Banner Advertiser

Thursday, July 7, 2016

[mukto-mona] ‘ক্ষমা করো হজরত’ : আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী



  1. 'ক্ষমা করো হজরত'


'ক্ষমা করো হজরত'

আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী

৫ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০



'ক্ষমা করো হজরত'


প্রতিবছর রোজার ঈদ এলেই দেশ-বিদেশের বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা কার্ড পাই। এবারও পেয়েছি। ঈদের এক-দেড় সপ্তাহ আগে থেকেই কার্ডগুলো পেতে শুরু করি। সব কার্ডেই ঈদের শুভেচ্ছা বাণী থাকে। কিন্তু এবার দেখলাম, একটি কার্ডে নজরুলের একটি কবিতার কয়েক লাইন ছাপা রয়েছে। সাধারণত ঈদের কার্ডে অনেকেই নজরুল ইসলামের কবিতার উদ্ধৃতি দেন। যেমন 'রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ' কিংবা 'ইসলাম বলে সকলের তরে মোরা সবাই' ইত্যাদি। কিন্তু এবারের পাওয়া ঈদ কার্ডগুলোর একটির মধ্যে দেখলাম, নজরুলের একটি ভিন্ন মাত্রার কবিতার কয়েক লাইন ছাপা রয়েছে।


ঈদের এই কার্ড আমাকে পাঠিয়েছেন চট্টগ্রাম থেকে নেছার আহমদ। তিনি একজন কলামিস্ট ও শিল্পপতি। বেশ কয়েক বছর আগে যখন চট্টগ্রাম শহরে গিয়েছিলাম তখন চট্টগ্রামের একটি দৈনিক পত্রিকা অফিসে ছোটখাটো এক সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই তাঁর সঙ্গে আমার পরিচয়। সেই এক দিনের পরিচয় তিনি আজ পর্যন্ত ধরে রেখেছেন এবং প্রতিবছর রোজার ঈদে আমাকে ঈদ মোবারক লেখা সুদৃশ্য কার্ড পাঠান।

কিন্তু এবার তাঁর পাঠানো কার্ডে নজরুলের কবিতা চয়নের বৈশিষ্ট্যটা দেখে চমকিত হয়েছি। দেশের ও বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতিতে নজরুলের কবিতাটি স্মরণ করা ও সবাইকে তা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার মধ্যে নেছার আহমদের একটা মুক্ত ও জাগ্রত চৈতন্যের পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি নজরুলের 'ক্ষমা করো হজরত' কবিতাটির ছয়টি লাইন তাঁর কার্ডে মুদ্রণ করেছেন। কবিতাটি লেখা হয়েছে সম্ভবত গত শতকের মাঝামাঝি সময়ে কিংবা তারও আগে। কিন্তু কবিরা যে শুধু পোয়েট নন, ভবিষ্যৎ দ্রষ্টাও, নজরুলের শুধু এই কবিতায় নয়, বহু কবিতায় তার প্রমাণ পাওয়া যায়।

'ক্ষমা করো হজরত' কবিতাটি পড়লে মনে হয়, কবি যেন প্রায় শতবর্ষ আগেই আমাদের বর্তমান অবস্থা স্বচক্ষে দেখে কবিতাটি লিখেছিলেন। এই কবিতা আমারও প্রিয় একটি কবিতা। মাঝেমধ্যেই নিজের মনে আবৃত্তি করি। কিন্তু নেছার আহমদের পাঠানো ঈদের কার্ডে কবিতাটির কয়েক লাইন পাঠ করে মনে হলো, এই কবিতা আগে পড়িনি। বর্তমান বাংলাদেশে বসে নজরুল এটি লিখেছেন।

সম্ভবত কাকতালীয় ব্যাপার। যেদিন ভোরে এই ঈদের কার্ড হাতে আসে, সেদিনই খবর পাই যে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের বিমানবন্দরে জঙ্গিদের হামলায় অর্ধশতাধিক নিরীহ নরনারী নিহত ও তারও বেশি লোক আহত হয়েছে। দেশে দেশে এই বর্বর হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে একদল তথাকথিত ইসলামী জঙ্গি পবিত্র ইসলামের নামে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চলছে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড। মুসলিম বিশ্বে মুসলমানের রক্তে একদল মুসলমানের হাত রঞ্জিত। কারবালায়ও কি এত মুসলমানের রক্তে মুসলমানের হাত রঞ্জিত হয়েছিল?

প্রায় নিয়ত এই হত্যাকাণ্ডের খবর পড়ি আর মনে মনে নজরুলের কবিতাটি আবৃত্তি করি। 'ক্ষমা করো হজরত/ভুলিয়া গিয়াছি তব আদর্শ তোমার দেখানো পথ' চট্টগ্রাম থেকে নেছার আহমদের পাঠানো ঈদের কার্ডে এই কবিতার ছয়টি লাইন উদ্ধৃত করা হয়েছে, যাকে মনে হয় আমাদের বর্তমান অবস্থারই প্রতিচ্ছবি। তাই কবিতাটির এই ছয়টি লাইন আমার এই লেখায়ও উদ্ধৃত করছি।

'তুমি চাহ নাই ধর্মের নামে গ্লানিকর হানাহানি,

তলওয়ার তুমি দাও নাই হাতে, দিয়াছ অমর বাণী,

মোরা ভুলে গিয়ে তব উদারতা

সার করিয়াছি ধর্মান্ধতা

বেহেশত হতে ঝরে নাকো আর তাই তব রহমত।

ক্ষমা করো হজরত।'

আমার মনে হয়, এবারের পবিত্র ঈদে সারা বিশ্বের মুসলমানেরই উৎসবের পরিবর্তে ঈদের 

মাঠে জমায়েত হয়ে ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠে ইসলামের বাণীবাহকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। একদা ইসলাম সারা পৃথিবীতে যে শান্তি, সাম্য, উদারতার জোয়ার সৃষ্টি করেছিল, আমরাই তাকে আজ বর্বর ধর্মান্ধতায় পরিণত করেছি। ইসলাম বলেছে, 'তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করো, কখনো বিচ্ছিন্ন হয়ো না।' সেখানে 

আমরা মুসলমানরা শিয়া, সুন্নি, আহমদিয়া ইত্যাদি ভাগে নিজেদের বিভক্ত করে নিজেরা নিজেদের ধ্বংস সাধনে উন্মত্ততার পরিচয় দিচ্ছি।

সবচেয়ে ভয়াবহ ইসলাম ধর্মের নাম ভাঙিয়ে মোল্লাবাদের জন্ম। ইসলামের প্রথম যুগে এই মোল্লাবাদের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। ধর্মবিশেষজ্ঞরা আলেম বা জ্ঞানী নামে পরিচিত হতেন। তাঁরা ধর্ম সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ ছিলেন এবং ধর্মীয় তত্ত্বের যুগোপযোগী ব্যাখ্যাও দিতে পারতেন। সাধারণ মানুষ তাঁদের শ্রদ্ধা করত। ইসলামী খিলাফতের (প্রতিনিধিত্বশীল শাসন) পতনের পর যখন সুলতানাতের (রাজতন্ত্র) আবির্ভাব হয় তখন স্বৈরাচারী সুলতানরা নিজেদের ক্ষমতার স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করার জন্য একদল 'দরবারি আলেমের' জন্ম দেন। তাঁরা পরবর্তীকালে মোল্লা নামে পরিচিতি পান।

এই মোল্লারা ধর্ম সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানতেন না। কিছু আরবি-ফারসি শিখে নিজেদের আলেম বলে দাবি করতেন এবং সুলতান বা রাজার পছন্দমতো ধর্মের অপব্যাখ্যা দিতেন তাঁদের অনেকেই। এভাবে এক শ্রেণির ফতোয়াবাজ মোল্লা শ্রেণি গড়ে ওঠে। কবি নজরুল তাদেরই নাম দিয়েছিলেন 'আমপারা পড়া হামবড়া...' ইসলামকে যুগোপযোগী রাখার জন্য রাসুল (সা.)-এর নির্দেশিত পথে তার সংস্কারের জন্য ইমাম শাফি, ইমাম হানাফি প্রমুখ বহু মোজাদ্দেদের (সংস্কারক) আবির্ভাব হয়েছে। এই মোল্লাদের ষড়যন্ত্রে এই ইমামদের কাউকে বিষপানে বাধ্য করে, কাউকে জেলে পুরে মৃত্যু ঘটানো হয়।

মধ্যযুগে খ্রিস্টান ধর্মেও খ্রিস্টান মোল্লা বা খ্রিস্টান যাজকতন্ত্রের আবির্ভাব ঘটেছিল। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছিল যে এই যাজকদের কাছ থেকে পয়সা দিয়ে বেহেশতে যাওয়ার সার্টিফিকেট কিনতে হতো। এরা কোনো নারীকে ডাইনি বলে ফতোয়া দিলেই তাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হতো। ফ্রান্সের বীর নারী জোয়ান অব আর্ককে এই ডাইনি আখ্যা দিয়েই পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। ধর্মীয় বিভেদের জন্য খ্রিস্টান-ইউরোপে তখন যুদ্ধ ও রক্তপাত অহরহ লেগে ছিল। এই খ্রিস্টান বা ক্যাথলিক মোল্লাতন্ত্র বা পোপতন্ত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন জার্মানির মার্টিন লুথার। তিনি পোপতন্ত্রের হাত থেকে খ্রিস্টান ধর্ম সংস্কার করার ফলেই প্রোটেস্ট্যান্ট নামে খ্রিস্টানদের মধ্যে একটি শ্রেণির আবির্ভাব হয় এবং ধর্ম ও বিজ্ঞানের মধ্যে সমন্বয় সাধনের ফলেই আজ পশ্চিমা দেশগুলোর এত বিস্ময়কর উন্নতি।

মধ্যযুগের খ্রিস্টান ও ইহুদি যাজকতন্ত্রের অনুকরণে ইসলামেও মোল্লাবাদের বিকাশ ঘটে। আমরা অনেকে মোল্লাবাদকে মৌলবাদের সঙ্গে মিশিয়ে ফেলি। মৌলবাদীদেরও একটা ভালো দিক আছে। মোল্লাবাদের তা নেই। আমাদের উপমহাদেশে মোল্লাবাদেরই দাপট বেশি। মোল্লাবাদ অশিক্ষা ও অজ্ঞানতাপ্রসূত। প্রকৃত ধর্মজ্ঞান তাদের অধিকাংশের মধ্যে থাকে না। গোঁড়ামি ও কুসংস্কার তাদের মধ্যে কাজ করে বলে তা থেকে ভিন্ন মত ও ভিন্ন ধর্মের প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষের জন্ম হয়। এই ঘৃণা ও বিদ্বেষের মধ্যে নিহিত থাকে ফ্যাসিবাদের বীজ।

প্রথম মহাযুদ্ধের পর জার্মানিতে নািসবাদের জন্ম ইহুদি ধর্ম ও ইহুদি জাতিকে চরম ঘৃণা করার মধ্য দিয়ে। ভ্যাটিকানের পোপের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল নািসরা। লািস নায়ক হিটলারের মাইন কাম্ফ বইয়ের মূল বক্তব্যজার্মানরাই পৃথিবীর একমাত্র শ্রেষ্ঠ আর্য জাতি, যাদের অপর জাতিগুলোর ওপর আধিপত্য বিস্তারের জন্মগত অধিকার রয়েছে। ইহুদিরা বা অন্য ধর্মের মানুষরা মনুষ্য পদবাচ্য নয়। এই ফ্যাসিবাদের ধ্বংসলীলা আমরা গত দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে প্রত্যক্ষ করেছি। ফ্যাসিবাদের জন্ম পশ্চিমা ক্যাপিটালিজমের হাতে। কমিউনিজমকে রোখার জন্য ইউরোপে ফ্যাসিবাদের জন্ম দেওয়া হয়েছিল। পলিটিক্যাল ইসলাম বা ইসলামী জঙ্গিবাদের জন্ম পশ্চিমা ক্যাপিটালিজমের হাতে। একই উদ্দেশ্য, কমিউনিজমকে রোখা এবং গ্লোবাল ক্যাপিটালিজমের আধিপত্য রক্ষা।

একই লক্ষ্যে একসময় হিটলারের ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট পার্টি গঠনে যেমন আমেরিকার ধনকুবেররা অর্থ জুগিয়েছে, তেমনি বর্তমান যুগে মধ্যপ্রাচ্যে আল-কায়েদা, তালেবান, আইএস প্রভৃতি জঙ্গিগোষ্ঠী তৈরিতে সব ধরনের সহায়তা জুগিয়েছে আমেরিকা। বাংলাদেশে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের মতো একটি ফ্যাসিবাদী দলকে 'মডারেট ইসলামী দল' বলে সার্টিফিকেট দিয়েছিল আমেরিকাই। ইউরোপে নিজেদের সৃষ্ট ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমেরিকা তথা পশ্চিমা বিশ্বকে লড়তে হয়েছিল, তেমনি মধ্যপ্রাচ্যে ও অন্যান্য মুসলিম দেশে মাথা তুলেছে যে তথাকথিত ইসলামী জঙ্গিবাদ, তার বিরুদ্ধেও শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে নেমে পশ্চিমা শক্তি তাদের মারণাস্ত্র তৈরির বাজার সম্প্রসারিত করছে এবং বিশ্বে এক মহাধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি করেছে।

ইসলামী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ তাই ধনবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ও সমরবাদের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ। এই জঙ্গিবাদেরও জন্ম ঘৃণা, ভিন্ন মত ও ভিন্ন ধর্মের মানুষের প্রতি বিদ্বেষ থেকে। বাংলাদেশে জামায়াত, হেফাজতসহ বিভিন্ন উগ্রপন্থী দল মৌলবাদ নয়, মধ্যযুগীয় মোল্লাবাদ প্রচার দ্বারা বাংলাদেশে যে রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করতে চায়, তা ইসলামের প্রাথমিক যুগের খিলাফত নয়। আসলে তা তাতার যুগের অত্যাচারী সুলতানিয়াত। আইএসও এই সুলতানিয়াত কায়েম করতে চায়। প্রকৃত ইসলামী খিলাফত নয়। প্রকৃত খিলাফতের আদর্শ ও নীতির সঙ্গে তারা পরিচিত নয়। ধর্মান্ধতার আফিম তাদের খাওয়ানো হয়েছে। তার নেশায় তারা বুঁদ। এই ধর্মান্ধতার আফিম তারুণ্যের কী ক্ষতি করতে পারে তা প্রত্যক্ষ করেছে বাংলাদেশ। শিক্ষিত, উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের টার্গেট করে জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত করা হচ্ছে। গুলশানে অপারেশন থান্ডারবোল্টে নিহতদের বাইরে আরো কত তরুণ ওই সর্বনাশা পথে পা বাড়িয়েছে, কে জানে! ধর্মের নামে ফ্যাসিবাদের ভয়াল থাবায় আক্রান্ত আজ বাংলাদেশ। বলার অপেক্ষা রাখে না, এই জঙ্গিগোষ্ঠীর পেছনে রয়েছে শক্তিশালী রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা।

পলিটিক্যাল ইসলাম বা ফ্যাসিবাদী ইসলাম শুধু মানবতার শত্রু নয়, প্রকৃত ইসলামেরও শত্রু। ইসলামকে সারা বিশ্বে কলঙ্কিত করছে এই বর্বর ঘাতকের দল। এর বিরুদ্ধে প্রকৃত মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। বিশ্ব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিশ্ব মুসলিম ঐক্যের প্রয়োজন। এবারের ঈদে সেই ঐক্যের ডাক দেওয়া হোক। মহানবীর কাছে ক্ষমা চেয়ে তাঁর আদর্শে ফিরে যাওয়ার শপথ নেওয়া হোক। এই আন্দোলনে প্রকৃত আলেমরা সামনে এসে দাঁড়ান।

লন্ডন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০১৬

 http://www.kalerkantho.com/print-edition/sub-editorial/2016/07/05/378063


ঢাকা। মঙ্গলবার ৫ জুলাই ২০১৬। ২১ আষাঢ় ১৪২৩। ২৯ রমজান ১৪৩৭ 




__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___