Banner Advertiser

Monday, May 4, 2015

[mukto-mona] সাম্প্রদায়িকতা অথবা মৌলবাদ!! উৎস কি? লিখেছেন: শিহাব হায়দার মুন



সাম্প্রদায়িকতা অথবা মৌলবাদ!! উৎস কি?।

লিখেছেন: শিহাব হায়দার মুন (সপ্তক)

  

সাম্প্রদায়িকতা আর মৌলবাদ কি সমার্থক?। অথবা যা সাম্প্রদায়িকতা তা মৌলবাদ নাও হতে পারে কিন্তু যা মৌলবাদ তা সাম্প্রদায়িকতা? ।

সাম্প্রদায়িকতার সংজ্ঞা বিশ্বকোষে যাই থাকুক ভারতবর্ষে এর অর্থ  মৌলবাদী র সমার্থক, অর্থাৎ ধর্মের চিরচরিত নিয়মে সবকিছু পরিচালনা করা। একটু পার্থক্য করলেও করা যায় সাম্প্রদায়িকতার  আর তা হচ্ছে কোন নির্দিষ্ট জাতি- গস্টির স্বার্থ রক্ষ্যা করা নেতিবাচক অর্থে। ভারতবর্ষে এটিই এখন প্রচলিত। অনেকে এর পার্থক্য টান্তে চান নুতনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে চান মৌলবাদ বা সাম্প্রদায়িকতাকে অর্থাৎ ইতিবাচক ভাবে। আর ভারতবর্ষ শব্দটিতেও অনেকে এখন আপত্তি করেন ,যেহেতু পাকিস্তান ও বাংলাদেশ এখন ভিন্ন রাষ্ট্র।

ধর্ম শব্দটি নিয়েও বেশ কথা আছে, যতীন সরকারের মতে " বাংলায় আমরা ধর্ম শব্দটিকে Religion  এর প্রতিশব্দ রূপে ব্যবহার করি।তবে এ কথাও মনে রাখা প্রয়োজন যে, ধর্ম আর Religion শব্দের মরমগত অর্থ এক নয়… এর অর্থ যা ধারন করে"… আর সে অর্থে প্রতিটি বস্তুর ই ধর্ম আছে ব্যবহার  গতভাবে। যেমন আগুনের ধরম,পানি ও বায়ুর ধর্ম। তাহলে আমাদের ধর্ম যার মাধ্যমে আমরা উপাসনা করি তার নামও কেন ধর্ম?। তারমানে কি মানুষ মাত্রেই এমন কিছু থাকতে হবে যার মাধ্যমে সে উপাসনা করবে অথবা মৃত্যু পরবর্তী জীবনের সমাধান পাওয়া যাবে ধর্মের মাধ্যমে। যাই হোক না কেন বাংলায় যা ধর্ম তা ইংরেজির Religion এর প্রতিনিধিত্ব করে না। মানুষ মাত্রেরই যে ধর্ম থাকতে হবে তা পদার্থের ধর্মের সাথে তুলনা করলে একরকম আর মানবীয় গুনাবলীর দৃষ্টি কোন থেকে দেখলে অন্যরকম এবং চলতি অর্থে দেখলে হিন্দু,মুস্লিম,খ্রিস্টান ইত্যাদী। সাম্প্রদায়িক হানাহানি বিশ্বে নুতন কিছু নয়। পশ্চিমের সাদা কালো বর্ণ দাঙ্গা আমাদের উপমহাদেশের ধর্মীয় দাঙ্গার সাথেই তুলনীয়। মাঝে মাঝে বিচ্ছিন্ন ভাবে পশ্চিমে এখনও বর্ণ দাঙ্গা হলেও তার প্রকপ এতটাই কম যে সহনীয় বলা যায়। কিন্তু আমাদের উপমহাদেশে ধর্মীয় দাঙ্গা মোটেও বিচ্ছিন্ন বা সহনীয় নয় কেন?। কেন আমরা এখনও দেশ ভাগের ৬৫ বছর পরেও এখনও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বা ধর্মীয় দাঙ্গায় মেতে উঠি। এর থেকে মুক্ত না হতে পারলে এ অঞ্চলের ভবিষ্যৎ যে খুব উজ্জ্বল নয় তা বলাই বাহুল্য। কোন একক রাষ্ট্র এর দায় নিতে পারে না। একে রুখতে হবে সম্মিলিত ভাবে?। কিন্তু কিভাবে?, কোথা থেকে শুরু করব আমরা?, প্রাচিন এ সমস্যা কি আমাদের কূড়ে কূড়ে খেয়ে শেষ করে দেবে?।

বাঙলাদেশে মৌলবাদের জন্ম ও বিকাশকে সঠিকভাবে বুঝতে হলে পাকিস্তানে মৌলবাদের জন্ম ও বিকাশের কার্যকারণ বিশ্লেষণ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। কারণ প্রথমতঃ পাকিস্তানের জন্ম ধর্মীয় দ্বি-জাতি তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে। পাকিস্তানের জনক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এ দ্বি-জাতি তত্ত্বের প্রবক্তা। সে দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত উপমহাদেশের দু'প্রান্তে অবস্থিত দু'টি মুসলিম প্রধান অঞ্চলকে নিয়ে গঠিত হোয়েছিল পাকিস্তান (যদিও তা ছিল ঐতিহাসিক লাহের প্রস্তাবের পরিপন্থী) । আজকের বাঙলাদেশ ছিল সেদিনের পূর্বপাকিস্তান। দ্বিতীয়তঃ জন্মের অব্যবহিত পর হতে পাকিস্তানের রাজনীতিতে ধর্মের অনুপ্রবেশ, এতদবিষয়ে ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা এবং সস্তা জনপ্রিয়তা ও ধর্মভীরু আমজন গণের ভোটের আশায় মৌলবাদী শক্তির সাথে মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর অপরিণামদর্শী আপোষকামীতা প্রভৃতি পাকিস্তানে মৌলবাদের জন্ম ও বিকাশে যে ভূমিকা রেখেছে, সে ইতহাসের বিস্ময়কর রেপ্লিকা হলো বাঙলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস।
দ্বি-জাতি তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে বৃহত্তর ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র দাবী করলেও মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ বস্তুতঃ কোন ইসলামী রাষ্ট্রের প্রবক্তা ছিলেন না। তার স্বপ্ন ছিল মুসলমানদের জন্য একটি আলাদা রাষ্ট্র। এ কথার প্রমাণ পাওয়া যায় পাকিস্তান গণপরিষদে(১১ই আগস্ট, ১৯৪৭ ইং) তার প্রদত্ত প্রথম ভাষণে-যেখানে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেছিলেন-"আমরা একটি রাষ্ট্রের নাগরিক-এই প্রতিপাদ্য থেকেই আমাদের অগ্রসর হওয়া উচিত। এটিকেই আমাদের আদর্শ হিসাবে সামনে রাখা প্রয়োজন এবং আপনারা দেখবেন সময়ের ব্যবধানে হিন্দু আর হিন্দু থাকবে না, মুসলমানেরাও মুসলমান থাকবে না। ধর্মীয় অর্থে নয়। কারণ ধর্ম হলো মানুষের ব্যক্তিগত বিশ্বাসের ক্ষেত্র। পাকিস্তান আন্দোলনের প্রকাশ্য বিরোধীতার কারণে 'জামায়াতে ইসলামী' ও 'মজলিশে আহরার এ ইসলাম' প্রভৃতি ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলো পাকিস্তান জন্মের পর অত্যন্ত কোণঠাসা হোয়ে পড়ে। রাজনৈতিক অঙ্গনে ফিরে আসার জন্য তাদের কোন ধর্মীয় নোতুন ইস্যুর প্রয়োজন ছিল। এমতাবস্থায় তারা 'কাদিয়ানীরা মুসলমান নহে' এবং 'রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে'-এরকম একটি অবান্তর-সদ্যস্বাধীন দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন অগ্রগতির প্রশ্নে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক ও অর্থহীন-হাস্যস্পদ ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসে। ১৯৪৯ সালে কাদিয়ানীদের অমুসলমান ঘোষণার দাবী করে 'মজলিশে আহরার এ ইসলাম' কাদিয়ানীদের বিরুদ্ধে দাঙ্গার আহবান করে। তাদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সংশ্লিষ্ট ছিল জামায়াতে ইসলামী ও তাদের তাত্ত্বিক গুরু মৌলানা মওদুদী। তাদের প্রত্যক্ষ উস্কানীতে পাঞ্জাবে কাদিয়ানী বিরোধী দাঙ্গা শুরু হয়ে যায়-দ্রুত লাহোরেও ছড়িয়ে পড়ে এ দাঙ্গা এবং তা ক্রমে ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে থাকে। দীর্ঘ চার বছর ব্যাপী চলার পর ১৯৫৩ সালে দাঙ্গা এমন ভয়াবহ রূপ ধারণ করে যে, পাকিস্তান সরকার লাহোরে সামরিক শাসন জারী করতে বাধ্য হয়।

 

৭৫ এর পরে  ক্ষমতাসীন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নিজেদের  রাজনৈতিক বৈধতা আদায় ও আমজনগণের কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবার জন্য ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার করা শুরু করল পূর্ণোদ্যমে। মেজর জিয়া তার সকল বক্তব্য শুরু করার আগে প্রকাশ্যে "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" বলা শুরু করলেন। জিয়াউর রহমানের হত্যাকান্ডের পর ক্ষমতাসীন খলনায়ক, তুলনাহীন দুশ্চরিত্র হোসেন মোঃ এরশাদ রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহারের মাত্রাটা আরো বাড়িয়ে দিলেন একই লক্ষ্যে– তার সব অপকর্মকে বৈধতা দেওয়া। তিনি সংবিধান সংশোধন করে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে দেশটাকে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রে রূপান্তরের দিকে এক ধাপ এগিয়ে দিলেন । এরশাদের পতনের পর প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী দল নির্বাচনী কৌশল হিসাবে নগ্নভাবে ধর্ম ও ভারত বিরোধীতাকে কাজে লাগাল। ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহারে তারা এতটুকু গেল যে, আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে ধর্ম চলে যাবে, মসজিদে মসজিদে আজানের পরিবর্তে উলু ধ্বনি হবে- দেশ ভারতের অঙ্গ রাজ্যে পরিণত হবে- ইত্যাকার কথা জোরেশোরে বলে বেড়াতে লাগল ।  কিন্তু বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে তত্ত্ববধায়ক সরকারের আন্দোলন করতে গিয়ে জামায়াতের সাথে অঘোষিত ঐক্য করে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির কী ক্ষতিটা আওয়ামী লীগ করেছে সে উপলব্ধি আওয়ামী নেতৃত্বের এখনো হয়েছে কিনা জানআ নাই। শুধু তা নয়, আওয়ামী লীগ ও তার রাজনৈতিক আচরণে এমন কিছু পরিবর্তন আনল যা প্রকারান্তরে ধর্মীয় রাজনীতিকেই উৎসাহিত করল।

রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্ম পালনের ফলে প্রকারান্তরে বৈধতা পেল ধর্ম নিয়ে রাজনীতি ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি। এভাবে সেক্যুলার রাজনীতির শিকড় কাটা হতে লাগল একে একে। বলাবাহুল্য, কেবল ক্ষুদ্র বাম গণতান্ত্রিক দলগুলো-জনমনে যাদের প্রভাব অত্যন্ত ক্ষীণ-ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির শ্লোগান অব্যাহত রাখল। কিন্তু তাদের কণ্ঠের আওয়াজ এতই ক্ষীণ যে তা আমজনগণ পর্যন্ত পৌছে না।

ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকাঃ
ধর্মীয় রাজনীতির জন্য উপরোক্ত উর্বর ভূমিতে মধ্যপ্রাচ্যের বিপুল পেট্রো-ডলার পেয়ে জামাতে ইসলামী ইতোমধ্যেই নিজেদের খুব সংগঠিত দল হিসাবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। এতদ্ব্যতীতও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, জামায়াতে মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-যাকে অনেকে জামায়াতে ইসলামীর সশস্ত্র শাখা বলে মনে করে-হরকাতুল জিহাদ, খতমে নওবুয়াত আন্দোলন-জামাতে ইসলামী যাদের পৃষ্টপোষক-জিহাদ আন্দোলন প্রভৃতি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর জন্ম হয়-যদিও তথাকথিত ইসলামী শাসনব্যবস্থার স্বরূপ নিয়ে তাদের মধ্যেও তীব্র মতবিরোধ বিদ্যমান। মধ্যপ্রাচ্যের টাকায় পরিচালিত বিভিন্ন ইসলামী এনজিওদের প্রধান কাজ হলো এসমস্ত ধর্মীয় দলগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা করা। এভাবে বিদেশী, বিশেষভাবে মধ্যপ্রাচ্যের টাকায় উপরোক্ত রাজনৈতিক দলগুলো এদেশের সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে আল্লাহের দুনিয়ায় আল্লাহের শাসন কায়েমের জিগির তুলে দেশের বিশেষভাবে গ্রামের দরিদ্র ও অশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে একটি সমর্থকগোষ্ঠী সৃষ্টি করতে পেরেছে। এজন্য তারা বিশেষভাবে টার্গেট করেছে গ্রামের মাদ্রাশাগুলোকে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্যের সুযোগে তারা তাদের তরুণ ছেলেদের সহজে প্রলুদ্ধ করতে পারছে। নগর সভ্যতার বিকাশ ও পাশাপাশি গ্রামীণ সমাজব্যবস্থার সীমাহীন দারিদ্র্য ও পশ্চাদপদতা, শহরের সাথে গ্রামের বৈষম্য মৌলবাদী ধারণা প্রসারের জন্য উর্বর ক্ষেত্র তৈরী করে রেখেছে।
আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট :বাঙলাদেশ প্রেক্ষিত
মৌলবাদ প্রসারের আরো একটি মূল কারণ হচ্ছে বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলোর সীমাহীন ব্যর্থতা। স্বাধীনতার দীর্ঘ তিন দশক পরেও আমাদের দেশে যেমন একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বিকশিত হয়নি, তেমনি দেশের অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানেও তারা চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। মুক্তবাজার অর্থনীতিকে উন্নয়নের অব্যর্থ মডেল হিসাবে গ্রহণ করা হলেও বস্তুতঃ দেশে কাঙ্খিত শিল্পায়ন ঘটেনি। ফলতঃ সমাজে যেমন শ্রেণী বৈষম্য তীব্র হোয়েছে, তেমনি বৃদ্ধি পেয়েছে গ্রাম ও শহরের মধ্যে বৈষম্য। উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে সম্পর্কহীন এক শ্রেণীর শহুরে লুঠেরা ধনিকদের সীমাহীন জৌলুস-আধুনিক জীবন যাপন-আর অন্যদিকে গ্রামের বিশাল দারিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার প্রাণান্তকর আদি সংগ্রাম-এ স্ববিরোধী বৈশিষ্ঠমণ্ডিত কোন সমাজ কখনো স্থিতিশীল হতে পারে না। বেকারের সংখ্যা তিন কোটির উপরে। ফি বছর ২১/২২ লক্ষ শিক্ষিত বেকার শ্রমের বাজারে প্রবেশ করছে। দুর্নীতি সর্বগ্রাসী রূপ পরিগ্রহ করে পুরো সমাজকে গিলে ফেলেছে। বিশ্বের সর্বাপেক্ষা দুর্নীতিগ্রস্থ দেশের কলঙ্ক তিলক আমাদের মাতৃভূমির ভালে শোভা পাচ্ছে বিগত চার বছর ধরে। স্বাধীনতার পর হতে আমাদের দেশের শাসকগোষ্ঠীর ধারাবাহিক ব্যর্থতার ফলশ্রুতিতে আজ গ্রামীণ ও শহুরে নিন্ম-মধ্যবিত্ত দরিদ্র যুবশ্রেণীর মনে যে হতাশা দানা বেঁধেছে তাকেই সুপরিকল্পিতভাবে কাজে লাগাবার প্রয়াস পাচ্ছে ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলো। আলজেরিয়া, মিশর ও তুরস্কের ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণ করলেও আমরা একই রকম চিত্র দেখতে পাব যে, সে সব দেশেও সামাজিক বৈষম্য ও দারিদ্র দূরীকরণে মূল রাজনৈতিক শক্তিগুলোর ব্যর্থতা মৌলবাদের উদ্ভব ও বিকাশের উর্বর ক্ষেত্র তৈরী করে দিয়েছে। এহেন একটি আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে ক্ষমতাসীন চক্র মৌলবাদকে মোকাবেলার পরিবর্তে তাদের কর্মসূচীকেই আত্মীকরণ করে ফেলেছে। এক্ষেত্রে বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলো কে কতটুকু ধার্মিক, তা প্রমাণের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা কারিকুলাম চালু করার পরিবর্তে তারা ধর্মীয় অনুশাসন নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থার পৃষ্ঠপোষকতা করে চলেছে।
রুখতে হবে মৌলবাদ
মৌলবাদী শক্তিকে কেবল রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করে-ঊনিশ শ' একাত্তুরে যেমনটি আমরা করেছিলাম-রোখা যাবে না। চুড়ান্তভাবে ঠেকাতে হলে তাকে রুখতে হবে আদর্শিকভাবে। সারাদেশে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে ওঠা মাদ্রাশাগুলোতে শিক্ষার নামে যা ছড়ানো হচ্ছে তা মূলত ধর্মাশ্রয়ী কুপমণ্ডুকতা ও অজ্ঞতা। অথচ মৌলবাদের প্রধান আশ্রয় হলো অজ্ঞতা। বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ও নারী শিক্ষার বিস্তার সে অজ্ঞানতা রোধে প্রধান ভূমিকা নিতে পারে। বিজ্ঞানভিত্তিক আধুনিক শিক্ষা অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক চেতনার প্রসার ঘটাবে ও তার লালন মৌলবাদী অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে বর্ম হিসাবে কাজ করবে। এ লক্ষ্য অর্জনের প্রধান শর্ত হচ্ছে ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে বিযুক্ত করা। মৌলবাদীদের সন্তুষ্ট করার জন্য সরকার যদি একের পর এক ধর্ম পালনের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয়, তাতে মৌলবাদের ভিত্তি কেবল শক্তই হবে। তাই বৈজ্ঞানিক যুক্তি বিস্তারের মাধ্যমে সর্বাগ্রে আমাদের মৌলবাদী মধ্যযুগীয় ধ্যান-ধারণার অসারতা, অপ্রাঙ্গিকতা-পশ্চাদপদতা ও গণবিমুখতা তুলে ধরতে হবে আম জনগণের কাছে-বিশেষভাবে বর্তমান প্রজন্মের কাছে। সেজন্য একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া কোন বিকল্প নেই।
মৌলবাদের মূল উৎস যেহেতু ধর্মীয় গোঁড়ামী এবং এ গোঁড়ামীর উর্বরক্ষেত্র যেহেতু অশিক্ষা-কুশিক্ষা, সেহেতু তাকে রুখতে হলে আমাদের সর্বাগ্রে শিক্ষা, বিশেষভাবে বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে একই শিক্ষা পদ্ধতির আওতায় আনতে হবে। ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে পৃথক করতে হবে এবং ধর্ম নিয়ে রাজনীতি এবং ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক কাঠামো, বেকারত্ব দূরীকরণ ও দারিদ্র্য বিমোচন, আইনের শাসন কায়েম, গ্রাম ও শহরের বৈষম্য দূরীকরণ-বিশেষভাবে গ্রামীণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উন্নয়ন-ইত্যাদি আশু পদক্ষেপ মৌলবাদ উত্থানের বিরুদ্ধে বর্ম হিসাবে কাজ করবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, স্রোতস্বিনী নদীতে যেমন কোন শেওলা-শৈবাল জন্মাতে পারে না, তেমনি একটি আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক, গণতান্ত্রিক ও উন্নত আর্থ-সামাজিক কাঠামোতে মৌলবাদসহ কোন প্রকার কুসংস্কারের আগাছা শিকড় গাড়তে পারবে না।

****  জানে আলম রচিত "মৌলবাদের জন্ম ও বিকাশ রুখতে হবে কিভাবে? "  অবলম্বনে।

http://projonmoblog.com/soptok/9799.html


Also read:

http://projonmoblog.com/soptok/9799.html

মৌলবাদের জন্ম ও বিকাশ-রুখতে হবে কিভাবে 

By      http://blog.mukto-mona.com/2013/03/25/34509/

"সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী : জাতিকে মধ্যযুগে ফিরিয়ে নেওয়ার অভিযাত্রা" 






__._,_.___

Posted by: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___