Banner Advertiser

Tuesday, October 13, 2015

[mukto-mona] 'শতফুল ফুটতে দাও'





'শতফুল ফুটতে দাও'

কিছুদিন আগে ঢাকায় ইতালীয় নাগরিক খুন হলেন। তারপর রংপুরে জাপানী নাগরিক। মধ্যখানে ঢাকাতে একজন মৌলভী খুন এবং পাবনায় খ্রীস্টান পাদ্রীর ওপর হামলা, ভাগ্য ভালো তিনি বেঁচে গেছেন। আর প্রতিদিন হিন্দুর ওপর আক্রমন, সম্পত্তি দখল, মুর্ক্তি ভাঙ্গা বা নাবালিকা অপহরণ তো আছেই। এই সবগুলো ঘটনা কি একটির সাথে আর একটি সম্পর্কযুক্ত? সংখ্যায় যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন, একটি মহল তাদের ভাষায় 'ইহুদী-নাসারা' মুক্ত দেশ চায়, নিহত বিদেশীরা সেই সংজ্ঞায় পড়েন। নিহত মৌলভী আহমদীয়া হলে ইক্যুয়েশন মিলে ভালো, কারণ কারা আহমদীয়াদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিদার তা সবার জানা। বিএনপি-জামাত আমলে এই দাবিটি যথেস্ট সোচ্চার ছিলো। দেশীয় পাদ্রী বা হিন্দুদের ওপর আক্রমন দেশ থেকে অমুসলিমদের বিতাড়ন প্রক্রিয়ার অংশ যা সবার জানা কথা। তাহলে প্রশ্ন ওঠে, এসব ঘটনার পেছনে কি তারাই যারা বাংলাদেশকে একটি 'পিওর ইসলামিক' অথচ ব্যর্থ রাষ্ট্র বানাতে চায় বা এই প্রক্রিয়ায় সরকারের পতন ঘটাতে চায়? ব্লগার হত্যার কথা না-ই বা তুললাম।

মিডিয়ায় এসেছে বিচার না হওয়া দেশের মধ্যে বাংলাদেশ বারো নম্বরে। অনেকেই এর অর্থ করবেন, দেশে বিচার নাই, বা আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি ততটা সুবিধজনক নয়। আমাদের নুতন স্বরাস্ট্রমন্ত্রী দাযিত্ব নেয়ার পর সকলেই আশান্বিত হয়েছিলেন, এজন্যে নয় যে তার বদৌলতে দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রাতারাতি পাল্টে যাবে, বরং সবার খুশির কারণ ছিলো, তিনি কথা কম বলেন! সেই তিনিও হটাত করেই বলে বসলেন, দেশে আইএস নেই। প্রায় একই সময়ে ঢাকায় বসেই মার্কিন রাষ্ট্রদূত বললেন, আইএস-এর বিরুদ্ধে সংগ্রামে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে থাকবে। আইএস না থাকলে ফাইট-টি হবে কোত্থকে বা যুক্তরাষ্ট্রই বা পাশে থাকবে কি করে? মধ্যখান থেকে আর এক উপদেষ্টা বলে বসলেন, 'উনি আলু ব্যাবসায়ী, জাপানী নন'! সদ্য মন্ত্রী মূহান্মদ নাসিম বললেন, সংখ্যালঘুর ওপর আক্রমন বিচ্ছিন্ন ঘটনা। মন্ত্রী মূহান্মদ নাসিম চৌদ্দ দলের সংখ্যালঘু সেলের প্রধান এবং গত রোববার ওই সেলের সাথে ঐক্য পরিষদের বৈঠক ছিলো। বৈঠকের কোন নিউজ চোখে পড়েনি তবে চুয়াল্লিশ বছর ধরে সংখ্যালঘুর ওপর যে অত্যাচার চলছে তা যদি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়, তবে বৈঠকের রেজাল্ট বোঝার খুব একটা প্রয়োজনও নেই। যাই হোক, দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা একটু কম কথা বললে ভালো হয়। 

এদিকে খোদ সিরিয়ায় আইএস-এর অবস্থা এখন বেগতিক। পুটিন যেভাবে আইএস-এর পরোক্ষ যুদ্ধকে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে পরিনত করে ফেলছেন, তাতে মনে হয়, আইএস জুজুর দিন শেষ। আসাদ টিকে যাচ্ছেন। ওবামা ক্রিমায়ার পর পুটিনের কাছে আর একবার ধরাশায়ী হচ্ছেন। ইয়েমেনে সৌদি বোমা হামলার অবসান হচ্ছে অথবা তুরস্কের সাম্রাজ্য বৃদ্ধির স্বপ্নভঙ্গ হতে যাচ্ছে। কিন্তু এই রাশিয়া সোভিয়েত ইউনিয়ন নয়, এই যুদ্ধ তেলের দখল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার। মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর এতে খুশি বা বেজার হওয়ার কোন কারণ নেই! ঠিক এ সময়েই খবর এলো চীনও সিরিয়ায় যুদ্ধ বিমান পাঠাচ্ছে 
রাশিয়ার পক্ষে! কি জানি আমাদের বামরা না আবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন যে, চীন-রাশিয়া ভাই-ভাই! মস্কোয় বা বেজিংয়ে বৃষ্টি হলে যারা একদা ঢাকায় ছাতি ধরতেন, তারা এখনো এতটাই রোমান্টিক যে, এক সময়ের ডাকসু'র ভিপি কমিউনিস্ট নেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম সদ্য নিউইয়র্ক সফরে আওয়ামী লীগের চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করতে একটুও ভুল করেননি। ভাবটা এমন যে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাতে পারলে পুতিনের বংশধর কেউ ঢাকায় ক্ষমতাসীন হবেন?  

আমি বলছি না যে, আওয়ামী লীগের সমালোচনা করা যাবেনা, আমার এ লেখাটিও মন্ত্রীদের সমলোচনামুখর, কিন্তু তারপরও কথা থাকে, আওয়ামী লীগের বিকল্প বিএনপি নয়! যাহোক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশে আইএস নাই বলে যে মন্তব্য করেছেন,একঅর্থে বা আরো কিছুদিন পর তা সত্য হলেও হতে পারে। কারণ ভুইফোর আইএস হয়তো কোথাও থাকবেনা। কিন্তু আইএস, বোকা হারেম বা আল-কায়দার বর্বরতা মানুষ কিছুকাল মনে রাখবে। বাংলাদেশে এমত ধর্মভিত্তিক বর্বর গোষ্ঠীর উত্থানের কোন কারণ ছিলোনা, কিন্তু পঁচাত্তরের পটপরিবর্তন সেটাকে সম্ভব করেছে। তদুপরি প্রগতিশীল নেতাদের কথাবার্তা ও কর্মকান্ড বা ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থ এটি এগিয়ে দিয়েছে। ক্ষমতার স্বার্থে আমরা বারবার এদের সাথে আপোষ করেছি। সদলবলে মৌলবাদকে তোষণ করেছি। মোহন্মদ নাসিম বা স্বরাস্ত্র্মন্ত্রীর উপরোক্ত বক্তব্যও  পরোক্ষভাবে মৌলবাদ্কেই উত্সাহিত করে। আমাদের বুঝতে হবে, হেফাজতের মত 'ফ্ল্যাশ আউট'-ই শেষ কথা, দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ নয়। কে জানে সিরিয়ায় গিয়ে রাশিয়া জড়িয়ে পড়বে কিনা!  

পৃথিবীর সকল সভ্য দেশই গণতান্ত্রিক এবং ধর্মীয় উন্মাদনামুক্ত। বাংলাদেশকে টিকে থাকতে হলেও একই পথ অনুসরণ করতে হবে। ধর্ম ধর্ম করে দেশ এগুবেনা। অন্যদের ঝেটিয়ে বিদায় করেও ভালো থাকা যাবেনা। রাষ্ট্রকে এর দাযিত্ব পালন করতে হবে। রাষ্ট্রের দায় জনসেবা, একটি সম্প্রদায়ের সেবা নয়। ভোটের কারণে একটু এদিক-ওদিক হতে পারে, কিন্তু দেশের ভিত্তি বদল হতে পারেনা। বর্তমান সরকারকে সন্ত্রাস দমনে যত প্রশংসা করা হোক না কেন তাদের আন্তরিকতা প্রশ্নাতীত নয়, কারণ আমরা 'রিমেডি' নিয়ে ব্যস্ত, 'কিউর' নয়। রোগ ভালো না হলে দেশে হত্যা, ষড়যন্ত্র, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস চলতেই থাকবে, কম আর বেশি। তাই দেশের রোগমুক্তি চাই এবং এর একমাত্র ওষুধ বাহাত্তরের সংবিধান। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বা ৫৭-ধারা দেশকে কখনই সভ্য করবে না। একটি সভ্য দেশের একমাত্র নীতি হওয়া উচিত, 'শতফুল ফুটতে দাও'।

শিতাংশু গুহ, কলাম লেখক।
১১ই অক্টোবর ২০১৫।
নিউইয়র্ক।

SitangshuGuha 646-696-5569




__._,_.___

Posted by: Sitangshu Guha <guhasb@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___