সৌদিরা সবাই সুখী বলে নির্বাচনের প্রয়োজন নেই!
আমাদের সময়.কম
রাশিদ রিয়াজ : জাতিসংঘে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আল-মোয়াল্লিমি দাবি করেছেন, দেশটির জনগণ বিশ্বের সবচেয়ে সুখী মানুষদের অন্যতম তাই সেখানে কোনো নির্বাচনের প্রয়োজনই নেই। আল-জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ দাবি করেছেন তিনি। যদিও দেশটিতে সিগারেট, মদ্যপান অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় অপরাধ ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছে দেশটির মিডিয়াগুলো। এছাড়া অধিকাংশ সৌদি নাগরিক মুটিয়ে যাওয়ায় ও বিলাসবহুল জীবন যাপন পদ্ধতি অনুসরণ করায় সামাজিক ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা হচ্ছে যা দেশটির বিভিন্ন মিডিয়ায় রিপোর্ট করা হচ্ছে। বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে দেশটির আদালত বেশ সজাগ রয়েছে। গত হজের সময় দুটি বড় দুর্ঘটনায় বেশ কয়েক হাজার হাজি মারা যাওয়ার পর এ নিয়ে তেমন কোনো জবাবদিহী করেনি দেশটি। তেলের দাম কমে যাওয়ায় বিশাল আকারে বাজেট ঘাটতি মোকাবেলায় হজ ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করে অর্থনৈতিক সংকট দূর করতে উদ্যোগী হয়েছে দেশটির সরকার। এতকিছুর পর বাক স্বাধীনতা নেই এমন অভিযোগ প্রায়ই উঠছে সৌদি রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করায় অনেক সৌদি নাগরিককে আটক করা হয়েছে।
এমন এক পরিস্থিতিতে জাতিসংঘে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত তার দেশের মানুষকে সুখী বলে কোনো নির্বাচন নেই বললেন। পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশ সহ অনেক দেশেই গণতন্ত্রের সবক সহ নানা শর্ত জুড়ে দেন। এসব দেশ কখনোই সৌদি আরবের মত দেশগুলোতে গণতন্ত্র বা নির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামান না। রাজতন্ত্র নিয়েও তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। কারণ পশ্চিমা দেশগুলো বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি সহ সস্তায় তেল কিনতে পারে সৌদি আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে।
জাতিসংঘে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, সিরিয়ায় নির্বাচনের বিষয়ে সৌদি দাবির সঙ্গে নিজ দেশের নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, "নির্বাচন সর্বরোগের ওষুধ নয়। সিরিয়ায় নির্বাচন চাওয়া হচ্ছে বলেই সৌদি আরবে নির্বাচন হতে হবে এমন কোনো কথা নেই।" অথচ সিরিয়ার আসাদ সরকারকে পতনের জন্যে সৌদি আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ পশ্চিমা দেশগুলোকে অস্ত্র, অর্থ, লোকবল দিয়ে সাহায্য করছে যে কারণে দেশটিতে বছরের পর বছর যুদ্ধে লক্ষাধিক মানুষ নিহত ও শরণার্থী হিসেবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। অথচ সিরিয়ার সংকট নিয়ে আলোচনার পথ পরিহার করেছে সৌদি আরব শুরু থেকেই।
জাতিসংঘে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত দাবি করেন, জরিপ চালানো হলে দেখা যাবে যে, সৌদি শাসন ব্যবস্থাকে বেশিরভাগ মানুষ সমর্থন করছে। এ ব্যবস্থার বিরোধিতা করার দায়ে অনেককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে- ইঙ্গিত করে আল-মোয়াল্লিমি দাবি করেন, তাদের সঙ্গে সৌদি জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু সৌদি আরব সরকার কখনোই এধরনের জরিপ করেনি বা কোনো গণভোটের আয়োজন করেনি আদতে দেশটির মানুষ নির্বাচন চায় কি না।
বিতর্ক রয়েছে রিয়াদ সরকারের কোনো সমালোচনাই সহ্য করে না। কিন্তু অন্যদেশে নির্বাচন নিয়ে তা বেশ আগ্রহ রয়েছে দেশটির ওয়াহাবি শাসকদের। এধরনের দ্বিমুখী নীতিই জাতিসংঘে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে আরো পরিস্কার হয়ে ফুটে উঠেছে। মানবাধিকার কর্মী, সরকারের সমালোচক এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে দেশটিতে কঠোর সন্ত্রাস বিরোধী আইন প্রয়োগ করা হয়। কতল করতে দ্বিধা করে না সৌদি সরকার। মজার ব্যবস্থা হচ্ছে সৌদি সরকার রাজতন্ত্র অনুসরণ করলেও খোদ ইসলামে রাজার ছেলে রাজা হওয়ার মত কোনো পদ্ধতি জায়েয নয়। সৌদি আরবের বর্তমান সরকার নির্বাচিত নয়। রাজতন্ত্রের বাইরে কোনো সৌদি নাগরিক অধিক মেধাসম্পন্ন ও দেশটিকে পরিচালনার মত যোগ্য হলেও তার পক্ষে সে দায়িত্ব পালনের কোনো সুযোগ নেই।
Saudi Arabia doesn't need elections even though Syria does, ambassador claims
What does Saudi Arabia want for Yemen and Syria?
We ask Abdallah al-Mouallimi, Saudi ambassador to the UN, and debate the effectiveness of drone strikes on al-Shabab.
26 Mar 2016 14:35 GMT | Syrian Civil War, Saudi Arabia, Yemen, Syria, Middle East
Watch the interview video at:
http://www.aljazeera.com/programmes/upfront/2016/03/saudi-arabia-yemen-syria-160325095734939.html
10 examples of Saudi Arabia's human rights abuses: http://www.independent.co.uk/news/world/middle-east/saudi-arabia-doesnt-need-elections-even-though-syria-does-ambassador-abdallah-al-mouallimi-claims-a6953871.html#
__._,_.___