On Sunday, December 20, 2015 6:27 AM, Muhammad Ali <manik195709@yahoo.com> wrote:
On Sunday, December 20, 2015 6:26 AM, Muhammad Ali <manik195709@yahoo.com> wrote:
On Sunday, December 20, 2015 6:26 AM, Muhammad Ali <manik195709@yahoo.com> wrote:
On Sunday, December 20, 2015 6:25 AM, Muhammad Ali <manik195709@yahoo.com> wrote:
ডা : মুহাম্মদ আলী মানিক : সে দিন এক সামাজিক আড্ডায় একজন 'পিএইচডি' ডিগ্রীধারী ভদ্রলোক জোড় গলায় বলছিলেন শেখ মুজিব (বঙ্গবন্ধু বলতে ওনাদের লজ্জা লাগে) ইয়াহিয়ার সাথে দেন দরবার করছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য , দেশ স্বাধীন করার কোনো পরিকল্পনা ছিলো না। আমি বললাম বঙ্গবন্ধু ৬ দফার মেন্ডেট নিয়ে '৭০ এর নির্বাচন জিতেছিলেন এবং বাঙালির মুক্তিসনদ ৬ দফা বাস্তবায়নের জন্য উত্তাল মার্চের সেই দিনগুলোতে ইয়াহিয়া-ভুট্টোর সাথে আলোচনায় বসেছিলেন।
তাকে আরো বললাম পৃথক মুদ্রা , পৃথক রাজস্ব ব্যাংক আর পৃথক প্যারামিলিসিয়া বাহিনী নিয়ে ৬ দফার পুর্ণবাস্তবায়ন এর মানেই ছিল 'রক্তপাতহীন' স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধু প্রজ্ঞার সাথে একদিকে আলোচনা আর অন্যদিকে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রস্তুত হওয়ার জন্য। ইয়াহিয়ার সাথে আলোচনা না করে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লে সেই যুদ্ধ বাইরের সমর্থন ছাড়া অংকুরেই বিলীন হয়ে যেত ব্যর্থতার সাগরে আর বঙ্গবন্ধু তার সহকর্মীদের সাথে বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসাবে হারিয়ে যেতেন ইতিহাসের আস্তাকুড়ে। বঙ্গবন্ধুর প্রজ্ঞা আর দুরদর্শিতার জন্য আমরা অতি অল্প সময়ে পাকিস্তানের মত শক্তিশালী বাহিনীকে পরাজিত করে দেশকে মুক্ত করেছিলাম। তাই অশেষ ধন্যবাদ বঙ্গবন্ধুকে সেই উত্তাল দিনে ইয়াহিয়ার সাথে আলোচনা টেবিলে বসার জন্য।
সেই সন্ধ্যার আলাপচারিতায় আর একজন শিক্ষিত লোক কিসিঞ্জারের সেই বিখ্যাত উক্তি 'তলাবিহীন ঝুড়ি' নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সরকারকে হেয় করে মজা নিচ্ছিলেন। আমি বললাম কিসিঞ্জারের এই উক্তিটি ছিল বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার পুঞ্জিভূত প্রতিহিংসার প্রতিফলন। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ছিল কিসিঞ্জারের সফল কুটনৈতিক পেশার সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা , শোচনীয় পরাজয়। তাই কিসিঞ্জার অন্তর্জ্বালায় ভুগছিলেন প্রতিশোধ নেওয়ার। আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে প্রতিহত করতে কিসিঞ্জার সাধ্যমত চেষ্টা করেছিলেন। পাকিস্তনকে উদ্ধার করতে শেষ মুহুর্তে ৭ম নৌবহরও পাঠিয়েছিলেন। বিপদের বন্ধু সোভিয়েত ইউনিয়নের কড়া হুশিয়ারিতে শেষ পর্যন্ত তা ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিল নিক্সন প্রশাসন। রাগে দুঃখে সেই কিসিঞ্জার তলাবিহীন ঝুড়ি বলবেনাতো কে বলবে ? আর এখন বাংলাদেশ যে সত্যিকারের 'উপচেপড়া ঝুড়ি' হয়ে গেছে তা কিন্তু কিসিঞ্জারের মত লোকদের চোখে পরছেনা !
আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুকে হেয় করতে স্বাধীনতা বিরোধীরা স্বাধীনতার পর থেকেই অপপ্রচারে নেমে পরেছিল। ভারত জুজুর ভয় দেখিয়ে মানুষকে 'ভারতবিরোধী' বানানোর কত চেষ্টাই না করেছে তারা। যেমন ফরাক্কাকে মরনবাঁধ বলে এর ফলে উত্তরবঙ্গ মরুভূমি হয়ে যাবে বলে 'গোয়েবলসী' কায়দায় কত অপপ্রচারই না করেছিল মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীরা। অপপ্রচারকারীদের মুখে কালি মেখে উত্তরবঙ্গ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ন। সেখানকার দুঃখ 'মঙ্গা' দূর হয়ে গেছে এখন।
কোনো অপপ্রচারে সফল না হয়ে এখন এক নতুন ইস্যু নিয়ে মাঠে নেমেছে সেই চিন্নিত গোষ্ঠী। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে 'পাক-ভারত' যুদ্ধ বলে আখ্যায়িত করতে চাচ্ছে। '৭১ এর ১৬ ডিসেম্বরের আত্মসমর্পণের লিখিত চুক্তিতে 'যৌথ বাহিনীর' কথা লেখা থাকা সত্তেও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী বুদ্ধিজীবিরা তা অস্বীকার করে যাচ্ছে। ১৬ ডিসেম্বরের সেই ঐতিহাসিক আত্মসমর্পণের অনুষ্ঠানে এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার , মেজর হায়দার সহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা অফিসার উপস্থিত ছিলেন। এখানে উল্লেখযোগ্য যে ফ্রান্সের মাটিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আত্মসমর্পণের অনুষ্ঠানে মিত্রবাহিনীর হয়ে স্বাক্ষর করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আইজেনহাওয়ার। তাই বলে কেউ সেই যুদ্ধকে যুক্তরাষ্ট্র বনাম জার্মানির যুদ্ধ বলছেনা।
ডা : মুহাম্মদ আলী মানিক
চিকিৎসাবীদ, আটলান্টা , জর্জিয়া।
চিকিৎসাবীদ, আটলান্টা , জর্জিয়া।
__._,_.___