ ৪৩ বছর পরে জাতি যখন কলঙ্কের কালিমা মুক্তির প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছে, তখনই বাংলাদেশে শহীদের সংখ্যাও বেড়ে যাচ্ছে পিপীলিকার মতো। মানবতা বিরোধী অপরাধে ফাঁসিতে মৃত্যদণ্ড পাওয়া কসাই কাদের মোল্লার কবরের ফলকে লেখা শহীদ কাদের মোল্লা। আরেক অপরাধী কামারুজ্জামানের নামের আগেও ব্যবহার করা হয়েছে শহীদ, ছাত্র শিবিরের যারাই ঘাতে অপঘাতে মারা পড়ছে সবার আগে ব্যবহার করা হচ্ছে শহীদ। এটা ভবিষ্যৎ ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। আজ থেকে ২০/৩০ বছর পরে একটা প্রজন্ম হয়তো এদেরকে শহীদ হিসাবেই জানবে।
৫২'র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে জাতির চরম পাওয়া মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ্বে ৩০ লাখ শহীদের সঙ্গে চরম ফাজলামি ছাড়া আর কিছু নয় এটি। যাদের রক্তে হাত রঞ্জিত, সেই সব রাজাকার আলবদরদের নামের আগে শহীদ ব্যবহার করে যারা ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে এদের লাগাম টেনে ধরা জরুরি। প্রয়োজনে আইন করে বাংলাদেশে শহীদ শব্দটির যতেচ্ছা ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। নতুন প্রজন্ম যেন ভুল শহীদের সঙ্গে পরিচিত না হয়। এই দায় সকল দেশপ্রেমিক নাগরিকের।
জিয়াউর রহমান শহীদ হিসাবে জাতির ঘাড়ে চেপে না বসলে বাংলাদেশে ইতিহাস অন্যরকম হতো। জাতিস্বত্তার স্রোতধারাকে ভুল ভাবে প্রবাহিত করেছিল জিয়াউর রহমান। সেই ভ্রান্ত ভুল ইতিহাসের খেসারত দিচ্ছে প্রজন্ম। ধর্ম ব্যবাসায়ীদের প্রতিস্থাপন করে একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের দিকে ধাবিত করে দিয়ে গেছে এই শহীদ শব্দের অপব্যবহার করে।
(লেখক বার্তা সম্পাদক পাক্ষিক ব্রিকলেন ও দৈনিক মানবকণ্ঠের যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি)
মানবকণ্ঠ/আরএ
- See more at: http://www.manobkantha.com/2015/04/30/31349.php#sthash.1DbTUxS3.dpufআমার ছোটবেলায় ধারণা ছিল ৩০ লক্ষ শহীদের সাথের কোন বড় শহীদ মনে হয় জিয়াউর রহমান। শহীদদের প্রেসিডেন্ট নিশ্চই বড় কিছু। কারণ বঙ্গবন্ধুর নামের আগেও শহীদ নাই। কিন্তু জিয়াউর রহমানের নামের আগে শহীদ আছে। তার মানে বিরাট কিছু অবশ্যই।
যতটুকু জানি শহীদ একটি আরবী শব্দ। শহীদ ( شَهيد) তাঁদের বলা হয়, যাঁরা ধর্ম যুদ্ধ অথবা দেশ রক্ষার কাজে নিজের জীবনকে বিলিয়ে দেন এবং জীবন ত্যাগ করেন।
জিয়াউর রহমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সপ্তম রাষ্ট্রপতি, সাবেক সেনাপ্রধান এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করে। মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর একজন বেনিফেশিয়ারী হয়ে জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১শে এপ্রিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন এবং ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠা করেন। চার বছর বাংলাদেশ শাসন করার পর ১৯৮১ সালের ৩০শে মে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন।
এখানে কোনটা ধর্ম যুদ্ধ্ব আর কোনটা দেশের জন্য যুদ্ধ্ব? যার কারণে প্রাণ দিতে হয়েছে জিয়াউর রহমানকে। কিন্তু একটা প্রজন্মকে শহীদ হিসাবে জিয়াউর রহমানকে পরিচিত করিয়ে দেয়া হয়েছে। আর তা হয়েছে শুধু মাত্র শহীদ শব্দটা অপব্যবহারের কারণে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব.) এম এ তাহের বীর উত্তমসহ অন্যদের গোপন বিচার, সাজা কার্যকর এবং বিচারের জন্য ১৯৭৬ সালের ১৬ নম্বর সামরিক আইন আদেশের মাধ্যমে সামরিক ট্রাইব্যুনাল গঠনকে অবৈধ ঘোষণা করে ২০১১ সালের ২২ মার্চ রায় দেন হাইকোর্ট। ১৯৭৬ সালে জিয়ার আমলে বিশেষ সামরিক আদালতে মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার তাহেরকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়, যা হত্যাকাণ্ড ছিলো বলে রায়ে বলেছে আদালত। রায়ের অভিমতে বলা হয়, "ট্রাইব্যুনাল গঠনের অনেক আগেই জেনারেল জিয়াউর রহমান কর্নেল তাহেরের মৃত্যুদণ্ড প্রদানে মনস্থির করেন।"
রায়ে আদালত বলেন, "যেহেতু জেনারেল জিয়াউর রহমান জীবিত নেই, আইন অনুযায়ী তার বিচার সম্ভব নয়। কিন্তু তারপরও সরকারের উচিত হবে, এই হত্যার জন্য দায়ী কেউ জীবিত থাকলে তাকে খুঁজে বের করে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা।" আদালতের এই রায়ের পরও খলনায়ক জিয়াউর রহমান নায়ক হয়েই বাংলাদেশে বহাল তরবিয়তে বিরাজমান।
পৃথিবীর বুকে একমাত্র দেশ বাংলাদেশ যেখানে দেশের স্বাধীনতার বিরোধীতাকারীরা সম্মানের সহিত পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে এদের জামাই আদরে বরণ করেছিলেন জিয়াউর রহমান। ১৯৭৩ সালের ১৮ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরকার দালালী এবং স্বাধীনতাবিরোধী ক্রিয়াকর্মের অভিযোগে যে ৩৯ জন ঘাতকের নাগরীকত্ব বাতিল করেন। জিয়াউর রহমান তাদের অনেককেই পুনর্বাসিত করেন, তাদের মধ্যে জুলমত আলী খান (উকিল) প্রাক্তন জিয়া সরকারের মন্ত্রী হয়েছিল। গোলম আযম, প্রাক্তন জেনারেল সেক্রেটারি, ডিইউসিএসইউ, জামাতে ইসলামীর আমীর এবং
দালাল আইনে সাজাপ্রাপ্ত শাহ আজিজুর রহমানকে নিয়ে বিএনপি গঠনের পূর্বে ১৯৭৮ সালে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট নামক একটি দল গঠিত হয়। এই দলে তৎকালীন মুসলিম লীগের একটি অংশ নিয়ে শাহ আজিজুর রহমান যোগদান করেন। এই জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে জিয়াউর রহমান ৩ জুন , ১৯৭৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট এবং আরো কয়েকটি রাজনৈতিক সংগঠন মিলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গঠিত হলে তিনি এই দলে বেশ প্রভাবশালী নেতায় পরিণত হন। ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমান প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তাকে দেশের প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হয়। শাহ আজিজুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশে বিএনপি সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। জিয়ার মৃত্যুর পর বিচারপতি আবদুস সাত্তার প্রেসিডেন্ট হলে শাহ আজিজুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর পদে অসীন থাকেন।
৭৫ এর ২৪ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বাধ্য করেন সেনাপ্রধানের দায়িত্ব হস্তান্তর করার জন্য এবং সেই শর্তে তিনি খুনিদের বিদেশে পাঠিয়ে পুরস্কৃত করেন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধা কতজন সেনা অফিসারকে তিনি কোট মার্শাল করে ফাঁসি দিয়েছেন তার হিসাব নেই! কারন তাকে ক্ষমতায় থাকতে হবে। এক দিনেই প্রায় ৬ শত বিমান বাহিনীর সদস্য/কর্মকর্তাদের কোর্ট মার্শাল করে ফাঁসি দেন। তার প্রথম টার্গেট ছিলো মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসার। তিনি জাতীর জীবনে যা ক্ষতি করে গেছে তার মাশুল আজও দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। ৭১'র ঘাতকদের বিরদ্ধে আমরা যেই যুদ্ধ করছি, সেই ঘাতকদের বিষবৃক্ষ খুনী জিয়া বপন করেছিলেন বহুদলীয় গনতন্ত্রের নামে। বাকী কাজটা সম্পন্ন করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। গোলাম আজমের নাগরিকত্ব থেকে শুরু করে নিজামী মুজাহিদকে মন্ত্রী বানানো পর্যন্ত।
দীর্ঘ ৪৩ বছর পরে জাতি যখন কলঙ্কের কালিমা মুক্তির প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছে, তখনই বাংলাদেশে শহীদের সংখ্যাও বেড়ে যাচ্ছে পিপীলিকার মতো। মানবতা বিরোধী অপরাধে ফাঁসিতে মৃত্যদণ্ড পাওয়া কসাই কাদের মোল্লার কবরের ফলকে লেখা শহীদ কাদের মোল্লা। আরেক অপরাধী কামারুজ্জামানের নামের আগেও ব্যবহার করা হয়েছে শহীদ, ছাত্র শিবিরের যারাই ঘাতে অপঘাতে মারা পড়ছে সবার আগে ব্যবহার করা হচ্ছে শহীদ। এটা ভবিষ্যৎ ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। আজ থেকে ২০/৩০ বছর পরে একটা প্রজন্ম হয়তো এদেরকে শহীদ হিসাবেই জানবে।
৫২'র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে জাতির চরম পাওয়া মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ্বে ৩০ লাখ শহীদের সঙ্গে চরম ফাজলামি ছাড়া আর কিছু নয় এটি। যাদের রক্তে হাত রঞ্জিত, সেই সব রাজাকার আলবদরদের নামের আগে শহীদ ব্যবহার করে যারা ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে এদের লাগাম টেনে ধরা জরুরি। প্রয়োজনে আইন করে বাংলাদেশে শহীদ শব্দটির যতেচ্ছা ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। নতুন প্রজন্ম যেন ভুল শহীদের সঙ্গে পরিচিত না হয়। এই দায় সকল দেশপ্রেমিক নাগরিকের।
জিয়াউর রহমান শহীদ হিসাবে জাতির ঘাড়ে চেপে না বসলে বাংলাদেশে ইতিহাস অন্যরকম হতো। জাতিস্বত্তার স্রোতধারাকে ভুল ভাবে প্রবাহিত করেছিল জিয়াউর রহমান। সেই ভ্রান্ত ভুল ইতিহাসের খেসারত দিচ্ছে প্রজন্ম। ধর্ম ব্যবাসায়ীদের প্রতিস্থাপন করে একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের দিকে ধাবিত করে দিয়ে গেছে এই শহীদ শব্দের অপব্যবহার করে।
(লেখক বার্তা সম্পাদক পাক্ষিক ব্রিকলেন ও দৈনিক মানবকণ্ঠের যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি)
মানবকণ্ঠ/আরএ
Related:
'হিটলার থেকে জিয়া': বিএনপি একটি পাকিস্তানপন্থী দল - মিনা ফারাহ
স্বাধীনতার পক্ষ ও বিপক্ষ শক্তি
মিনা ফারাহ বুধবার, ৩০ জুন ২০১০, ১৬ আষাঢ় ১৪১৭
এই বইটির তিনটি অংশ।
প্রথম অংশটি-"জিয়া কেন মুক্তিযোদ্ধা নয়-১৭৮টি কারণ"।
দ্বিতীয় অংশটি-"সংবিধান সন্ত্রাসী জিয়া"।
তৃ্তীয় অংশটি-"বইয়ের কাঠগোড়ায় জিয়া"
wRqv‡K †jLv K‡b©j †e‡Mi wPwV:
ˆmq` †evinvb Kexi : GKwU `yj©f wPwV Avgv‡`i nv‡Z G‡m‡Q| wPwVwU 1971-Gi 29 †g †jLv| wPwV wj‡L‡Qb ZrKvjxb K‡b©j †eM, wj‡L‡Qb, †gRi wRqvDi ingvb‡K| cÖ_‡gB cvVK‡`i Rb¨ wPwVwU ûeû Dc¯'vcb KiwQ:-
Major Zia Ur Rahman, Pak Army, Dacca
We all happy with your job. We must say good job! You will get new job soon.
DonÕt worrie about your family. Your wife and kids are fine. You have to be more carefull about major Jalil.
Col. Baig Pak Army, May 29. 1971
(†gRi wRqvDi ingvb, cvK Avwg©, XvKv †Zvgvi Kv‡R Avgiv mevB Lywk| Avgv‡`i Aek¨B ej‡Z n‡e Zzwg fv‡jv KvR Ki‡Qv| Lye wkMwMiB Zzwg bZzb KvR cv‡e|†Zvgvi cwievi wb‡q DwØMœ n‡qvbv| †Zvgvi ¯¿x I ev"Pviv fv‡jv Av‡Q| †Zvgv‡K †gRi Rwjj m¤ú‡K© Av‡iv mZK© _vK‡Z n‡e| K‡b©j †eM, cvK Avwg© †g 29, 1971)....
Major Zia Ur Rahman, Pak Army, Dacca
We all happy with your job. We must say good job! You will get new job soon.
DonÕt worrie about your family. Your wife and kids are fine. You have to be more carefull about major Jalil.
Col. Baig Pak Army, May 29. 1971
(†gRi wRqvDi ingvb, cvK Avwg©, XvKv †Zvgvi Kv‡R Avgiv mevB Lywk| Avgv‡`i Aek¨B ej‡Z n‡e Zzwg fv‡jv KvR Ki‡Qv| Lye wkMwMiB Zzwg bZzb KvR cv‡e|†Zvgvi cwievi wb‡q DwØMœ n‡qvbv| †Zvgvi ¯¿x I ev"Pviv fv‡jv Av‡Q| †Zvgv‡K †gRi Rwjj m¤ú‡K© Av‡iv mZK© _vK‡Z n‡e| K‡b©j †eM, cvK Avwg© †g 29, 1971)....
Details at:
According to Pro-BNP writer এবনে গোলাম সামাদ
in মুজিবনগরের বাখানি- আত্মপক্ষ published in নয়াদিগন্ত, তারিখ: ২২ এপ্রিল, ২০১৩"জিয়াউর রহমান দেশ ছেড়ে ভারতে যান, কিন্তু This is because General Osmani became very suspicious about Ziaur Rahman's deceptive activities...জিয়াউর রহমান ছিলেন প্রকৃত পাকিস্তান প্রেমিক |
He is the hero of Khemkaran sector !!!!!
In Pakistan Army he received commando training specializing in infiltration and won the Hilal-e-Jurat for his performance in 1965-war. His transfer to East in October 1970 was a part of Paki Military's
grand plan ....! Later on, during his regime, he started the process of Pakistanization of Bangladesh. ......!!!!!!
SA
__._,_.___