Banner Advertiser

Sunday, December 6, 2015

[mukto-mona] Fw: ‘তিরিশ বছর পরেও আমি স্বাধীনতাটাকে খুঁজছি’ ! কিন্তু কেনো?





On Sunday, December 6, 2015 2:36 PM, Muhammad Ali <manik195709@yahoo.com> wrote:



লুৎফর রহমান রিটন

'তিরিশ বছর পরেও আমি স্বাধীনতাটাকে খুঁজছি' ! কিন্তু কেনো?

ডিসেম্বর ৬, ২০১৫
riton-f11হায়দার হোসেনকে লেখা চিঠি
জনাব হায়দার হোসেন, ২০০১ সালের মাঝামাঝি সময়ে আমি বাংলাদেশ থেকে বহুদূরে ছিটকে পড়েছিলাম। আপনাকে বা আপনার গানকে জানার কোনো সুযোগ পাইনি তাই। কানাডার রাজধানী অটোয়াতে থাকতাম তখন। শহিদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর সন্তান মিশুক মুনীর এবং ওঁর স্ত্রী মঞ্জুলি আমার বন্ধু । টরন্টো বেড়াতে গেলে ওদের বাড়িতে জম্পেশ একটা আড্ডা হতো। ২০০৩/০৪ সালে মিশুকদের বাড়িতে সেরকম একটি পানাহারের সন্ধ্যায় মিশুক আমাকে আপনার একটা সিডি বাজিয়ে শুনিয়েছিলো। আমাদের হল্লা আর হাস্যরোলে এমনিতেই আড্ডা প্রাণবন্ত ছিলো। বাড়তি হিশেবে ছিলো আপনার 'আমি ফাঁইসা গেছি মাইনকার চিপায়' শীর্ষক গানটি। ঢাকাইয়া একসেন্টে এরকম গান এর আগে কেউ গেয়েছেন বলে শুনিনি। ফেরার সময় মিশুক আমাকে আপনার কথা সুর ও কণ্ঠসমৃদ্ধ সিডির একটা কপি উপহার দিয়ে বলেছিলো আমি যেনো "তিরিশ বছর পরেও আমি স্বাধীনতাটাকে খুঁজছি" গানটা অতি অবশ্যই শুনি। গানটা দুর্দান্ত রকমের ভালো। অটোয়া ফিরে গানটি শোনা হলো। সন্দেহ নেই গানটি অসাধারণ। বুঝতে বাকি থাকলো না গানটি বহু মানুষের হৃদয় হরণ করবে বা করেছে ইতোমধ্যে। কিন্তু আমার কেমন খটকা লাগে। গানটা বারবার শুনি। খটকার অবসান হয় না। খটকার বিষয়টা বলি।
আপনি লিখেছেন–
'কি দেখার কথা কি দেখছি? কি শোনার কথা কি শুনছি?
কি ভাবার কথা কি ভাবছি? কি বলার কথা কি বলছি?
তিরিশ বছর পরেও আমি স্বাধীনতাটাকে খুঁজছি।'
–আমার খটকা লাগে কেনো আপনি তিরিশ বছর পর স্বাধীনতাটাকে খুঁজছেন? ওটা কি হাতছাড়া হয়ে গেছে? অবশ্য স্বাধীনতাকে ধুলিস্যাৎ করার চেষ্টার কমতি ছিলো না। ষড়যন্ত্রের অভাব ছিলো না। ১৯৭৫-এ সপরিবারে জাতিরজনককে হত্যার মধ্য দিয়ে সেই উলটোপথে হাঁটা অন্ধকার যাত্রার সূচনা হয়েছিলো। কিন্তু স্বাধীনতার শত্রুরা কি সফল হয়েছিলো? বাংলাদেশকে ফের পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র কি বাস্তবায়ন করতে পেরেছিলো ঘাতকরা? পারেনি তো! তাহলে? স্বাধীনতা বিপন্ন হয়েছিলো। কিন্তু স্বাধীনতার সূর্যটা কি অস্ত গিয়েছিলো? তাহলে আপনি স্বাধীনতাটাকে কেনো খুঁজবেন দীর্ঘ তিরিশ বছর পরেও? স্বাধীনতার সকল স্বপ্ন সফল হয়নি বলে? ২০০১ এর নভেম্বরে জামাত-বিএনপি চারদলীয় জোট সরকার রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছিলো। বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশকে সাতচল্লিশের চেতনায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলো ঘাতক গোলাম আজম। পত্রিকায় সেই খবর পাঠ করে আমরা শঙ্কিত হয়েছিলাম। সাতচল্লিশের চেতনায় ফিরে যাওয়া মানে তো একাত্তরের স্বাধীনতার চেতনার বিনাশ ঘটা! দেশটা আবার পাকিস্তানে রূপান্তরিত হওয়া! গোলাম আজমের জামাত এবং খালেদা জিয়ার বিএনপি যে স্বাধীনতাটাকে খুঁজছিলো তার সঙ্গে আপনার স্বাধীনতাটাকে খোঁজার কোনো সামঞ্জস্য না থাকলেও আমার মধ্যে এক ধরণের বিপন্নতা আমি অনুভব করছিলাম। কারণ আপনার গানের কথায় বুঝতে পারছিলাম স্বাধীনতার তিরিশ বছর পর মানে তো ২০০১। নাকি এটা চারদলীয় জোটের শাসনামলের আখ্যান নিয়ে রচিত অর্থাৎ ২০০২ কিংবা তার পরবর্তী সময়ে? কাহিনি যদি সেরকমও হয়, শঙ্কা আমার কাটবে না তাও! কারণ, আমরা স্মরণে আনতে পারি, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যার পর রেডিওতে সরকার কবীরউদ্দিনের কণ্ঠে বারবার ঘোষিত হচ্ছিলো—শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে… অতঃপর রেডিওতে মেজর ডালিমের সদম্ভ উচ্চারণসমূহ একটি সদ্যস্বাধীন দেশকে ঘোর অন্ধকারের দিকে ফিরিয়ে নেবার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করছিলো বারবার। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ ওই কুলাঙ্গারের উচ্চারণে ইসলামিক রিপাবলিকে রূপান্তরিত হয়েছিলো এক লহমায়। রেডিও পাকিস্তানের অনুকরণে 'বাংলাদেশ বেতার' হয়ে গিয়েছিলো 'রেডিও বাংলাদেশ'। ১৫ আগস্ট দুপুর থেকে 'রেডিও বাংলাদেশ'-এ একটি গান বাজানো হচ্ছিলো অবিরাম। কোরাস কণ্ঠে গীত সেই বিশেষ গানের প্রথম কলিটি ছিলো—"আমরা এদেশ স্বাধীন করেছিলাম কাহাদের জন্য, কাহাদের জন্য, কাহাদের জন্য?/ মুষ্টিমেয় অই দুর্নীতিপরায়ণ নিষ্ঠুর হায়েনার জন্য?"–এরপর প্রশ্নোত্তরের মতো করে গাওয়া হচ্ছিলো–" না না না না মিথ্যে মিথ্যে মিথ্যে কথা/মিথ্যে কথা মিথ্যে কথা।/আবার প্রশ্ন করো জনতার কাছে/…আমরা আমরা আমরা/আমাদের জন্য আমাদের জন্য আমরা আমরা আমরা/তোমরা কারা? তোমরা কি বাংলার নিপীড়িত মানুষের জনতা?/…নিপীড়িত জনতা! কোথায় সে নিপীড়িত জনতা?/আমরা শ্রমিক আমরা কিষাণ মেহনতি মানুষের জনতা/পরাধীন জীবনে শাসন আর শোষণে রিক্ত যারা/অন্যায় অবিচার সইছে যারা/বাংলার স্বাধীনতা আমাদের নয়তো কাহাদের কাহাদের কাহাদের?/বলো কাহাদের? বলো কাহাদের?/সত্য ভাষণ হে বাংলার জনতা স্বাধীনতা তোমাদের তোমাদের তোমাদের তোমাদের/……এই কি ছিলো সেই স্বাধীনতা যুদ্ধের লক্ষ্য?/এই কি ছিলো সেই মুক্তিযুদ্ধের কাম্য?/ এই কি বাংলার সাম্য?/না না না না নাহ্‌ নাহ্‌/আমরা বাংলাকে স্বাধীন করেছিলাম সাধারণ মানুষের জন্য/নিপীড়িত জনতার জন্য…।"
অসংখ্যবার শোনার কারণে পুরো গানটিই আমার স্মৃতিতে লিপিবদ্ধ হয়ে আছে। একবার প্রশ্ন করছিলো পুরুষকণ্ঠ, জবাব দিচ্ছিলো নারীকণ্ঠ। আরেকবার প্রশ্ন করছিলো নারীকণ্ঠ জবাব দিচ্ছিলো পুরুষকণ্ঠ। কখনো সলো কখনো কোরাসে। মনে হচ্ছিলো 'স্বাধীনতাযুদ্ধের লক্ষ্য' ও 'মুক্তিযুদ্ধের কাম্য' থেকে বাংলাদেশ সরে যাচ্ছিলো এবং সেই সময়ে স্বাধীনতার স্থপতি মুজিবকে হত্যা করা ছাড়া স্বাধীনতার স্বপ্নকে সফল করার আর কোনো উপায় ছিল না।
মুজিব হত্যার আনন্দে আপ্লুত হয়ে গানটি রচনা সুর সংযোজন এবং মিউজিক কম্পোজ ও সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন খান আতাউর রহমান। আমাদের চলচ্চিত্রের মেধাবীপুরুষ বিখ্যাত খান আতা! খান আতার তৈরি করা গানটি ছিলো জাতিরজনক হত্যাকে বৈধতা দেয়ার একটি সুরেলা প্রচেষ্টা। পঁচাত্তরে ঘৃণ্য একদল ঘাতকের সমর্থনে স্বাধীনতার খোঁজে নেমেছিলেন সংস্কৃতিব্যক্তিত্ব বহুগুণে গুণান্বিত বিরল প্রতিভা খান আতা।
১৯৭১ থেকে ২০০১, স্বাধীনতার তিরিশ বছর পর ফের স্বাধীনতাটাকে খুঁজতে যাওয়া এবং রাষ্ট্রক্ষমতায় পাকিস্তানী প্রেতাত্মার উপস্থিতি আমাকে বারবার খান আতার কথা মনে করিয়ে দেয়। আমি কিছুটা শঙ্কিত হয়ে পড়ি–এইটা আবার নতুন কোনো সুরেলা প্রচেষ্টা নয় তো! আমরা স্মরণে আনতে পারি, ২০০১-এ বিএনপি জামাত জোট রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে ঘনঘোর কৃষ্ণপক্ষ গাঢ় অন্ধকারে ঢেকে দিয়েছিলো বাংলাদেশকে। একের পর এক সংখ্যালঘু হিন্দুদের হত্যা, তাঁদের বাড়িতে আক্রমন, অগ্নিসংযোগ,লুঠ এবং হিন্দু মেয়েদের ধর্ষণের ঘটনা ঘটছিলো ব্যাপক হারে। পূর্ণিমা-মহিমাদের ওপর ঘটে যাওয়া বীভৎস ধর্ষণের সেই দুঃসহ সময়কে বাংলাদেশ ভুলবে কী করে!
কিছু মনে করবেন না জনাব হায়দার হোসেন। আপনি তো জানেনই, ঘর-পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভীত হয়ে পড়ে। স্বাধীনতার মাত্র চার বছর পর খান আতা খুঁজেছিলেন 'মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য' আর আপনি তিরিশ বছর পর 'স্বাধীনতাটাকেই খুঁজতে' নেমেছিলেন!
অতঃপর আপনি লিখেছেন–
'স্বাধীনতা কি বৈশাখী মেলা, পান্তা ইলিশ খাওয়া?'
—জ্বী জনাব, এটা আমরা অর্জন করেছি। এটাকে বন্ধ করতে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানে বোমা ফাটিয়ে হত্যা করেছিলো নিরিহ বাঙালিকে। আমাদের হাজার বছরের বাংলা সংস্কৃতিকে স্তব্ধ করতে ওরা হামলা করেছিলো রমনায় ছায়ানটের পহেলা বৈশাখ উদযাপন অনুষ্ঠানে। বৈশাখীমেলার আয়োজন করা, ওখানে পান্তা-ইলিশ খাওয়া এবং রবিঠাকুরের 'এসো হে বৈশাখ এসো এসো' গানটি গাইতে পারাই আমার স্বাধীনতার প্রতিচ্ছবি।
'স্বাধীনতা কি বটমূলে বসে বৈশাখী গান গাওয়া?'
—অবশ্যই। সেই ষাটের দশকে রবীন্দ্র সঙ্গীত নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ আর প্রতিরোধ হয়েছিলো এই বাংলায়। সেদিন, ওয়াহিদুল হক প্রমূখদের নেতৃত্বে ছায়ানটের ছায়াতলে সমবেত হয়েছিলেন বাঙালির মুক্তবুদ্ধি আর মুক্তচিন্তার অগ্রদূতরা। রমনার বটমূলে বসে বৈশাখী গান গাইতে পারার স্বাধীনতাই আমার স্বাধীনতা।
'স্বাধীনতা কি বুদ্ধিজীবির বক্তৃতা সেমিনার?'
—নিশ্চয়ই। বুদ্ধিজীবীর বক্তৃতা সেমিনার যাতে এইদেশে না হয় সেই জন্যেই তো পরাজয়ের পূর্বাহ্নে ১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর তালিকা ধরে ধরে বুদ্ধিজীবী নিধনে মেতে উঠেছিলো নিজামী-মুজাহিদের রাজাকার আর আলবদর বাহিনি। দেশকে মেধাশূন্য করতেই ভয়ঙ্কর সেই পরিকল্পনাটির বাস্তবায়ন করছিলো ওরা দ্রুত। ১৬ই ডিসেম্বর দেশটি স্বাধীন না হলে নিহত বুদ্ধিজীবীর তালিকাটি আরো দীর্ঘ হতো, সন্দেহ নেই।
'স্বাধীনতা কি শহীদ বেদিতে পুষ্পের সমাহার?'
—অতি অবশ্যই, একাত্তুরে আমাদের শহীদবেদি গুঁড়িয়ে দিয়েছিলো পাকি সৈন্যরা। ওখানে ফুল দেয়াকে ধর্মান্ধ ও যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের দোসররা নাজায়েজ মনে করে, এখনও। অধর্মের কাজ বলে মনে করে। হিন্দু সম্প্রদায়ের পুজার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে। অথচ ফুলেলশ্রদ্ধা পৃথিবীব্যাপি স্বীকৃত একটি আন্তর্জাতিক রেওয়াজ। শহীদবেদিতে পুষ্পের সমাহারই প্রমাণ করে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে আমরা বিজয়ী হয়েছি। আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। শহীদ মিনার আমার স্বাধীনতার প্রতীক। একুশে ফেব্রুয়ারিতে, ছাব্বিশে মার্চে এবং ষোলই ডিসেম্বরে শহীদ মিনারে স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ অর্পণ আমার স্বাধীনতারই আনুষ্ঠানিক বহিঃপ্রকাশ।
'স্বাধীনতা কি গল্প নাটক উপন্যাস আর কবিতা?'
—জ্বী স্যার, একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রিয় সঙ্গীত ছিলো–মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি।…নতুন একটি কবিতা লিখতে যুদ্ধ করি…নতুন একটি গানের জন্যে যুদ্ধ করি…স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত এই গানটি এখনও শিহরণ জাগায় রক্তে। আমি আমার গল্প লিখবো, নাটক লিখবো, উপন্যাস আর কবিতা লিখবো–এটাই তো আমার স্বাধীনতা জনাব! কবি শামসুর রাহমানের পঙ্‌ক্তি এখানে স্মরণযোগ্য–স্বাধীনতা তুমি…যেমন ইচ্ছে লেখার আমার কবিতার খাতা…।
'স্বাধীনতা কি আজ বন্দী আনুষ্ঠানিকতা?'
–নাহ্‌। শুধু আনুষ্ঠানিকতায় বন্দী নয় স্বাধীনতা। স্বাধীনতা আছে বলেই, পেয়েছি বলেই আপনি এই গান গাইতে পারছেন। স্বাধীনতা আছে বলেই আপনার হাতে গীটার। যন্ত্রানুষঙ্গযোগে আপনি গান গাইছেন। স্বাধীনতা না এলে আপনি হতেন সাইমুম শিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য।
'স্বাধীনতা কি ঢাকা শহরের আকাশচুম্বী বাড়ি?'
–পরাধীন আমলে পূর্ব পাকিস্থানের রাজধানী ঢাকা শহর ছিলো উন্নয়নবঞ্চিত শহর। পশ্চিমারা করাচি-লাহোর-ইসলামাবাদ-পিন্ডির পেছনে যতো ব্যয় করতো তার দশ ভাগের একভাগও ঢাকার পেছনে ব্যয় করতো না। স্বাধীনতা পেয়েছি বলেই ঢাকায় স্থাপিত হয়েছে আকাশচুম্বী দালান। যা করাচি-লাহোর-ইসলামাবাদ-পিন্ডিতেও নেই।
'স্বাধীনতা কি ফুটপাতে শোয়া গৃহহীন নর-নারী?
স্বাধীনতা কি হোটেলে হোটেলে গ্র্যান্ড ফ্যাশন শো?'
–কেনো নয়? তারকা হোটেলে গ্রান্ড ফ্যাশন শো আধুনিক পৃথিবীর চলমান সাংস্কৃতিক বাস্তবতারই একটি অংশ। সময়ের সঙ্গে ঐতিহ্যের নবায়নই আধুনিকতা। এরকম ফ্যাশন শোর আয়োজনের মাধ্যমে বিশেষত বহিঃর্বিশ্বে আমাদের কৃষ্টি ও ঐতিহ্যকে ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব।
'স্বাধীনতা কি দুখিনী নারীর জড়-জীর্ণ বস্ত্র?
স্বাধীনতা কি গজিয়ে ওঠা অভিজাত পান্থশালা?
স্বাধীনতা কি অন্নের খোঁজে কিশোরী প্রমোদবালা?
স্বাধীনতা কি নিরীহ লোকের অকারণে প্রাণদন্ড?'
–না, নিরীহ লোকের প্রাণদণ্ড নয়, তবে অতি অবশ্যই যুদ্ধাপরাধীদের প্রাণদণ্ড। তিরিশ লক্ষ বাঙালি হত্যা, চার লক্ষ নারীর সম্ভ্রমহানী, লুণ্ঠন আর অগ্নিসংযোগের বিচার আমরা পেতাম না কোনোদিনই। স্বাধীনতা পেয়েছি বলেই ট্রাইব্যুনাল ওদের প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করতে পারছে। এবং প্রাণদণ্ড কার্যকরও হচ্ছে। নিরীহ লোকের অকারণ প্রাণদণ্ডের ঘটনা আপনি কোথায় পেলেন?
'স্বাধীনতা কি পানির ট্যাঙ্কে গলিত লাশের গন্ধ?
স্বাধীনতা কি হরতাল ডেকে জীবন করা স্তব্ধ?
স্বাধীনতা কি ক্ষমতা হরণে চলে বন্দুক যুদ্ধ?
স্বাধীনতা কি সন্ত্রাসী হাতে মারণাস্ত্রের গর্জন?
স্বাধীনতা কি অর্থের লোভে বিবেক বিসর্জন?
আজ নেই বর্গী, নেই ইংরেজ, নেই পাকিস্তানী হানাদার,
আজো তবু কেন আমার মনে শূণ্যতা আর হাহাকার?
আজো তবু কি লাখো শহীদের রক্ত যাবে বৃথা?
আজো তবু কি ভুলতে বসেছি স্বাধীনতার ইতিকথা?'
—স্যার আপনার গানে রাজাকারের কথা নেই যে! ঘাতক দালালের কথা ? যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা কই? এককথায় স্বাধীনতাবিরোধীদের কথা কোথায়, এই গানে? তিরিশ বছর পরের বাস্তবতায় "স্বাধীনতা কি রাজাকারদের মন্ত্রী হবার গল্প" কিংবা "স্বাধীনতা কি খুনির গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড্ডীন" ধরণের একটি চরণও ঠাঁই পায়নি এই গানে। অথচ সেটা পেতে পারতো। তিরিশ বছর পরের রাজনৈতিক বাস্তবতায় সেটাই স্বাভাবিক ছিলো। এই গানে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটা সুশীল অবস্থান লক্ষ্যণীয় যে অবস্থান আখেরে জামাতিদের পক্ষে চলে যায়।
প্রিয় হায়দার হোসেন, স্বদেশে এবং বিদেশে বিপুলভাবে জননন্দিত একজন শিল্পী আপনি। শিক্ষিত রুচিস্নিগ্ধ অমায়িক আচরণসম্পন্ন মার্জিত একজন শিল্পী হিশেবে আপনার গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নাতীত। আপনি একজন দেশপ্রেমিক নাগরিক, আমি জানি। আমি জানি এই গানটি লিখবার পেছনে নিশ্চয়ই কিছু কারণ আছে, কিছু যুক্তি আছে আপনার। স্বাধীনতার স্বপ্ন পুরোপুরি সফল হয়নি, সত্যি। ঘরে ঘরে পৌঁঁছানো যায়নি স্বাধীনতার সুফল, এটাও সত্যি। কিন্তু হাতছাড়া হয়ে গেছে আমাদের স্বাধীনতা এটা সত্যি নয়। এমনকি রূপক অর্থেও নয়। টিভি টকশোতে বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করতে করতে আমাদের তথাকথিত শিক্ষিত কিছু শিক্ষক-অধ্যাপক-সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবী এক পর্যায়ে স্বাধীনতাবিরোধী জামাতিদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে ফেলেন। আমরা তখন অস্তিত্বসংকটে নিপতিত হই। বিষণ্ণ হই। বিপন্ন বোধ করি। আপনার বিখ্যাত এই গানটি প্রায়শঃ আমাকে বিষণ্ণ করে ফেলে। বিপন্ন করে ফেলে।
বিজয়ের মাসে আমি সেই বিষণ্ণতার কথাই জানাতে এসেছি।
আমার বিভ্রান্তিসমূহকে ক্ষমা করবেন।

০১ ডিসেম্বর ২০১৫






__._,_.___

Posted by: Muhammad Ali <man1k195709@yahoo.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___