Yes, Kaium, you are right, unfortunately,
"Sustha thakon, nirapade thakon ebong valo thakon"
Shuvechhante,
Shafiqur Rahman Bhuiyan (ANU)
Auckland
NEW ZEALAND.
Phone: 00-64-9-620 2603 (Res), 00-64-02 1238 5500 (mobile)
E-mail: srbanunz@gmail.com
Every single member of a family corrupted?
অর্পিত সম্পত্তির ওপর গড়ে তোলা ভবনে চলছে পল্লীশ্রীর কার্যক্রম। সামনের পুরনো ভবনটিও তাদের দখলে। ছবি : কালের কণ্ঠ« পূর্ববর্তী সংবাদখালেদার মায়ের এনজিও পল্লীশ্রী অবৈধ জমিতে! উম্মুল ওয়ারা সুইটি, দিনাজপুর থেকে ফিরেঅর্পিত সম্পত্তি অবৈধভাবে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নিয়ে সেখানে ভবন তুলে এবং একটি সরকারি ভবন দখল করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মা তৈয়বা মজুমদারের এনজিও পল্লীশ্রীর কার্যক্রম চলছে। দিনাজপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র বালুবাড়ী মৌজায় সাড়ে ৩৮ শতাংশ জমিসহ দোতলা বাড়ির পুরোটাই এখন পল্লীশ্রীর দখলে। এ ক্ষেত্রে শুধু আইনই লঙ্ঘন করা হয়নি, সরকারের রাজস্ব ক্ষতিও করা হয়েছে অন্তত ১৩ কোটি টাকার।
১৯৯৩ সালে প্রথমবার বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে শুরু হয় এনজিওর নামে এই দখলপ্রক্রিয়া। সর্বশেষ বিগত চারদলীয় জোট সরকারের শাসনামলে আইন লঙ্ঘন করে চিরস্থায়ী বরাদ্দের মধ্য দিয়ে দখলপ্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়।
দিনাজপুরের বালুবাড়ী এলাকায় গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এবং জেলা প্রশাসন ও ভূমি মন্ত্রণালয়ে খোঁজখবর নিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।
এলাকার বাসিন্দা আফসার উদ্দিন বলেন, তৈয়বা মজুমদার প্রথমে একসনা লিজের মাধ্যমে ২৫ শতাংশ জমি দখলে নিয়ে কাজ শুরু করেন। নিয়ম ভঙ্গ করে ভবনও তৈরি করেন। শুধু তাই নয়, বাউন্ডারির অবশিষ্ট ছয় শতক জমির মধ্যে অবস্থিত সরকারি ভবনে বসবাসকারী ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধা ইব্রাহিমকে ২০০৪ সালের ১০ আগস্ট জোর করে তুলে দেওয়া হয়। ইব্রাহিম এর আগে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় নিয়ে আসেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ১৩ জুলাই ইব্রাহিম এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।
এলাকাবাসী জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মায়ের এনজিও পল্লীশ্রীকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই অর্পিত সম্পত্তি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ২০০৬ সালের ১১ অক্টোবর মাত্র এক দিনে তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীসহ মন্ত্রণালয়ের পাঁচ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এই বরাদ্দপত্র অনুমোদনে স্বাক্ষর করেন।
অথচ ২০০১ সালে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার পর এই ধরনের সম্পত্তি কাউকে চিরস্থায়ী বরাদ্দ দেওয়া সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।
ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরা বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত করা হবে। এভাবে অর্পিত সম্পত্তি চিরস্থায়ীভাবে বরাদ্দ দেওয়ার কোনো বিধান নেই। বিগত বিএনপি সরকার ও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে এ ধরনের অনেক ঘটনা ঘটেছে। বর্তমান সরকার এসব অর্পিত সম্পত্তির বিষয়ে তালিকা তৈরি করছে। কেউ অবৈধভাবে অর্পিত সম্পত্তি দখল করে থাকলে সে ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেহেতু বিষয়টি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের, তাই এটি অনেক বেশি সতর্কতার সঙ্গে তদন্ত করা হবে।
দিনাজপুরের সাংস্কৃতিক সংগঠক হাফিজুল ইসলাম জেমী বিষয়টির আইনগত সমাধান দাবি করে বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা যদি এভাবে সরকারি সম্পত্তি দখল করেন তাহলে সাধারণ মানুষ হতাশায় ভোগে। যাঁরা দেশের আইনপ্রণেতা, তাঁদের কাছ থেকেই যদি অনিয়ম আর আইন ভঙ্গের ঘটনা ঘটে তাহলে দেশ কিভাবে চলবে?
দিনাজপুর জেলা প্রশাসন, ভূমি মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট নথি থেকে পাওয়া তথ্যমতে, দিনাজপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র বালুবাড়ী মৌজার ৪৮৩ খতিয়ানের ৩৫১ দাগের সাড়ে ৩৮ শতাংশ ভূমি এবং এর ওপর অবস্থিত দ্বিতল বাড়ির মূল মালিক যতীন্দ্রমোহন গং দেশভাগের সময় ভারতে চলে গেলে এই সম্পত্তি অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়। সরকারি প্রয়োজনে ১৯৪৮ সালের হুকুম আইনে এইচআর মামলামূলে এই বাড়িটি হুকুম দখল করে সরকারি দপ্তর স্থাপন করা হয়। তার পর থেকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন সময়ে সরকারি কর্মকর্তাদের বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই জায়গাটি অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর খালেদা জিয়ার মা তৈয়বা মজুমদার তাঁর প্রতিষ্ঠিত এনজিও পল্লীশ্রীর নামে বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য চেষ্টা-তদবির শুরু করেন। খালেদা জিয়া প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন কিছুটা কৃতকার্য হন। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার প্রভাবকে ব্যবহার করে ১৯৯৩ সালে এ জমির ১০ শতাংশ পল্লীশ্রীর নামে একসনা বন্দোবস্ত পান। ওই কর্মকর্তা জানান, এরই মধ্যে একসনা লিজের নিয়ম ভঙ্গ করে ওই জমির ওপর তিনতলা ভবন নির্মাণ করা হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ওই জমির বিষয়ে কোনো রকম প্রশাসনিক তৎপরতা দেখা যায়নি। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর খালেদা জিয়া আবার ক্ষমতাসীন হলে তৈয়বা মজুমদার দ্বিতল বাড়িসহ পুরো সম্পত্তি দখলে নিতে ফের চেষ্টা-তদবির শুরু করেন। ২০০৪ সালের এপ্রিলে তিনি পল্লীশ্রীর নামে পুরো সম্পত্তি চিরস্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কছে আবেদন করেন। পরে সেটা ভূমি মন্ত্রণালয় বরাবর পাঠানো হলে প্রত্যর্পণ আইন বলবৎ থাকায় স্থায়ী বন্দোবস্ত দেওয়া সম্ভব নয় বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে একসনা বন্দোবস্তের বিষয়টি বিবেচনা করার মতামত দেওয়া হয়; যদিও প্রত্যর্পণ আইন বলবৎ থাকা অবস্থায় একসনা বন্দোবস্ত নিষিদ্ধ রয়েছে এবং ১৯৮৪ সালের রাষ্ট্রপতির ঘোষণার পর থেকেই নতুন লিজ দেওয়া বন্ধ রয়েছে।
এ-সংক্রান্ত নথি থেকে দেখা যায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ২০০৫ সালের ১৬ আগস্ট আবারও ওই সম্পত্তি পল্লীশ্রীকে স্থায়ী বন্দোবস্ত দেওয়ার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে এবারও আইনের পরিপন্থী বিধায় স্থায়ী বন্দোবস্তের প্রস্তাব অনুমোদনযোগ্য নয় মর্মে জেলা প্রশাসককে জানিয়ে দেওয়া হয়। তৃতীয়বারের মতো প্রস্তাব দিয়েও কোনো কাজ না হওয়ায় সম্পত্তি গ্রাস করার উদ্দেশ্যে পল্লীশ্রী ভিন্ন পথ অবলম্বন করে জেলা প্রশাসকের শরণাপন্ন হয়।
সূত্রমতে, তৎকালীন জেলা প্রশাসক ২০০১ সালের প্রত্যর্পণ আইন লঙ্ঘন করে এই সম্পত্তি পল্লীশ্রীর অনুকূলে অধিগ্রহণের কার্যক্রম গ্রহণ করেন। জেলা প্রশাসক অধিগ্রহণ মামলা করেন এবং অধিগ্রহণের প্রস্তাব ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেন।
কিন্তু ভূমি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং সিনিয়র সহকারী সচিব নালিশি সম্পত্তি 'অধিগ্রহণযোগ্য' নয় মর্মে প্রস্তাব করেন। কিন্তু তাঁদের মতামতকে অগ্রাহ্য করে বেআইনিভাবে অধিগ্রহণের প্রস্তাব অনুমোদন করেন জোট সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট উপসচিব (উন্নয়ন), যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন), সচিব, ক্ষমতাধর উপমন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী। অধিগ্রহণের এই প্রস্তাবটি দ্রুতগতিতে অনুমোদিত হয়। মাত্র এক দিনেই (১১-১০-০৬ ইং) উপসচিব, যুগ্ম সচিব, সচিব, উপমন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী'_এই পাঁচটি স্তর পার হয়ে প্রস্তাবটি অনুমোদন লাভ করে। স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ম্যানুয়েলের ২৯ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বেসরকারি সংস্থার অধিগ্রহণ প্রস্তাবের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবটি জনস্বার্থে কি না, প্রস্তাবটি সংস্থার নিজস্ব জমিতে বাস্তবায়ন করা সম্ভব কি না, সংস্থা প্রস্তাবিত জমি ক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করে ব্যর্থ হয়েছে কি না; সামগ্রিক বিবেচনায় জমি অধিগ্রহণ অপরিহার্য কি না ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করার সুস্পষ্ট বিধান থাকলেও এ ক্ষেত্রে তা বিবেচনা করা হয়নি। উপরন্তু ওই দাগে সাড়ে ৩৮ শতাংশ জমিও অধিগ্রহণ প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
সূত্রমতে, দিনাজপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই জমির বর্তমান বাজারমূল্য প্রতি শতাংশ প্রায় ১২ লাখ টাকা করে। সেই হিসাবে শুধু জমির দাম দাঁড়ায় প্রায় ১০ কোটি টাকা। তার ওপর দ্বিতল ভবনের দামসহ বাড়িতে অবস্থিত গাছপালার দাম হবে তিন কোটি টাকা_মোট ১৩ কোটি টাকা।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের জুলাই মাসে পল্লীশ্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ দখলের অভিযোগ উঠলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়কে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সময়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে কর্মরত জোট সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট একজন যুগ্ম সচিব ২০০৮ সালের ১৩ জানুয়ারি সরেজমিন তদন্ত করেন। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদনে সুকৌশলে তিনি এসব বিষয় এড়িয়ে যান। অবৈধভাবে লিজ প্রদান ও সরকারি রাজস্ব ক্ষতির বিষয় ধামাচাপা দিয়ে তিনি প্রতিবেদন দাখিল করেন।
পল্লীশ্রী কার্যালয়ে গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন বলেন, 'এ জমি বরাদ্দ নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম করা হয়নি। অযথাই আমাদের বিরুদ্ধে আপত্তি তোলা হয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে, আমরা সেটাই মেনে নেব।' তিনি মূল ভবনের সামনে সরকারি দোতলা ভবনটি দেখিয়ে বলেন, পুরো জায়গাটির কাগজপত্র সঠিক নিয়মেই হয়েছে। শুধু এই ভবনটির বিষয়ে আপত্তি রয়েছে। ওই ভবনের সামনে পল্লীশ্রীর হস্তশিল্পকর্মের একটি শোরুম রয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি কক্ষে অফিস এবং বাকিগুলো তারা গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক কারণেই তাঁদের এই ভবনটি বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মকবুল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি নতুন এসেছি। বিষয়টি ভালো করে জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।'
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভূমি প্রতিমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার বলেন, আইনের বাইরে তো আর কেউ যেতে পারবে না। তিনি বলেন, বিগত সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের লোকজন এ রকম অনেক কাজ করেছেন, যা মোটেও আইনসম্মত হয়নি। অথচ বর্তমান সরকার এসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে গেলে তাঁরা সেটাকে রাজনৈতিকভাবে দেখেন।
__._,_.___