Banner Advertiser

Sunday, December 13, 2015

[mukto-mona] যুদ্ধাপরাধের বিচার : কোর্ট মার্শালে বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ভুট্টো



যুদ্ধাপরাধের বিচার

কোর্ট মার্শালে বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ভুট্টো


মিজানুর রহমান খান | আপডেট:  | প্রিন্ট সংস্করণ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান       ও         জুলফিকার আলী ভুট্টো১ হাজার ৫০০ পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর বিচার করতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। পরে তা ১৯৫ জনে চূড়ান্ত হয়। ভুট্টো পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে কোর্ট মার্শাল গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তারপর কী ঘটেছিল? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবমুক্ত করা গোপন দলিলের ভিত্তিতে এর প্রশ্ন খোঁজার চেষ্টা হয়েছে। দুই কিস্তির ধারাবাহিকের প্রথমটি প্রকাশিত হলো আজ।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকায় আত্মসমর্পণের পরে দ্রুততার সঙ্গে ৯৫ হাজার পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দীর সঙ্গে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীরাও ভারতে আশ্রয় নেয়। তাদের ভারতে চলে যাওয়াটাই বাংলাদেশের জন্য একটা বড় কূটনৈতিক বাধা সৃষ্টি করেছিল। বিষয়টি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার দর-কষাকষির বিষয়ে পরিণত হয়েছিল। যাতে তাদের বিচার না হয়, সে জন্য ভারতের গণমাধ্যমের একটি অংশ বিরাট ভূমিকা পালন করে। এর মধ্যে বিশেষভাবে নাম করতে হবে মুম্বাইভিত্তিক ব্লিৎ্জ পত্রিকার ডাকসাইটে সম্পাদক রুস্তম খুরশীদজি করনজিয়া, যিনি আর কে করনজিয়া নামে পরিচিত ছিলেন। বাংলাদেশ যাতে বিচার করতে না পারে, সে জন্য তিনি ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিলেন। 
পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টোর সরকারি অতিথি হিসেবে করনজিয়া ১৯৭২ সালের সেপ্টেম্বরে পাকিস্তান সফর করেছিলেন, ভুট্টোর সঙ্গে তাঁর একটি আলোকচিত্র ব্লিৎ্জ পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। ব্রিটিশ মালিকানাধীন থাকাকালে করনজিয়া ছিলেন টাইমস অব ইন্ডিয়ার তারকা রিপোর্টার। ব্রিটিশরা তাঁকে নিজেদের লোক ভাবত কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে ১৯৪১ সালে প্রকাশিত পত্রিকাটিকে তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সপক্ষে পরিচালনা করেন। 
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করে সুনাম অর্জনকারী প্রভাবশালী ট্যাবলয়েড ব্লিৎ্জ ছিল সোভিয়েতপন্থী। একটি সমৃদ্ধ পার্সি পরিবারে করনজিয়া জন্মেছিলেন। তিনি মস্কো-পিকিং চরম উত্তেজনাপর্বে দুটি দেশের শীর্ষ নেতার (চৌ এন লাইয়ের সঙ্গে বৈঠকসহ) সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। কংগ্রেসকে আক্রমণ করতেন কিন্তু তাঁর সঙ্গে নেহরু, ইন্দিরা ও রাজীব গান্ধীর সঙ্গে ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা ছিল। তাঁকে বলা হতো সমাজতন্ত্রী নেহরুর চিয়ারলিডার। নাসের ও টিটোর বন্ধু ছিলেন করনজিয়া। কাস্ত্রোর দীর্ঘ সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। করনজিয়া বিশ্বাস করতেন যে ভুট্টোর অতীত যতই ধূসর হোক, তিনি শেখ মুজিবকে অন্তত একবার প্রাণে বাঁচিয়েছিলেন। ইয়াহিয়ার জল্লাদখানা থেকে একবার এবং তিনি মনে করেন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকেও তিনি মুজিবকে রক্ষা করেন, সেই হিসেবে তাঁর কথায় দুবার। ৯৫ বছর বয়সে ২০০৮ সালে করনজিয়া মারা যাওয়ার অল্পকাল আগে ব্লিৎ্জ পত্রিকাটি বিলুপ্ত হয়। ২০১৩ সালে প্রকাশিত উইকিলিকস নথি থেকে দেখা যায়, মার্কিনিরা সন্দেহ করত যে তিনি ইরানের শাহের কাছ থেকে অর্থ পেতেন। কিন্তু পার্সি ও মার্কিনবিরোধী হিসেবেই তিনি শাহের অনুরাগী ছিলেন। মার্কিনিদের চোখে তিনি ছিলেন 'আপাদমস্তক স্কাউন্ড্রেল', বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের জন্য সিআইএকে দায়ী করে তিনি লিখেছেন। মার্কিন সন্দেহ ছিল যে তাঁর এ লেখার পেছনে ইন্দিরার ইঙ্গিত থাকতে পারে।
২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭২ ব্লিৎ্জ পত্রিকার প্রচ্ছদে তিন নেতার একটি আলোকচিত্র ছাপা হয়েছিল। ইন্দিরা গান্ধী, শেখ মুজিবুর রহমান ও জুলফিকার আলী ভুট্টো। বড় হরফে শীর্ষ শিরোনাম হোয়াই উই মাস্ট হেল্প ভুট্টো। ১৬ সেপ্টেম্বর ও ২৩ সেপ্টেম্বর 
ব্লিৎ্জ পত্রিকায় দুই কিস্তিতে ভুট্টোর একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার ছেপেছিলেন করনজিয়া। ১৬ সেপ্টেম্বরের সংখ্যায় ভুট্টো বাংলাদেশ এবং যুদ্ধবন্দীদের প্রত্যাবাসন বিতর্ক নিয়ে কথা বলেন। মার্কিন জাতীয় আর্কাইভসে স্টেট ডিপার্টমেন্টের নথিতে দুটি সংখ্যাই খুঁজে পেলাম। বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান প্রশ্নে ভুট্টো বলেন, 'আলোচনার ফলাফল যা-ই হোক না কেন, আমরা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেব।' বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে লিংক রাখতে রাজি হোক বা না হোক, বাংলাদেশকে তারা স্বীকার করবে। শেখ মুজিব যখন যেখানে প্রথম বৈঠক করবেন, তখন ভুট্টো সেখানেই স্বীকৃতি দেবেন।
করনজিয়ার ভাষায় সব থেকে উত্তপ্ত যুদ্ধবন্দী বিষয়ে ভুট্টো দুটি ফর্মুলা দেন। তিনি লিখেছেন, ভারত চাইলে মুজিব যাদের বিচার করতে চান, তাদের ভারতের মাটিতে রেখে দিতে পারে। 
'আপনি হাজারো দুর্দশাগ্রস্ত বন্দীকে রেখে দিতে পারেন', ভুট্টো আমাকে বলেন, 'শুধু তাঁকে (মুজিব) খুশি করতে চাইলে আপনি আরও বেশি সংখ্যায় রাখতে পারেন। যদি তিনি পাঁচ হাজার রাখতে চান, তাহলে আপনারা ১০ হাজার রাখতে পারেন, কিন্তু কেন আপনারা বিপুলসংখ্যক নিরীহ মানুষসহ প্রত্যেককে আটকে রাখবেন?'
এসবই ছিল কথার ফুলঝুরি। ভুট্টো বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানে ঢাকার সংবেদনশীলতা ও প্রয়োজনীয়তাকে ব্ল্যাকমেল করতেই সচেষ্ট ছিলেন। তবে যে কথা আমরা জানি যে ভুট্টো নিজেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেটা তিনি নির্দিষ্টভাবে করনজিয়াকেও বলেছিলেন। তবে সে কথা করনজিয়া ভুট্টোকে উদ্ধৃত করে নয়, বরং করনজিয়া তা প্রকাশ করেছিলেন নিজের ভাষায়, 'ভুট্টোর নিজের দিক থেকে অধিকতর বাস্তবসম্মত সমাধানের বিকল্প ছিল পাকিস্তানকেই ট্রাইব্যুনাল করতে দেওয়া। তাতে যারা দোষী সাব্যস্ত হবে, তারা শাস্তি পাবে।' কিন্তু কথাটায় জোর ছিল না। বরং জোরটা যে কোথায় ছিল, তা ওই সাক্ষাৎকারে ফুটে উঠেছিল। ভুট্টো তাঁকে সতর্ক করেছিলেন যে 'যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হলে বিশেষ করে সশস্ত্র বাহিনীর দিক থেকে আমার সমস্যাকে সেটা বহুগুণে জটিল করে তুলবে এবং পরিস্থিতি এমন দিকে মোড় নেবে, যা থেকে আর ফেরা যাবে না।' 
অবশ্য আজ ৪৪ বছর পরে পাকিস্তানের মুসলিম লীগ সরকারের তরফে গণহত্যা অস্বীকার করার প্রেক্ষাপটে এটা উল্লেখ করতে হয় যে ভুট্টো কিন্তু তদুপরি এ প্রসঙ্গে করনজিয়াকে বলেছিলেন, 'আমি নৃশংসতাকে মার্জনা করতে চাই না। এবং যদি কোথাও বাড়াবাড়ি বা অপরাধের ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে আমরা কোর্ট মার্শালে তাদের বিচার করতে প্রস্তুত।' করনজিয়া এরপর তাঁর জবানিতে লেখেন, ভুট্টো যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা এবং তাদের বিরুদ্ধে আনীত সাক্ষ্য–প্রমাণ চান এবং বলেন, 'আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে চাই যে যাদের দোষ প্রমাণিত হবে, তাদের শাস্তি দেওয়া হবে।'
বাহাত্তরের ২৩ সেপ্টেম্বর সংখ্যায় করনজিয়া লিখেছেন, সেই সাক্ষাৎকার আন্তর্জাতিক বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল। এটি প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে করনজিয়ার কথায় শেখ মুজিবুর রহমান এর ক্ষুব্ধ প্রতিবাদ করেছিলেন। মুম্বাই-দিল্লির ফ্লাইটে মুজিব ব্লিৎ্জ পত্রিকায় প্রকাশিত ভুট্টোর সাক্ষাৎকার পড়েছিলেন। পত্রিকাটির এই পরিবেশনাটির যেন মূল লক্ষ্যই ছিল ভুট্টোকে সহায়তা দেওয়া। বাংলাদেশ যাতে ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচার করতে না পারে, তার পক্ষে স্পষ্টতই দৃঢ় যুক্তি দাঁড় করিয়েছিলেন করনজিয়া। অবশ্য তখনকার ভারতীয় মিডিয়া এ থেকে পিছিয়ে ছিল না। 
টাইমস অব ইন্ডিয়া ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭২ এক সম্পাদকীয়তে লিখেছিল, 'মি. ভুট্টো দিল্লি­ ও ঢাকার প্রতি যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তা তাদের অগ্রাহ্য করা ঠিক হবে না।' হিন্দুস্তান টাইমস তার সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করে যে 'নয়াদিল্লিতে শেখ মুজিব যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তার থেকে ভুট্টোর প্রস্তাবটাই অধিকতর বিবেচনার দাবি রাখে।' ভুট্টো দুটি প্রস্তাব নির্দিষ্ট করেছিলেন। প্রথমত, একসঙ্গে ঢাকা-ইসলামাবাদ আলোচনা ও স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি এবং যুদ্ধাপরাধীদের বাদ দিয়ে অবশিষ্ট যুদ্ধবন্দীদের প্রত্যাবাসন শুরু করা।
করনজিয়া লিখেছেন, 'আমার সন্দেহ নেই যে ভারতের মধ্যস্থতা লাগবেই।' যুদ্ধবন্দীদের নিয়ে যে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে, সে বিষয়ে ভুট্টো বলেছেন, 'শেখ মুজিব যাদের বিচার করতে চান, তাদেরসহ সবাইকে ভারত রেখে দিতে পারে, এমনকি তারা চাইলে আরও বেশি কিছু যদি প্রয়োজন পড়ে—কিন্তু অবশিষ্টদের মুক্তি দিন।' 
ডন সম্পাদক মাজার আলী খান ভারতে যুদ্ধবন্দী হিসেবে থাকা কয়েক ডজন পাকিস্তানি সাংবাদিকের মুক্তির জন্য যে সুপারিশ করেছিলেন, সে বিষয়েও করনজিয়া উচ্চকণ্ঠ হতে পারেননি। কারণ, বাংলাদেশের গণহত্যাটি ছিল নিকৃষ্ট ধরনের। করনজিয়া লিখেছেন, এক হাজার লোককে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ঢাকায় বিচার করা হলে তা প্রায় নিশ্চিতভাবে এই যুদ্ধাপরাধীদের পাকিস্তান ও তার মিত্ররা নায়কের মর্যাদা দেবে। 
করনজিয়ার সুপারিশ ছিল অদ্ভুত। তিনি যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবি পরিত্যাগ করার বিনিময়ে পতিত ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে ভুট্টোর নতুন সরকারকে দিয়ে অভিশংসন প্রস্তাব আনানোর সুপারিশ করেছিলেন।
আগামীকাল: ভারতকে একটি মুচলেকা দিয়েছিল পাকিস্তান
মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক৷
mrkhanbd@gmail.com

http://www.prothom-alo.com/opinion/article/711604/




__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___